What's new

On how the national interest has been sacrificed to India.

BanglaBhoot

RETIRED TTA
Joined
Apr 8, 2007
Messages
8,839
Reaction score
5
Country
France
Location
France
1379444_686258044720745_1392959587_n.jpg


ভারতের পদতলে জাতীয় স্বার্থ

Amar Desh = October 24, 2013

দিল্লিকেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ এবং একতরফা বন্ধুত্ব গড়তে গিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ ভারতের পদতলে ঠেলে দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকির মধ্যে ফেলে ভারতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যুক্ত করা হয়েছে বাংলাদেশকে। গত ৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ৭ রাজ্যের বিদ্রোহ দমনে সর্বাত্মক সহযোগিতা, ফ্রি ট্রানজিট, বাংলাদেশের জন্য ধ্বংসাত্মক টিপাইমুখ প্রকল্পের অনুমোদন, সুন্দরবনের জন্য সর্বনাশা রামপাল বিদ্যুেকন্দ্রের অনুমোদন, বন্দর সুবিধাসহ ভারতের দীর্ঘদিনের দাবিগুলো একে একে পূরণ করেছে। দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে হলেও ভারতের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে—এই নীতিই মূলত ৫ বছর ধরে বাস্তবায়ন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। ভারতের জন্য ট্রানজিট সুবিধা নিশ্চিত করতে ফেনী নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণ করার মতো আত্মঘাতী জঘন্য কাজও করেছে সরকার। সীমান্ত হত্যা অব্যাহত রেখেছে ভারত। বর্তমান সরকারের মেয়াদে প্রায় ৫শ’ নিরীহ বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে ভারত। কিশোরী ফেলানী হত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ করার পরও সীমান্ত হত্যা বা ফেলানী হত্যার ব্যাপারে কোনো ধরনের প্রতিবাদ করেনি আওয়ামী লীগ সরকার। অনেক ক্ষেত্রে সীমান্ত হত্যার পক্ষে সাফাই গেয়েছেন সরকারের কর্তাব্যক্তিরা। ফেলানী হত্যার বিচারের নামে যে তামাশা হয়েছে, তার বিরুদ্ধেও মুখ খোলেনি সরকার। ভারতের পক্ষ থেকে তিস্তা চুক্তি সই এবং সীমান্ত প্রটোকল বাস্তবায়নে বার বার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। তিস্তা চুক্তি সই এবং সীমান্ত প্রটোকল বাস্তবায়ন যে হচ্ছে না, তা এখন নিশ্চিত। এরপরও আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে—এই চুক্তি হবে।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময়ে ৫০ দফার যৌথ ঘোষণাপত্র সইয়ের মাধ্যমে মূলত বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থকে ভারতের কাছে বিকিয়ে দেয়া হয়েছে।

ওই ঘোষণাপত্রে ট্রানজিট সুবিধা, বন্দর ব্যবহার, আশুগঞ্জ নৌবন্দরকে পোর্ট অব কল হিসেবে ঘোষণা দেয়া, সন্ত্রাস দমনে (ভারতের বিদ্রোহ দমন) সহায়তা, টিপাইমুখ প্রকল্পে সম্মতি দেয়াসহ ভারতের দীর্ঘদিনের চাহিদাগুলো পূরণের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে অঙ্গীকার করা হয়। এগুলো একে একে বাস্তবায়ন করে চলেছে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার।

অন্যদিকে সীমান্ত হত্যা বন্ধ, তিস্তা চুক্তি সই, সীমান্ত প্রটোকল বাস্তবায়নসহ বাংলাদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলোর ব্যাপারে কেবল আশ্বাস দেয়া হয় ওই ঘোষণাপত্রে। ওইসব আশ্বাস যে মিথ্যা আশ্বাস ছিল, তা এখন প্রমাণিত।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময়ে সীমান্তে সন্ত্রাস দমন এবং মাদক চোরাচালান রোধে ভারতের প্রস্তাব অনুযায়ী দু’দেশের মধ্যে ৩টি চুক্তি সই হয়। আসলে ওই চুক্তির মোড়কে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ৭ রাজ্যে বিদ্রোহ দমনে সম্পৃক্ত করা হয় বাংলাদেশকে। ওই ৩টি চুক্তির ব্যাপারে সংসদে বা অন্য কোথাও কোনো ধরনের আলোচনা করেনি আওয়ামী লীগ সরকার। এমনকি কেউ জানে না ওই চুক্তিতে কী আছে। প্রধানমন্ত্রী দিল্লি থেকে দেশে ফেরার পর চুক্তি সম্পর্কে তত্কালীন পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস শুধু বলেছিলেন, এই চুক্তির আওতায় দু’দেশের গোয়েন্দা সদস্যদের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হবে। এর বাইরে এখন পর্যন্ত আর কোনো কিছু জানানো হয়নি। তবে কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ওই চুক্তির ফলে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অবাধে বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম চালানোর সুযোগ পেয়েছে এবং তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। উলফা চেয়ারম্যান অরবিন্দ রাজখোয়াসহ আরও অনেককে বাংলাদেশ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে কিছু বলা না হলেও ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বার বার বলা হয়েছে, ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী তাদের গ্রেফতার করেছে। ভারতের বিদ্রোহ দমনে যুক্ত হওয়ার ফলে বাংলাদেশ বড় ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে ভারতকে ফ্রি ট্রানজিট দেয়ার যাবতীয় আয়োজন সম্পন্ন করেছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রানজিটের নামে বর্তমান সরকার আসলে ভারতকে করিডোর দিচ্ছে। এরই মধ্যে ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফ্রি নৌ-ট্রানজিট সুবিধা দিয়েছে সরকার। এছাড়া কখনও বিদ্যুেকন্দ্রের জন্য ভারী যন্ত্রপাতি পাঠানো, আবার কখনও মিথ্যা মানবিক কারণ উল্লেখ করে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতীয় পণ্য পাঠানোর মাধ্যমে অনানুষ্ঠানিকভাবে ভারত স্থল ট্রানজিট সুবিধা ভোগ করছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দিতে তত্পর হয়ে ওঠে। ট্রানজিটের ব্যাপারে সরকার গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ উপেক্ষা করে বাংলাদেশের স্বার্থের সম্পূর্ণ বিপরীতে অবস্থান নিয়ে সরকার ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দিয়েছে। এমনকি কোনো ধরনের চুক্তি ছাড়াই ভারত এই ট্রানজিট সুবিধা পাচ্ছে।

