What's new

16th amendment illegal: SC

সরকার ভাবছে বিকল্প নিয়েও!
330154_1.jpg

19 Aug, 2017
ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা দেশের রাজনীতি, সংসদ, সামরিক শাসন, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি, সুশাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন তা ক্ষমতাসীনদের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে ।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) করতে সরকার প্রস্তুতি নিচ্ছে। একই সঙ্গে তার সম্ভাব্য ফলাফল কী হতে পারে এবং পর্যবেক্ষণের অনাকাঙ্খিত বক্তব্য এক্সপাঞ্জ না হলে তা আগামী দিনের রাজনীতিতে কী প্রভাব ফেলবে তাও খতিয়ে দেখছে আওয়ামী লীগ ও সরকার।

তবে আগে যেহেতু কখনো পর্যবেক্ষণের বিরুদ্ধে রিভিউ হয়নি এবং সাধারণত রিভিউতে আপিল বিভাগের রায়ে কোনো পরিবর্তন হয় না তাই প্রত্যাশিত রায় অর্থাৎ সরকারের দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণের 'আপত্তিকর' বক্তব্য প্রত্যাহার করা হবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান দলের আইনজীবী নেতারা।

দলটি মনে করছে, বিচার বিভাগের রায় দলিল হিসেবে রয়ে যায়। ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা দেশের রাজনীতি, সামরিক শাসন, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি, সুশাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন তা রাজনীতিতে দলিল হয়ে থাকবে। এতে ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সেজন্য যেসব বক্তব্য ক্ষতির কারণ হবে তা বিশ্লেষণ করে রিভিউ করা হবে এবং প্রত্যাহার করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।

দলীয় সূত্র জানায়, কোন কোন পর্যবেক্ষণের বিষয়ে রিভিউ করা হবে তা পর্যালোচনা করছেন দলের আইনজীবী বিশেষজ্ঞরা। এ নিয়ে দেশের খ্যাতনামা আইনজীবীদেরও পরামর্শ নেয়া হচ্ছে। পর্যবেক্ষণের যেসব বক্তব্যকে সরকার 'অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রাসঙ্গিক' মনে করছে সেসব বক্তব্যের বিশ্লেষণ করা হচ্ছে এবং তার বিপক্ষে রিভিউ পিটিশনে কী কী তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করা যাবে তা নিয়েও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। কোন কোন পর্যবেক্ষণ অনাকাঙ্ক্ষিত তবে তা এক্সপাঞ্জ না হলেও ক্ষতি নেই। তারও বিশ্লেষণ হচ্ছে। এর মধ্যে যেসব পর্যবেক্ষণে নিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে সেগুলোকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে পর্যালোচনা হচ্ছে।

দলের একাধিক সূত্র জানায়, মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা এবং সংসদ নিয়ে রায়ে যেসব পর্যবেক্ষণ দেয়া হয়ে তা সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হবে রিভিউতে। কারণ পর্যবেক্ষণে সংসদকে 'ইমম্যাচুউরড বা অপরিপক্ব' বলায় তা আগামী নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছে আওয়ামী লীগ। নেতারা জানান, বিএনপি এমনিতেই বর্তমান সংসদকে অবৈধ বলে প্রচারণা চালায়। এরপর সংসদ নিয়ে বিচার বিভাগের এমন পর্যবেক্ষণ আগামী নির্বাচনের প্রচারণায় ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। তাই এ বিষয়টি রিভিউতে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হবে এবং এই পর্যবেক্ষণ প্রত্যাহারের জন্য সব ধরনের যুক্তিতর্ক ও তথ্যপ্রমাণাদি উপস্থাপন করা হবে। আর মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা নিয়ে যা বলা হয়েছে সে বিষয়ে দুই ধরনের মত আওয়ামী লীগের আইনজীবীদের। এক পক্ষ বলছেন, ক্ষুদ্র পরিসরে দেখলে মনে হয় বঙ্গবন্ধুকে খাটো করা হয়েছে। কিন্তু আসলে তা নয়, তাই এ নিয়ে রিভিউর দরকার নেই। আরেক পক্ষ বলছেন বঙ্গবন্ধুকে খাটো করা হয়েছে ও ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে সেজন্য রিভিউ করতে হবে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের সূত্র জানায়, সাতজন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত দেশের সর্বোচ্চ আদালত রায় দিয়েছে; এটি একক রায় নয়; তাই রিভিউ হলেও রায়ের পর্যবেক্ষণ পরিবর্তনের সম্ভাবনা খুবই কম। রাজপথে আন্দোলন কর্মসূচি বা প্রতিক্রিয়া দেখানোর বিষয়ে একাধিক আইনজীবী জানান, আইনি প্রক্রিয়ায় এগোতে হবে। তবে প্রত্যাশিত রায় অর্জনের সম্ভাবনা কম। তাই আন্দোলনের মাধ্যমে পারিপাশ্বর্িক চাপ সৃষ্টিরও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

এছাড়া এই সময়ে বিএনপি যাতে কোনো ধরনের রাজনৈতিক ফায়দা নিতে না পারে সে জন্য রাজপথে দলের শক্ত অবস্থান জরুরি। সেজন্য রায়ের ত্রুটিপূর্ণ দিকগুলো নিয়ে জনমত তৈরি করা হচ্ছে। যাতে বিএনপি জনমনে আওয়ামী লীগ বিরূপ কোনো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে না পারে। এছাড়া রিভিউতে যদি পর্যবেক্ষণের পরিবর্তন হয় তাহলে বিএনপি যাতে বলতে না পারে যে, গায়ের জোরে রায় পরিবর্তন হয়েছে এবং তা পুঁজি করে যেন রাজনীতি না করতে পারে সে কৌশলও নির্ধারণ করা হবে।

সূত্র জানায়, রায়ের ত্রিশ দিনের মধ্যে রিভিউ করতে হয়। এ হিসেবে রিভিউ করার শেষ সময় ৩ সেপ্টেম্বর। অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে রিভিউ করার বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে গ্রিন সিগনাল দেয়া হয়েছে। তবে কবে রিভিউ করা হবে এ বিষয়েও নির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই।

রিভিউ করার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য আব্দুল মতিন খসরু যায়যায়দিনকে বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো তারিখ ঠিক করা হয়নি।

তবে রিভিউ করলেও সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে প্রত্যাহার করার মতো কোনো বক্তব্য দেখছেন না সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেন। এক সময়ের আওয়ামী লীগ নেতা ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী কামাল হোসেন আলোচিত এই মামলাটির আপিলের শুনানিতে অ্যামিকাস কিউরিয়া হিসেবে ষোড়শ সংশোধনীর বিপক্ষে মত রেখেছিলেন।

ড. কামাল হোসেন বলেন, ৭৯৯ পৃষ্ঠার ওই রায়ের প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণের অংশটুকু এরই মধ্যে তিনবার পড়েছেন তিনি। এর মধ্যে একটি শব্দও এক্সপাঞ্জ করার মতো পাননি এবং এর মধ্যে এক্সপাঞ্জ করার মতো কিছু নেই।

তবে আওয়ামী লীগ নেতারা দাবি করেছেন, এই রায়ের মধ্য দিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে খাটো করা হয়েছে। এ বিষয়ে কামাল হোসেন বলেন, 'উনি (প্রধান বিচারপতি) যেটা বলেছেন 'একক'। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন অনুযায়ী সেখানে এককের কথা বলা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন অনুযায়ী এই দেশটা কোনো এক ব্যক্তির কাছে থাকবে না। এটা তো বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে বলা হচ্ছে না। এটা তো বঙ্গবন্ধুরই কথা।'

রায়ে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার পর্যবেক্ষণের অংশে বলা হয়েছে, 'কোনো জাতি বা রাষ্ট্র একজন ব্যক্তিকে নিয়ে বা একজন ব্যক্তির মাধ্যমে সৃষ্টি হয় না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নের কথা বলে গেছেন, আমরা যদি সত্যিই তা বাস্তবায়ন করতে চাই, আমাদের অবশ্যই আমিত্ববোধের ওই আত্মঘাতী উচ্চাকাঙ্ক্ষা আর আসক্তি থেকে মুক্ত থাকতে হবে যে, কেবল একজন ব্যক্তি বা একজন মানুষই সব করেছে।'

এদিকে শাসক দলের একটি সূত্র জানায়, রায় নিয়ে বিচার বিভাগের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়াতে চায় না সরকার। সমঝোতার ভিত্তিতে কাজ করতে চায় তারা। তাই রায়ের বিষয়ে বিচার বিভাগকে সরকারের অবস্থান জানাতে ১২ আগস্ট প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বাসায় নৈশভোজে অংশ নেয়ার পর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, 'প্রধান বিচারপতির বাসায় গিয়েছিলাম। তার সাথে আমার দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়েছে। ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে যে পর্যবেক্ষণ বা অবজারভেশন ছিল তা নিয়ে আমাদের পার্টির বক্তব্য জানিয়েছি। আরও অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে দীর্ঘক্ষণ। আরও আলোচনা হবে। আলোচনা শেষ হয়নি। সময় হলে আপনারা সব কিছু জানতে পারবেন। আমিও বলব।'

একদিন পর ১৪ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ওবায়দুল কাদের। ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা বিনিময় করতে সনাতন ধর্মাবলম্বীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে সেদিন সকালে বঙ্গভবনে গিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি।

এরপর ১৭ আগস্ট রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাত করেন। এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ষোড়শ সংশোধনীর রায় সম্পর্কে সরকার ও দলীয় অবস্থান রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করা সরকার ও দলীয় প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব।

এদিকে প্রধান বিচারপতি ও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সরকারের বৈঠককে গায়ের জোরে রায় পাল্টানোর চেষ্টা হিসেবে দেখছে বিএনপির। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, 'আমরা শুধু এইটুকুই বলতে চাই, অন্যায়ভাবে জোর করে, জবরদস্তি করে যে কাজ করানোর প্রচেষ্টা আমরা দেখতে পারছি, আজকে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের যে হুমড়ি-তুমড়ি ও রাগে ক্ষোভে দুঃখে তাদের যে তৎপরতা আমরা দেখতে পারছি ক্রমাগতভাবে, এটা আর চলবে না। সেদিন শেষ হয়ে গেছে।'

তবে ষোড়শ সংশোধনীর রায় পরিবর্তন করতে সরকার প্রধান বিচারপতির ওপর চাপ প্রয়োগ করছে- বিএনপির অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'কে কাকে চাপ দিয়ে কী করছে? এই গুজব কোথা থেকে আসছে? ওই পদের কাউকে চাপ দিয়ে কিছু করানো যাবে? এই কথা বলে তো তাদের ছোট করা হচ্ছে।' এছাড়া রায় নিয়ে সরকারে কোনো অস্থিরতা নেই বলেও জানান কাদের।

রিভিউয়ের জন্য তৈরি

হচ্ছে সরকার: মন্ত্রী

এদিকে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে সরকার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

শুক্রবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'রায়ের সত্যায়িত কপির জন্য আবেদন করা হয়েছে। রায় ভালোভাবে পড়া হচ্ছে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই রিভিউ আবেদন করা হবে।'

'রায়ে অপ্রাসঙ্গিক কথা আছে। রিভিউয়ে সেগুলোও আসবে। সরকার তার জন্য তৈরি হচ্ছে। প্রকাশিত রায় এখন পাবলিক ডকুমেন্ট। যে ভাষায় বা যে প্রতিক্রিয়ায় আদালত অবমাননা না হয়, সেভাবেই রায়ের বিষয়ে সমালোচনা করা উচিত অথবা প্রতিক্রিয়া দেখানো উচিত।'

এর আগে গত ১০ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে রায়ের পর্যবেক্ষণে জাতীয় সংসদসহ বেশ কিছু বিষয়ে 'অগ্রহণযোগ্য ও অপ্রাসঙ্গিক কথা' এসেছে জানিয়ে তা 'এক্সপাঞ্জ' করার উদ্যোগ নেয়া হবে বললেও তখন রিভিউয়ের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু বলেননি মন্ত্রী।

এবার রিভিউ আবেদনে সেইসব 'অগ্রহণযোগ্য ও অপ্রাসঙ্গিক কথা'র বিষয়ে আলোকপাত করা হবে বলে জানান আনিসুল হক।

উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিতে করা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি গত ১ অগাস্ট প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট।

উৎসঃ যায়যায়দিন

http://www.mzamin.com/
 
.
জনগণ প্রত‍্যাখান করেছে এটা নিশ্চিত করে বলা কঠিন, কয়েকজন মন্ত্রী এমপির লাগামহীন মন্তব্য তা প্রমাণ করে না।

প্রয়োজনে গনভোটের ব‍্যাবস্হা করা যেতে পারে যদিও তার প্রভিশন সংবিধান থেকে তুলে দেয়া হয়েছে।

তারপরও যদি সকালের ঐক‍্যমতের ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধন করে একটি গনভোটের মাধ্যমে এ বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং তাতে যদি সরকারের অবস্থানের বিজয় হয় তবে সেটা হবে সরকারের সত্যিকারের রাজনৈতিক বিজয়, তাতে ২০১৪ বিতর্কিত নির্বাচনের কালিমা থেকেও সরকার কিছুটা হলে মুক্ত হবেন।


ষোড়শ সংশোধনীর রায়: রাষ্ট্রপতির দিকেই তাকিয়ে আ. লীগ
পাভেল হায়দার চৌধুরী২২:৪৬, আগস্ট ১৮, ২০১৭
fc72203ed463855894f75c5f81b399a0-.jpg

ষোড়শ সংশোধনীর আপিলের রায় নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনের জন্যে এখন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হমিদের দিকেই তাকিয়ে আছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

দলটির শীর্ষ স্থানীয় কয়েকজন নেতা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘রায় ও পর্যবেক্ষণ নিয়ে আমাদের অবস্থান রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে অবহিত করেছি। বাংলাদেশের জনগণ এ রায় মেনে নেয়নি, সেটাও জানিয়েছি। এখন জাতির অভিভাবক হিসেবে রাষ্ট্রপতি এর সমাধান দেবেন বলে আশা করছি।’

তারা জানান, রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে এই সুযোগ রয়েছে। প্রধান বিচারপতিও রায় রি-কল করে অথবা সুয়োমুটো করে একটা সমাধানে আসতে পারেন। আমরা চাই গ্রহণযোগ্য সমাধান।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জনগণ ষোড়শ সংশোধনীর রায় প্রত্যাখ্যান করেছে। আমরা তা রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেছি। এখন নিশ্চয়ই সমাধান করবেন তিনি।’

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমরা মনে করি, রাষ্ট্রপতি ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার সমাধান করবেন।’

ক্ষমতাসীন দলের নীতি নির্ধারণী সূত্রগুলো জানায়, রায় নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসন করতে প্রধান বিচারপতিকে রায় রি-কল করার পরামর্শ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।

জানা গেছে, প্রধান বিচারপতির এখতিয়ার রয়েছে রায় রি-কল করার। এরই অংশ হিসেবে, পর্যবেক্ষণ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে যে তোলপাড় চলছে,প্রধান বিচারপতি রি-কলের মাধ্যমে তা নিরসন করতে পারেন। তিনি বলতে পারেন, রি-কলের প্রয়োজন পড়েছে। এবং এর মাধ্যমে পর্যবেক্ষণে থাকা অস্পষ্টতা দূর করা হবে। যদি কোনও অপ্রাসঙ্গিক বিষয় থাকে, সেটাও বাদ দেওয়া যেতে পারে রি-কলের মাধ্যমে।

আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা বলছেন, ‘এটাই এখন সমাধানের একমাত্র সহজ পথ। এছাড়া বিকল্প পথগুলো জটিল।’

জানা গেছে, আওয়ামী লীগও চাইছে, প্রধান বিচারপতির রি-কল করার মাধ্যমে আপাতত পর্যবেক্ষণগুলো নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা দূর করা হোক। রায় নিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আর রিভিউ করার মধ্যদিয়ে সুফল পাওয়া যাবে, এমন নিশ্চয়তা পেলে রিভিউ করা হবে।

সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় চাচ্ছে, যিনি বা যারা রায় নিয়ে বিশেষ পরিস্থিতি তৈরির মাধ্যমে অস্থিরতা সৃষ্টির করে, সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চেয়েছেন, তারাই এর সমাধান করবেন। সমাধান না হওয়া পর্যন্ত দলীয় অবস্থান থেকে সরবে না তারা। এই নিয়ে প্রধান বিচারপতি অনড় অবস্থানে থাকলে আওয়ামী লীগের প্রত্যাশা, দেশের অভিভাবক হিসেবে রাষ্ট্রপতি এ সমস্যার সমাধান বের করবেন।


