What's new

Bangladesh: Hindu man arrested and family put under house arrest over alleged ‘blasphemous’ message, Hindu groups launch protest

Isn't rickshaw pulling more honorable than licking something ? Just want to know your opinion!
eije bhai, kemon asen ?

eder obostha dekhen 👇
 
eije bhai, kemon asen ?
Alhamdulilla bhalo asi bhai. Apni kemon asen?


eder obostha dekhen 👇
Hm bhai , eisob dekha na dekha Soman. Zotodur jani africar most undeveloped nation gular obosthao eto korun na.

Kintu esob bole lav ki? Tara hajar hok supa pow , eisob dekhbe na.

Eder dharona holo, bigger is better, zehetu Indian te 1.4 Manush ar 280 koti hat ase, tai era sobar cheye dhoni ( rich)!

Mere Hindustan mahan hain ei slogan dia ei osohay lok gular to ar pet vorano zay na eder kase ei shoukhin slogan er kono dam nai.
 
Lmao Dogkha, a slave telling me to pull richshaw.
At least we can build a richshaw unlike you low iq dogkhas
Yeah off course you can build a rickshaw Rockybul...you can also wash dishes in that Indian restaurant that you are employed...Noone doubts that...Afterall you are Asian Tigers...
 
Please be respectful...it is "Dogkhali".

Attention paitey chai - tai ektu tafaling korey arki....

iu
 
Thanks India to open Gajaldoba barrage and flooding us.

At least now Bangladesh now are literally taking
it as war on Bangladesh ( by India ), after trying to provoke mass communal riot in peaceful Bangladesh!

That's why teesta project will be stared soon!



এখন শুধু ভারতের দালাল ধরার অপেক্ষা!

( Now it's time to crackdown on fifth columnists and raw moles )
 
Last edited:
@itsanufy দাদা। এইটা আপনার জন্য পুরাটা পইড়েন কিন্তু!



আবদির প্রিয় ‘র’ এর ‘মরটাল ফিয়ারে’ জীবন


আবদির প্রিয় ‘র’ এর ‘মরটাল ফিয়ারে’ জীবন
গৌতম দাস
২৮ অক্টোবর ২০২১
https://wp.me/p1sCvy-3MI

[সার-সংক্ষেপঃ ‘মরটাল ফিয়ারে’ [mortal fear] মানে র’ এর হাতে খুন হবার ভয়। আমরা সবাই ভারতের র [RAW] এর হাতে মরার ভয়ে আছি, ‘র’ আমাদের তাড়া করছে। বলেছেন – ভারতীয় সাংবাদিক আবদি]
তাঁর নাম এসএনএম আবদি [SNM ABDI]। গত আশির দশকে ইন্দিরা আমলে ভারতের বিহার পুলিশের এক কান্ড। তারা অপরাধ কমাতে এক সহজ পদক্ষেপ নিয়েছিল। অপরাধীর চোখে এসিড ঢেলে দেওয়া যাতে তারা আর অপরাধ না করতে পারে। করা এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম করে বিষয়টাকে মিডিয়ায় এনে বিখ্যাত হয়েছিলেন এই আবদি। এখনও আবদির পরিচয়ের সাথে তা সবজায়গায় এমন লেখা পাওয়া যাবে। জাতিসংঘের পুরস্কারও পেয়েছিলেন এজন্য। তিনি ভারতের আউটলুক পত্রিকার ডেপুটে এডিটর ছিলেন পরে আরেক ওয়েব মিডিয়া ফাস্ট পোস্ট এর সাথে যুক্ত হয়েছিলেন। সেসময় গত ২০১১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর বাংলাদেশ সফরকালে (তিস্তার পানি দিবার চুক্তি করতে এসেও না দেয়ার সেই সফর) সফরসঙ্গী দলের সদস্য হয়ে আবদি বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। স্মৃতি হাতড়ে সেখান থেকে বলছি।

করোনাকালে বিক্রি ও বিজ্ঞাপন কমে যাওয়ায় ভারতে প্রত্যেকটা মিডিয়াই টিকে থাকার জন্য এক মুশকিলের লড়াইয়ে এখনও পড়ে আছে। সব প্রতিষ্ঠিত মিডিয়াতেই তাদের রিপোর্টের শেষে অর্থ,অনুদান চাঁদা ইত্যাদির আবেদন সংযোজন করা হয়েছে দেখতে পাবেন। আর তাতে ফলাফলে আমরা দেখছি বেশির ভাগ প্রধান ধারার মিডিয়া মোদির দারস্থ হয়েছে।
আরেক দেশে গিয়ে নিয়মিত নাশকতা কর্মকান্ড চালানোর ভারতের গোয়েন্দা এক প্রতিষ্ঠান হল ‘র’। এই ‘র’ স্পনসরড বা অর্থ দিয়ে পরিচালিত এক প্রাইভেট সংবাদ সংস্থা বা এজেন্সি হল এএনআই [ANI] যার প্রধান কাজ হল ফেক নিউজ ছাপা। অর্থাৎ এএনআই-এর কাজ হল ‘র’ স্পনসরড প্রপাগান্ডা বক্তব্যকে নিউজ হিসাবে প্রান্তিক মিডিয়াতে সরবরাহ করা। আর যে প্রান্তিক মিডিয়া এটা ছাপে সে এর বিনিময়েই মোদির ‘সাহায্য’ বা মিডিয়া ফান্ড পেয়ে থাকে। আর এমন নিউজ ছাপার মাধ্যমেই ভারতের মিডিয়াগুলো করোনাকালে তাদের আর্থিক সংকট সামলেছিল। বাংলাদেশের মিডিয়াজগত আরো দুর্বল,এখানে কেউই বাণিজ্যিকভাবে কোনকালেই সফল নয়। তাই ‘র’ স্পনসরড এএনআই এর “নিউজের” আছর বাংলাদেশে আরো বেশি।

তবু ভারতে এসবের বাইরে থেকে অর্থের লোভ সামলানে এই কষ্টের দিনে টিকে থাকা অল্প ওয়েব পত্রিকাও আছে। যদিও তারা খুবই ছোট ফলে বাজার শেয়ার খুবই কম। তবু এরা অনেকেই যথেষ্ট প্রভাবশালী নিজ মেরিটে। আমার ধারণা এমনদের শীর্ষে আছে এখন সম্ভবত ওয়াইর[WIRE] – এই মিডিয়া। যদিও মেরিটেড পত্রিকাও বছর দশেক আগে রেগুলার না,হঠাত করে কিছু ক্যাশের লোভে দু একটা ‘র’ স্পনসরড প্রপাগান্ডা বক্তব্য ছেপে দিত। আর করোনাকালে এটাই এখন রেগুলার ফেনোমেনা। তাই করোনাকালেও মোদির ফান্ডে আগ্রহ যারা দেখায় নাই বলে মনে হয় তেমনই এক ওয়েব পত্রিকা হল ‘দ্যা কুইন্ট’ [The QUINT]।
এই ‘দ্যা কুইন্ট’ পত্রিকায় আবদি গতকাল বাংলাদেশ ও হাসিনাকে নিয়ে একটা ‘নিচা দেখানো’ [derogatory] লেখা লিখেছেন। তবে কিছু জায়গা খুবই আপত্তিজনক ও অপমানসুচক। এছাড়া ভুল তথ্য ও ভুল ব্যাখ্যায় তা মনগড়া ভাবে লেখা। এসব ছাড়াও লেখকের বাকি সমস্যাটা হিন্দুজাতিবাদের চোখ দিয়ে সব দেখলে যেমন হয় সেই সমস্যা। হিন্দুজাতিবাদের চোখে দেখার এই স্টাইল; এটার একটা ভাল নাম আছে যেটাকে বলে ‘সেকুলার প্রগতিশীল’। অর্থাৎ লেখক আবদি আসলে এক ‘সেকুলার প্রগতিশীল’ সম্পাদক।