ট্রানজিটের ব্যাপারে ভারতের চেয়ে বাংলাদেশ সরকারকেই সব সময় বেশি আগ্রহী মনে হয়েছে। ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে তত্কালীন ভারতীয় হাইকমিশনার রঞ্জিত মিত্র বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ডে ভারত সরকার বাংলাদেশকে ট্রানজিট ফি দিতে রাজি আছে। এর মাত্র কয়েকদিন পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান ঘোষণা দিলেন, ভারতের কাছে ট্রানজিট ফি চাওয়া হবে অসম্মান। ওই সময় প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী ঘোষণা দিলেন, ভারতকে ট্রানজিট দিতে কোনো চুক্তি সইয়ের প্রয়োজন নেই। চুক্তি ছাড়াই ভারতকে ট্রানজটি সুবিধা দেয়া হবে। ট্রানজিটের ব্যাপারে সরকার একটি কোর কমিটি গঠন করেছিল। ওই কমিটি ট্রানজিটের জন্য কাস্টমস সার্ভিস ফি, রাস্তা মেরামত ফি, নিরাপত্তা ফি, বায়ু ও শব্দদূষণ ফি, বিদেশি যানবাহন প্রবেশ ফি নেয়ার সুপারিশ করেছিল। নিজের গড়া ওই কমিটির সুপারিশও প্রত্যাখ্যান করেছে সরকার। ট্রানজিট দেয়ার জন্য যে ধরনের অবকাঠামো প্রয়োজন, তা না থাকা সত্ত্বেও ভারতকে এই ট্রানজিট সুবিধা দিয়েছে সরকার। বাংলাদেশের ক্ষতির ব্যাপারে সরকারের কোনো ধরনের মাথাব্যথা নেই। ট্রানজিট নিয়ে সরকার জনগণের সঙ্গে রীতিমত প্রতারণা করেছে। নৌ-প্রটোকলের আওতায় পরীক্ষামূলক ট্রানজিটের নামে স্থায়ী ট্রানজিট দেয়া হয়েছে ভারতকে। ২০১১ সালের মার্চ মাসে পরীক্ষামূলক ট্রানজিটের নামে কোনো ধরনের ফি ছাড়াই ত্রিপুরার পালাটানা বিদ্যুেকন্দ্রের জন্য ৮ হাজার টন ভারী যন্ত্রপাতি বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পরিবহনের সুযোগ দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। ৯০টি কন্টেইনারে এসব ভারী যন্ত্রপাতি আশুগঞ্জ বন্দর হয়ে ত্রিপুরায় যায়। ওই একই প্রক্রিয়ায় ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে ৩৫০ টন পণ্য, ৯০০ টন টিন, ৬২১ টন লোহা এবং ৩০০ টন সিমেন্ট তৈরির কেমিক্যাল বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পরিবহন করে ভারত। ২০১২ সালের অক্টোবর মাসে একই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ৩ হাজার ২২৫ টন কয়লা ও সিমেন্টের রাসায়নিক পণ্য যায় পূর্ব ভারতে। ট্রানজিটের উপযুক্ত অবকাঠামো না থাকার পরও ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দেয়ার ফলে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বাংলাদেশের। ভারতীয় পণ্য বিশেষ করে ভারী যন্ত্রপাতি পরিবহনের ফলে বাংলাদেশের রাস্তাঘাট ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। পরিবেশ বিপর্যয়কর ট্রানজিটের জন্য তিতাসসহ ১৮টি নদী ও খালে বাঁধ দিয়ে বন্ধ করার মতো আত্মঘাতী কাজ করেছে সরকার। তিতাস নদীতে বাঁধ দেয়ার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের প্রতিবাদের মুখে ভারতীয় পণ্য আর যাবে না বলে ঘোষণা দেয় সরকার। তবে অনেকটা গোপনে আবারও ভারতকে পণ্য পরিবহনের অনুমতি দিয়েছে এ সরকার। মিথ্যা মানবিক কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ত্রিপুরায় ১০ হাজার টন খাদ্যশস্য পরিবহনের অনুমতি দেয়া হয়েছে ভারতকে। এছাড়া আরও ৩০ হাজার টন পণ্য বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে আসামে নেয়ার অনুমতিও পাচ্ছে ভারত। ভারতের জন্য ট্রানজিট সুবিধা আরও সহজতর করতে আশুগঞ্জ বন্দরের উন্নয়নের জন্য ২৪৫ কোটি টাকার প্রকল্পও চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।