আরও পড়ুন: ষোড়শ সংশোধনীর রায়: বিকল্প নিয়েই বেশি ভাবছে সরকার
http://www.banglatribune.com/politics/news/235021/ষোড়শ-সংশোধনীর-রায়-রাষ্ট্রপতির-দিকেই-তাকিয়ে-আ.-লীগ
 
.
Controversies over the Judgement should End
রায় নিয়ে বিতর্কের অবসান হোক
বখতিয়ার উদ্দীন চৌধুরী১৪:৪৪, আগস্ট ১৮, ২০১৭
20aed4c4ea4dd70fa84facd0a37201a3-585b8fa12051b.jpg

১৬তম সংশোধনীর রায় নিয়ে দেশে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগ আর বিএনপি উত্তেজনা সৃষ্টির খোরাক পেয়েছে এ রায়ে। ৭৯৯ পৃষ্ঠার রায়। এ রায় পড়তেও ক্লান্তি আসে।

হাইকোর্ট সার্টিফিকেট দিয়েছিলো সংবিধানের আর্টিকেল ৯৬ প্রযোজ্য হবে কিনা, সাংবিধানিক হবে কিনা? নিয়ম অনুযায়ী হাইকোর্ট যে অংশটুকু সার্টিফিকেট দিয়েছে সে অংশটুকুর শুনানি এবং রায় ছিল সুপ্রিম কোর্ট থেকে প্রত্যাশিত। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তা না করে বহু কাহিনির অবতারণা করে এক রায় দিয়েছেন। তাতে দেশের দুই ডমিনেন্ট পার্টি মর্মাহত হওয়ার আর অহ্লাদিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে।

বিএনপি এ রায়ে তাদের আনন্দ প্রকাশের কী পেয়েছে জানি না; মাননীয় প্রধান বিচারপতি রায়ে জেনারেল জিয়া এবং জেনারেল এরশাদকে অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী বলে উল্লেখ করেছেন এবং বিদ্রুপ করে বলেছেন তারা 'ব্যানানা রিপাবলিকের' প্রতিষ্ঠাতা। 'অবৈধ পিতার' 'অবৈধ সন্তান' হচ্ছে বিএনপি।

রায়ে সর্বমোট শেখ সাহেবের নাম এসেছে ১১ বার। বঙ্গবন্ধু শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে নয় বার। আবার রায়ের বয়ানে শেখ সাহেবকে জাতির জনক বলে উল্লেখ করা হয়েছে ৩ বার।

রিপোর্টাস ইউনিটিতে আইনমন্ত্রী বলেছেন, ‘কোনও একক ব্যক্তির নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি’ এ কথাটা অপ্রাসঙ্গিক এবং ইতিহাস বিকৃতির সমান। সম্ভবতো আওয়ামী লীগের সব আপত্তির মূলে হচ্ছে এটাই। অবশ্য রায়ে বলা হয়েছে, ‘কোনও জাতি- কোনও দেশ একজনের দ্বারা তৈরি হয়নি। যদি আমরা সত্যিকার অর্থে আমাদের জাতির পিতার সোনার বাংলার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই, আমাদের অবশ্যই ‘আমিত্বের’ আত্মঘাতী আকাঙ্ক্ষা এবং আসক্তি থেকে মুক্ত থাকতে হবে- এক ব্যক্তি বা একজন সব কিছু করেছেন এমন।’ সম্ভবতো আওয়ামী লীগের আপত্তির কারণ এখানে।

প্রধানমন্ত্রী রায়ের আপত্তিকর কথাগুলোর বিরুদ্ধে জনমত গঠনের জন্য সবাইকে সরব হতে বলেছেন। এখন সবাই বক্তব্য দিচ্ছেন ১৬তম সংশোধনীর সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে। বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল ১৩ আগস্ট ২০১৭। তারা সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় সমাবেশ করেছেন। সারাদেশব্যাপী বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ কর্মসূচি পালন করেছে ১৫ আগস্ট মঙ্গলবার পর্যন্ত।

হাইকোর্টের অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস বলেছেন, ১৬তম সংশোধনীর সুপ্রিম কোর্টের এই রায় নাকি লিখে দিয়েছেন বাইর থেকে কোনও এক ইংরেজি পত্রিকার সম্পাদক। এ কথা বলে ব্যারিস্টার তাপস সুপ্রিম কোর্টের ভিত্তি মূলে শুধু আঘাত করেননি, তিনি বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার ভিত্তি ‘এক বাক্যে ধ্বংস করে দিলেন’। সুপ্রিম কোর্টের মর্যাদাকে গ্রাম্য সালিশী আদালতের পর্যায়ে নিয়ে গেলেন।

তাপসেরা দেশের আইন আদালত ধ্বংস করে দিতে উদ্ধত হলেন কেন? জাতির আইন আদালত ধ্বংস হয়ে গেলে জাতি বেঁচে থাকবে কিসের ওপর ভিত্তি করে! অরাজকতার মাঝে তো জাতির বিনাশ হবে। আদালত বিনাশ হয়ে গেলে আইনের সার্বভৌম শক্তির পাহারা দেবে কে? রক্ষণাবেক্ষণ করবে কে? রাষ্ট্রের সার্বভৌম শক্তির মালিক হবে আইন, ব্যক্তি নয়। কারণ ব্যক্তির মধ্যে আবেগ, ইচ্ছা, অনিচ্ছা আছে। ব্যক্তির শাসন হচ্ছে আবেগের তথা প্রবৃত্তির শাসন। আর আইনের শাসন হচ্ছে যুক্তির শাসন। আদালত ভণ্ডুল হয়ে গেলে আর আদালত টিউডর যুগের ‘কোর্ট অব স্টার চেম্বার’-এর মতো হয়ে গেলে আইনের শাসনতো উচ্ছেদ হয়ে যাবে।

আমরা সবিনয়ে অনুরোধ করব প্রধানমন্ত্রী যেন আওয়ামী লীগের নেতাদেরকে সুপ্রিম কোর্টের বিরুদ্ধে নেওয়া অবস্থান থেকে বিরত করেন এবং রায়ে অহেতুক কোনও বক্তব্য যদি থাকে তা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য আবেদন পেশ করেন। কোর্টকে অনুরোধ করবো অতি দ্রুত যেন অতিরিক্ত কথা যদি রায়ে থাকে তা যেন এক্সপাঞ্জ করে ফেলেন।

ইন্দিরা গান্ধীকে নির্বাচনি মামলায় যখন এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি জগমোহন লাল সিনহা এক রায় দিয়ে রায়বেরেলি কেন্দ্রে আনসিটেড করে দিলেন তখন ইন্দিরা গান্ধী পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু সিদ্ধার্থ শংকর রায়ের কু-পারমর্শে তিনি সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছিলেন তখন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ছিলেন অনাদি নাথ রায় যাকে ইন্দিরা গান্ধী তিনজন সিনিয়র জজকে ডিঙিয়ে প্রধান বিচারপতি করেছিলেন।

কুলদ্বীপ নায়ার তার এক বইতে লিখেছেন জগমোহন লাল সিনহাকে নাকি রায়ের আগে ইন্দিরা গান্ধী ৫ লাখ টাকা দিতে চেয়েছিলেন এক এমপির মাধ্যমে সে প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছিলো। শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী রায় ঠেকাতে গিয়ে সিদ্ধার্থের কুপরামর্শে এতো অনিয়মে জড়িত হয়ে গিয়েছিলেন যে শেষ পর্যন্ত ১৯৭৭ সালের নির্বাচনে তার ব্যাপক ভরাডুবি হয় খোদ রায়বেরেলিতে তিনি নিজেই পরাজিত হন। এরপরে তিনি সিদ্ধার্থকে যেখানে দেখেছেন তাকে তিরস্কার করেছেন।

১৯৮০ সালের নির্বাচনে জিতে ইন্দিরা গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হয়ে লন্ডন যান তখন সাংবাদিকেরা জিজ্ঞেস করেছিলেন এতো ঝামেলা সৃষ্টি করে আপনার লাভ হয়েছিলো কি? তখন শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী বলেছিলেন লাভ হয়েছে জনতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিলাম। আর ক্ষমতা থেকে দূরে সরে গিয়েছিলাম। আমরা শুধু শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর ঘটনা জানি। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ঘটনাও জানেন ইন্দিরা গান্ধীকেও জানেন সুতরাং লম্বা কাহিনি বলার প্রয়োজন নেই।

প্রধানমন্ত্রীকে শুধু অনুরোধ জানাবো যেন বিচার ব্যবস্থার মর্যাদা ভুলুণ্ঠিত হওয়ার হাত থেকে বিচার ব্যবস্থাকে রক্ষার যেন উদ্যোগ নেন। একটা রায়ের জন্য একটা বিচার ব্যবস্থার মর্যাদা শেষ হয়ে যাওয়া কঠিন ব্যাপার।
বিচার ব্যবস্থাকে ফুটবল বানানো ঠিক হবে না। আওয়ামী লীগ দেশের বৃহত্তম দল আবার ক্ষমতাসীন। সুতরাং কোর্টকে স্তব্ধ করে দেওয়া তার পক্ষে খুবই সহজ। কোর্টকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করলে সভ্যতার পতন হবে।
কোর্ট কোর্টই। কোর্ট বিপ্লবের সূতিকাগৃহ নয়। সুতরাং কোর্টের বিপ্লবাক্তক চরিত্র কখনও কাম্য হতে পারে না। রায় প্রকাশের কয়দিন আগে প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, 'এখন আমিও রাজনীতি করা শুরু করবো'। ত্রিপিটকে পড়েছি, ‘লৌহজাত দ্রব্য হতে উৎপন্ন মরিচা যেমন লৌহকেই নষ্ট করে ফেলে। সেরূপ নীতিধর্ম অতিক্রমকারী ব্যক্তিকে নিজকৃত দুষ্কর্ম সকল দুর্গতিতে নিয়ে যায়'।

আমিত্ব তুমিত্ব নিয়েও রায়ে অনেক কথা বলা হয়েছে। রায় উপদেশ বিতরণের জায়গা নয়। উপদেশ দিতে নেই। কথা বলারও একটা আর্ট আছে, সেটা আয়ত্তে না আসলে কথা বলে অন্যকে আনন্দ দেওয়া যায় না। আমরা আশা করবো সব পক্ষ রায় নিয়ে বিতর্ক শেষ করে দেবেন। পদক্ষেপ নিতে কোনও পক্ষই কুণ্ঠাবোধ করবেন না।


লেখক: রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কলাম লেখক
http://www.banglatribune.com/columns/opinion/234871/রায়-নিয়ে-বিতর্কের-অবসান-হোক

সত্যিই এর গঠনমূলক, জাতির জন্য মঙ্গলজনক এবং সুদুরপ্রসারী অবসান হোক।

Shamsul Alam

একটা রায়ের পর্যবেক্ষণ নিয়ে সরকারের এত অস্থিরতা কেনো? সবকিছু উলট পালট করে দেয়ার এমন প্রাণপণ চেষ্টা কেনো? রায় দিয়েছে বলে প্রধান বিচারপতিকে খেয়ে ফেলতে হবে, তাঁর গুষ্টিনাশ করতে হবে? কেনো? বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে তো পঞ্চম সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছিল হাইকোর্ট- তখন কি বিএনপি এমন তুলকালাম করেছিল? অথচ ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে দেয়া রায়ের পরে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে চেলাচামুন্ডারা পর্যন্ত যে ভাষায় প্রধান বিচারপতিকে আক্রমন করেছে, মনে হচ্ছে এরা বুঝি খিস্তি খেউড় কম্পিটিশনে নেমেছে, কার চেয়ে বেশী কে গালিগাজ করতে পারে।

রায়ে ক্ষতিগ্রস্থ পক্ষ হয়ে প্রধান বিচারপতির বাড়িতে ঢুকে রায় বদলাতে অনুরোধ করে শাসক দলের জেনারেল সেক্রেটারী যে নজীর স্থাপন করলেন, এটা বিচার সিস্টেমের কোথায় আঘাত করলো, তা কি ভেবে দেখেছেন কেউ? ভবিষ্যতে অন্যরা যদি এমন করে, তখন? হালকা ধমকে কাজ না হওয়ায় প্রধান বিচারপতিকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ব্যবহার করে ডাকিয়ে নিয়ে গেলেন বঙ্গভবনে, সেখানেও একই আবদার। অতঃপর ম্যান্ডেটহীন সরকারের প্রধান নিজে দলবল সহ রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়ে প্রয়াস চালালেন- বিচার বিভাগের প্রধানের চাকরিটা খেয়ে ফেলতে। ব্যর্থ হয়ে এখনও ওটা করতে চলছে নানা অকাজ কুকাজ অপচেষ্টা। এসব কান্ডকীর্তি করে কি ধারনা দিলেন ক্ষমতাসীনরা- বিচার মানি, তালগাছ আমার হলে! আর যদি তালগাছ অন্যের ভাগে পড়ে, তবে বিচারকের মুন্ডপাত করা হবে? এভাবে কি দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো সব ভেঙ্গে ফেলবেন? এটা কি সভ্য সমাজের প্রতিচ্ছবি? এরা কি সামম্ত যুগে নিয়ে যেতে চায় দেশ?

দেশের অর্ধেক যখন পানির তলায়, কয়েক কোটি মানুষ না খেয়ে আশ্রয়হীন, তখন সরকারের মন্ত্রি আমত্য সান্ত্রিগণ রায়ের পর্যবেক্ষণ নিয়ে অযথা বাগযুদ্ধে দেশ মাতিয়ে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছেন! অনেকে কিন্তু রায়টা পড়েও নাই, জানেও না কোথায় কি আছে। কিন্তু শ্লোগান ধরেছে... মানি না মানব না; কি মানেন না....জানি না জানব না! এদের ভাবটা এমন যে.... কিসের বন্যা? কোথায় বন্যা? পাবলিক আবার কারা? কষ্ট করে ত্রাণ নিয়ে কেনো যেতে হবে পাবলিকের কাছে? ভাত নেই তো কি হয়েছে. পোলাও খেয়ে থাকুক! আসলে ৫ জানুয়ারির পরেই দেশের অন্যতম বৃহত্তম দল আ’লীগকে এই নতুন ব্যামোতে ধরেছে- সরকারে যেতে পাবলিক লাগে না, তাই এদের প্রতি আমাদের কোনো দায়িত্বও নেই। কিন্তু সত্যিই কি রাজনীতি করতে আর কখনও পাবলিক লাগবে না? এই অবস্থার কি পরিবর্তন হবে না, নিশ্চিত?

সব কিছু যেভাবে তালগোল পাকাচ্ছে, তাতে আগুণের ধোয়া দেখতে পাচ্ছে মিডিয়া ও বিশেষজ্ঞরা- সাংবিধানিক সংকটের দিকে যাচ্ছে দেশ, জটিল থেকে জটিলতর সচ্ছে সংকট, অসাংবিধানিক সরকার হাতছানি দিচ্ছে, বলছেন বিশিষ্ট জনেরা। তবে কি এদের সুখে থাকতে ভুতে কিলালো?

20914240_10156710871408636_4272285252338984687_n.jpg
 
.
Qamrul Islam
প্রধান বিচারপতির সাথে হাসিনার ক্যাচালের মূল কুশিলব হচ্ছে আইন সচিব জহিরুল হক দুলাল।
মূলত নানা বিষয় নিয়া প্রধান বিচারপতি সিনহার সাথে সচিব দুলালের বিরোধ চলছে অনেকদিন।
প্রধান বিচারপতির সাংবিধানিক ক্ষমতার ওপরে বিভিন্ন সময়ে হাত বসিয়ে বিচারপতি সিনহাকে ত্যাক্ত বিরক্ত করে ফেলেছে দুলাল।
সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে লোয়ার জুডিশিয়ারির নিয়ন্ত্রণকারী অথরিটিট সুপ্রীম কোর্ট।
কিন্তু সরকার এটা দিতে রাজী নয়।
আপীল বিভাগ শত বার চেষ্টা করেও সরকারকে দিয়ে এ সংক্রান্ত বিধি প্রণয়ন করতে পারেনি।
টালবাহানা করে রাষ্ট্রপতির নামে অযুহাত খাড়া করে এখনও বিধি প্রণয়ন করেনি। আসলে সরকার চেষ্টা করছে বিচারপতি সিনহার অবসরের।
এই ১১৬ অনুচ্ছেদ কার্যকর হলে কোর্টের উপর সরকারের মাস্তানি বন্ধ হয়ে যাবে।
তাই দুলাল হাসিনাকে বুঝিয়েছে আপীল বিভাগ যত কিছুই করুক না কেনো, ১১৬ অনুচ্ছেদ মোতাবেক সুপ্রীম কোর্টের অধীনে নিম্ন আদালতেকে দেয় যাবে না। আর এই লোয়ার জুডিশিয়ারি নিয়ে ক্ষমতার কামড়াকামড়ি গড়িয়েছে ষোড়শ সংশোধানী বাতিল এবং প্রধান বিচারপতিকে অপসারনের প্রচেষ্টা, আবার প্রধান বিচারপতিরও অবৈধ সংসদ ও সরকারের গদি ধরে টান দিয়েছে।


Ya Allah. You have placed some fantastic logic here and it totally makes sense. This man should be fired immediately and brought to justice. I just read an article where it said that PM's nephew Taposh,MP is defending this guy. Obviously, that somewhat raises suspicion that Hasina is behind this thug as well. Why are the cops not arresting this guy? Here is their opportunity to show that they are not as bad (and/or partisan) as the world thinks they are.