হিন্দুজাতিবাদ বা হিন্দুত্ববাদের চোখে ও চর্চায় ভারতের কোন মুসলমানকে তারা যেসব শর্তে তাদের সমাজে থাকতে চলতে বসবাস করতে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বা চাকরির প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতে ও তাদের পাশে বসে তা করতে গেলে যে শর্তে এসব তারা করতে দেয় সেই শর্তেরই আনুষ্ঠানিক নাম হচ্ছে ‘সেকুলার ও প্রগতিশীল’। এই সেকুলার প্রগতিশীল রুল মানে হল হিন্দুত্ববাদ দিয়ে সাজানো (orientation) ধর্মীয়-কালচারাল ভিত্তিতে সেট করা রীতিনীতির এক একচেটিয়া আধিপত্য নিশ্চিত করে এটা। ভারতের বা কলকাতার মুসলমানের সেকুলার প্রগতিশীল নিয়ম রুল ও শর্ত পালন সাপেক্ষেই একমাত্র ভারতীয় সমাজে থাকতে পারে। কাজেই সম্পাদক এসএনএম আবদিও এর বাইরে নন। এটাই তারও ছোট থেকে বেড়ে উঠার শর্ত ও স্মৃতি; যা এখন এই মোদি-যুগে তো আর বদলবার কোন সুযোগই নাই। আবদি সাহসী এবং ইনভেস্টিগেটিভ কাজ করা লোক। মানে খুজে বের করে সামনে আনার মত সাহসী সাংবাদিক বটে। কিন্তু এখানে এসে তার সেই সাহসও অচল। কারণ এটা একার সাহসের প্রশ্ন নয়। এই উপমহাদেশ যেখানে কলুসিত করা হয়েছে সেই ১৮১৫ সাল থেকে। কিভাবে এটা এজায়গায় পৌছালো,এখান থেকে বের হবার পথ কী এনিয়ে কোন ইনভেস্টিগেশনে তিনি অচল অপারগ দেখা যাচ্ছে!

বরং উলটা কারবার দেখা যাচ্ছে।যেমন র [RAW] নিয়ে তিনি ভারতের হিন্দুত্ব -এই কট্টর জাতিবাদী ধারার সকলের মতই গর্বিত। বাংলাদেশে জবরদস্তিতে ভারতের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার প্রধান হাতিয়ার প্রতিষ্ঠান হল এই র। তাই র এর কর্ম-পরিকল্পনা ও এর বাস্তবায়নের ততপরতা মানে তা বাংলাদেশের জন্য তা নাশকতা,স্যাবোটাজ বা অন্তর্ঘাতমূলক কাজ। দেশপ্রেমে বিগলিত আবদি এই র সম্পর্কে লিখতে গিয়ে এমন ফুলা ফুলেছেন যে লিখছেন, “জাতিসংঘের ভেটোসদস্য-ওয়ালা পাঁচ রাষ্ট্রের শক্তি একসঙ্গে করলে যত বাংলাদেশে ভারতের শক্তি-সক্ষমতা এর চেয়েও বেশি” [India wields more influence in Bangladesh than the Security Council’s five permanent members put together.]। বলাই বাহুল্য বাংলাদেশে উপর র এর ক্ষমতার কথাই তিনি বলছেন আমরা দেখছি খুবই আহ্লাদিত হয়ে, হিন্দুত্ব জাতিবাদের জোসে, দেশপ্রেমিকতায়।
“India wields more influence in Bangladesh than the Security Council’s five permanent members put together. The Research and Analysis Wing (RAW) is the most dreaded outfit in the neighbouring country surpassing even the brutally unforgiving RAB. Hasina lives in mortal fear of RAW. She knows that she will be toppled if she displeases India. So she has adopted the policy of pleasing India to retain power at any cost.”

এরপরের বাক্যে এবার খোলাখুলি বলছেন, “ভারতের প্রতিবেশি দেশে রিসার্চ এন্ড এনালাইসিস উইং (RAW বা বাংলায় র) হল সবচেয়ে ভয়ঙ্কর আতঙ্কের প্রতিষ্ঠান, যা এমনকি ক্ষমার অযোগ্য র‍্যাবের চেয়েও নৃশংস” [The Research and Analysis Wing (RAW) is the most dreaded outfit in the neighbouring country surpassing even the brutally unforgiving RAB]।
এখানে এই সেকুলার ও প্রগতিশীল হিন্দুত্ববাদপ্রেমী আবদির কান্ড দেখেন। ভারতের র যদি বাংলাদেশের র‍্যাবের চেয়েও নৃশংসতায় ছাড়িয়ে যাওয়া সংগঠন হয় আর সেক্ষেত্রে তাতে র‍্যাব ক্ষমার অযোগ্য [unforgiving] হলে দেশপ্রেমি আবদির কাছে র RAW কেমন প্রতিষ্ঠান হয়ে দাড়ালো? দেশপ্রেমে ডুবে আবদির এদিকটার কথা খেয়াল নাই। তার কাছে র হল প্রশংসার ও আদরণীয় প্রতিষ্ঠান।
তাঁর এরপরের বাক্য তাঁর তো বটেই মোদী সরকারেরও অনেক কিছুর স্বীকারোক্তি। সব কথার এককথা এই বাক্য। আবদি বলছেন “হাসিনা র এর হাতে মরবার ভয়ে (মরটাল ফিয়ার) জীবন কাটাচ্ছেন” [Hasina lives in mortal fear of RAW.]। বুঝা যাচ্ছে আবদির এমন কেউ নাই খুবই বন্ধুহীন যে তাঁকে বলে দেয় যে এভাবে লেখা যায় না। এতে নিজের বিরুদ্ধেই লেখা হয়ে যায়।