সীমান্ত হত্যাকে একপ্রকার বৈধতা দিয়ে দিয়েছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন, সীমান্ত হত্যা দু’দেশের সম্পর্কের ওপর কোনো ধরনের প্রভাব ফেলবে না। অন্যদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং বার বার সীমান্ত হত্যা বন্ধের ব্যাপারে মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছেন। আইন ও সালিশ কেন্দ্র, অধিকারসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার হিসাব অনুযায়ী গত ৫ বছরে প্রায় ৫০০ নিরীহ বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে বিএসএফ। নির্যাতনের শিকার হয়েছে অসংখ্য মানুষ। ভারতীয় বাহিনী গুলি করে বাংলাদেশীদের মারলেও বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) গুলি ছোড়ার অধিকার কেড়ে নিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। বিজিবিকে এখন একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। ফিলিস্তিন-ইসরাইল সীমান্তের পরই বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সবচেয়ে বিপজ্জনক সীমান্ত হিসেবে বিশ্বে আজ পরিচিত। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ ছাড়া চীন, পাকিস্তান, নেপাল ও ভুটানের সীমান্ত রয়েছে। তবে একমাত্র বাংলাদেশ সীমান্তেই ভারত নির্বিচারে মানুষ হত্যা করে।

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সবচেয়ে জঘন্য এবং আলোচিত ঘটনা হলো সীমান্তে কিশোরী ফেলানী হত্যাকাণ্ড। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ১৫ বছরের কিশোরী ফেলানীকে বিএসএফ সদস্যরা গুলি করে মেরে কাঁটাতারের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। ওই জঘন্য ঘটনার বিরুদ্ধে সারা বিশ্বে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এমনকি ভারতের মানবাধিকার সংগঠনগুলোও এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়। অন্যদিকে ওই নিষ্ঠুর বর্বরতার প্রতিবাদ না জানিয়ে বরং সীমান্ত হত্যাকে বৈধতা দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ফেলানীকে ভারতের নাগরিক হিসেবে প্রচার করেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ওই ঘটনার পর বলেন, সীমান্তে অতীতেও হত্যা হয়েছে, এখনও হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন, সীমান্ত হত্যা দু’দেশের সম্পর্কের ওপর কোনো ধরনের প্রভাব ফেলবে না। এরপর দেশে এবং দেশের বাইরে শুরু হয় ব্যাপক প্রতিবাদ। ওই প্রতিবাদ-বিক্ষোভের মুখে ফেলানী হত্যার ৮ দিন পর একটি লোক দেখানো প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভারত সরকারও ঘোষণা দেয়, ফেলানী হত্যার তদন্ত ও বিচার হবে।

তবে ভারত শেষ পর্যন্ত বিচারের নামে একটি তামাশা করেছে। গত ১৩ আগস্ট ফেলানী হত্যার বিচার কাজ শুরু হয়। গত ৬ সেপ্টেম্বর মামলার রায়ে ফেলানীর হত্যাকারী বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করা হয়। এ রায়ের পর বাংলাদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। দেশি-বিদেশি, এমনকি ভারতের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকেও নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানানো হয়। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বিচারের নামে তামাশা করেছে, প্রতারণা করেছে গোটা জাতির সঙ্গে। দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা হলো, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার এ ব্যাপারে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়াই ব্যক্ত করেনি। ফেলানীর পক্ষে মামলাকারী দুজন ভারতীয় মানবাধিকার সংগঠক ওই রায়ের পর বাংলাদেশে আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার তাদের ভিসা দেয়নি। এই তামাশার বিচারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদের মুখে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ফেলানী হত্যার পুনর্বিচারের কথা বলেছে। তবে এখন কেউই বিশ্বাস করে না যে, ন্যায়বিচার পাওয়া যাবে।