বিচারপতিকে অস্ত্র হাতে হুমকি দিতে গিয়ে ধরা পড়লেন আইন সচিব দুলাল (ভিডিও)
Bikash_Mahbub-copy-1024x397-780x397.jpg

বিচারপতিকে অস্ত্র হাতে হুমকি দিতে গিয়ে ধরা পড়লেন আইন সচিব দুলাল (ভিডিও)

কে সন্ত্রাসী আইন সচিব দুলাল?
সাবেক ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী থেকে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব বনে যাওয়া আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক দুলালের একটি এক্সক্লুসিভ ভিডিও আমাদের কাছে এসেছে। একজন বিচারপতির বাসার সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণকৃত সেই ভিডিওতে দেখা যায় সন্ত্রাসী দুলাল এবং তার সহযোগি আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম-সচিব(প্রশাসন-১) বিকাশ কুমার সাহা পিস্তল হাতে নিয়ে একটি মামলায় তাদের পছন্দমত রায় দেবার জন্য সেই বিচারপতিকে ভয় দেখাচ্ছে।
জানা যায় এভাবে এই দুলাল প্রতিদিনই বিভিন্ন নিম্ন এবং উচ্চ আদালতের বিচারকদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন মামলার রায় নিজের পছন্দমত দিতে বাধ্য করে। আদালতে বিচারাধীন মামলার কোন একটি পক্ষের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহন করে কিংবা অবৈধ সরকারের স্বার্থ রক্ষার জন্য সে নিয়মিতই বিভিন্ন বিচারপতিকে ফোন করে ভয় ভীতি দেখিয়ে থাকে। অনেক সময় সে নিজেই রায় লিখে বিচারপতিদের কাছে পাঠিয়ে দেয়। কোন বিচারপতি দুলালের আদেশ মানতে গড়িমশি করলে সে নিজে কিংবা তার অপকর্মের দুই সহযোগি বিকাশ কুমার এবং আইন ও বিচার বিভাগের আরেক উপ-সচিব (প্রশাসন-১) মোঃ মাহবুবার রহমান সরকার অস্ত্র নিয়ে সেই বিচারককে ভয়-ভীতি দেখিয়ে কাঙ্খিত চাহিদা অনুযায়ী রায় দিতে বাধ্য করে।

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইন ও বিচার বিভাগের সচিবের দায়িত্ব পাওয়া জহিরুল হকের ৭ অগাস্ট অবসরোত্তর ছুটিতে যাওয়ার কথা থাকলেও তার আগের দিন তাকে একই পদে দুই বছরের জন্য চুক্তিতে নিয়োগ দেয় অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার। বিচার বিভাগে কর্মরত বিচারকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখার জন্যই শেখ হাসিনা এবং ওবায়দুল কাদেরের আশির্বাদপুষ্ট এই সন্ত্রাসীকে ২ বছরের চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইতোমধ্যেই ওই নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ৮ আগস্ট সকালে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ আশরাফ-উজ জামান। আবেদনে উল্লেখ করা হয়- সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের নিয়োগে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ লাগে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ নেওয়া হয়নি। এছাড়া আইন সচিব পদে জুডিশিয়াল সার্ভিসের বাইরের কোনো ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। আইন সচিব এখন জুডিশিয়াল সার্ভিসে নাই। এমনকি আপিল বিভাগের এক রায়েও বলা হয়েছে, এ পদে চুক্তিভিক্তি নিয়োগের কোনো সুযোগ নেই।

আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাই কোর্ট বেঞ্চ ঐদিনই একটি রুল জারি করে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, অর্থ সচিব, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ও আইন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবকে (প্রশাসন-১) রুলের জবাব দিতে আদেশ দিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না? সেই সঙ্গে তার যোগদানপত্র গ্রহণের আদেশ কেন অবৈধ হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

সন্ত্রাসী দুলালের এই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ এবং হাইকোর্টের রুল নিয়ে আদলত অঙ্গনের বিচারকবৃন্দ এবং দুলালের সহযোগিদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।

http://ekhon.net/video/78108

20882310_1617692738262226_9157989691529505883_n.jpg
 
. .
16th Amendment verdict: Awami League awaits president’s response
Abdul_Hamid1-690x450.jpg

File photo of President Abdul HamidDhaka Tribune
Sources have hinted that the Awami League may review the verdict if there are any assurances of a positive outcome
The ruling Awami League has placed its hopes in the president’s ability to resolve the ongoing crisis over the Supreme Court’s 16th Amendment verdict.

“We have shared our stance on the verdict with the president and Chief Justice. We informed them that the people of the country have not accepted the verdict. We hope the president will come up with a solution,” several senior leaders of the Awami League told the Bangla Tribune.

The president has the opportunity to provide a solution as he is the guardian of the state, the Awami League leaders said, adding that the Chief Justice can also recall the verdict or invoke the suo moto rule to resolve the matter.

“We want an acceptable solution,” they said.

Also Read- Government looking for options to restore 16th Amendment

Awami League Presidium Member Mohammad Nasim said: “The people rejected the 16th Amendment verdict and we have conveyed their sentiments to the president. He will definitely end this crisis.”

According to ruling party policymakers, the president has advised the Chief Justice to recall the verdict.

Party sources said that the Chief Justice has the jurisdiction to recall the verdict and he can declare that the ambiguity in the verdict’s observation will be cleared by recalling it.

“This is the easiest way to resolve the crisis. The alternatives are too complex,” Awami League policymakers said.

Also Read- 16th amendment debate: Here is what you need to know

Sources have hinted that the Awami League may review the verdict if there are any assurances of a positive outcome.

Awami League stalwarts and stakeholders have been criticising the verdict while the Bangladesh National Party says the verdict had exposed the misdeeds of the government.

A seven-member bench of the Appellate Division, led by Chief Justice Surendra Kumar Sinha, had upheld a High Court judgment that had scrapped the amendment, rejecting an appeal filed by the state back on July 3.

The Supreme Court on August 1 released the full text of the verdict. Following the full text’s release, several government stakeholders, including many ministers and Awami League office bearers expressed their discontent with the verdict.
This article was first published on Bangla Tribune
http://www.dhakatribune.com/banglad...rdict-awami-league-waits-presidents-response/
 
.
What will the Government do if the Parliament is Dissolved
সংসদ ভাঙার নির্দেশ এলে কী করবে সরকার ?

screenshot-www.rtnn_.net-2017-08-19-15-42-56.png

সংসদ ভাঙার নির্দেশ এলে কী করবে সরকার ?
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়কে ঘিরে যেমন শাসন ও বিচার বিভাগের দীর্ঘদিনের অপ্রকাশ্য টানাপোড়েন এখন প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে তেমনি রাজনৈতিক অঙ্গনও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। রায়ের পর্যবেক্ষগুলোকে ঘিরেও সরকার ও বিরোধী পক্ষে চলছে তুমুল বাকযুদ্ধ। আদালতের রায়ে যেসব পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে তাতে সরকারে অস্বস্তি দেখা দেওয়াটাও স্বাভাবিক। আর এতে সরকার যে কঠিন চাপের মুখে পড়েছে তা মন্ত্রী-এমপি ও নেতাদের বক্তব্য থেকেই দৃশ্যত হচ্ছে। সরকার পক্ষ এ রায়ের সমালোচনা করলেও বিরোধী পক্ষ এই রায়কে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যায়িত করে সরকারকে পদত্যাগেরও আহ্বান জানিয়েছে।

শুধু তাই নয়, রায়ের পর্যবেক্ষণে বর্তমান সংসদকে ‘অকার্যকর’ বলে মন্তব্য করায় সংসদ ভেঙে দেয়ার দাবি তুলে আদালতে রিটের চিন্তাভাবনাও করছে বিরোধীপক্ষ।

তবে সরকার পক্ষ বিরোধী পক্ষের পদত্যাগের দাবি নাকচ করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন ‘কেউ কেউ সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল হওয়ায় মহাখুশি। খুশিতে লাভ নেই এই আশার আলো অচিরেই নিভে যাবে।’

তবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত কিছুটা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, আদালতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী যতোবার বাতিল করা হবে, ততোবারই সংসদে বিল পাস করা হবে।

তিনি এও বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনী যারা বাতিল করেছেন, সেসব বিচারপতির চাকরিও সরকার দেয়। তাই আদালতে বাতিল করা হলেও সংসদে তা বার বার পাস করা হবে।’

অবশ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অর্থমন্ত্রীর এ বক্তব্যকে দলীয় নয় বলে উল্লেখ করেছেন। তারা পুরো রায় পর্যবেক্ষণের পর দলীয় প্রতিক্রিয়া জানানোর কথা বলছেন।

তবে বিএনপি নেতারা গেল কয়েকদিন ধরেই ধারাবাহিকভাবে সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে আসছে। এ বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য আদালত অবমাননার সামিল ও অশুভ ইঙ্গিত।

তিনি বলেন, ষোড়শ সংশোধনী রায়ের পরে সরকারের ক্ষমতায় থাকা বেআইনি। এ রায়ের পরে দেশের জনগণ আশা খুঁজে পাচ্ছে। ফলে সরকারের উচিত পদত্যাগ করে বিদায় নেয়া।

রিজভী এও বলেন, লজ্জা থাকলে তারা এই রায়ের সমালোচনা না করে পদত্যাগ করে বিদায় নিতেন। কিন্তু তাদের কথাবার্তায় বুঝা যাচ্ছে- তারা ক্ষমতার মোহে সেই লজ্জাবোধও হারিয়ে ফেলেছেন।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর পূর্ণাঙ্গ রায় পর্যবেক্ষণের পর সরকারের ক্ষমতায় থাকার আর কোনো নৈতিক অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

ফখরুল এও বলেন, সভ্য দেশ হলে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের পর সরকার পদত্যাগ করত। সরকারের উচিৎ রায় আমলে নিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়া।

এদিকে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের ‘ঐতিহাসিক’ রায় পর্যালোচনা করছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র আইনজীবীরা শনিবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, রায়ে বর্তমান সংসদকে ‘অকার্যকর’ বলে মন্তব্য করায় সংসদ ভেঙে দেয়ার দাবি তুলতে পারে বিএনপি। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে রিটও করা হতে পারে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, জয়নুল আবেদিন, মীর নাসির উদ্দিন, নিতাই রায় চৌধুরী, এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রমুখ।

বৈঠক শেষে এক নেতা জানান, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় ঐতিহাসিক। পূর্ণাঙ্গ রায় আমরা স্টাডি করছি। রায়ে বর্তমান সংসদকে ‘ডিসফাংশনাল’ (অকার্যকর) বলা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আইনী কী কী পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

ওই নেতা বলেন, বর্তমান সংসদে ১৫৩/১৫৪ জন সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। সংবিধানের ৬৫/২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী- জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবেন সংসদ সদস্যগণ। সেক্ষেত্রে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ওই নির্বাচনে এর সম্পূর্ণ ব্যতয় ঘটেছে। এখন যেহেতু দেশের সর্বোচ্চ আদালত সংসদে অকার্যকর বলেছে, সেহেতু আইনী পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে তারা চিন্তাভাবনা করছেন। সংসদ ভেঙে দেয়ার বিষয়ে রিট করাও হতে পারে।

এদিকে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ শনিবার ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়কে ‘ঐতিহাসিক’ অভিহিত করে বলেন, এ রায় দেশের ১৬ কোটি মানুষের মনের ইচ্ছার প্রকাশ ঘটিয়েছে। এ রায় জাতীয় দলিল বলে আমরা আখ্যায়িত করতে পারি।

এখন আসা যাক, ষোড়শ সংশোধনী কী এবং আদালতের রায়ে কী বলা হয়েছে-

বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী জাতীয় সংসদে পাস হয়। ‘বিচারকদের পদের মেয়াদ’-সংক্রান্ত ষোড়শ সংশোধনী বিল অনুসারে, সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের ২ দফায় বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতাসংক্রান্ত বিধান রাখা হয়েছে। এতে বলা হয়, ‘প্রমাণিত ও অসদাচরণ বা অসামর্থ্যের কারণে সংসদের মোট সদস্যসংখ্যার অনন্ত দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দ্বারা সমর্থিত সংসদের প্রস্তাবক্রমে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ ব্যতীত কোনো বিচারককে অপসারিত করা যাবে না।’ ৩ দফায় বলা হয়েছে, এই অনুচ্ছেদের (২) দফার অধীন প্রস্তাব-সম্পর্কিত পদ্ধতি এবং কোনো বিচারকের অসদাচরণ বা অসামর্থ্য সম্পর্কে তদন্ত ও প্রমাণের পদ্ধতি সংসদ আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করবে। একই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।

পরে ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয়জন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বছরের ৫ মে হাইকোর্টের তিনজন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ গত ৪ জানুয়ারি আপিল করে। আপিলের ওপর গত ৮ মে শুনানি শুরু হয়, যা ১১তম দিনে গত ১ জুন শেষ হয়। ওই দিন আদালত মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন। গত ৩ জুলাই রায়ের সংক্ষিপ্তসার ঘোষণা করেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।

সবশেষ গত ১ আগস্ট সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। ওইদিন পূর্ণাঙ্গ রায়টি সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটেও প্রকাশিত হয়।

রায়: পূর্ণাঙ্গ রায়ে সংবিধোনের ষোড়শ সংশোধনীকে অবৈধ বলে বাতিল ঘোষণা করে আদালত। এর ফলে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে থাকছে না।

এছাড়া আপিল বিভাগের যে পূর্ণাঙ্গ রায় বেরিয়েছে, তাতে আদালত কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছে। পর্যবেক্ষণগুলোর সারাংশ করা হলে সংক্ষিপ্তভাবে বলা যায়, আদালত পর্যবেক্ষণে বলেছে- দেশে কার্যকর গণতন্ত্র নেই, এদেশে পার্লামেন্টে নন ফাংশনাল হয়ে গেছে, দেশে আইনের শাসন নেই এবং বিচার বিভাগকে সরকার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। পর্যবেক্ষণে এও বলা হয়েছে যে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়।

ফলে বলা যায়, আদালতের এ সব পর্যবেক্ষণ পুরোটাই সরকারের প্রতিকূলে গেছে। আর এতেই বিরোধীদের নতুন আশা সঞ্চার করেছে। তাই তারা সরকার তথা সংসদের বৈধতা নিয়ে রীটের চিন্তাভাবনা করছে।

ধরে নেয়া যাক, এমতাবস্থায় সত্যিই বিরোধীপক্ষ সরকারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রীট করেই ফেলল, আর তাতে আদালত সংসদ ভেঙে দেয়ার নির্দেশ দিয়ে দিল তবে কী ঘটতে পারে দেশের রাজনীতিতে এমন ভাবনাও চলছে রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবী মহলে।

তাদের মতে, এমন নির্দেশ যদি আদালত থেকে এসেই যায় তবে সরকার যে সহজেই রায় মেনে নিয়ে সংসদ ভেঙে দিবে এমনটি চিন্তা করার সুযোগ খুবই ক্ষীণ। কেননা, আদালতের নির্দেশে সংসদ ভাঙার নজীর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে থাকলেও আমাদের দেশে নেই। আর আমাদের দেশে সে ধরনের গণতান্ত্রিক শ্রদ্ধাবোধ কিংবা আইনের শাসনও গড়ে উঠেনি। ফলে এ ধরনের আশা অর্থহীন বলেও মনে করেন অনেকে।