তামাশার কথা হচ্ছে আবদি এতই দেশপ্রেমে আপ্লুত, বীরত্বের কথা ভেবে মসগুল যে তিনি বুঝতেই পারছেন না যে তিনি এক অপরাধীর স্বদেশের-অপরাধের স্টেটমেন্ট বা আত্মস্বীকারোক্তি দিয়ে ফেলছেন। অথচ তাঁর সে খবরই নাই। এর মানে হল র আমাদের প্রধানমন্ত্রীর হবু গুপ্তঘাতক আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী এই গুপ্তঘাতকের ভয়ে সিটিয়ে আছেন। আর জার্নালিস্ট আবদি আমাদেরকে নিজে লিখে এই স্বীকারোক্তি দিচ্ছেন! বা! থ্যাঙ্কু আবদি! খুব সুন্দর করে আমরা আবদির খুবই দেশপ্রেমিকতার কাহিনী জানলাম বটে!
পরের দুই বাক্য আরো স্পষ্টিকরণ বক্তব্য। বলছেন “হাসিনা জানেন তিনি ভারতকে সন্তুষ্ট করে না রাখতে পারলে ক্ষমতাচ্যুত হবেন! তাই ক্ষমতা ধরে রাখতে হাসিনা ভারতকে সন্তুষ্ট করে রাখার নীতি-পলিসি নিয়েছেন” [She knows that she will be toppled if she displeases India. So she has adopted the policy of pleasing India to retain power at any cost.] ।
বুঝা গেল এক দগদগে হিন্দুত্ববাদের দেশপ্রেম ছাড়া তিনি জীবনে আর কিছু শিখেন নাই। আর তিনি তার ভারত সরকারের বাংলাদেশের প্রতি অপততপরতা-গুলো সম্পর্কে ভালই ওয়াকেবহাল!

এক বিরাট জট খুলে গেলঃ
তার মানে আমাদের জন্য এক বিরাট জট খুলে গেল। গত দুর্গাপুজায় কুমিল্লা কাহিনী, যেটা ইকবাল হোসেন এর কোরান শরীফ রেখে আসা, গদা কাধে বীরত্বে ফিরে আসা আর শেষে তার নিজেরই মুসলমান ভাইদেরকে প্রতিবাদে নেমে আসার উস্কানি – এসবটা নিয়ে ১২টা ক্যামেরা লাইভ ফুটেজ সংগ্রহ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রমাণিত স্টোরি, যেটা মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা সবাই জেনে গেছি। এখন বাকি থেকে গেছে ইকবাল হোসেন এন্ড গঙদের পিছনে এসাইনমেন্ট দাতা শক্তিটা কে? তা জানা।
এখন আমরা সম্ভবত বলতে পারি আবদি আমাদের কে বলছেন এই শক্তিটা হল ‘র’। এমন শক্তিধরই নাশকতা বা অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করতে পারে, কারণ,১। এ’শক্তি বাংলাদেশে ভেটোসদস্য-ওয়ালা পাঁচ রাষ্ট্রের চেয়েও বেশি শক্তিশালী। ২। এ’শক্তি বাংলাদেশে এক ভয়ঙ্কর আতঙ্কের নাম, এক প্রতিষ্ঠান। যা এমনকি ক্ষমার-অযোগ্য র‍্যাবের চেয়েও বেশি নৃশংস। ৩। হাসিনা র-এর হাতে মরবার ভয়ে মরটাল ফিয়ারে [mortal fear] দিন কাটাচ্ছেন। ৪। হাসিনা এই গুপ্তঘাতকের হাতে মরবার ভয়ে ভারতকে ক্রমাগত সন্তুষ্ট করেই টিকে আছেন ও চলেছেন।


অতএব ইকবাল হোসেন এন্ড গঙদের পিছনে এসাইনমেন্ট দাতা শক্তিটাই RAW বা বাংলায় ‘র’। এই অপততপরতা বা অ-কাজ সে করতে পেরেছে এক সহজ ফর্মুলায় যে মন্দিরে কোরান শরীফ মানেই তা হিন্দুদের কাজ বলে ভাড়াটে কিছু মুসলমানকে দিয়েই উস্কানি তোলা। আবার এরাই এর মানে দিয়েছে এটাই হিন্দুদের হাতে কোরান শরীফের অবমাননা। অথচ এটা যে ‘হিন্দুদের কাজ’ না হয়ে, ইকবাল হোসেন এন্ড গঙদের কাজ হতে পারে এবং হয়েছে – এবং ইকবালদের পিছনের শক্তি যে আবার বিদেশি ‘হিন্দুরাই’ হতে পারে, র নিজেই হতে পারে, এসব নিয়ে চিন্তা করতে কেউ চায় নাই। মনে হতে পারে যারা রাস্তায় কথিত সাম্প্রদায়িকতা লড়েছে এরা “অশিক্ষিত” মুসলমান তাই এসব বুঝেন নাই। না বভুঝেই করেছে। তাই কী? না তা একেবারেই মিথ্যা কথা।
হিন্দুদের মন্দির বা মুর্তি ভাঙলে তা মুসলমানদের কাজ না হয়ে যায় না। এই হল গত দুশ বছরের অনুমান। অন্যের মুর্তি বা মসজিদ ভেঙ্গেও যে অন্যের উপর দোষ চাপানো সম্ভব অতএব আমাদের ফ্যাক্টসে যেতে হবে সবার আগে। সত্য-মিথ্যা মিলিয়ে অনুমান যেটাকে এখনও সত্যি কিনা তা নিয়ে কেউ ভেঙ্গে খুলে দেখতে যাচাইয়ে রাজি না। তাই কুমিল্লার ঘটনায় শহুরে আর শিক্ষিত পড়ালেখাওয়ালারা আগাম মুখস্ত বলে গেছেন এটা “মৌলবাদীদের” কাজ। কেউ আরও আগেবাড়িয়ে এটা ‘জঙ্গীবাদের’ কাজ বলেছেন।

এককথায়, এটা সংগঠিত মুসলমানের কাজ,আগাম এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তা প্রতিষ্ঠা করেছে শিক্ষিতরাই। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিগুলো যেমন। সাথে বিবৃতিদাতারাও আছে। তাদের একটা মুখস্ত শব্দ আছে ‘সাম্প্রদায়িকতা’, মানে হিন্দু-মুসলমানের ক্যাচাল। এরা সেই ফর্মুলায় ফেলে চোখ বন্ধ করে মুসলমান বা ইসলামি রাজনীতিকদের দায়ী করছেন। অথচ এতে যে এই শিক্ষক সমিতির নেতাদের পছন্দের দল ও নেত্রী হাসিনাও দায়ী হচ্ছেন তাতেও তারা কেয়ার করছেন না। এতই তাদের হিন্দুজাতিবাদি সেকুলার ও প্রগতিশীল পরিচয়ের প্রতি লোভ ও নেক।
এমনকি আবদি যেখানে বলছেন হাসিনা ‘র’ এর ভয়ে পালিয়ে কাপতেছেন,যেকোনভাবে ভারতকে সন্তুষ্টি করতে লেগে আছেন! অথচ তাতে বাংলাদেশের সেকুলার ও প্রগতিশীল পরিচয়ের জগতে কোন বিকার নাই। হাসিনার দুর্ভাগ্য এটাই! অন্তত আবদিও তো হিন্দুজাতিবাদি সেকুলার ও প্রগতিশীলই! তাই না? যদিও এসব শিক্ষক সমিতি বা সাথে ৪৭ জনএর বিবৃতিবাজরা জেনে অথবা না জেনে কিন্তু ইতোমধ্যেই হাসিনার হাত ছেড়ে দিয়ে ইকবাক হোসেন এন্ড গঙদের পিছনের নেতাদের হাত আকড়ে ধরে নিয়েছে।

বেচারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যতই চিৎকার করে ভারতের বুঝবার মত ভাষায় বলছেন, Attack on Hindus not communal issue, but conspiracy, – যা ভারতের সব প্রধান পত্রিকায় ছাপা হয়েছে তবু ভারতের কেউই হাসিনা ও তার মন্ত্রীদের কথা আমল করছে না। সবাই এটা হিন্দু-মুসলমানের কথিত সাম্প্রদায়িকতার ক্যাচাল, এমন মুখস্ত প্রচলিত ব্যাখ্যার বাইরে যেতে রাজি হয় নাই। দেখা যাচ্ছে র’ এর এই ব্যাখ্যা হাসিনা ও মন্ত্রীদের হারিয়ে দিয়েছে। অবশ্য বাংলাদেশেও হাসিনা ও মন্ত্রীদের বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব আছে অনেক আগে থেকেই। এরা এরই সুযোগটা নিয়েছে এমনকি আওয়ামি দলীয় শিক্ষক সমিতিও হাসিনা ও মন্ত্রীদের পক্ষে নাই; তারা র এর অবস্থানের পক্ষে দাড়িয়ে গেছে।
আবদিও সেকাজটাই করেছেন। তিনি হাসিনাকে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আর্ডেন্ট এর মত হতে পারেন নাই বলে সমালোচনা করেছেন। মানে আবদি বলতে চাইছেন, হাসিনারও ব্যাপারটাকে কথিত ‘সাম্প্রদায়িকতার’ গল্পের ফ্রেমে ফেলে ইকবাক হোসেন এন্ড গঙদের পিছনে যারা আছে,যাদেরকে ‘মৌলবাদী’ বা ‘জঙ্গি’ (যে শব্দগুলো একটা হিন্দুত্ববাদী সেকুলার ও প্রগতিশীল মন শুনতে পছন্দ করে) বলে হাসিনার এদের নিন্দা করা উচিত ছিল। অর্থাৎ হাসিনা যতই বলেন এটা not communal issue, but conspiracy সেটা আবদিও তা শুনতে রাজি না।

অথচ এত সাহসী* সাংবাদিক আবদি কিন্তু দেখেনই নাই যে হাসিনা সরাসরি মোদীকে হুশিয়ারী দিয়েছেন অন্তত বিবিসি তা যতটা সম্ভব স্পষ্ট করে ছেপেছে? এটা আবদি এড়িয়ে গেছেন কেন? দেশপ্রেমে? হাসিনা মোদিকে দায়ী করেছে বলে? তাই আপনার জন্য রিস্ক হয়ে যায়? এর মানে আপনি মোদীকে সার্ভিস দিতেই কী এই লেখা লিখেছেন? এমন বহু প্রশ্ন উঠতে পারে।
একারণেই একথাটাই আমি বলছি যে যতই সাহসী মেডেল পাওয়া হন না কেন, ভারতীয় মুসলমানদের হিন্দুজাতিবাদি সেকুলার ও প্রগতিশীলই থাকতে হয়!
সবশেষে একটা প্রসঙ্গ বলে শেষ করব। তাহল, আবদি বাংলাদেশের বা দুনিয়ার ইসলামি রাজনৈতিক ধারাগুলো সম্পর্কে ধারণায় সীমাহীন অজ্ঞানতা,এটা পীড়াদায়ক! এসম্পর্কে ভারতের একজন সাধারণ হিন্দুর যে ধারণা আপনার ধারণা এর উর্ধে না। আপনি সাহসী জার্ণালিস্ট আর অন্তত পারিবারিক পরিচয়ে মুসলমান – অন্তত এটুকুর খাতিরে আপনার নুন্যতম জানাশুনা আছে মানুষ যেটাই আশা করবে। আপনি ভারতীয় “হিন্দুজাতিবাদি সেকুলার ও প্রগতিশীল” বয়ানে আটকে থেকে নিজের কেরিয়ারের সীমা টানতে চাইলে কে ঠেকাবে। অন্তত একাদেমিক ভাবে হলেও তো আপনাকে জানতেই হবে। অথচ ইদানিং আপনার ট্রেন্ড হল এশিয়ান বিদেশি পত্রিকার সাথে কাজ করা, লেখা দেয়া। যেমন আমরা দেখছি আপনি অহরহ ব্যবহার করেছেন ‘ফান্ডামেন্টালিস্ট’ এই শব্দটা। এটা না-বুঝ অবুঝ এক ঘৃণাবাচক শব্দ। অথচ কেরিয়ারে নুন্যতম সিরিয়াস কথিত সেকুলার ও প্রগতিশীলরাই এখন বুঝে গেছে এই শব্দ দুহাজার সালের আগের, মানে গত শতকের। চলতি শতকে নাইন-ইলেভেনের পরে এনিয়ে নতুন শব্দ ধারণা পশ্চিমাজগতই এনেছে। যেগুলোও আবার এখন (২০২১ সালে এসে আফগান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পরে) চ্যালেঞ্জের মুখে। যেমন আমেরিকান থিঙ্কট্যাংক ফেলোরাই এখন প্রকাশ্যে নিজের আর্টিকেলে ‘তথাকথিত ওয়ার অন টেরর’ বলছে। অর্থাত বুশের ‘ওয়ার অন টেরর’ এর দায় নিচ্ছেন না;দায় আমেরিকান প্রশাসনকে দিয়ে সরে যেতে চাইছেন।