বাংলাদেশের জন্য মরণ ফাঁদ হিসেবে চিহ্নিত টিপাইমুখ পানিবিদ্যুত্ প্রকল্পেরও অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। বোরাক নদের অববাহিকায় বাঁধ দিয়ে এই পানিবিদ্যুত্ কেন্দ্র তৈরি হবে। পরিবেশবিদ এবং বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের অন্তত তিন কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ছাড়াও ভারতেও এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত তৈরি হয়েছে। তারপরও কোনো ধরনের সমীক্ষা ছাড়াই এ প্রকল্পের জন্য অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি সফরের সময় এ প্রকল্পের ব্যাপারে সম্মতি দিয়ে আসেন। এ প্রকল্পের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত থাকায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং ঘোষণা দেন বাংলাদেশের ক্ষতি হয় টিপাইমুখ প্রকল্পে এমন কোন পদক্ষেপ নেয়া হবে না। পরে দু’দেশের পক্ষ থেকে একটি সমীক্ষার কথাও বলা হয়। যৌথ সমীক্ষার নামে যা করা হয়েছে, তা রীতিমত জালিয়াতি। ২০১২ সালে ২৬ থেকে ২৯ আগস্ট যৌথ নদী কমিশনের সদস্য মীর সাজ্জাদ হোসেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল যৌথ সমীক্ষা কাজ সম্পন্ন করতে ভারত সফর করে। ওই প্রতিনিধিদল টিপাইমুখ এলাকা পরিদর্শন না করে দিল্লি ঘুরে ঢাকায় ফিরে আসে। অর্থাত্ বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলকে দিল্লির বাইরেই যেতে দেয়া হয়নি। টিপাইমুখ ও বোরাক অববাহিকা পরিদর্শন না করে যৌথ সমীক্ষার কাজ সম্পন্ন করার বিষয়টি রীতিমত হাস্যকর। ভারতের অনেক পরিবেশবিদ এ প্রকল্পের বিপক্ষে অবস্থান নিলেও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী একাধিকবার বলেছেন—টিপাইমুখ প্রকল্পে বাংলাদেশের কোনো ক্ষতি হবে না। উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে ভারত সরকার টিপাইমুখ প্রকল্পটি হাতে নেয়।

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যে ইস্যু দুটি সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছে, তা হলো তিস্তা চুক্তি সই ও সীমান্ত প্রটোকল বাস্তবায়ন। তিস্তা চুক্তি ও সীমান্ত প্রটোকল নিয়ে ভারত এবং বাংলাদেশের উভয় সরকারই বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে রীতিমত প্রতারণা করেছে। গত পাঁচ বছর ধরেই একের পর এক মিথ্যাচার করা হয়েছে তিস্তা চুক্তি ও সীমান্ত প্রটোকল বাস্তবায়ন নিয়ে। তিস্তা চুক্তি সই ও সীমান্ত প্রটোকল বাস্তবায়ন হবে—এই প্রতিশ্রুতিতেই বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের সব দাবিই একে একে পূরণ করেছে। সরকারের মেয়াদ শেষে এটা এখন নিশ্চিত যে, তিস্তা চুক্তি সই ও সীমান্ত প্রটোকল বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে দিল্লি সফর শেষে ঢাকায় ফিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি ঘোষণা দেন, খুব শিগগিরই তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি ও সীমান্ত প্রটোকল বাস্তবায়ন হবে। তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে দু’দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং ঢাকায় আসার আগে দু’দেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে দু’দেশ একমত হয়েছে। তবে মনমোহন সিং ঢাকায় রওনা দেয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে ভারতের পররাষ্ট্র দফতর থেকে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হয়, এ সফরে তিস্তা চুক্তি হচ্ছে না। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর আপত্তির কারণেই তখন তিস্তা চুক্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই ঘোষণার পরও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বলেন, মনমোহন সিংয়ের সফরেই তিস্তা চুক্তি সই হবে। এরপর তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে আরও কয়েকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বার বার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বলা হয়—এ সরকারের মেয়াদেই তিস্তা চুক্তি সই হবে। গত মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের একটি কর্মসূচি থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা বাতিল করা হয়েছে। কারণ সরকার এখন নিশ্চিত, তাদের এই মেয়াদে তিস্তা চুক্তির সম্ভাবনা নেই। গত কয়েক সপ্তাহ আগে বিষয়টি পরোক্ষভাবে স্বীকার করে এক সংবাদ সম্মেলনে ডা. দীপু মনি বলেন, তিস্তা চুক্তি হবে। তবে কখন হবে—তা জানা নেই। এর আগে একবার তিনি বলেছিলেন, আমি গণক নই যে, চুক্তির দিনক্ষণ বলে দিতে পারব। তিস্তা চুক্তির মতো একই ভাগ্য বরণ করেছে সীমান্ত প্রটোকল বাস্তবায়নের বিষয়টিও। ১৯৭৪ সালে ইন্দিরা-মুজিব স্বাক্ষরিত সীমান্ত প্রটোকলটি ভারত এখনও সমর্থন করেনি। যদিও বাংলাদেশ তখনই এটি অনুসমর্থন করে। সীমান্ত প্রটোকল অনুসমর্থনের জন্য বিলটি ভারতের বর্তমান ক্ষমতাসীন ইউপিএ সরকার সংসদেই তুলতে পারেনি। বিরোধী দল বিজেপির আপত্তির কারণেই এটি সম্ভব হচ্ছে না বলে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