তবে এ ধরনের একটি রায় হয়ে গেলে এক্ষেত্রে সরকার কী ধরনের সুযোগ নিতে পারে সে ভাবনাও কম নেই বোদ্ধামহলে। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, জাতীয় নির্বাচনের আর মাত্র দেড় বছর বাকী। এরমধ্যে আদালত থেকে সংসদ ভাঙার নির্দেশ এসে গেলে সরকার আপিলে যেতে পারবে। আর সেই আপিল শুনানি বারবার পিছিয়ে সহজেই দেড় বছর কাটিয়ে দিতেও সক্ষম হবে সরকার পক্ষ। কেননা, এ ধরনের প্র্যাকটিসের নজীর অনেক রয়েছে। যেমনটি উল্লেখ করা যেতে পারে- নিম্নআদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি প্রণয়নের বিষয়টি সরকারপক্ষ কতবার যে সময় নিয়েছে এর কোনো ইয়ত্তা নেই।

তাই সবশেষে বলবো, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে বিরোধী পক্ষে যে আশার সঞ্চারের কথা বলা হচ্ছে তা সাময়িক তৃপ্তিদায়ক হলেও আখেরে এর ফলাফল শূণ্য বলেই প্রতীয়মান হতে পারে। কেননা, আমাদের দেশে সেধরনের নজীর নেই। ফলে ক্ষমতা পরিবর্তনের স্বপ্ন পূরণের ফয়সালা রাজনীতির মাঠেই হতে হবে, বিচারালয়ে নয়। তবে এটা সত্য যে- বিরোধীপক্ষ যদি রীটের মাধ্যমে আদালত থেকে সংসদ ভাঙার নির্দেশ আনতে পারে তবে সেটা একটা ভিন্ন নজীর হয়ে থাকবে। যা দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য যে দীর্ঘমেয়াদী ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।

ফলে এ রায়ের পর দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায় তা দেখতে আমাদেরকে আরো কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে
http://ekhon.net/politics/78192


Grave Challenges awaits the Chief Justice
প্রধান বিচারপতির সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ

surendro-kumar-sinha-29717-1808531504-660x330.jpg

প্রধান বিচারপতি
প্রধান বিচারপতির সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ

সেই ‘প্রিয়’ সিনহা যেভাবে এই ‘অপ্রিয়’ সিনহা হলেন
আমাদের দেশের আদালতে এর আগে অনেক গুরুত্বপূর্ণ রায় হয়েছে, কিন্তু ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের মতো আর কোনো রায় ইতোপূর্বে এতো উত্তাপ ছড়িয়েছে বলে আমার জানা নেই। তবে এই রায়কে দলবাজ লোকেরা যেভাবেই বিবেচনা করুন না কেন, সার্বিক বিবেচনায় দেশের বিচারবিভাগের ইতিহাসে এটি একটি ‘ঐতিহাসিক ও যুগান্তকারী রায়’। এর মাধ্যমে দেশ ও জাতির স্বার্থে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা যে ধরনের সাহস দেখিয়েছেন তাতে সত্যিই ভূয়সী প্রশংসার যোগ্য।

বিচারবিভাগের ইতিহাস ঘেটে যা জানা যায় তাতে, এ ধরনের একটি সাহসী রায় দিয়ে এসকে সিনহা সাম্প্রতিকালের শ্রেষ্ঠ বিচারকের সুনাম কুঁড়িয়েছেন। পাকিস্তান আমলের বিচারপতি মোর্শেদ যেমন যুগান্তকারী রায় দিয়ে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছিলেন তেমনি সিনহা সাহেবও। যদি না তিনি কোনো আপোস করেন।

ফলে প্রধান বিচারপতির সামনে এখন দুটি পথই খোলা আছে- নির্বাহী বিভাগের চাপে নতি স্বীকার করে আপোস করা কিংবা নতি স্বীকার না করে দেশের বিচারবিভাগকে অনন্য মর্যাদায় মর্যাদাশীল করা।

প্রবীণ নাগরিকদের স্মরণে থাকার কথা, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের ভাগ্নে বিচারপতি সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদের সাহসিকতার কথা। তার কিছু ব্যতিক্রমধর্মী রায়- দ্য মিনিস্টার কেইস, দ্য প্যান কেইস, দ্য বেসিক ডেমোক্রেসি কেইস, দ্য মাহমুদ কেইস এবং দ্য কনভোকেশন কেইস প্রভৃতি যা পাকিস্তানে সাংবিধানিক ইতিহাসের মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত। পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডহক বিচারপতি হিসেবে দেওয়া তার একটি রায়কে ‘লিগ্যাল ক্ল্যাসিক’ হিসেবেও বিবেচনা করা হয়।

তার প্রবাদসম সাহসিকতা ও প্রচণ্ড সাহসী রায় তৎকালীন সরকারকে ঘাবড়িয়ে দিয়েছিল। তাই সরকার বিভিন্নভাবে তার ওপর চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছিল।কিন্তু বিচারপতি মোর্শেদ ছিলেন প্রচণ্ড ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও বিবেকবান মানুষ। যখন দেখেছেন তিনি বিবেক দ্বারা তাড়িত হয়ে বিচার করতে পারছেন না, প্রধান বিচারপতির পদ থেকে নিজেই পদত্যাগ করে ১৯৬৭ সালের ১৬ নভেম্বর দেশের গণমানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন।

এরপর ১৯৬৮ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় শেখ মুজিবুর রহমানের কৌঁসুলি স্যার টম উইলিয়ামসের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন।বিচারপতি মোর্শেদের জ্ঞান ও আইনের শাসনের প্রতি সমর্থন দেখে টম উইলিয়ামস বহুবার প্রশংসা করেছেন তার। আইয়ুব খানের গোলটেবিল বৈঠকে (ফেব্রুয়ারি-মার্চ ১৯৬৯) সমগ্র পাকিস্তানের যে ৩৫ জন নেতা আমন্ত্রিত হয়েছিলেন, তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন বিচারপতি মোর্শেদ । প্রধান বিচারপতি থাকাকালে নিম্ন আদালতের উন্নয়নের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানেও তিনি রাজনীতিবিদদের সহায়তায় এগিয়ে আসেন। এছাড়া উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ উদ্যোগী ভূমিকা নিয়েছিলেন। ফলে নানা কারণেই ইতিহাসের পাতায় আজ তার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা।

এখন আসি মূল আলোচনায়, উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা সংসদের হাতে অর্পণ সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় আইনগত দিক বিবেচনায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া রায়ের পর্যবেক্ষণগুলোও আরো বেশি জনগুরুত্বপূর্ণ। আর এই রায়কে ঘিরে সরকারে অস্বস্তি ও বিরোধী শিবিরে উচ্ছ্বাস। যদিও এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক থাকার কথা নয়, এবং আইনের দৃষ্টিতেও তাদের প্রতিক্রিয়া অর্থহীন। তবে সমস্যা হচ্ছে রায়কে ঘিরে শাসন ও বিচার বিভাগের প্রকাশ্য দ্বন্দ্বের বিষয়টি।

যতদূর জানা যাচ্ছে তাতে, রায়কে নিয়ে যতটা না রাজনীতিবিদদের উদ্বেগ তার চেয়ে বেশি রায়ের পর্যবেক্ষগুলোকে ঘিরে। সরকার ও বিরোধী পক্ষে চলছে তুমুল বাকযুদ্ধ। আদালতের রায়ে যেসব পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে তাতে সরকারে চরম অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। আর এতে সরকার যে কঠিন চাপের মুখে পড়েছে তা মন্ত্রী-এমপি ও নেতাদের বক্তব্য থেকেই দৃশ্যত হচ্ছে। সরকার পক্ষ এ রায়ের সমালোচনা করলেও বিরোধী পক্ষ এই রায়কে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যায়িত করে।

তবে রায়ে সংক্ষুব্ধ সরকার। এমন কী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকেও এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। অন্যদিকে সরকারের মন্ত্রী-এমপি আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা প্রকাশ্যেই প্রধান বিচারপতিকে আক্রমণ করে কথা বলছেন। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল জরুরি সভা করে এই রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। আওয়ামী লীগের আইনজীবী পরিষদও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। সবমিলেই রায়কে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত।

এদিকে রায়ের পর সরকারের ও দলের প্রতিক্রিয়া জানাতে শনিবার রাতে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার সঙ্গে সরাসরি দেখা করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ প্রসঙ্গে কাদের বলেছেন, ‘তার (প্রধান বিচারপতি) সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, দীর্ঘক্ষণ। আলোচনা শেষ হয়নি। আরো আলোচনা হবে।’

রবিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (১নং) দক্ষিণ হলে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস বলেছেন, ‘একটি ইংরেজি পত্রিকার সম্পাদক রায়ের ড্রাফট লিখে দিয়েছেন। সমাবেশে ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘আমরা জানি কারা এ ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত। জাতির কাছে একে-একে তাদের মুখোশ উন্মোচন করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা জানি এ রায়ের ড্রাফট কোথা থেকে এসেছে। একটি ইংরেজি পত্রিকার সম্পাদক এ ড্রাফট লিখে দিয়েছেন। আমরা এ কাজের নিন্দা জানাই।’

সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় সরকারের দায়িত্বশীল মন্ত্রী-এমপিদের প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য। এর মধ্যে উল্লেখ করা যায়- রায়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে সাবেক এমপি অপু উকিল বলেছেন, ‘আমরা জানতে পারছি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা স্বাধীনতার সময় শান্তি কমিটিতে ছিলেন। এ শান্তি কমিটির প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিলো হিন্দু নিধন। একজন হিন্দু কিভাবে শান্তি কমিটিতে যোগ দেন? ফলে তিনি হিন্দু নন। সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ষড়যন্ত্র করছেন, আমরা তার অপসারণ চাই।’

মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই রায় একটা ষড়যন্ত্রের অংশ। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার এবং আইনমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানানোর নির্দেশনা দেন।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি বঙ্গবন্ধুর প্রতি কটাক্ষ করার ‘ধৃষ্টতা’ দেখিয়েছেন। এ রায়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ব্যাপকভাবে অসাংবিধানিক ও অনৈতিক কথাবার্তার অবতারণা করেছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, এমনকি রায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়েও কটাক্ষ করতে দ্বিধা করেননি, আমরা ধিক্কার জানাই।

‘আপনি মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তির সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে যা বলছেন, তা ঠিক নয়। বাংলার মানুষ জানে, আপনি শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন।’

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, এ রায় আবেগ ও বিদ্বেষতাড়িত।

খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেন, প্রধান বিচারপতির অপসারণ দাবি করছি। নইলে আগামী মাস থেকে তার অপসারণ দাবিতে টানা আন্দোলনের ঘোষণা। মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের সঙ্গে আঁতাত করে বেশি দিন এই মসনদে থাকতে পারবেন না।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন, আদালত যতবার ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করবে, আমরা ততবার সংসদে বিল পাস করব। তা আমরা অনবরত করতে থাকব। দেখি জুডিশিয়ারি কত দূর যায়।জুডিসিয়াল কন্ডিশন আনটলারেবল। সংসদের উপর তারা পোদ্দারি করবে। এদেরকে আমরা চাকরি দেই।

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন ‘যারা বর্তমানে বিচারকের আসনে বসেছেন, তারা ইম-ম্যাচিউরড।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, ‘আদালতের হাত এত বড় লম্বা হয়নি যে সংসদ ছুঁতে পারে। সংসদ নিয়ে ধৃষ্টতা দেখানোর অধিকার কারও নেই।’

আইন কমিশনের চেয়ারম্যান এবিএম খায়রুল হক বলেছেন,‘ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে দেওয়া ওই রায় ছিল পূর্বধারণাপ্রসূত ও আগে থেকে চিন্তাভাবনার ফসল। সুপ্রিম কোর্টের এ ধরনের মন্তব্য মেনে নেওয়া যায় না।’‘প্রধান বিচারপতিকে প্রধান শিক্ষক আর অন্য বিচারপতিদের ছাত্র।’

অবশ্য সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চাইতে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে রায় নিয়ে তুমুল বিতর্কের মধ্যে হঠাৎ প্রধান বিচারপতির বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে ওবায়দুল কাদেরের দুই ঘন্টার বৈঠক করেছেন। আরো বৈঠকের ইঙ্গিত দিয়েছেন কাদের নিজেই। ফলে এ নিয়ে সবমহলে চলছে নানা শোরগোল। তাহলে কী ঘটতে যাচ্ছে? এমন প্রশ্ন অনেকের।

জানা যাচ্ছে, প্রধান বিচারপতির বাসায় অনুষ্ঠিত প্রায় দুই ঘণ্টার এই বৈঠকে ষোড়শ সংশোধনীকে অবৈধ করে আপিল বিভাগের রায় ও পর্যবেক্ষণ নিয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে সরকার ও আওয়ামী লীগের অবস্থান তুলে ধরেন ওবায়দুল কাদের। ওই সাক্ষাতে ওবায়দুল কাদের প্রধান বিচারপতিকে জানিয়েছেন, ‘এ রায় নিয়ে রাজনৈতিক মহলে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে- যা অনভিপ্রেত। রায়কে কেন্দ্র করে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো পরিস্থিতি তৈরি হোক বা বিচার বিভাগের সঙ্গে নির্বাহী বিভাগের মুখোমুখি অবস্থান সরকার চায় না।

তাই রায়ে থাকা অপ্রাসঙ্গিক পর্যবেক্ষণ বাদ দিয়ে রাজনৈতিক মহলে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা বিচার বিভাগের দায়িত্ব।’ প্রধান বিচারপতিকে এ দায়িত্ব নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি নিরসন করতে অনুরোধ জানান ওবায়দুল কাদের। তবে প্রধান বিচারপতি তাত্ক্ষণিকভাবে তার কোনো অবস্থান ওবায়দুল কাদেরকে জানাননি। জানা গেছে, পরে গণভবনে গিয়ে সাক্ষাতের অগ্রগতির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করেছেন ওবায়দুল কাদের। পরে তিনি রাষ্ট্রপতিকে দলের অবস্থান জানান।

অন্যদিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও এমনটি ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, ‘জাজমেন্টের মধ্যে অপ্রাসঙ্গিকভাবে যদি আসল ইতিহাস যা নয় তা বলা হয় তাহলে এ বিকৃতি ধরিয়ে দেয়ার অধিকার আমার আছে। আমাদের স্বাধীনতা রাতারাতি আসেনি। রাজনৈতিক আন্দোলনের পর জনগণের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। সেক্ষেত্রে এই ইতিহাস যদি আমিও বিকৃত করি তাহলে আমিও অপরাধী।’

তিনি আরো বলেন, ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে দেয়া রায়ের পর্যবেক্ষণে আপত্তিকর, অপ্রীতিকর ও অপ্রাসঙ্গিক বক্তব্যের মাধ্যমে ইতিহাস বিকৃত হয়েছে। সেখানে থাকা এক্সপাঞ্জ করার মতো বক্তব্যগুলো চিহ্নিত করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত গ্রাউন্ড তৈরি করে এক্সপাঞ্জ করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের বিধান অনুযায়ী রিভিউ করা হবে।

অর্থাৎ সরকার চাচ্ছে যে কোনো উপায়ে এই রায়ের সংশোধন। রায়ে যেসব পর্যবেক্ষণ সরকারকে বিব্রত করছে তা বাদ দিতে। আর এমন গ্যারান্টি পেলেই সরকার রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করবে সরকারপক্ষ।

এরইমধ্যে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল ঘোষণার আপিলের রায়ের সার্টিফাইড কপি চেয়ে বুধবার আপিল বিভাগে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

অবশ্য সরকারের তৎপরতায় রায় পাল্টে দেয়ার আশঙ্কা বিরোধী শিবিরেরও। সরকার প্রধান বিচারপতির ওপর চাপ প্রয়োগ করে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় পরিবর্তনের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এছাড়া গত দুদিন থেকে পরিস্থিতি কিছুটা নমনীয় বলেই অনুমেয়। মঙ্গলবার কিছুটা সূর পাল্টে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার ও প্রধান বিচারপতির পদ সাংবিধানিক, এ পদগুলো সম্পর্কে সকলকে আরো সচেতন ও যত্নশীল হতে হবে। এছাড়া বুধবার রাতে যখন এ লেখাটি শেষ ঠিক সে মুহূর্তে গণমাধ্যমে খবর আসে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের চার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বৈঠক করছেন। ফলে ভেতরে ভেতরে যে একটা কিছু ঘটছে এমন সন্দেহ জনমনে জোরালো হয়েছে।

তবে সরকার যে তৎপরতাই চালাক না কেন এভাবে এইসকল প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ যেসব বক্তব্য দিয়েছেন তা সরাসরি বিচার বিভাগকে কঠিন এক চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন বলে মনে করছেন আইনবিশেষজ্ঞরা। এখন দেখার বিষয় প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা কতটা সাহসী ভূমিকা রাখতে পারেন।