আপনি আবদি আবার হেফাজত নিয়ে কথা তুলতে গেছেন। এতে আপনার অজ্ঞানতা আরও ফেটে প্রকাশিত হয়েছে। আগেই বল্লেছি আপনি বাংলাদেশের ইসলামি ধারাগুলো সম্পর্কে অজ্ঞ। পলিটিক্যাল টার্ণগুলো সম্পর্কেও। ফলে আন্দাজে ভারতের হিন্দুমনের উপর দাঁড়িয়ে অনুমানে কিছু বললে তা আপনার বিরুদ্ধেই যাবে। ভারত সরকার হাসিনা হেফাজতের সাথে ডিলিং (আমি সম্পর্ক বলি নাই) একেবারেই পছন্দ করে নাই। এর মানে আপনাকেও মোদির পো ধরতে হবে? নাকি ইন্ডেরপেন্ডেন্টলি ব্যাপারটা বুঝতে হবে? প্রশ্নটা খারাপ ভালোর চেয়েও কেন এমন হয়েছে সেটা বুঝাই আপনার প্রফেশনের দিক থেকে উপযুক্ত করণীয় হতে পারত।
শেষ কথাঃ
ইতিহাস বলে, বিশ শতকে একটা মুসলিম জাতিবাদ অথবা একালে “সারা দুনিয়াকে কেবল মুসলমানের দুনিয়া বানিয়ে” রাজনীতিতে মুসলমানেরা নেমেছে নিজে নিজে নয়। বেকুব অন্যেরা তাদের এভাবে নামতে বাধ্য করেছে। ইতিহাসে দুবার এমন ঘটেছে।
একঃ ভারতের হিন্দুনেতারা নিজেদের খুবই বুদ্ধিমান আর চালাক মনে করে জবরদস্তিতে একটা হিন্দু জাতিবাদের ভারত কায়েম বা হিন্দু জাতিরাষ্ট্রের ভারত কায়েমের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেটা ১৮৮৫ সালে কংগ্রেসের জন্ম থেকেই। যদিও এর আদি উদ্যোগ চিহ্ন খুঁজতে আপনাকে ১৮১৫ সালে যেতে হবে। অথচ হিন্দুনেতারা কেউ বুঝেন নাই যে এটা আত্মঘাতি। তাদের এই হিন্দু জাতিরাষ্ট্রের কায়েমের চিন্তা এই হিন্দুত্ববাদের ভিত্তি খাড়া করা – এটাই মুসলমানদেরকেও এক মুসলমান জাতিরাষ্ট্র গড়ে নেওয়ার দিকে ঠেলে দিতে বাধ্য করবে। হিন্দু জাতিরাষ্ট্র চিন্তা এক মুসলমান জাতিরাষ্ট্রের চিন্তার জনক হবে; এথেকে মুসলমান মনে মুসলমান- জাতিরাষ্ট্র চিন্তা ডেকে আনবে। এবং ঠিক তাই হয়েছিল। আমরা জিন্নাহর হাত ধরে ও মুসলিম লীগ গড়ে নিয়ে পাকিস্তান কায়েম করে নিয়েছিলাম। এখন কমিউনিস্ট আর হিন্দুত্ববাদী মুসলমান-ঘৃণার মনগুলো জিন্নাহকে দোষারোপ করে নিজেকে বাচানোর চেষ্টা করে চলে।

দুইঃ ঠিক প্রায় একইভাবে প্রেসিডেন্ট বুশ মনে করেছিলেন সোভিয়েত পতনের পরের দুনিয়া একমেরুর দেশ হয়ে গেছে। তিনি এক বিরাট কুতুব। ফলে কেউ তাকে বলার কিছু নাই। এমন ভেবে নাইন-ইলেভেনের হামলার প্রতিশোধের উছিলায় নিজেকে সীমাহীন ক্ষমতাধর ভেবে যা করলেন তা দেখতে আফগানিস্তানে হামলা। কিন্তু ইভেনজেলিক বুশ এর অর্থ দিলেন যে,আমেরিকান আপনারা মুসলমানদের সাথে আর আমেরিকায় থাকবেন না। আর পারলে অন্যান্য দেশেও। মুসলমান – এরা সবাই নাকি আমেরিকার জন্য সন্দেহজনক। অথচ টেরও পেলেন না এতে নিজের জন্য কী ক্ষতিটা করলেন। এতে বুশ আসলে প্রকারন্তরে মুসলমানদেরকে বলে দিলেন মুসলমান তোমরাও এমন একটা দুনিয়ার কথা কল্পনা কর যেখানে মুসলমান ছাড়া আর কেউ নাই। এটাই গ্লোবাল খলিফা-ইজম কায়েমের চিন্তা। অথচ এখন আমেরিকাসহ সারা পশ্চিম বলছে এরা জঙ্গীবাদ, টেরর। এরা ইনক্লুসিভ না। আরও কত কী? দোষের শেষ নাই। আর ভারত ২০০২ সালে থেকে বুশের এই টেররিজমের সাথে হাত মিলিয়েছে। এতে বুশ ভারতের সেই পুরান পাপ “হিন্দু জাতিরাষ্ট্রের” সাথে যা ততদিনে খোলাখুলি হিন্দুত্ববাদ হয়ে গেছে তার সাথে নিজের টেররিজমের বয়ানের মুসলমানবিদ্বেষ – এই দুই বয়ান গাটছাড়া বেধেছেন। এছাড়া কাশ্মীরের ভুল এবং অন্যায়ের উপর চাদর ঢাকতে এটাই বাজপেয়ি করেছিলেন। ফলাফল আমরা সবাই দেখতেই পাচ্ছি।
এজন্যই এক বাণী বা তত্ব বলে, তত্বটা হলঃ
আপনার এনিমি কেমন হবে সেটা কিন্তু আপনিই আকার দেন! তাই নিজের আচার আচরণ চিন্তা সম্পর্কে সাবধান। কারণ, এগুলাই আপনার শত্রু কেমন হবে সেই আকার বৈশিষ্ঠের নির্মাতা!


গৌতম দাস
রাজনৈতিক বিশ্লেষক
২৮ অক্টোবর ২০২১

@Bilal9 ভাই।
 
Last edited:
@itsanufy দাদা। এইটা আপনার জন্য পুরাটা পইড়েন কিন্তু!



আবদির প্রিয় ‘র’ এর ‘মরটাল ফিয়ারে’ জীবন


আবদির প্রিয় ‘র’ এর ‘মরটাল ফিয়ারে’ জীবন
গৌতম দাস
২৮ অক্টোবর ২০২১
https://wp.me/p1sCvy-3MI

[সার-সংক্ষেপঃ ‘মরটাল ফিয়ারে’ [mortal fear] মানে র’ এর হাতে খুন হবার ভয়। আমরা সবাই ভারতের র [RAW] এর হাতে মরার ভয়ে আছি, ‘র’ আমাদের তাড়া করছে। বলেছেন – ভারতীয় সাংবাদিক আবদি]
তাঁর নাম এসএনএম আবদি [SNM ABDI]। গত আশির দশকে ইন্দিরা আমলে ভারতের বিহার পুলিশের এক কান্ড। তারা অপরাধ কমাতে এক সহজ পদক্ষেপ নিয়েছিল। অপরাধীর চোখে এসিড ঢেলে দেওয়া যাতে তারা আর অপরাধ না করতে পারে। করা এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম করে বিষয়টাকে মিডিয়ায় এনে বিখ্যাত হয়েছিলেন এই আবদি। এখনও আবদির পরিচয়ের সাথে তা সবজায়গায় এমন লেখা পাওয়া যাবে। জাতিসংঘের পুরস্কারও পেয়েছিলেন এজন্য। তিনি ভারতের আউটলুক পত্রিকার ডেপুটে এডিটর ছিলেন পরে আরেক ওয়েব মিডিয়া ফাস্ট পোস্ট এর সাথে যুক্ত হয়েছিলেন। সেসময় গত ২০১১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর বাংলাদেশ সফরকালে (তিস্তার পানি দিবার চুক্তি করতে এসেও না দেয়ার সেই সফর) সফরসঙ্গী দলের সদস্য হয়ে আবদি বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। স্মৃতি হাতড়ে সেখান থেকে বলছি।