সীমান্ত প্রটোকল বাস্তবায়নের জন্য ভারতের বিরোধী দলের সমর্থন পেতে কূটনৈতিক রীতিনীতি ভঙ্গ করে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারিক এ করিম উগ্র হিন্দুবাদী নেতা ও গুজরাটে মুসলিম নিধনের মূল হোতা নরেন্দ্র মোদীর দারস্থ পর্যন্ত হয়েছেন। তাতেও কোনো ফল হয়নি। যেমন ফল হয়নি তিস্তার ব্যাপারে মমতা ব্যানার্জীর সহায়তা চেয়েও।

তিস্তা চুক্তি ও সীমান্ত প্রটোকল বাস্তবায়ন না হলেও শেষ মুহূর্তে এসে বাংলাদেশের স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে সুন্দরবন ধ্বংসকারী এবং পরিবেশ বিপর্যয়কারী হিসেবে চিহ্নিত রামপাল বিদ্যুেকন্দ্রের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিবেশবিদ, রাজনৈতিক নেতা ও সুশীল সমাজের সদস্যসহ সব শ্রেণী-পেশার মানুষের প্রতিবাদ উপেক্ষা করে কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুত্ প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী ২২ অক্টোবর এই বিদ্যুেকন্দ্র উদ্বোধনের কথা থাকলেও প্রধানমন্ত্রী সেই কাজটি সেরেছেন গত ৫ অক্টোবর। বাগেরহাটের রামপাল বিদ্যুেকন্দ্রের উদ্বোধন করেন কুষ্টিয়ায় বসে। এ এক নজিরবিহীন ঘটনা। এই বিদ্যুত্ প্রকল্পটি ভারতের জনগণ তাদের নিজেদের দেশেই করতে দেয়নি। কারণ ওই বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণ হলে ভারতীয় অংশের সুন্দরবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা ছিল। অথচ সুন্দরবন থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে এই বিদ্যুেকন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। পরিবেশবিদদের মতে, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে সুন্দরবন বিরান ভূমিতে পরিণত হবে। মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে জীববৈচিত্র্য। ভারতের স্বার্থের জন্য দেশের জন্য আত্মঘাতী হলেও তা থেকে পিছপা হচ্ছে না বর্তমান সরকার। গত ৫ বছরে সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপ সেই স্বাক্ষরই বহন করে।

??????? ????? ????? ???????
 
Another useful article -

স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবেই ভারতের সাথে বন্ধুত্ব চায় বাংলাদেশের মানুষ

মো: কামরুজ্জামান বাবলু

বাংলাদেশ ভারত দ্বিপীয় সম্পর্কের েেত্র ২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর দিনটি নিশ্চয়ই স্মরণে রাখবে উভয় দেশ। কারণ এই দিনটিতে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার মোকারিমপুর ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর গ্রামে বাংলাদেশ-ভারত ৯৮ কিলোমিটার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের উদ্বোধন করেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ড. মনমোহন সিং। শুধু তা-ই নয়, তেল গ্যাস বিদ্যুৎ বন্দর ও খনিজসম্পদ রা কমিটি এবং বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার তীব্র আপত্তি ও প্রতিবাদ সত্ত্বেও দুই প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলেন বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং দিল্লিতে অবস্থান করেই ভিডিও সম্মেলনের মাধ্যমে যৌথভাবে উদ্বোধন করলেন এই দুই প্রকল্পের।

এর মধ্যে বাংলাদেশ-ভারত ৯৮ কিলোমিটার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্থাপন-সংক্রান্ত প্রকল্পটি নিয়ে এখনো পর্যন্ত খুব একটা বিতর্ক দেখা না দিলেও বাগেরহাটের রামপালের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নিয়ে রয়েছে জোর আপত্তি। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠনসহ অনেকেরই দাবি, এই বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু হলে সুন্দরবনের মারাত্মক তি হবে, বিপন্ন হতে পারে এর জীববৈচিত্র্য, যা শেষ পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করলেও এই প্রকল্প চালু করতে দেয়া হবে না বলেও এরই মধ্যে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আনু মোহাম্মদসহ অনেকেই।

এ দিকে যৌথ ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময়কালে মনমোহন সিং ও শেখ হাসিনা বেশ জোরের সাথেই বাংলাদেশের মানুষকে এই বলে আশস্ত করেছেন যে, বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক যে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপিত হতে যাচ্ছে তা সুন্দরবনের কোনো তি করবে না। আরো এক ধাপ এগিয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘বাংলাদেশের জন্য তি হয় এমন কোনো প্রকল্প, এমন কোনো কাজ তিনি করবেন না।’
এই দুই বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে বিশেষ করে বাগেরহাটের রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে যখন বাংলাদেশের গণমাধ্যমে এভাবে নানা চুলচেরা বিশ্লেষণ ও খবর প্রকাশিত হচ্ছিল, ঠিক ওই দিনই অর্থাৎ ৫ অক্টোবর ২০১৩ ভারতের গণমাধ্যমে খবরটি কতটা গুরুত্ব পেয়েছে এমন একটি আগ্রহ নিয়ে দেশটির গণমাধ্যমে চোখ বুলাচ্ছিলাম। অনেকটা হতাশই হলাম। তেমন কোনো সংবাদই চোখে পড়ল না। হঠাৎ নজর কাড়ে ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার একটি শিরোনামে।