বিশিষ্ট আইনজীবী ড. তুহিন মালিকের মতে, এইসব হুমকি-ধমকী দিয়ে তারা সংবিধানে বর্ণিত বিচার বিভাগের প্রতি নাগরিকের আস্থা, বিশ্বাস বা প্রত্যয়কে পরাহত করেছেন। যা সংবিধানের ৭ক(২) অনুচ্ছেদ মোতাবেক রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ। যা মৃত্যুদণ্ডের সর্বোচ্চ দণ্ডে দণ্ডনীয় অপরাধ। সাংবিধানিক শপথকারী এইসকল ব্যক্তিবর্গ সংবিধান সংরক্ষণ ও সুরক্ষার শপথ ভঙ্গ করেছেন।

তিনি বলেন, সাংবিধানিক পদধারীর স্বপঠিত শপথের পরিপন্থী অথবা শপথের সাথে সাংঘর্ষিক যেকোনো কাজ আইনের দৃষ্টিতে গুরুতর অসদাচরণ। সংবিধান একজন সাংবিধানিক পদধারীর গুরুতর অসদাচরণকে নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ হিসেবে গণ্য করেছে। এরূপ গুরুতর অসদাচরণ সংবিধান লঙ্ঘনের সমার্থক। তারা প্রকাশ্যে বিচার বিভাগের পবিত্রতাকে হেয় প্রতিপন্ন করেই চলেছেন। এটা গুরুতর ফৌজদারি অবমাননা ও সংবিধানের লঙ্ঘন।

এই আইনজীবী আরো বলেন, এরফলে এইসকল মন্ত্রীদের শপথ ভঙ্গ করার পর সাংবিধানিক পদে এক মুহূর্ত থাকার আর কোন নৈতিক ও সাংবিধানিক অধিকার নাই। সারা জাতির সামনে প্রতিশ্রুতি দিয়ে শপথ নিয়ে আইন ও সংবিধানের প্রকাশ্য লংঘন সাংবিধানিক পদে বহাল তবীয়তে থাকার অধিকারের বিলুপ্তি ঘটায়। সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুসারে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত আইন হিসেবে গণ্য এবং তা সকলের ক্ষেত্রেই মানা বাধ্যতামূলক। তাহলে, এইসকল প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ কি আইনের উর্ধ্বে।

প্রবীণ আইনবিশারদ ব্যারিস্টার রফিক উল হক বলেছেন, ‘এটা খুবই মন্দ নজীর হচ্ছে’।

অবশ্য প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা এক অনুষ্ঠানে বলেছেন,সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় অনেক চিন্তাভাবনা করেই দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে কারো ফাঁদে পা দেব না। তবে কেউ যদি গঠনমূলকের বাইরে গিয়ে সমালোচনা করে তাহলে বিচার বিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে বিচারবিভাগ সরকার বা বিরোধী দল কারো ট্র্যাবে পড়বে না।

এখন দেখার বিষয় প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা আগামী দিনে বিচারবিভাগের মান-মর্যাদা রক্ষায় কতটা সাহসী ভূমিকা রাখতে পারেন। তা দেখতে অবশ্য আমাদেরকে আরো কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে।

http://monitorbd.news/2017/08/18/প্রধান-বিচারপতির-সামনে-ক/
 
.
Qamrul Islam
তিন সপ্তাহ আগে বলেছিলাম এইটার কথা। অবশেষে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় রিভিউ করা হচ্ছে। এই মামলার ভিতরেই আছে ১৫৪ জন বিনা ভোটের এমপি অবৈধ ঘোষণার দাবী।

safe_image.php

তত্ত্বাধায়ক ফেরাতে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল
BDPOLITICO.COM
http://bdpolitico.com/-p369-117.htm

What the President can.
রাষ্ট্রপতি কী পারেন
উদিসা ইসলাম২২:০৭, আগস্ট ১৯, ২০১৭
c3d257a7938cd2b8689554840faa4b52-599863ffdecf0.png

ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে রিভিউয়ের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
ইতোমধ্যে রায়ের অনুলিপি চেয়ে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এরইমধ্যে আইনমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী, অ্যাটর্নি জেনারেলসহ প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর একটি প্রশ্নও দেখা দিয়েছে, তাহলো– রাষ্ট্রপতি কী পারেন। সেই প্রশ্ন সামনে রেখেই রায় পর্যালোচনার পাশাপাশি ৯৭ অনুচ্ছেদ নিয়েও চলছে আলোচনা। আইন বিশ্লেষকরা বলছেন, রাষ্ট্রপতি যদি সংকট মনে করেন, তাহলে তিনি সংবিধানের ৯৭ ধারা ব্যবহার করতে পারেন।

সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রধান বিচারপতির পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে প্রধান বিচাপতি তাঁহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ বলিয়া রাষ্ট্রপতির নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হইলে ক্ষেত্রমত অন্য কোনো ব্যক্তি অনুরূপ পদে যোগদান না করা পর্যন্ত কিংবা প্রধান বিচারপতি স্বীয় কার্যভার পুনরায় দখল না করা পর্যন্ত আপিল বিভাগের অন্যান্য বিচারকদের মধ্যে যিনি কর্মে প্রবীণতম, তিনি অনুরূপ কার্যভার পালন করিবেন।'

গত ১৩ আগস্ট রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, এখানে বঙ্গবন্ধু শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি, তবে কোনও একক ব্যক্তির নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি– কথাটি আছে। মন্ত্রীর মতে, ‘এই মামলায় এটা অপ্রাসঙ্গিক এবং ইতিহাসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ফাইনালি এটা ইতিহাস বিকৃত করার সমান।’

গত ৩ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। সংবিধানের এই সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারকদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ উত্থাপিত হলে তাকে অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদকে দেওয়া হয়েছিল। তবে ওই সংশোধনী বাতিলের ফলে সেই ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে ফিরে আসে। এই কাউন্সিলের প্রধান হিসেবে থাকবেন প্রধান বিচারপতি। গত ১ আগস্ট এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশিত হওয়ার পর এর পর্যবেক্ষণ অংশ নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম মনে করেন জনগণ ষোড়শ সংশোধনীর রায় প্রত্যাখান করেছে। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা তা রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেছি। এখন নিশ্চয়ই সমাধান করবেন তিনি।’

সংবিধান বিশ্লেষক তুরিন আফরোজ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রাষ্ট্রপতিকে সব বিষয়ে অবহিত করতেই পারেন। যদি ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে আলোচনা হয়ে থাকে সেটাও অবহিত করতে পারেন। যদি হস্তক্ষেপ করতে চান– উনি সংকট মনে করেন কিনা সেটাই বিষয়। যদি সংকট মনে করেন, তাহলে করতে পারেন। এগুলো সবই পরিস্থিতি সাপেক্ষে ‘যদি’র ওপর নির্ভরশীল।’

সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ ব্যবহারের ক্ষমতা ও যৌক্তিকতা রাষ্ট্রপতির আছে উল্লেখ করে সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ ব্যবহার করে রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতিকে সরিয়ে দিতে পারেন। একটা শক্তিশালী অভিযোগ উঠেছে উনি (প্রধান বিচারপতি) শপথ ভঙ্গ করেছেন। এটির সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ একমত। উনি যেসব কথা রায়ে উল্লেখ করেছেন, এর নব্বই ভাগ সম্পৃক্ততাহীন। এটিকে আমি ফরমায়েশি রায় বলছি। মামলার বিষয়বস্তুর চেয়ে সেগুলো যোজন যোজন দূরে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি তাকে প্রধান বিচারপতি পদ থেকে অপসারণ করতে পারেন, বিচারপতি পদ থেকে নয়।’ একজন সাবেক বিচারপতির বিষয়ে যেন দুর্নীতির তদন্ত না হয় সেটা বলেও প্রধান বিচারপতি শপথ ভঙ্গ করেছেন উল্লেখ করে সাবেক এই বিচারপতি বলেন, ‘একাধিকবার শপথ ভঙ্গ করার কারণে তাকে স্বেচ্ছায় সরে যাওয়ার কথাও বলা যেতে পারে। তবে ৯৭ অনুচ্ছেদ ব্যবহার করে তাকে প্রধান বিচারপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে আছে।’

/ইউআই/এএম/আপ- এমএ/
http://www.banglatribune.com/national/news/235305/রাষ্ট্রপতি-কী-পারেন
 
.
বাংলাদেশ অধ্যয়ন কেন্দ্র - Center for Bangladesh Studies(CBS)

'আমরা এই প্রথম জানলাম সুপ্রিম কোর্টের একটি সর্বসম্মত রায়ের বিষয়ে সংক্ষুব্ধ পক্ষ প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা করতে পারে। আমরা আরও জানলাম তাঁদের দেওয়া রায়ের বিষয়ে প্রধান বিচারপতিকে একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থানের কথাও জানানো যায়।

রাজনীতির ফাঁদে পা দেওয়ার আর কিছু বাকি থাকল কি না, সেই প্রশ্ন তোলার আর কোনো মানে হয় না। বরং প্রশ্ন যেটা উঠেছে তার কথাই বলি। ইত্তেফাক পত্রিকারআইন-আদালতবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন সালেহউদ্দিন। তিনি ফেসবুকে প্রশ্ন রেখেছেন, ‘এখন যদি অন্য দলের মহাসচিব তাঁর দলের অবস্থান জানাতে চান, তাহলে বিষয়টি কই গিয়ে দাঁড়াবে?’

'ষোড়শ সংশোধনীর রায়ে প্রধান বিচারপতির কলম থেকেই আমরা জেনেছি যে উচ্চ আদালতের মামলার ৮০ শতাংশের ক্ষেত্রেই রাষ্ট্র বা সরকার একটি পক্ষ।
মামলায় সব পক্ষই জিততে চাইবে, সেটাই স্বাভাবিক।
এখন কোনো রায় সরকারের মনঃপূত না হলে আদালতের ওপর চাপ প্রয়োগ করে সরকার যদি তার পক্ষে রায় বদলাতে সক্ষম হয়, তাহলে হাজার হাজার বিচারপ্রার্থীর ন্যায়বিচার পাওয়ার আর কোনো পথই যে খোলা থাকবে না? এ ক্ষেত্রে আরও বড় বিপদ হলো, শুধু সরকার নয়, এখন থেকে আদালতকে ক্ষমতাসীন দলকেও খুশি করতে হবে। সেটা তো কারও কাম্য হতে পারে না। '

safe_image.php

রাজনীতির ফাঁদে আদালত
বুধবার রাতে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি বার্তা সংস্থা বাসস জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বন্যা পরিস্থিতিসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন। রাষ্ট্রপতিকে বন্যা পরিস্থিতি অবহিত…
PROTHOM-ALO.COM

হাকিম নড়বে; নাকি হুকুম নড়বে?
tuhin-3.jpg

হাকিম নড়বে; নাকি হুকুম নড়বে?

এক-
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার পূর্ণাঙ্গ রায় ঘোষনার পর বলেছিলাম, ‘সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ে ভয়াবহ সংকটের মুখোমুখি সরকার।’ বলেছিলাম, প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ সরকারের বৈধতার বিষয়ে যে বড় ধরনের প্রশ্নের অবতারনা করেছে, তা গায়ের জোড়ে দমন করার শক্তি সরকারের নেই।

কিন্তু খুবই আশ্চর্যজনকভাবে রায়ের দুদিন না যেতেই অর্থমন্ত্রী গায়ের জোড় দেখিয়ে বললেন, ‘আদালত যতবার ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করবে, আমরা ততবার সংসদে বিল পাস করব। তা আমরা অনবরত করতে থাকব। দেখি জুডিশিয়ারি কত দূর যায়। জুডিসিয়াল কন্ডিশন আনটলারেবল। সংসদের উপর তারা পোদ্দারি করবে। এদেরকে আমরা চাকরি দেই।’

দুই-
রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালতকে অর্থমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জের পর বলেছিলাম, ‘আবুল মালরা ছাড় পেয়ে গেলে আইন আদালতের উপর মানুষের আস্থা উঠে যাবে।’ বলেছিলাম, অর্থমন্ত্রী সংবিধান সংরক্ষণ ও সুরক্ষার শপথ ভঙ্গ করেছেন। অর্থমন্ত্রী সংবিধানে বর্ণিত বিচার বিভাগের প্রতি নাগরিকের আস্থা, বিশ্বাস বা প্রত্যয়কে পরাহত করেছেন। যা সংবিধানের ৭ক(২) অনুচ্ছেদ মোতাবেক রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ। যা মৃত্যুদণ্ডের সর্বোচ্চ দণ্ডে দণ্ডনীয় একটি অপরাধ।
অথচ অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনপ্রকার ব্যবস্থা গ্রহন না করার সুবাদে বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ দেখিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘এই রায় একটা ষড়যন্ত্রের অংশ।’ তিনি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার ঘোষনা পর্যন্ত দেন।

তিন-
এবার প্রধানমন্ত্রীর গ্রীন সিগনাল পেয়ে একে একে সরকারের মন্ত্রীরা সরাসরি বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য যুদ্ধে নেমে পড়েন। শুরু হয় হুমকি-ধমকী, গালাগালি ও চরিত্র হননের মহোৎসব-

‘প্রধান বিচারপতি ‘ধৃষ্টতা’ দেখিয়েছেন।’
‘আমরা ধিক্কার জানাই।’
‘এ রায় আবেগ ও বিদ্বেষতাড়িত।’
‘প্রধান বিচারপতির অপসারণ দাবিতে টানা আন্দোলনের ঘোষণা।’
‘মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের সঙ্গে আঁতাত করে বেশি দিন এই মসনদে থাকতে পারবেন না।’
‘বিচারপতিরা ইম-ম্যাচিউরড।’
‘আদালতের হাত এত বড় লম্বা হয়নি যে সংসদ ছুঁতে পারে।’
‘প্রধান বিচারপতি শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন।’
‘প্রধান বিচারপতি হিন্দু নন।’
‘এটা পেনড্রাইভ জাজমেন্ট। কোন পেনড্রাইভ থেকে এবং কোন ল্যাপটপ থেকে এ রায়ের উৎপত্তি হয়েছে সেটা আমাদের জানা আছে। রায়ের ড্রাফট লিখেছেন একটি ইংরেজি পত্রিকার সম্পাদক।’
ইত্যাদি….

চার-
সরকারী চাকরীরত আইন কমিশনের চেয়ারম্যান খায়রুল হক বললেন, ‘ওই রায় ছিল পূর্বধারণাপ্রসূত, অগণতান্ত্রিক ও আগে থেকে চিন্তাভাবনার ফসল। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’
পরদিন আইজীবীরা আপীল বিভাগে খায়রুল হকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল চাইতে গেলে প্রধান বিচারপতি জানান, ‘আমরা কারো ট্র্যাপে পা দিবো না।’ প্রধান বিচারপতি অন্যত্র এটাও বলেন যে, ‘রায়ের গঠনমূলক সমালোচনার অধিকার রয়েছে।’
কিন্তু এটা কিরকমের গঠনমূলক সমালোচনা?
এর আগে একই আদালত থেকে যাদের বিরুদ্ধে কনটেম্পট প্রসিডিং ড্র করা হয়েছে এবং মাহমুদুর রহমানের মত যাদেরকে আদালত অবমাননার অভিযোগে জেলে যেতে হয়েছে সেগুলো কি আজকের অবমাননার চেয়েও মারাত্মক ছিল?

পাঁচ-
সর্বোচ্চ আদালত নিশ্চয়ই পর্যবেক্ষণ করছেন, এগুলো গঠনমূলক সমালোচনার মধ্যে পড়ে কিনা? এভাবে একের পর এক বিচার বিভাগকে হুমকি-ধমকী দিয়ে সাংবিধানিক শপথকারী এইসকল ব্যক্তিবর্গ সংবিধান সংরক্ষণ ও সুরক্ষার শপথ ভঙ্গ করেছেন। যা আইনের দৃষ্টিতে গুরুতর অসদাচরণ। এটা গুরুতর ফৌজদারি অবমাননা ও সংবিধানেরও লঙ্ঘন। এটাও নিশ্চয়ই সর্বোচ্চ আদালতের নজরে আছে বলে আমাদের বিশ্বাস।
সমূহ বিপদের আশংকায় প্রশ্ন রেখে তখন বলেছিলাম, সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুসারে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত আইন হিসেবে গণ্য এবং তা সকলের ক্ষেত্রেই মানা বাধ্যতামূলক। প্রশ্ন রেখে বলেছিলাম, এইসকল প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ কি আইনের উর্ধে? তাহলে ‘আদালত অবমাননা কারে কয়?’
ছয়-

আইনমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে জানান, সরকার আদালতে গিয়ে আইনগতভাবেই এ রায়ের মোকাবেলা করবে। সরকারের পক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছেন, রায়ের তারিখেই সরকার সার্টিফায়েড কপির জন্য দরখাস্ত করেছে। তাই এটা নিশ্চিত যে, সরকার এ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউর আবেদন করবে। তা ছাড়া এক্সপাঞ্জও নাকি চাওয়া হবে। তার মানে, বিবাদীয় বিষয়টি এখনও সম্পুর্ন নিঃশেষ হয়ে যায়নি। রিভিউর আরেকটি আইনী ধাপ এখনও বাকি আছে।
কিন্তু আদালতে বিচারাধীন বিষয়ে সংক্ষুব্ধ পক্ষ হিসাবে সরকারী দলের সাধারণ সম্পাদক, যিনি সরকারের মন্ত্রীও বটে, কিভাবে বিচারকের বাসভবনে যেয়ে বিচারাধীন বিষয়ে আলাপ আলোচনা করে আসেন, সেটা বোধগম্য নয়! আশ্চর্য, সেটা আবার তিনি জনসম্মুখে এসে প্রকাশ্যে স্বীকারও করেন!