করোনাকালে বিক্রি ও বিজ্ঞাপন কমে যাওয়ায় ভারতে প্রত্যেকটা মিডিয়াই টিকে থাকার জন্য এক মুশকিলের লড়াইয়ে এখনও পড়ে আছে। সব প্রতিষ্ঠিত মিডিয়াতেই তাদের রিপোর্টের শেষে অর্থ,অনুদান চাঁদা ইত্যাদির আবেদন সংযোজন করা হয়েছে দেখতে পাবেন। আর তাতে ফলাফলে আমরা দেখছি বেশির ভাগ প্রধান ধারার মিডিয়া মোদির দারস্থ হয়েছে।
আরেক দেশে গিয়ে নিয়মিত নাশকতা কর্মকান্ড চালানোর ভারতের গোয়েন্দা এক প্রতিষ্ঠান হল ‘র’। এই ‘র’ স্পনসরড বা অর্থ দিয়ে পরিচালিত এক প্রাইভেট সংবাদ সংস্থা বা এজেন্সি হল এএনআই [ANI] যার প্রধান কাজ হল ফেক নিউজ ছাপা। অর্থাৎ এএনআই-এর কাজ হল ‘র’ স্পনসরড প্রপাগান্ডা বক্তব্যকে নিউজ হিসাবে প্রান্তিক মিডিয়াতে সরবরাহ করা। আর যে প্রান্তিক মিডিয়া এটা ছাপে সে এর বিনিময়েই মোদির ‘সাহায্য’ বা মিডিয়া ফান্ড পেয়ে থাকে। আর এমন নিউজ ছাপার মাধ্যমেই ভারতের মিডিয়াগুলো করোনাকালে তাদের আর্থিক সংকট সামলেছিল। বাংলাদেশের মিডিয়াজগত আরো দুর্বল,এখানে কেউই বাণিজ্যিকভাবে কোনকালেই সফল নয়। তাই ‘র’ স্পনসরড এএনআই এর “নিউজের” আছর বাংলাদেশে আরো বেশি।

তবু ভারতে এসবের বাইরে থেকে অর্থের লোভ সামলানে এই কষ্টের দিনে টিকে থাকা অল্প ওয়েব পত্রিকাও আছে। যদিও তারা খুবই ছোট ফলে বাজার শেয়ার খুবই কম। তবু এরা অনেকেই যথেষ্ট প্রভাবশালী নিজ মেরিটে। আমার ধারণা এমনদের শীর্ষে আছে এখন সম্ভবত ওয়াইর[WIRE] – এই মিডিয়া। যদিও মেরিটেড পত্রিকাও বছর দশেক আগে রেগুলার না,হঠাত করে কিছু ক্যাশের লোভে দু একটা ‘র’ স্পনসরড প্রপাগান্ডা বক্তব্য ছেপে দিত। আর করোনাকালে এটাই এখন রেগুলার ফেনোমেনা। তাই করোনাকালেও মোদির ফান্ডে আগ্রহ যারা দেখায় নাই বলে মনে হয় তেমনই এক ওয়েব পত্রিকা হল ‘দ্যা কুইন্ট’ [The QUINT]।
এই ‘দ্যা কুইন্ট’ পত্রিকায় আবদি গতকাল বাংলাদেশ ও হাসিনাকে নিয়ে একটা ‘নিচা দেখানো’ [derogatory] লেখা লিখেছেন। তবে কিছু জায়গা খুবই আপত্তিজনক ও অপমানসুচক। এছাড়া ভুল তথ্য ও ভুল ব্যাখ্যায় তা মনগড়া ভাবে লেখা। এসব ছাড়াও লেখকের বাকি সমস্যাটা হিন্দুজাতিবাদের চোখ দিয়ে সব দেখলে যেমন হয় সেই সমস্যা। হিন্দুজাতিবাদের চোখে দেখার এই স্টাইল; এটার একটা ভাল নাম আছে যেটাকে বলে ‘সেকুলার প্রগতিশীল’। অর্থাৎ লেখক আবদি আসলে এক ‘সেকুলার প্রগতিশীল’ সম্পাদক।

হিন্দুজাতিবাদ বা হিন্দুত্ববাদের চোখে ও চর্চায় ভারতের কোন মুসলমানকে তারা যেসব শর্তে তাদের সমাজে থাকতে চলতে বসবাস করতে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বা চাকরির প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতে ও তাদের পাশে বসে তা করতে গেলে যে শর্তে এসব তারা করতে দেয় সেই শর্তেরই আনুষ্ঠানিক নাম হচ্ছে ‘সেকুলার ও প্রগতিশীল’। এই সেকুলার প্রগতিশীল রুল মানে হল হিন্দুত্ববাদ দিয়ে সাজানো (orientation) ধর্মীয়-কালচারাল ভিত্তিতে সেট করা রীতিনীতির এক একচেটিয়া আধিপত্য নিশ্চিত করে এটা। ভারতের বা কলকাতার মুসলমানের সেকুলার প্রগতিশীল নিয়ম রুল ও শর্ত পালন সাপেক্ষেই একমাত্র ভারতীয় সমাজে থাকতে পারে। কাজেই সম্পাদক এসএনএম আবদিও এর বাইরে নন। এটাই তারও ছোট থেকে বেড়ে উঠার শর্ত ও স্মৃতি; যা এখন এই মোদি-যুগে তো আর বদলবার কোন সুযোগই নাই। আবদি সাহসী এবং ইনভেস্টিগেটিভ কাজ করা লোক। মানে খুজে বের করে সামনে আনার মত সাহসী সাংবাদিক বটে। কিন্তু এখানে এসে তার সেই সাহসও অচল। কারণ এটা একার সাহসের প্রশ্ন নয়। এই উপমহাদেশ যেখানে কলুসিত করা হয়েছে সেই ১৮১৫ সাল থেকে। কিভাবে এটা এজায়গায় পৌছালো,এখান থেকে বের হবার পথ কী এনিয়ে কোন ইনভেস্টিগেশনে তিনি অচল অপারগ দেখা যাচ্ছে!