‘সন্ত্রাস নিয়ে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা প্রণবের’Ñ এমন শিরোনামটি দেখে যে কারো মনে হবে এটি একান্তই ভারত-পাকিস্তানবিষয়ক একটি খবর। কিন্তু এই সংবাদটির মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার এই ৪২ বছরের মাথায় আরো একবার দিবালোকের মতো পরিষ্কার হয়ে গেল ভারত বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে নিষ্ঠার সাথে মেনে নিতে পারছে না।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রাণকেন্দ্র ব্রাসেলসে ইউরোপের এক টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া প্রণব মুখার্জির একটি সাাৎকার নিয়ে মূলত এই সংবাদ। সাাৎকারে পাকিস্তানের বিভিন্ন সমালোচনার একপর্যায়ে প্রণব মুখার্জি বললেন, ‘কিন্তু, ভারতের পে তার সার্বভৌমত্ব ুণœ হয় এমন কোনো সমঝোতা করা সম্ভব নয়। আর সীমান্তের ওপার থেকে সন্ত্রাসে মদদ দেয়াও বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। সিমলা চুক্তির পরে ১৯৭১ সালের যুদ্ধে বন্দী ৯১ হাজার পাক সেনাকে ছেড়ে দিয়েছিল ভারত।’

প্রণব মুখার্জির কথায় মনে হচ্ছে যেন ১৯৭১ সালে যুদ্ধ হয়েছিল ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। অথচ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ হলো আমাদের গৌরবগাথা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ঘটনা। ৩০ লাখ মতান্তরে তিন লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ, লাল-সবুজের পতাকা। ভারত আমাদের সেই যুদ্ধে সেনাবাহিনী, আশ্রয় এবং প্রশিণ দিয়ে সাহায্য করেছিল সেটি আমরা সবাই স্বীকার করি। এ জন্য অবশ্যই আমরা ভারতের কাছে কৃতজ্ঞ।

ইতিহাস সাী একাত্তরে প্রকৃত লড়াইটা হয়েছিল বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা ও পাক হানাদার বাহিনীর মধ্যে। যুদ্ধে হতাহতের জরিপ থেকেও তা অকাট্যভাবে প্রমাণিত এবং এটাই ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। লাখো মা-বোনের ইজ্জত ও শহীদের রক্তের বিনিময়ে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। এ যুদ্ধে ভারতের ভূমিকা কেবল আমাদের ‘অকৃত্রিম বন্ধু’ হিসেবেই মূল্যায়ন করা যায়। কিন্তু প্রণব মুখার্জির কথায় সেই যুদ্ধ যেন হয়েছিল ভারত ও পাকিস্তানের যুদ্ধ। তার এই বক্তব্য কি বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা ও ইজ্জত হারানো মা-বোনদের প্রতি অবমাননা নয়?

প্রণববাবু বলেছেন, সিমলা চুক্তির পরে ১৯৭১ সালের যুদ্ধে বন্দী ৯১ হাজার পাক সেনাকে ছেড়ে দিয়েছিল ভারত। পাকিস্তানি সেনারা হত্যা করল আমাদের দেশের লাখ লাখ মানুষকে, ইজ্জত নিলো আমাদের মা-বোনদের, আর তাদেরকে ছেড়ে দিলো ভারত। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে ছেড়ে দেয়ার ভারত কে? তাহলে বাংলাদেশের অস্তিত্ব থাকল কোথায়? অথচ আমরা জানি, সিমলা চুক্তি মূলত বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যেই হওয়া বাঞ্ছনীয় ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের প্রতি ভারতের ওই সময়ের সক্রিয় সহযোগিতার কারণে এবং ওই সময়ের বাস্তবতায় চুক্তিতে তিন দেশেরই স্বার থাকে এবং সে হিসেবে চুক্তিটিকে ত্রিদেশীয় চুক্তি হিসেবেই ধরা হয়। কিন্তু ভারত কিভাবে বলে যুদ্ধবন্দী পাকিস্তানের ৯১ হাজার সেনাবাহিনীকে ছেড়ে দিয়েছে ভারত?

শুধু কি তাই প্রণব মুখার্জি তার সাাৎকারে বলেন, ‘যুদ্ধে দখল করা ভূখণ্ডও ছেড়ে চলে এসেছিল ভারতীয় সেনা।’ তার মানে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে কিছু সেনা পাঠিয়ে বাংলাদেশকে যে সহায়তা ভারত করেছিল, সেটাকে আজো তারা বাংলাদেশের ভূখণ্ড দখলের সাথে তুলনা করে। আর সেই ভূখণ্ড ছেড়ে আসাকে তাদের উদারতা হিসেবে তারা বিশ্বময় এখনো প্রচার করে আসছে।