সাত-
প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের সাক্ষাতের পাঁচ দিনের মাথায় দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনাও করেছেন। রাষ্ট্রপতি শপথ গ্রহণের পর আর কোন দলের প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন না। অথচ রাষ্ট্রপতি সেদিন প্রধানমন্ত্রী ও দলের সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও আইনমন্ত্রী ও রাষ্ট্রের এটর্ণী জেনারেলের সাথে বৈঠক করে পরবর্তী কর্মপন্থা ঠিক করেছেন বলে গণমাধ্যম সূত্রে প্রকাশ পেয়েছে!
জানা গেছে, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নাকি রাষ্ট্রপতিকে তার সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগের জন্য অনুরোধ করতে পারে। সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলে তদন্তের জন্য নাকি রাষ্ট্রপতিকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেবে সরকার। রাষ্ট্রপতি নাকি বিষয়টি তদন্ত করার জন্য সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলকে নির্দেশ দিবেন।

আট-
একটি জাতীয় দৈনিক জানিয়েছে, ‘প্রধান বিচারপতির ‘অসদাচরণ’ প্রমাণের জন্য বেশকিছু অভিযোগ সরকার যোগাড় করেছে। এর মধ্যে যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত একজন আসামির পরিবারের সঙ্গে বৈঠক, আবেদনকারীর অনুরোধে আপিল বিভাগের বেঞ্চ পরিবর্তনসহ প্রধান বিচারপতির বিভিন্ন বক্তব্যের অডিও এবং ভিডিও জোগাড় করা হচ্ছে। উদ্ভূত বিষয়গুলো নিয়ে যে কোনো সময়ে রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতিকে বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন। সেখানে রাষ্ট্রপতি পুরো বিষয়টি নিয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলবেন। এর পরই নাকি নির্ধারিত হবে, আসলে প্রধান বিচারপতি এবং সরকারের টানাপড়েনের পরিণতি কী।’

নয়-
সরকারের প্রথম টার্গেট, চায়ের দাওয়াত দিয়ে প্রধান বিচারপতির প্রস্থান। কিন্তু বর্তমান প্রধান বিচারপতিকে এমন শক্তিহীন বলে ধারনা করাটাই বরং শক্তিহীনতার পরিচায়ক।

সরকারের দ্বিতীয় টার্গেট, রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলকে নির্দেশ প্রদান। কিন্তু ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পর সরকারের এই স্বপ্নও বাস্তবায়নযোগ্য নয়। কেননা, প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন করে তদন্তপূর্বক অভিসংশন করানোর মত পর্যাপ্ত সময় সরকারের হাতে একেবারেই নেই।

সরকারের তৃতীয় টার্গেট, আগামী বছরের ১ ফেব্রুয়ারিতে প্রধান বিচারপতির অবসরের পরেই রিভিউ পিটিশন করা। প্রধান বিচারপতির অবসরে যাওয়ার আগে বেশি কার্যদিবস নেই। ২৫ আগস্ট থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ছুটি চলবে। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকেও লম্বা ছুটি। যদিও আপিল বিভাগের বিধি মোতাবেক রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে রিভিউর জন্য দরখাস্ত করতে হয়। এক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতির অবসরের পরেই এর রিভিউ চাওয়ার ফন্দি করতে পারে সরকার। অযুহাত হিসাবে বিলম্ব মার্জনার আবেদনের সুযোগ নেওয়া হতে পারে। কিন্তু আগামী বছর জাতীয় নির্বাচনের পূর্বাহ্নে পরবর্তী প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বর্তমান আপীল বিভাগের বিচারপতিগন তাদের নিজেদের রায়ের বিরুদ্ধে যাবেন কিনা, সন্দেহ আছে। তাছাড়া পরবর্তী প্রধান বিচারপতির জেষ্ঠতার সিরিয়ালে থাকা বিচারপতিগন যথেস্ট আত্মমযার্দাশীল বলেই আমরা জানি।

দশ-
আসলে ষোড়শ সংশোধনীর রায়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কঠিন এক বিপদের মুখে পড়েছে। সর্বশেষ অতি সম্প্রতি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া আইনসচিব বিচার বিভাগকে যে ভাষায় গালমন্দ দিলেন তাতে এটা স্পষ্ট যে, এবার বিচার প্রশাসনের মেরুদণ্ডটাও ভেংগে গেছে!

এভাবে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের পর এবার বিচার বিভাগকে ধ্বংসের মুখে নিয়ে যাচ্ছে! গণমানুষের আস্থার জায়গাগুলোকে ধ্বংস করে একদলীয় স্বেচ্ছাচারী রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রনয়নের নীল নকশার হিংস্র ছোবল এবার পড়েছে বিচার বিভাগের গায়ে।

এগারো-
দুদিন আগে প্রধান বিচারপতি আদালতে এটর্ণী জেনারেলকে বললেন, ‘আপনি প্রশাসনের সঙ্গে কমপ্রোমাইজ করে চলছেন।’ প্রধান বিচারপতির এই কথায় স্বভাবতই বিশ্বাস জন্মে, তিনি নিজেও কোন ‘কমপ্রোমাইজ’ করবেন না।

কারন, এটা শুধুমাত্র একজন ব্যাক্তি প্রধান বিচারপতির মর্যাদার বিষয় নয়। এর সাথে জড়িত পুরো বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্ন। এতে দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ফসল মাজদার হোসেন মামলার অর্জনটুকুও এক নিমেষেই মুখ থুবড়ে পড়বে! প্রধান বিচারপতি যদি এবার একটুও নড়ে পড়েন; কিংবা হুকুমটাও যদি একটু নড়ে পড়ে, তাতে পুরো বিচার ব্যবস্থাই নড়ে পড়বে।

বারো-
প্রধান বিচারপতির সামনে হয়তো রাষ্ট্রপতির পদ কিংবা নির্বাচনী সরকার প্রধানের পদ খোলা থাকতে পারে। কিন্তু সেটার গ্রহণযোগ্যতা কখনই প্রধান বিচারপতি পদের মর্যাদাকে বিকিয়ে দিয়ে সম্ভবপর নয়।

ইতিহাসে বিচারপতি মোরশেদরা খুবই ক্ষণজন্মা হন। তাই প্রধান বিচারপতিকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তিনি বিচারপতি মোরশেদ হবেন; নাকি খায়রুল হক হবেন। উনাকেই জবাব দিতে হবে, তিনি “ছিটকে উকিল” ছিলেন না!


http://ekhon.net/national/78017
 
.
bdtoday.net
আপনারা ঝড় উঠাচ্ছেন, আমরা ধৈর্য দেখাচ্ছি: অ্যাটর্নিকে প্রধান বিচারপতি

safe_image.php

আপনারা ঝড় উঠাচ্ছেন, আমরা ধৈর্য দেখাচ্ছি: অ্যাটর্নিকে প্রধান বিচারপতি - মনিটর নিউজ
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে উদ্দেশ্য করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্
MONITORBD.NEWS

জরুরি বৈঠকে বসছেন রাষ্ট্রপতি-প্রধান বিচারপতি
image-10833-1503206326-660x330.jpg

আবদুল হামিদ-বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা
জরুরি বৈঠকে বসছেন রাষ্ট্রপতি-প্রধান বিচারপতি
মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার আনুষ্ঠানিক বৈঠক হতে যাচ্ছে। রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে বৈঠকের আমন্ত্রণ জানানো হবে যেকোনো সময়ে। বঙ্গভবনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে। বৈঠকে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে আলোচনা যে হবে তা নিশ্চিত।
বঙ্গভবনের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বৈঠকের প্রস্তুতির কথা স্বীকার করেছেন। দেশের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠ রাষ্ট্রপতি যেকোনো সাংবিধানিক পদের ব্যক্তি বা কর্মকর্তাকে বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন।

গত ৩ জুলাই বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সর্বসম্মত রায়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীকে বাতিল এবং অবৈধ ঘোষণা করে। এই রায়ের ফলে, ৭২ এর সংবিধানে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদে থাকার যে বিধান বর্তমান সংসদ প্রতিস্থাপন করেছিল, তা বাতিল হয়ে যায়। এর স্থলে সামরিক শাসনামলে করা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধানকে পুন:স্থাপিত করা হয়। রায়ে কিছু পর্যবেক্ষণ এবং বিশ্লেষণ রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। আদালতের বারান্দা থেকে এই রায় রাজনৈতিক মাঠে উত্তাপ ছড়িয়েছে। বিএনপি এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে। বিএনপি নেতারা রায়কে ঐতিহাসিক হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
অন্যদিকে এই রায়কে গ্রহণ করতে পারে নি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এই রায়ের বিরুদ্ধে প্রায় সব মন্ত্রী বক্তব্য রেখেছেন। আইনমন্ত্রী আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে রায়কে অগ্রহণযোগ্য বলেছেন।

১৬ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এবং অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠকের পরই সবার চোখ বঙ্গভবনের দিকে ছিল।

বঙ্গভবনের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের অসংগতি এবং প্রধান বিচারপতির অসদাচারণের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই বঙ্গভবন এই বৈঠকের আয়োজন করেছে। রাষ্ট্রপতি কী করবেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

পূর্বপশ্চিম http://monitorbd.news/2017/08/20/জরুরি-বৈঠকে-বসছেন-রাষ্ট্/


পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট প্রধানমন্ত্রীকে অযোগ্য করেছেন: সিনহা
330411_1.jpg

20 Aug, 2017

পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট প্রধানমন্ত্রীকে অযোগ্য ঘোষণার পর সেখানে সেখানে কিছুই (আলোচনা সমালোচনা) হয়নি মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, ‘আমাদের আরও পরিপক্কতা দরকার।’ ‘আমরা বিচার বিভাগ ধৈর্য ধরছি। যথেষ্ট ধৈর্য ধরছি।’ মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ‘আজকে একজন কলামিস্টের লেখা পড়েছি…সেখানে ধৈর্যের কথা বলা আছে।’

রবিবার নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাবিধি গেজেট প্রকাশের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন। আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির বেঞ্চে এ শুনানি হয়। পরে আগামী ৮ অক্টোবর পর্যন্ত গেজেট প্রকাশে সময় দেয় আপিল বিভাগ।

শুনানির শুরুতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘গত তারিখে কি কথা ছিলো? আলাপ আলোচনা করার কথা হয়েছিলো। কার সঙ্গে কে কে থাকবে? জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘ল মিনিস্টার’।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘অল দ্যা জাজেস অব অ্যাপিলেট ডিভিশন। আমাদের সঙ্গে আলোচনা পর্যন্ত করলেন না?’

‘মিডিয়াতে অনেক কথা বলেন। কোর্টে এসে অন্য কথা বলেন। আপনাকে নয়। আপনাদের বলছি। আপনিই বলেন। কবে কি হবে। আপনারা ঝড় তুলছেন। আমরা কোনো মন্তব্য করছি?’

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘না আপনারা করেননি। এ সময় এ মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী এম আমীর উল ইসলাম বলেন, ‘আবেদনটি শুনানি করেন’।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা বিচার বিভাগ ধৈর্য ধরছি। যথেষ্ট ধৈর্য ধরছি...।’

নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাবিধির গেজেটের খসড়া গত ৩০ জুলাই আপিল বিভাগে জমা দেয় আইন মন্ত্রণালয়। কিন্তু সেটি গ্রহণ না করে আলোচনায় বসার আহ্বান জানায় আপিল বিভাগ। এরপর গত ১০ আগস্ট আপিল বিভাগের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। কিন্তু তিনি অসুস্থ হওয়ায় সে বৈঠক পিছিয়ে যায়। এরপর আর তা হয়নি।

আদালত সূত্র জানায়, ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় ১২দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেয়া হয়। ওই রায়ের আলোকে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল।

আপিল বিভাগের নির্দেশনার পর গত বছরের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় একটি খসড়া শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধি প্রস্তুত করে সুপ্রিমকোর্টে পাঠায়। ওই বছরের ২৮ আগস্ট এই মামলার শুনানিতে আপিল বিভাগ জানান, শৃঙ্খলা বিধিমালা সংক্রান্ত সরকারের খসড়াটি ছিল ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার হুবহু অনুরূপ। যা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী। এরপরই সুপ্রিম কোর্ট একটি খসড়া বিধিমালা করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। একইসঙ্গে ৬ নভেম্বরের মধ্যে তা প্রণয়ন করে প্রতিবেদন আকারে আদালতকে অবহিত করতে আইন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়।

ঢাকাটাইমস

http://www.newsofbd.net/newsdetail/detail/200/330411
 
.
দু’পক্ষই অনড়।

সরকারের তিন অভিযোগের জবাবে সরকারের পতন ঘট
BDPOLITICO.COM
http://bdpolitico.com/-p370-117.htm

আমার শাসন আমলে আমি আদালতে হস্তক্ষেপ করি নাই : এরশাদ
330425_1.jpg

20 Aug, 2017

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ বলেছেন, ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে নানা বিতর্ক হচ্ছে। আমার ৯ বছর শাসন আমলে আমি আদালতে হস্তক্ষেপ করি নাই। সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ছিলাম। যমুনা টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এসব কথা বলেন।

সব দলের অংশগ্রহণে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠ হবে বলে মনে করছেন এরশাদ। তিনি বলেন, আমার মনে হচ্ছে এবারের নির্বাচন গতবারের মতো হবে না। কারণ সমস্ত পৃথিবীর দৃষ্টি এখন নির্বাচনের দিকে।


গণ-আন্দোলনের মুখে ১৯৯০ সালের দিকে ক্ষমতা ছাড়তে হলেও রাজনীতিতে হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ ও তার জতীয় পার্টি এখনো আলোচনার বিষয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওযামী লীগের মহাজোটের অংশীদার ছিল জাতীয় পার্টি। বিএনপির বয়কটের সুযোগে ২০১৪ সালের নির্বাচনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন নিয়ে তারা বিরোধী দল হয়। একই সাথে সরকারের অংশ হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়ে জাতীয় পার্টি।

আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে চান এরশাদ। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবো। সামনে কি হবে জানিনা, তবে সম্মিলিত জাতীয় জোট আমাদের সাথে যাবে। আমার মনে হয় আমরা ভাল করবো।

সূত্র : যমুনা টিভি

http://www.newsofbd.net/newsdetail/detail/200/330425

Sunday, August 20, 2017 1:35 pm
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণের কথা অ্যাটর্নিকে স্মরণ করিয়ে দিলেন প্রধান বিচারপতি
122.jpg

ঢাকা: পাকিস্তান সুপ্রিমকোর্ট কর্তৃক দেশটির প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে অযোগ্য ঘোষণার কথা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে স্মরণ করিয়ে দিলেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
রোববার অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরিবিধি গেজেট আকারে প্রকাশ সংক্রান্ত শুনানিকালে প্রধান বিচারপতি এ কথা স্মরণ করিয়ে দেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা বিচার বিভাগ ধৈর্য ধরছি, যথেষ্ট ধরছি। আজকে একজন কলামিস্টের লেখা পড়েছি। সেখানে ধৈর্যের কথা বলা আছে।

তিনি বলেন, পাকিস্তানের সুপ্রিমকোর্ট প্রধানমন্ত্রীকে (নওয়াজ শরীফ) ইয়ে (অযোগ্য) করেছেন। সেখানে কিছুই (আলোচনা-সমালোচনা) হয়নি।

আমাদের আরও পরিপক্কতা দরকার। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে উদ্দেশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, মিডিয়াতে অনেক কথা বলছেন। কোর্টে এসে অন্য কথা বলেন। আপনাকে নয়, আপনাদের বলছি- আপনি বলেন কবে কি হবে। আপনারা ঝড় তুলছেন, আমরা কোনো মন্তব্য করেছি? জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, না; আপনারা করেননি।
http://amar-bangladeshonline.com/পাকিস্তানের-প্রধানমন্ত-2/
 
.
Chief Justice reminds attorney general of the powers of the court
  • Tribune Desk
  • Published at 01:48 PM August 20, 2017
  • Last updated at 05:13 PM August 20, 2017
Mahbubey-Alam-690x450.jpg

From right: Chief Justice Surendra Kumar Sinha and Attorney General Mahbubey Alam Dhaka Tribune
The Chief Justice used the resignation of Nawaz Sharif in Pakistan as an example of how a court order is not criticised and scrutinised
On Sunday, the Appellate Division of the Supreme Court held a hearing over the state requesting yet another extension to formulate the code of conduct for lower court judges.

