????? ?????? ?????-??????????? ?????? ???? ????? ???? : ????? ????? ???????? ?? ????? ??? ??????? ?????????
তীব্র স্রোতে মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ
ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণের ২১ জেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
মাদারীপুর, শিবচর ও লৌহজং প্রতিনিধি
পদ্মা নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাওড়াকান্দি-মাওয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল গতকাল বিকাল থেকে বন্ধ ঘোষণা করেছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। এতে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এ নৌরুটটি কবে নাগাদ চলাচলের উপযোগী হবে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তাই বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটের সব পরিবহনকে দৌলদিয়া-আরিচা নৌরুট ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। কয়েক দিন ধরে ১৩টি ফেরির মধ্যে মাত্র ২টি রো রো ফেরি চলছিল। গতকাল সন্ধ্যায় ফেরি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়ায় পদ্মার দুই তীরে মাওয়া ও কাওড়াকান্দি ঘাটে ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজট লক্ষ্য করা গেছে।
এর আগে গতকাল সকালে ঢাকা-মাওয়া-খুলনা মহাসড়কে চলাচলকারী সব ধরনের বাস, ছোট গাড়ি ও মালবাহী ট্রাকসহ যাত্রীসাধারণকে ঢাকা-আরিচা রুটের পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়েছিল। নৌরুটের স্বাভাবিকতা ফিরে এলে ফেরি সার্ভিস চালু করা হবে বলে জানানো হয়। তবে আগামী ৭ দিন এ অবস্থা থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসি কাওড়াকান্দি ঘাট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রবল স্রোত, নাব্য সঙ্কট ও উজান থেকে নেমে আসা পলি মাটির কারণে সৃষ্ট ডুবোচরে মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটে পদ্মায় ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।
দুদিন ধরে প্রচণ্ড স্রোতের প্রতিকূলে গিয়ে মূল পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে মাত্র ৫০০ গজ পরিমাণ নদীপথ পার হয়ে মাওয়া পাড়ে ফেরি ঘাটের পন্টুনে ভিড়তে প্রায় ২ ঘণ্টা সময় লাগছিল। ফেরির ইঞ্জিনের সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করেও স্রোতের প্রতিকূলে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কারণে ২-৩টি সাহায্যকারী আইটি (উদ্ধারকারী জাহাজ

দিয়েও ঘাটে ভেড়াতে হিমশিম খেতে হতো ফেরির চালকদের। অবশেষে গতকাল বিকাল ৫টা থেকে সব ফেরি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এতে প্রতি ঘণ্টায় যানজট বেড়েই চলেছে।
রো রো বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন ফেরির মাস্টার ইনচার্জ ইয়াকুব আলী জানান, নদীতে প্রচণ্ড স্রোতের প্রতিকূলে গিয়ে মূল পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে মাত্র ৩০০ গজ পরিমাণ নদীপথ পার হয়ে মাওয়া ঘাটে ভিড়তে আধাঘণ্টার জায়গায় প্রায় ২ ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে। ফেরির ইঞ্জিনের সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করেও স্রোতের প্রতিকূলে এগিয়ে যেতে পারছে না। এ কারণে ২-৩টি সাহায্যকারী আইটি (উদ্ধারকারী জাহাজ

দিয়েও ঘাটে ভেড়াতে হিমশিম খাচ্ছে ফেরির চালকরা। পদ্মায় পানি বাড়ার ফলে স্রোতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকালে বিআইডব্লিউটিসি চেয়ারম্যান মো. মুজিবুর রহমান মাওয়া ফেরিঘাট এলাকায় পরিদর্শনে যান। এ সময় ফেরিচালক, বিআইডব্লিউটিসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে নদীপথের ব্যাপারে বিভিন্ন খোঁজখবর নিয়ে মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেন।
কাওড়াকান্দি ঘাটের সিনিয়র সহকারী ব্যবস্থাপক শাহনেওয়াজ চৌধুরী বলেন, ৫ দিন আগে থেকে তীব্র স্রোতের কারণে মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটে চলচলকারী এবং রায়পুরা, রানীক্ষেত, লেন্টিন, রামশ্রী ও যমুনাসহ ৭টি ডাম্প ফেরি বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্য ৬টি ফেরিও স্রোতের কারণে ঠিকমত চলতে পারছে না। তাই উভয় ঘাটে সহস্রাধিক যানবাহন আটকে পড়েছে।
মোবাইল ফোনে বিআইডব্লিউটিসি চেয়ারম্যান মো. মুজিবুর রহমান সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে ফেরির ইঞ্জিনের সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করেও স্রোতের প্রতিকূলে এগিয়ে যেতে পারছে না। কবে নাগাদ রুটটি ফেরি চলাচলের উপযোগী হবেএমন প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে কারও হাত নেই। এ দুর্যোগ কাটলেই ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হবে। তিনি আরও বলেন, এ নৌরুটের সা পরিবহনকে দৌলতদিয়া-আরিচা নৌরুট ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
পাঁচ্চর হাইওয়ে সার্জেন্ট মো. খালিদ জানান, স্রোতের কারণে ৫ দিন ধরে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এতে যানজট কোনোভাবেই কমছে না। প্রতি ঘণ্টায় যানজট বেড়ে চলেছে। এতে সাধারণ যাত্রীদের দীর্ঘপথ হেঁটে কাওড়াকান্দি ঘাটে পৌঁছতে হচ্ছে বা ঘাট থেকে হেঁটে এসে গন্তব্যের গাড়িতে উঠতে হচ্ছে। এ কারণে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এসব যাত্রী। তিনি আরও বলেন, ঘাটে তীব্র যানজট থাকলেও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা আমরা ঘটতে দেইনি। শৃঙ্খলা রক্ষা করে গাড়িগুলো ফেরিতে উঠাতে সাহায্য করছি।
বিআইডব্লিউটিসির কাওড়াকান্দি ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক আবদুল বাতেন জানান, পদ্মার পানি বেড়ে যাওয়ায় স্রোত বেড়ে গেছে। নাব্য সঙ্কটের কারণে গত রোববার কবুতরখোলা চ্যানেল বন্ধ হওয়ায় বর্তমানে লৌহজং-হাজরা চ্যানেল দিয়ে ফেরি চলাচল করছে। এতে নৌপথের দূরত্ব দুই কিলোমিটার বেড়ে গেছে আবার ফেরিগুলোকে তীব্র স্রোতের মুখোমুখি হয়ে চলতে হচ্ছে। এ কারণে পদ্মা পার হতে স্বাভাবিকের চেয়ে সময় বেশি লাগছে এবং যানজটের তীব্রতাও বাড়ছে।
বিআইডব্লিউটিসির ম্যানেজার বাণিজ্য শেখর চন্দ্র রায় নিশ্চিত করে জানান, কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই ফেরি সার্ভিস সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়েছে। যাত্রীবাহী যানগুলো ইচ্ছে করলে ফেরত যেতে পারে। ট্রাকগুলো ফেরি চলাচল শুরু হলে পারাপার হতে পারবে।
এদিকে গতকাল পর্যন্ত আটকে পড়া যানবাহনের লাইন আরও দীর্ঘ হতে থাকে। এতে গতকালও মাওয়া ও কাওড়াকান্দি উভয় পাড়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটে সহস্রাধিক যানবাহনকে পারাপারের অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে। ফেরিঘাটগুলোতে ভয়াবহ যানজট দেখা দেয়ায় দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে চলাচলকারী যাত্রীদের।