ভারতের এই মনোভাবের পরিপ্রেেিত অনেকেরই এমন ধারণা বদ্ধমূল হয়েছে যে, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশীদের যে প্রাণপণ লড়াই ও অকাতরে জীবন বিলিয়ে দেয়ার দৃশ্য ভারত দেখেছে তাতে ভীত হয়েই তারা এই ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল। শুধু উদারতা দেখিয়ে তাদের দখল করা একটি ভূখণ্ড তারা ছেড়ে দেবে এমন বক্তব্য সারা দুনিয়া বিশ্বাস করলেও অন্তত কোনো বাংলাদেশী বিশ্বাস করে না। ভারত যদি এতই উদার হতো তাহলে কাশ্মিরে যুগের পর যুগ এমন হত্যাযজ্ঞ ও জবরদখল চালাতো না দেশটি।

পরিশেষে সরকারের প্রতি একটি পরামর্শ রাখতে চাই। একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের উচিত ভারতীয় রাষ্ট্রপতির এ ধরণের বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানানো। অন্যথায় আমাদের মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাস এভাবেই কলঙ্কিত হতেই থাকবে আমাদের এই প্রতিবেশী বন্ধু দেশটির মাধ্যমে। যাদের বক্তব্যের শুরু ও শেষ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা দিয়ে, যাদের বক্তব্যের বেশির ভাগই থাকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান নিয়ে, সেই বর্তমান সরকার, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী ভারতীয় নেতার বক্তব্যের প্রতিবাদে কতটা মুখ খোলেন সেটাই এখন দেখার বিষয়।

??????????...
 
On India’s sudden interest to assist Bangladesh

M. Serajul Islam

The Independent – October 12, 2103

A couple of India’s most recent interactions with Bangladesh have raised both interest and eyebrows. Amidst great fanfare as if nothing was amiss between the two neighbours, the Prime Ministers of Bangladesh and India, over videoconference,

launched the transfer of 250MW of Indian electricity to the Bangladesh national grid. In the same videoconference, the two also laid the foundation of the Ramphal 2000 MW coal fired joint venture electricity project. The sale of electricity was welcomed because of its shortage in the country although some raised issue with its timing. The Ramphal project raised only eyebrows because it has become controversial in Bangladesh. Thus many have questioned India’s motives over its sudden interest in Bangladesh.

The questions have been raised because these developments have come after India wasted the best chance the two countries ever had to further bilateral interests to a new paradigm. Sheikh Hasina had set the direction for such a shift when she delivered to India two dreams it always expected from Bangladesh, namely, full cooperation on its security concerns and land transit that was offered on a trial basis. The Bangladesh Prime Minister took great political risks and showed vision to deliver to India these dreams. All India needed to do was to set its own house in order and deliver to Bangladesh the Teesta Water Sharing and LBA deals and keep its commitment for a zero tolerance on border killings that India could have done easily if it had shown even a part of the political will of the Bangladesh Prime Minister.

India’s failure to deliver the Teesta and LBA deals disappointed Bangladesh and pushed the AL led Government into a political tight spot. Even important Indians thought so. An IBN/CNN/The Hindu poll revealed that to Indians, Bangladesh is the country they could “trust” most. Analysts explained that respondents chose Bangladesh because they felt India had betrayed Bangladesh by failing to keep its promises after Dhaka went out of its way to please it.

New Delhi too realized that it had let Bangladesh down and had made serious efforts in recent times to deliver the deals. With Indian elections too close, the BJP and Trinamool refused to support the Congress led government in these efforts because they did not want to give the Congress political mileage.

Meanwhile, New Delhi’s failure to deliver the Teesta and the LBA deals has become a major election issue in Bangladesh. The reason is a simple one. In negotiating with India, the Bangladesh side trusted the Indians almost blindly. Bangladesh negotiators did not just bargain away Bangladesh’s two major playing cards with India; they did not even ask the Indians what they wanted in return.

They just assumed that India would deliver it and it would be an “embarrassment” to ask! In fact, often the Bangladeshi negotiators were more eager to protect Indian interests than theirs. They openly expressed contempt at those who cautioned about bargaining away the land transit and security cards without any guarantee or India’s intentions.

New Delhi did more damage to bilateral relations than just fail to deliver the deals. First, it did not alert Dhaka about its domestic problems with BJP and Trinamool leaving Dhaka to believe that the two deals would be handed to Bangladesh during the visit of the Indian Prime Minister to Bangladesh in September 2011. Second, when Trinamool and BJP put spanners on the deals, New Delhi assured Dhaka that the deal would be delivered “soon” leaving Bangladeshi Ministers to count in 2/3 months as the maximum delay for these to be handed to Bangladesh. In fact, the Bangladesh Ministers/ Advisers who should have expressed anger and frustration over New Delhi’s failures went to the media and stated that they understood New Delhi’s domestic compulsions over the two issues!

The last chance of the delivery of deals ended when Sheikh Hasina met the Indian Prime Minister on the sidelines of the United Nations in New York last month. There was media build up before that meeting on the two issues; the Indian Prime Minister would communicate some firm date of delivery. Instead, all Sheikh Hasina received from her Indian counterpart was a re-iteration that India stood committed to deliver the deals to Bangladesh. Thus, in dealing with Bangladesh, New Delhi did not just push the AL-led Government into a political tight spot; it pushed its own position in Bangladesh into an all-time low.