During the hearing, Chief Justice Surendra Kumar Sinha said: “The judiciary has been very patient. We are being very, very patient. The Supreme Court of Pakistan removed the prime minister. Was there any criticism over it? No.

“All I am saying is that we need to be matured.”

Also Read- The 10 times the Supreme Court granted extensions for one government gazette

The Supreme Court of Pakistan disqualified Nawaz Sharif as the prime minister over allegations of corruptions on July 28. Nawaz resigned the very same day.

The dismissal of Nawaz Sharif is not the only case in Pakistan. In 2012, the Supreme Court also dismissed Yousuf Raza Gilani as prime minister over contempt of court charges.
http://www.dhakatribune.com/bangladesh/court/2017/08/20/chief-justice-power-impeach/
 
.
Chief Justice Determined, Government Confused.
অনড় প্রধান বিচারপতি, দ্বিধাদ্বন্দ্বে সরকার।

http://www.sheershanews24.com/…/%E0%A6%85%E0%A6%A8%E0%A7%9C…

এ নিয়ে আমি যখন বলি, তখন আমার বন্ধুরা অনেকেই মানতে চান না। কিন্তু জেনে রাখুন, ফল যাই হোক না কেনো, এটা নাটক নয়।
safe_image.php

অনড় প্রধান বিচারপতি, দ্বিধাদ্বন্দ্বে সরকার
শীর্ষনিউজ, ঢাকা : সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় ও রায়ের পর্যবেক্ষণ নিয়ে সরকার ও বিচার বিভাগের মধ্যে মুখোমুখী অবস্থানের পর…
SHEERSHANEWS24.COM

20915574_1937165093214539_3470404167390321699_n.jpg


People does not have faith on the National Assembly and the Election Commission:Chief Justice
জনগণ জাতীয় সংসদ ও নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না!

August 2, 2017
1.jpg

মিজানুর রহমান খান : প্রধান বিচারপতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘আমি ও আমিত্ব’-এর সংস্কৃতির সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের সংবিধানের ভিত্তি হচ্ছে, “আমরা জনগণ” সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। জাতীয় সংসদ সংবিধানের পরিপন্থী কোনো আইন প্রণয়ন করতে পারে না এবং কোনো আইন সংবিধানসম্মত কি না, তা বিচার করার অধিকার সংবিধান সুপ্রিম কোর্টকেই দিয়েছে।’ ষোড়শ সংশোধনীকে সংবিধান পরিপন্থী ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ যে রায় ঘোষণা করেছেন, তার পূর্ণাঙ্গ রায়ে প্রধান বিচারপতি এসব কথা লিখেছেন। গতকাল এই রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা লিখেছেন, ‘১৯৭১ সালে আমরা যে অলঙ্ঘনীয় ঐক্য গড়েছিলাম, তা শত্রুরা নস্যাৎ করতে ব্যর্থ হয়েছিল। আজ আমরা একটি মুক্ত, স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশে বাস করি। অথচ আজ ঔদ্ধত্য এবং অজ্ঞতাকে আমরা প্রশ্রয় দিয়ে চলছি। কোনো একজন ব্যক্তি দ্বারা কোনো একটি দেশ বা জাতি তৈরি হয়নি। আমরা যদি সত্যিই জাতির পিতার স্বপ্নে সোনার বাংলায় বাঁচতে চাই, তাহলে এই আমিত্বর আসক্তি এবং আত্মঘাতী উচ্চাভিলাষ থেকে আমাদের মুক্ত থাকতে হবে। এই আমিত্ব হলো কেবল এক ব্যক্তি বা একজন মানুষ সবকিছুই করতে পারেন এমন ভাবনা।’

আপিল বিভাগের সাতজন বিচারপতির মধ্যে পাঁচজন বিচারপতি প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণের সঙ্গে একমত পোষণ করার পরও আলাদা করে নিজেরা পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন বলে প্রতীয়মান হয়। তবে বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা প্রধান বিচারপতির রায়ের সঙ্গে সহমত পোষণ করে তার বাইরে আর কিছু লেখেননি।

তিনি লিখেছেন, ‘আমরা যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নগর–পরিকল্পনার দিকে তাকাই, তাহলে দেখি যেই ব্যক্তি তাদের নগরের পরিকল্পনা করেছেন, তাঁকেই তারা স্বীকৃতি দিয়েছে। দাসপ্রথা বিলুপ্তির জন্য আব্রাহাম লিংকনের স্ত্রী মেরি টড স্বীকৃতি পেয়েছেন। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আরও অনেকে স্বীকৃতি পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে চারজন জেনারেলও রয়েছেন। কিন্তু আমাদের দেশে একটি রোগ আমাদের মধ্যে সংক্রমিত হয়েছে। আর সেই রোগের নাম “অদূরদর্শী রাজনৈতিকীকরণ”। এটা একটা ভাইরাস এবং দুর্ভাগ্যবশত আমাদের সংস্কৃতিকে তা এমন বিস্তৃতভাবে সংক্রমিত করেছে যে আমাদের নীতিনির্ধারকেরা এমন একটি ভবিষ্যৎ দেখতে বা কল্পনা করতেও পারছেন না যে ভবিষ্যতের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে পুরো জাতি, কোনো একজন ব্যক্তি নন।’

প্রধান বিচারপতি লিখেছেন, ‘এই বাজে রোগের কারণে নীতিনির্ধারকেরা সবকিছু ব্যক্তিকরণ করে ফেলেছেন। তাঁরা তাঁদের ক্ষুদ্র এবং সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থে একটি ভুয়া ও “মেকি গণতন্ত্র” প্রতিষ্ঠা করেছেন। আর এটা তাঁরা লজ্জাজনকভাবে আমাদের সংবিধানের অন্যায্য সুবিধা নিয়ে করেছেন। অথচ ১৯৭১ সালে আমাদের শহীদেরা রক্ত দিয়ে এ সংবিধান লিখেছিলেন। আমাদের অবশ্যই এই নোংরা “আমাদের লোক” মতবাদ পরিহার করতে হবে। পরিত্যাগ করতে হবে এই আত্মঘাতী “আমি একাই সব” দৃষ্টিভঙ্গি। দলীয় আনুগত্য বা অর্থবিত্ত নয়, জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে প্রতিষ্ঠান তৈরিতে শুধু মেধার বিবেচনাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।’

প্রধান বিচারপতি এক-এগারো সম্পর্কে লিখেছেন, ‘দুই বছরের জরুরি অবস্থার নামে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। আর সেটা ঘটেছিল সেই সময়ের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের দূরদর্শিতার অভাব এবং গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে তাদের অনীহার কারণে।’ ত্রয়োদশ সংশোধনীর বিষয়ে প্রধান বিচারপতি লিখেছেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠের রায়ে আপিল বিভাগ মত দি‌য়েছিলেন যে দুটি সংসদীয় নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে। তবে শর্ত হলো, বিলুপ্ত হওয়া ৫৮(ক) অনুচ্ছেদের ৩ ও ৪ দফা অনুযায়ী সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি কিংবা আপিল বিভাগের সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে প্রধান উপদেষ্টা পদে নিয়োগ করা যাবে না। এই আদালত উল্লিখিত নির্দেশনা এ কথা মনে রেখে দিয়েছিলেন যে প্রধান বিচারপতির নিয়োগপ্রক্রিয়ায় তাহলে রাজনৈতিকীকরণের সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে।’

নির্বাচন যাতে সর্বদাই অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে পারে, সে জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আরও বেশি ক্ষমতা এবং তার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করতে হবে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি লিখেছেন, ‘এই আদালত লক্ষ করেছেন যে প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দল যারাই নির্বাচনে হেরে যায়, তারা নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে এং বিরোধী দল সংসদে সহযোগিতা করে না। শেষ পর্যন্ত দশম সংসদ নির্বাচনে একটি বড় রাজনৈতিক দল অংশ নেয়নি। এই আদালতের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সব ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করা। সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ ছাড়াই নির্বাচন কমিশনের শূন্য পদগুলো স্বয়ংক্রিয়ভবে পূরণ হবে। কিন্তু পরবর্তী সরকারগুলোর কেউ এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকি বিরোধী রাজনৈতিক দলও সংসদে কিংবা কোনো ফোরামে এই প্রশ্ন তোলেনি এবং তার ফল দাঁড়িয়েছে, নির্বাচন কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ ঘটেনি।’

রায়ে প্রধান বিচারপতি লিখেছেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন যদি নিরপেক্ষভাবে এবং কোনো হস্তক্ষেপ ছাড়াই স্বাধীনভাবে না হতে পারে, তাহলে গণতন্ত্র বিকশিত হতে পারে না। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অনুপস্থিতিতে একটি গ্রহণযোগ্য সংসদও প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। সে কারণে আমাদের নির্বাচনপ্রক্রিয়া এবং সংসদ শিশু অবস্থায় রয়ে গেছে। জনগণ এ দুটি প্রতিষ্ঠানের ওপর আস্থা অর্পণ করতে পারছে না। এ দুটি প্রতিষ্ঠান যদি জনগণের আস্থা এবং শ্রদ্ধা অর্জনের জন্য প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ থেকে বিরত থাকে, তাহলে কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না। একটি অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অভাবে বিজ্ঞ রাজনীতিবিদদের দিয়ে সংসদ গঠিত হতে পারে না, বরং তা সংসদের নিজের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণকে ব্যাহত করতে পারে।’

রায়ে বলা হয়েছে, ‘সংসদ যদি যথেষ্ট পরিপক্বতা অর্জন না করে, তাহলে উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণ করার ক্ষমতা সংসদের কাছে ন্যস্ত করা হবে একটি আত্মঘাতী উদ্যোগ। সংসদের কাছে বিচার বিভাগের জবাবদিহি করা উচিত নয়; বরং রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত হবে জাতীয় নির্বাচনে তাদের প্রার্থী বাছাইয়ে সতর্ক হওয়া। যেসব দেশে বিচারপতিদের সংসদীয় অভিশংসনের ব্যবস্থা রয়েছে, সেসব দেশের গণতন্ত্র আমাদের তুলনায় বয়ঃপ্রাপ্ত হলেও সেখানে ওই ব্যবস্থা কার্যকরভাবে প্রয়োগ সম্ভব হয়নি।’

রায়ে উচ্চ আদালতের বিচারক, নির্বাচন কমিশনার, মহাহিসাব নিরীক্ষক, পিএসসির সদস্যসহ সব সাংবিধানিক পদধারীকে অপসারণ–সংক্রান্ত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধান পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবনের জন্য এখন সংসদের আর কোনো পদক্ষেপ প্রয়োজন হবে না। অষ্টম সংশোধনীর বৈধতার মামলার রায়ের আলোকে এটি আপনাআপনি কার্যকর হয়ে গেছে। সুপ্রিম কোর্ট একই সঙ্গে বিচারকদের অসদাচরণের কোনো প্রাথমিক অভিযোগ এলে তা প্রথমে প্রধান বিচারপতি এবং তাঁর পরের দুই জ্যেষ্ঠ বিচারককে নিয়ে তদন্ত করে সে বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য সম্মতি চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রেরণের বিধান করে নতুন আচরণবিধি করেছেন।’

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা অ্যাটর্নি জেনারেলের যুক্তি খণ্ডন করে বলেন, ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ইতিপূর্বে আপিল বিভাগ স্থায়ীভাবে মার্জনা করেনি, এ যুক্তি সঠিক নয়।’ তিনি আরও বলেন, এটিই একমাত্র সামরিক আইন দ্বারা তৈরি বিধান নয়, যা এই আদালত অনুমোদন করেছেন। দৃষ্টান্ত হিসেবে তিনি ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন, পঞ্চম সংশোধনীতে আনা জাতীয়তার পরিচয় বাংলাদেশি করা, সংবিধানের শুরুতে বিসমিল্লাহ যুক্ত করার কথা উল্লেখ করেছেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘১৯৮৮ সালের রাবার স্ট্যাম্প সংসদে আনা, ২(ক) অনুচ্ছেদে বর্ণিত রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ১৯৭২ সালের সংবিধানে ছিল না। ’৭২-এর সংবিধানের অন্যতম রাষ্ট্রীয় মূলনীতি ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের প্রত্যক্ষ সংঘাত রয়েছে, তারপরও তাকে সংবিধানে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এভাবে ধর্মীয় একটি অভিমন্ত্রে ধর্মীয় ভাবাবেগকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে, যা আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা ও চেতনার সরাসরি বিরুদ্ধে। ১৯৭৯ সালে একটি সামরিক সরকার সংবিধানে এটি প্রতিস্থাপন করলেও পঞ্চদশ সংশোধনীতে সংসদ তাকে বৈধতা দিয়েছে। সে কারণে ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি সম্পূর্ণরূপে পরাস্ত হয়েছে। আর এভাবে ’৭২-এ সংবিধানে বর্ণিত স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং মূল সংবিধানের চেতনা সমাহিত করা হয়েছে। অথচ অ্যাটর্নি জেনারেল যুক্তি দিয়েছেন, সামরিক আইনের কণামাত্রও সংবিধানে থাকতে পারবে না।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, যার সুরক্ষায় শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। তাই অ্যাটর্নি জেনারেলের আবেগপূর্ণ যুক্তি গ্রহণ করতে আমরা অক্ষম। এটাও স্বীকৃত যে উভয় পক্ষ স্বীকার করেছে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা মৌলিক কাঠামো, আর মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করা যায় না। আর এই আদালত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার স্বার্থে সুরক্ষা দিয়েছেন।’

প্রধান বিচারপতি উল্লেখ করেন, ‘ষোড়শ সংশোধনী মামলায় হাইকোর্ট বিভাগের রায় প্রদানের পরে সুপ্রিম কোর্ট লক্ষ করেছেন যে সংসদ সদস্যরা রায়ের সমালোচনা করে সংসদে বক্তব্য দিয়েছেন। রায় এবং বিচারকদের শুদ্ধতা নিয়ে অসংসদীয় ভাষায় প্রশ্ন তুলেছেন। এটা প্রমাণ করে যে আমাদের সংসদীয় গণতন্ত্র অপরিপক্ব।’

রায়ে বলা হয়েছে, অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানিকালে যুক্তি দিয়েছেন যে যদি কতিপয় বিচারক হতে আগ্রহী ব্যক্তি নিজেদের ‘খুব উঁচু, খুব বড়’ এবং ‘জনপ্রতিনিধিদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ’ বলে গণ্য করেন, তাঁদের বিচার বিভাগে স্বাগত জানাই না। তাঁরা এমনকি চলে যেতে পারেন। আজমালুল হোসেনও তাঁর সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন। এম আমীর-উল ইসলাম ইতিহাসবিদ লর্ড অ্যাক্টনের বরাতে বলেছেন, সকল ক্ষমতা দুর্নীতিগ্রস্ত। কিন্তু নিরঙ্কুশ ক্ষমতা নিরঙ্কুশভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত। তাই প্রশ্ন জাগে, ক্ষমতার অনুশীলন কার নিয়ন্ত্রণে থাকা উচিত? ইংল্যান্ডের বিচারপতি লর্ড ড্যানিং বলেছেন, ‘কাউকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে। আর আসুন বিচারকদেরই বিশ্বাস করি।’ এরপর প্রধান বিচারপতি লিখেছেন, ‘বিচারকদের প্রতি অ্যাটর্নি জেনারেল অত্যন্ত নির্দয় মন্তব্য করেছেন। তিনি এবং সরকার যদি বিচারকদের ওপর ভরসা না রাখতে পারেন, তাহলে আমি বলব, তিনি ভ্রান্ত এবং তাঁর উচিত হবে তাঁর মক্কেলকে (সরকার) এই পরামর্শ দেওয়া যে এটাই যদি সরকারের ধারণা হয় যে বিচারকেরা স্বাধীন এবং পক্ষপাতহীন নন, তাহলে দেশে আস্থার আর কোনো জায়গাই থাকবে না।’ তিনি লিখেছেন, আজমালুল হোসেনও উচ্চ আদালতের বিচারকদের সম্পর্কে নির্দয় এবং অবমাননকার মন্তব্য করেছেন।