বরং উলটা কারবার দেখা যাচ্ছে।যেমন র [RAW] নিয়ে তিনি ভারতের হিন্দুত্ব -এই কট্টর জাতিবাদী ধারার সকলের মতই গর্বিত। বাংলাদেশে জবরদস্তিতে ভারতের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার প্রধান হাতিয়ার প্রতিষ্ঠান হল এই র। তাই র এর কর্ম-পরিকল্পনা ও এর বাস্তবায়নের ততপরতা মানে তা বাংলাদেশের জন্য তা নাশকতা,স্যাবোটাজ বা অন্তর্ঘাতমূলক কাজ। দেশপ্রেমে বিগলিত আবদি এই র সম্পর্কে লিখতে গিয়ে এমন ফুলা ফুলেছেন যে লিখছেন, “জাতিসংঘের ভেটোসদস্য-ওয়ালা পাঁচ রাষ্ট্রের শক্তি একসঙ্গে করলে যত বাংলাদেশে ভারতের শক্তি-সক্ষমতা এর চেয়েও বেশি” [India wields more influence in Bangladesh than the Security Council’s five permanent members put together.]। বলাই বাহুল্য বাংলাদেশে উপর র এর ক্ষমতার কথাই তিনি বলছেন আমরা দেখছি খুবই আহ্লাদিত হয়ে, হিন্দুত্ব জাতিবাদের জোসে, দেশপ্রেমিকতায়।


এরপরের বাক্যে এবার খোলাখুলি বলছেন, “ভারতের প্রতিবেশি দেশে রিসার্চ এন্ড এনালাইসিস উইং (RAW বা বাংলায় র) হল সবচেয়ে ভয়ঙ্কর আতঙ্কের প্রতিষ্ঠান, যা এমনকি ক্ষমার অযোগ্য র‍্যাবের চেয়েও নৃশংস” [The Research and Analysis Wing (RAW) is the most dreaded outfit in the neighbouring country surpassing even the brutally unforgiving RAB]।
এখানে এই সেকুলার ও প্রগতিশীল হিন্দুত্ববাদপ্রেমী আবদির কান্ড দেখেন। ভারতের র যদি বাংলাদেশের র‍্যাবের চেয়েও নৃশংসতায় ছাড়িয়ে যাওয়া সংগঠন হয় আর সেক্ষেত্রে তাতে র‍্যাব ক্ষমার অযোগ্য [unforgiving] হলে দেশপ্রেমি আবদির কাছে র RAW কেমন প্রতিষ্ঠান হয়ে দাড়ালো? দেশপ্রেমে ডুবে আবদির এদিকটার কথা খেয়াল নাই। তার কাছে র হল প্রশংসার ও আদরণীয় প্রতিষ্ঠান।
তাঁর এরপরের বাক্য তাঁর তো বটেই মোদী সরকারেরও অনেক কিছুর স্বীকারোক্তি। সব কথার এককথা এই বাক্য। আবদি বলছেন “হাসিনা র এর হাতে মরবার ভয়ে (মরটাল ফিয়ার) জীবন কাটাচ্ছেন” [Hasina lives in mortal fear of RAW.]। বুঝা যাচ্ছে আবদির এমন কেউ নাই খুবই বন্ধুহীন যে তাঁকে বলে দেয় যে এভাবে লেখা যায় না। এতে নিজের বিরুদ্ধেই লেখা হয়ে যায়।

তামাশার কথা হচ্ছে আবদি এতই দেশপ্রেমে আপ্লুত, বীরত্বের কথা ভেবে মসগুল যে তিনি বুঝতেই পারছেন না যে তিনি এক অপরাধীর স্বদেশের-অপরাধের স্টেটমেন্ট বা আত্মস্বীকারোক্তি দিয়ে ফেলছেন। অথচ তাঁর সে খবরই নাই। এর মানে হল র আমাদের প্রধানমন্ত্রীর হবু গুপ্তঘাতক আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী এই গুপ্তঘাতকের ভয়ে সিটিয়ে আছেন। আর জার্নালিস্ট আবদি আমাদেরকে নিজে লিখে এই স্বীকারোক্তি দিচ্ছেন! বা! থ্যাঙ্কু আবদি! খুব সুন্দর করে আমরা আবদির খুবই দেশপ্রেমিকতার কাহিনী জানলাম বটে!
পরের দুই বাক্য আরো স্পষ্টিকরণ বক্তব্য। বলছেন “হাসিনা জানেন তিনি ভারতকে সন্তুষ্ট করে না রাখতে পারলে ক্ষমতাচ্যুত হবেন! তাই ক্ষমতা ধরে রাখতে হাসিনা ভারতকে সন্তুষ্ট করে রাখার নীতি-পলিসি নিয়েছেন” [She knows that she will be toppled if she displeases India. So she has adopted the policy of pleasing India to retain power at any cost.] ।
বুঝা গেল এক দগদগে হিন্দুত্ববাদের দেশপ্রেম ছাড়া তিনি জীবনে আর কিছু শিখেন নাই। আর তিনি তার ভারত সরকারের বাংলাদেশের প্রতি অপততপরতা-গুলো সম্পর্কে ভালই ওয়াকেবহাল!

এক বিরাট জট খুলে গেলঃ
তার মানে আমাদের জন্য এক বিরাট জট খুলে গেল। গত দুর্গাপুজায় কুমিল্লা কাহিনী, যেটা ইকবাল হোসেন এর কোরান শরীফ রেখে আসা, গদা কাধে বীরত্বে ফিরে আসা আর শেষে তার নিজেরই মুসলমান ভাইদেরকে প্রতিবাদে নেমে আসার উস্কানি – এসবটা নিয়ে ১২টা ক্যামেরা লাইভ ফুটেজ সংগ্রহ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রমাণিত স্টোরি, যেটা মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা সবাই জেনে গেছি। এখন বাকি থেকে গেছে ইকবাল হোসেন এন্ড গঙদের পিছনে এসাইনমেন্ট দাতা শক্তিটা কে? তা জানা।
এখন আমরা সম্ভবত বলতে পারি আবদি আমাদের কে বলছেন এই শক্তিটা হল ‘র’। এমন শক্তিধরই নাশকতা বা অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করতে পারে, কারণ,১। এ’শক্তি বাংলাদেশে ভেটোসদস্য-ওয়ালা পাঁচ রাষ্ট্রের চেয়েও বেশি শক্তিশালী। ২। এ’শক্তি বাংলাদেশে এক ভয়ঙ্কর আতঙ্কের নাম, এক প্রতিষ্ঠান। যা এমনকি ক্ষমার-অযোগ্য র‍্যাবের চেয়েও বেশি নৃশংস। ৩। হাসিনা র-এর হাতে মরবার ভয়ে মরটাল ফিয়ারে [mortal fear] দিন কাটাচ্ছেন। ৪। হাসিনা এই গুপ্তঘাতকের হাতে মরবার ভয়ে ভারতকে ক্রমাগত সন্তুষ্ট করেই টিকে আছেন ও চলেছেন।