That was quite a contrast to the high expectations that Bangladesh negotiators had built about what it would get from India after Sheikh Hasina had made the bold and courageous moves with the security and land transit concessions.

In fact, had New Delhi been trustworthy and kept its promises, the two countries would have achieved more than the paradigm shift that Sheikh Hasina had envisioned. With India’s concessions on trade and the promise of Bangladesh becoming a connectivity hub of the region tied to the successful end of negotiations, even the BNP that New Delhi was wary about because of its anti-India stance had come around to take positive note of the direction that Bangladesh-India relations were progressing.

Begum Khaleda Zia visited India for talks with Indian leaders following an official invitation from New Delhi. Her talks were positive. She welcomed the negotiations of the AL led government with New Delhi but said that such negotiations must be based on reciprocity.

Thus many in Bangladesh believe that New Delhi took its recent initiatives out of a feeling of guilt for pushing the Awami League into a political corner with its failure to deliver the Teesta and the LBA deals. They feel that New Delhi has made these offers to show to the people of Bangladesh that the AL led government did the right thing in placing its trust on New Delhi. On the point of proving its trust to Bangladesh, the issue of sale of electricity has been positive. It has been welcomed because of the dire need of electricity in the country. Nevertheless, people have also questioned why New Delhi waited so long to do this good deed. The doubters were asking questions whether New Delhi did this good turn to Bangladesh or to the Awami League to help in the elections.

The issue of Ramphal qualitatively falls in a different category. India entered into this project with Bangladesh not just divided but also with all the environmental and civil society groups opposing it.

The BNP has not just said it would abandon the project if it came to power; it has accused the AL led government for offering Ramphal to India to woo it to support its plans to return to power through a one-party election. Thus, by going forward with the Ramphal project, the Indians have added a new item with which to disappoint the people of Bangladesh; a move that would make sense if only India was thinking of relations with the Awami League instead of Bangladesh.

If New Delhi took the two decisions to back the Awami League to encourage it to hold elections without the BNP, it could be a decision that it would regret. People of all shades of opinion in Bangladesh, except those in the ruling party, want the AL led Government to hold elections where the BNP would participate.

All of Bangladesh’s friends abroad also want that to happen. Therefore by supporting the AL instead of reasoning with it for “inclusive” elections, India would be going against the wishes of the rest of the people of Bangladesh who are in the majority, going against international opinion and against democracy because if the BNP were kept out of the national elections, those elections would be anything but democratic. In fact, if the eerie feeling among the public that India’s latest moves in Bangladesh have been designed to help the AL is correct, then New Delhi would in fact be assisting the Awami League to push Bangladesh towards the apocalypse.

On India
 
How can two deals for power from India can push Bangladesh towards apocalypse??Must be your nightmare???:D

If you have so much hate for AL then why bring it to power in the first place??
 
In case you didn't know,we ,as in sane Bangladeshi did not bring AL to power.ppl with brain cannot bring themselves to go to her level.it was pre plan,rigged,and well executed horrible misdeed by then some money grabbing,power hungry chu......t... Who were left in charge by some dumb a.. Ppl.:mad:
 
In case you didn't know,we ,as in sane Bangladeshi did not bring AL to power.ppl with brain cannot bring themselves to go to her level.it was pre plan,rigged,and well executed horrible misdeed by then some money grabbing,power hungry chu......t... Who were left in charge by some dumb a.. Ppl.:mad:
And now you have a chance to change that, by voting responsibly and exercising your fundamental democratic right. One is still left incapable of comprehending any link between the article/news-piece posted above and the opinions presented in it with the notion of Bangladesh's national interests being sold out to India.
 
What else can we expect from Awami League and Hasina. Six months after she came back to Bangladesh, Zia was dead and ever since then things went downhill bringing us to where we are today. Today is an important day in Bangladesh. Awami League tenure has ended, the govt. is officially no longer in power. I am waiting to see how the public reacts, whether they take all the illegal abuse from Awami League or say enough is enough and do something about this illegal election AL is planning, against the wishes of majority voters. If the public does nothing, then they deserve this b!tch and her army of goons.
 
What else can we expect from Awami League and Hasina. Six months after she came back to Bangladesh, Zia was dead and ever since then things went downhill bringing us to where we are today. Today is an important day in Bangladesh. Awami League tenure has ended, the govt. is officially no longer in power. I am waiting to see how the public reacts, whether they take all the illegal abuse from Awami League or say enough is enough and do something about this illegal election AL is planning, against the wishes of majority voters. If the public does nothing, then they deserve this b!tch and her army of goons.

If you are of the opinion that this is going to be an illegal election what other options do you propose. Govt. takeover by the army or a transitional caretaker govt of your liking???
 
bangladeshis can be easily termed the whine babies of South Asia .. if u do anything .. they would ramble ! If u don't then too ..
 
The delusions displayed by these bangladeshis is mind boggling ...... :D

They will find fault with everything and want to associate it with RAW and India .
 

Back
Top Bottom