৭০ অনুচ্ছেদ Article 70
৭০ অনুচ্ছেদ সম্পর্কে প্রধান বিচারপতি মনে করেন, ‘এই অনুচ্ছেদ সংসদ সদস্যদের বেদনাহত এবং অসংগতভাবে তাঁদের অধিকারকে শৃঙ্খলিত করেছে। তাই সংসদের কোনো ইস্যুতেই তাঁরা দলীয় অবস্থানের বিরুদ্ধে কোনো অবস্থান নিতে পারেন না। সংবিধানের ৯৫(২)গ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো আইন না করা সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগে নির্বাহী বিভাগকে একটি বিশেষ সুবিধা দিয়েছে। আর ১১৫ ও ১১৬ অনুচ্ছেদ ’৭২-এর সংবিধানে ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় নির্বাহী বিভাগের প্রভাব পড়বে।’ তিনি লিখেছেন, ‘কোনো সন্দেহ নেই, ৭০ অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য হলো সরকারের স্থিতিশীলতা ও ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। দলের সদস্যদের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখা।’

প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন রেখেছেন, ‘সংসদ সদস্যদের যদি সন্দেহের চোখেই দেখা হয়, তাহলে তাঁদের কী করে উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের মতো দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত নেওয়ার কাজে ন্যস্ত করা যায়। তাই এই অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্যের চেতনা হলো সংসদের নির্বাচিত সদস্যরা তাঁদের মনোনীত করা দলের প্রতি আনুগত্য বজায় রাখবেন। আসলে তাঁরা তাঁদের দলের উচ্চপর্যায়ের হাতে জিম্মি। তাই ৭০ অনুচ্ছেদের বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগ যে দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েছেন, তার মধ্যে আমরা কোনো বৈকল্য দেখি না। সংসদের হাতে বিচারক অপসারণের ক্ষমতা দেওয়া হলে বিচারকেরা দলের হাইকমান্ডের অনুকম্পানির্ভর হয়ে পড়বেন।’

হাইকোর্টকে ভর্ৎসনা

প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টের রায়ের একটি অংশ তুলে ধরেন, যেখানে বলা হয়েছিল, ‘আমাদের অভিজ্ঞতা এটা দেখাচ্ছে যে সংসদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশের ফৌজদারি অপরাধের রেকর্ড রয়েছে। তাঁরা দেওয়ানি মামলাসমূহের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কিন্তু ষোড়শ সংশোধনীর কারণে সাংসদেরা বিচারকদের কার্যত বসে (কর্তৃত্ব অর্থে) পরিণত হয়েছেন, যা উচ্চ আদালতের বিচারকদের স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনে হুমকি সৃষ্টি করেছে। সংবাদপত্রের রিপোর্ট অনুযায়ী সংসদের ৭০ শতাংশ সদস্য ব্যবসায়ী। মাহবুবে আলম এবং মুরাদ রেজা (অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল) এই তথ্যের বিষয়ে আপত্তি করেননি। আমরা আমাদের অভিজ্ঞতায় দেখতে পাই, আইন প্রণয়নসংক্রান্ত সংসদীয় বিতর্কে তাঁরা কম আগ্রহী। এর পরিণাম হলো আজকের দিনে সংসদে পাস করা বেশির ভাগ আইন ‘ত্রুটিযুক্ত’। অসম্পূর্ণ এবং ‘নিচু মানের’ আইন প্রণয়নে তাঁদের দায়িত্ব উত্তমরূপে পালনের চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হতে তাঁরা বেশি আগ্রহী হয়ে পড়েছেন। বিচারকদের অসদাচরণ বা অসামর্থ্যের বিচার করা আইনপ্রণেতাদের কাজ নয়।’

প্রধান বিচারপতি এরপর মন্তব্য করেছেন, ‘সংসদ সদস্যদের বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগের উল্লিখিত পর্যবেক্ষণ সম্পূর্ণরূপে অবাঞ্ছিত এবং আমরা কোনোভাবেই এ দৃষ্টিভঙ্গি সমর্থন করি না। সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে কোনো আদালত বা বিচারকদের এ রকম অবমাননাকর মন্তব্য করা উচিত নয়। আদালত এবং সংসদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতি থাকা দরকার। একইভাবে সংসদেরও উচিত নয় সুপ্রিম কোর্টের কোনো পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য বা কটাক্ষ করা।’

(টুডে সংবাদ/তমাল)

প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে www.todaysangbad.com
 
.
16TH AMENDMENT CASE
‘Re-employment of retired judges must be stopped’
Published: 00:05, Aug 21,2017 | Updated: 00:11, Aug 21,2017
22405_191.jpg

Sarkar Ali Akkas

Dr Sarkar Ali Akkas, professor and founding dean of the law faculty at Jagannath University who had worked in judicial services for a few years, talks about different aspects of the Suprme Court’s judgement in the 16th amendment to the constitution case with M Hasan and Shyikh Mahdirepresenting New Age

New Age: What is your response to the 16th amendment case verdict?
Sarkar Ali Akkas: Whatever good or bad side this judgement has, I feel that the debate that the judgement has given rise to is more important. This debate will lead us in a direction where it will be easy for us to resolve and rethink our constitutional problems and issues.

New Age: Many argue that the provision for the supreme judicial council is automatically restored by virtue of the judgement. Can the court directly restore any provision to the constitution which was repealed by the parliament? Does this place the judiciary and the legislative in a confrontational position?
Sarkar Ali Akkas: In the end of the judgement, the court stated that the Article 96 provision will be restored. It has, therefore, been restored by the order of court. But I think that the provision would automatically be restored even if the court does not give such an order. For this, the parliament does not need to enact a law to restore the supreme judicial council provision. Why? This is because the supreme judicial council had previously been there in the constitution until the parliament replaced it through a constitutional amendment. When the Supreme Court scrapped the amendment, it automatically reinstates the provision for the supreme judicial council as it had been there before.

New Age: Even in the post-Masdar Hossain situation, the government, the executive that is, still has an effective control over the lower judiciary. In your opinion, should the parliament have control of any kind over the Supreme Court as envisaged in the original constitution?
Sarkar Ali Akkas: As a matter of fact, the Supreme Court should have control over both the tiers of the judiciary, the lower court and the Supreme Court. But the control should not be exclusive. Whenever exclusive control comes in one hand, a greater risk of misusing power arises. In my view, the current structure where the subordinate judiciary is controlled by both the Supreme Court and the law ministry is somewhat reasonable although some could call it a ‘double rule’. There is, indeed, need for some regulations to prescribe the extent of control that might be exercised by each of them but the control must be exercised by both sides although a balance has to be ensured. It might be argued that this approach might contradict with the notion of the separation of powers, but there is a saying in political science that a complete separation of powers is neither possible nor practicable. So, a complete separation of the subordinate judiciary from the executive may not be practicable. I think that there must be a balance between the two.

New Age: Ruling party leaders have not raised any objection to the issue of the supreme judicial council in the 5th amendment case in 2011. How do you now assess the statements of the politicians who are talking against the judgement?
Sarkar Ali Akkas: The popular narrative that the government which had no objection to retaining the supreme judicial council in 2011 cannot now have objection about it seems irrational to me. People learn from their experiences. An issue seen in a particular perspective today may be seen in an entirely different perspective tomorrow. Then again, I do not assert that the amendment was flawless. The legislature intended to revert to the original provisions of the 1972 constitution, which was scrapped by the Supreme Court. Unfortunately, all the discussions about the verdict centre around some observations in the judgement which, I think, keeps us apart from thinking to the point to resolve constitutional issues and predicaments.

New Age: Will the ongoing culture of political criticism of the judgement harm the rule of law and the separation of powers? How can this culture of unrestrained statements by ministers and ordinary people about a verdict can be controlled?
Sarkar Ali Akkas: Constructive criticism should be welcomed as long as it relates to the essence of a judgement and the dignity and honour of the Supreme Court are not harmed. Constructive criticism of court orders and judgements is in practice in many countries. I think that the judiciary should rather welcome constructive criticism so that it could reassess its own decisions and consider any possible corrections, if any, as no one is above mistake. But the culture of vilifying a judge individually or the judiciary as a whole with malicious intention is unacceptable.

New Age: Is there any part in the judgement that you think should be reconsidered for the interest of greater good? Do you think the Appellate Division should exercise the review authority in any manner?
Sarkar Ali Akkas: In my view, the immaturity of the parliament has been shown as a main factor behind the annulment of the amendment and Article 70 of the constitutions is described as the driving force. But I was surprised not to have found any certain and firm observations on Article 70 in this judgement. I think that after the 15th amendment to the constitution, Article 70 has become more workable as the option to vacate parliamentary seats has been reduced to voting against the party whereas earlier, abstention from voting could amount to the vacating of the seat. A member of parliament can now, therefore, abstain from voting in the house without the fear of losing the seat. Furthermore, a proposed bill in the parliament does not necessarily represent the party; it rather represents the government. It enables members of parliament to smoothly raise objection to any bill in the house. A crucial aspect of the verdict could have been the interpretation of ‘voting against party.’ Sadly, we do not find any such constructive and critical discussion.

New Age: Four of the seven judges refrained from commenting on Article 116 under which the lower judiciary is kept under the control of the government. Being the proponents of judicial independence, some of the judges kept silent about Article 116. How do you evaluate this? Do you think that the overall independence of the judiciary has been indirectly overlooked in this judgement?
Sarkar Ali Akkas: The issue was exclusively related to Article 96, not Article 116. It seems that Article 116 came in the scene when the chief justice mentioned this in his observation while he was talking about the independence of the judiciary. I think that the other judges kept silent because the state was not given the opportunity to put forward its arguments. The foundation of the judiciary is based on public confidence and it helps the judiciary to take pride in its integrity and independence and also inspires judges from getting into any misconduct. One of the challenges for independence of the judiciary is the practice of the re-employment of retired judges. For the sake of judicial independence, the practice of the re-employment of retired judges must be stopped. When a sitting judge stands the chance of being re-employed in an office of profit, his idea of independence might take a different turn. I think that it is high time we stopped this unhealthy practice if we really care about the independence of the judiciary in accordance with the basic structure of the constitution.

New Age: In the midst of this ongoing rift between the judiciary and the executive regarding the removal of judges, can you suggest any formula where both the parties can participate in removing a judge?
Sarkar Ali Akkas: I already have mentioned that neither side should hold exclusive power regarding the removal of judges. Besides, the process of the supreme judicial council is not flawless because this forum is exclusively composed of judges. The issue of evaluating judges by judges themselves might not seem transparent. Let me give you an example of the Commission on Judicial Performance of California. This is an independent state agency established by the state constitution, which is responsible for investigating complaints of judicial misconduct, incapacity and discipline of the judges. The commission is composed of 11 members, including three judges, two attorneys, and six representatives of citizens, where the citizens are selected and appointed by the governor, the senate committee and the speaker of the state assembly. This seems to be a very transparent and participatory process. Interestingly, this commission has jurisdiction over former judges for conducts before their retirement or resignation.
Another example is the judicial service commission of New South Wales, Australia. As an independent statutory organisation, this commission works as the part of the judicial arm of the government. On receiving complaints against any judge, the commission starts investigation. If there is substantial proof in favor of the complaint, it is then forwarded to the conducts division, a division composed of judges. This forum also holds its own investigation and then submits the report to the parliament. The parliament then decides the fate of the judge by voting and adopting resolutions. If the removal of the judge is decided, the governor orders and executes the removal. In this mechanism, every organ of the state cooperates with each other simultaneously, which gives a better result. In my view, we can opt for any of these two options.

New Age: The legislature wants to reinstate the original Article 96 in the constitution, but it shows reluctance at the original Article 116. Conversely, the judiciary seeks to pursue original Article 116 but turns away from the original Article 96. What do you think of this?
Sarkar Ali Akkas: No confidence is the main reason here. Sadly, neither the judiciary nor the executive has enough confidence in each other. Previous bitter experiences may be the reason for such no confidence. There could be a situation were both the parties want to get back to original constitution or neither party wants it. But we do not see that.

New Age: How do you see the urgency of the removal procedure of judges by the parliament where there is still a vacuum of law regarding the appointment of judges? As stated in the judgement: ‘that non-framing of any law pursuant to Article 95(2)(c) of the constitution has virtually given an upper hand to the executive in the matter of appointment of the judges of the Supreme Court’. How do you evaluate this statement?
Sarkar Ali Akkas: This is a very important topic to be discussed in our legal arena. Even the judgement could not make it clear. Article 95 says — a person cannot be qualified for appointed as a judge unless he is a citizen of Bangladesh ‘and’ has been an advocate for 10 years of the SC [95(2)(a)], or has been in judicial service for ten years[95(2)(b)], or has such qualifications as may be prescribed by law for such appointment as a judge of SC[95(2)(c)].
Each of these additional qualifications after the main qualification, ‘citizen of Bangladesh’, is an independent one. Look at the word ‘or’, not necessarily ‘and’ is there. The word ‘or’ is kept there so that besides advocates and judicial officer(s), a third party can also become a judge of the Supreme Court. The third qualification has not been prescribed by our parliament yet. But there is a misconception among legal experts that the law which is to be enacted under Article 95(2)(c) will be an additional one, prescribing qualifications to be assessed with previous qualifications as stated under (a) or (b). This is a wrong conception. Article 95(2)(c) denotes us to a new and independent qualification which may be prescribed by the parliament through a law. Even our Supreme Court in this judgement could not get out of this misconception. Article 95(2)(a) says about lawyers, Article 95(2)(b) says about subordinate judges and Article 95(2)(c) talks about new qualification which the parliament may prescribe through a law! This new qualification may include legal research experience or experience of teaching law. For example, in Nepal, a legal researcher can be a judge; in some other countries, including Nepal and Sri Lanka, a law teacher can also become a judge. Article 95(20(c) talks much about qualification (new) and less about appointment. Yes, the government can make any policy or law prescribing the appointment procedure independent of Article 95(2)(c). But Article 95(2)(c) has nothing to give an upper hand to the executive in the matter of the appointment of the judges of the Supreme Court.

Dr Sarkar Ali Akkas, a teacher of law in Jagannath University, worked in judicial services for a few year after receiving his bachelor’s and masters’s degree in law at the University of Rajshahi. He has a PhD degree on the independence of the judiciary from Wollongong University of Australia.
http://www.newagebd.net/article/22405/re-employment-of-retired-judges-must-be-stopped
 
.
Amu tells CJ this is Bangladesh, not Pakistan
SAM Staff, August 21, 2017
amu.jpg

In an oblique reference to Bangladesh chief justice’s remarks, industries minister Amir Hossain Amu on Sunday said Bangladesh did not emerge from any communal poison like Pakistan but through the sacrifices of three million people.

“Such utterances are meaningless… this is not Pakistan…this is Bangladesh,” he said apparently venting angers at the chief justice’s remarks.

Chief justice Surendra Kumar Sinha, as media reported on Sunday, said the judiciary is having enough patience.

Amu said, “We’ve heard our chief justice asked to look at Pakistan. We had looked at Pakistan many days ago, not today.”

Recently, Pakistan’s Supreme Court ousted its prime minister Nawaz Sharif over corruption claims.

The Awami League leader said the judges came to the court set up for hanging Bangabandhu in the Agartala “conspiracy” case but the people of Bangladesh and Pakistan do not know how and when they (judges) fled. “We’ve had that experience. If such things need to be seen again here, then the people of the country are ready (to face it).”

The industries minister said conspiracies are being hatched against Bangladesh to make it a failed state.

“We’re seeing conspiracies from various fronts. Some are trying to catch fish in troubled waters. A vested group is conspiring to hamper the country’s security and halt its pace of development,” he said.

Amu said Pakistan is now a failed sate and they cannot tolerate today’s progress of Bangladesh. “That’s why they’re conspiring to make Bangladesh a failed state.”

The minister came up with the remarks at a discussion organised by the Ministry of Industries marking the 15 August.

About Bangabandhu, he said the killers did not only kill the person Bangabandhu on the black day of 15 August but also tried to kill the spirit of the independence.
http://southasianmonitor.com/2017/08/21/im-amu-tells-cj-bangladesh-not-pakistan/
 
.

Pakistan Defence Latest Posts

Pakistan Affairs Latest Posts

Back
Top Bottom