অতএব ইকবাল হোসেন এন্ড গঙদের পিছনে এসাইনমেন্ট দাতা শক্তিটাই RAW বা বাংলায় ‘র’। এই অপততপরতা বা অ-কাজ সে করতে পেরেছে এক সহজ ফর্মুলায় যে মন্দিরে কোরান শরীফ মানেই তা হিন্দুদের কাজ বলে ভাড়াটে কিছু মুসলমানকে দিয়েই উস্কানি তোলা। আবার এরাই এর মানে দিয়েছে এটাই হিন্দুদের হাতে কোরান শরীফের অবমাননা। অথচ এটা যে ‘হিন্দুদের কাজ’ না হয়ে, ইকবাল হোসেন এন্ড গঙদের কাজ হতে পারে এবং হয়েছে – এবং ইকবালদের পিছনের শক্তি যে আবার বিদেশি ‘হিন্দুরাই’ হতে পারে, র নিজেই হতে পারে, এসব নিয়ে চিন্তা করতে কেউ চায় নাই। মনে হতে পারে যারা রাস্তায় কথিত সাম্প্রদায়িকতা লড়েছে এরা “অশিক্ষিত” মুসলমান তাই এসব বুঝেন নাই। না বভুঝেই করেছে। তাই কী? না তা একেবারেই মিথ্যা কথা।
হিন্দুদের মন্দির বা মুর্তি ভাঙলে তা মুসলমানদের কাজ না হয়ে যায় না। এই হল গত দুশ বছরের অনুমান। অন্যের মুর্তি বা মসজিদ ভেঙ্গেও যে অন্যের উপর দোষ চাপানো সম্ভব অতএব আমাদের ফ্যাক্টসে যেতে হবে সবার আগে। সত্য-মিথ্যা মিলিয়ে অনুমান যেটাকে এখনও সত্যি কিনা তা নিয়ে কেউ ভেঙ্গে খুলে দেখতে যাচাইয়ে রাজি না। তাই কুমিল্লার ঘটনায় শহুরে আর শিক্ষিত পড়ালেখাওয়ালারা আগাম মুখস্ত বলে গেছেন এটা “মৌলবাদীদের” কাজ। কেউ আরও আগেবাড়িয়ে এটা ‘জঙ্গীবাদের’ কাজ বলেছেন।

এককথায়, এটা সংগঠিত মুসলমানের কাজ,আগাম এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তা প্রতিষ্ঠা করেছে শিক্ষিতরাই। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিগুলো যেমন। সাথে বিবৃতিদাতারাও আছে। তাদের একটা মুখস্ত শব্দ আছে ‘সাম্প্রদায়িকতা’, মানে হিন্দু-মুসলমানের ক্যাচাল। এরা সেই ফর্মুলায় ফেলে চোখ বন্ধ করে মুসলমান বা ইসলামি রাজনীতিকদের দায়ী করছেন। অথচ এতে যে এই শিক্ষক সমিতির নেতাদের পছন্দের দল ও নেত্রী হাসিনাও দায়ী হচ্ছেন তাতেও তারা কেয়ার করছেন না। এতই তাদের হিন্দুজাতিবাদি সেকুলার ও প্রগতিশীল পরিচয়ের প্রতি লোভ ও নেক।
এমনকি আবদি যেখানে বলছেন হাসিনা ‘র’ এর ভয়ে পালিয়ে কাপতেছেন,যেকোনভাবে ভারতকে সন্তুষ্টি করতে লেগে আছেন! অথচ তাতে বাংলাদেশের সেকুলার ও প্রগতিশীল পরিচয়ের জগতে কোন বিকার নাই। হাসিনার দুর্ভাগ্য এটাই! অন্তত আবদিও তো হিন্দুজাতিবাদি সেকুলার ও প্রগতিশীলই! তাই না? যদিও এসব শিক্ষক সমিতি বা সাথে ৪৭ জনএর বিবৃতিবাজরা জেনে অথবা না জেনে কিন্তু ইতোমধ্যেই হাসিনার হাত ছেড়ে দিয়ে ইকবাক হোসেন এন্ড গঙদের পিছনের নেতাদের হাত আকড়ে ধরে নিয়েছে।

বেচারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যতই চিৎকার করে ভারতের বুঝবার মত ভাষায় বলছেন, Attack on Hindus not communal issue, but conspiracy, – যা ভারতের সব প্রধান পত্রিকায় ছাপা হয়েছে তবু ভারতের কেউই হাসিনা ও তার মন্ত্রীদের কথা আমল করছে না। সবাই এটা হিন্দু-মুসলমানের কথিত সাম্প্রদায়িকতার ক্যাচাল, এমন মুখস্ত প্রচলিত ব্যাখ্যার বাইরে যেতে রাজি হয় নাই। দেখা যাচ্ছে র’ এর এই ব্যাখ্যা হাসিনা ও মন্ত্রীদের হারিয়ে দিয়েছে। অবশ্য বাংলাদেশেও হাসিনা ও মন্ত্রীদের বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব আছে অনেক আগে থেকেই। এরা এরই সুযোগটা নিয়েছে এমনকি আওয়ামি দলীয় শিক্ষক সমিতিও হাসিনা ও মন্ত্রীদের পক্ষে নাই; তারা র এর অবস্থানের পক্ষে দাড়িয়ে গেছে।
আবদিও সেকাজটাই করেছেন। তিনি হাসিনাকে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আর্ডেন্ট এর মত হতে পারেন নাই বলে সমালোচনা করেছেন। মানে আবদি বলতে চাইছেন, হাসিনারও ব্যাপারটাকে কথিত ‘সাম্প্রদায়িকতার’ গল্পের ফ্রেমে ফেলে ইকবাক হোসেন এন্ড গঙদের পিছনে যারা আছে,যাদেরকে ‘মৌলবাদী’ বা ‘জঙ্গি’ (যে শব্দগুলো একটা হিন্দুত্ববাদী সেকুলার ও প্রগতিশীল মন শুনতে পছন্দ করে) বলে হাসিনার এদের নিন্দা করা উচিত ছিল। অর্থাৎ হাসিনা যতই বলেন এটা not communal issue, but conspiracy সেটা আবদিও তা শুনতে রাজি না।

অথচ এত সাহসী* সাংবাদিক আবদি কিন্তু দেখেনই নাই যে হাসিনা সরাসরি মোদীকে হুশিয়ারী দিয়েছেন অন্তত বিবিসি তা যতটা সম্ভব স্পষ্ট করে ছেপেছে? এটা আবদি এড়িয়ে গেছেন কেন? দেশপ্রেমে? হাসিনা মোদিকে দায়ী করেছে বলে? তাই আপনার জন্য রিস্ক হয়ে যায়? এর মানে আপনি মোদীকে সার্ভিস দিতেই কী এই লেখা লিখেছেন? এমন বহু প্রশ্ন উঠতে পারে।
একারণেই একথাটাই আমি বলছি যে যতই সাহসী মেডেল পাওয়া হন না কেন, ভারতীয় মুসলমানদের হিন্দুজাতিবাদি সেকুলার ও প্রগতিশীলই থাকতে হয়!
সবশেষে একটা প্রসঙ্গ বলে শেষ করব। তাহল, আবদি বাংলাদেশের বা দুনিয়ার ইসলামি রাজনৈতিক ধারাগুলো সম্পর্কে ধারণায় সীমাহীন অজ্ঞানতা,এটা পীড়াদায়ক! এসম্পর্কে ভারতের একজন সাধারণ হিন্দুর যে ধারণা আপনার ধারণা এর উর্ধে না। আপনি সাহসী জার্ণালিস্ট আর অন্তত পারিবারিক পরিচয়ে মুসলমান – অন্তত এটুকুর খাতিরে আপনার নুন্যতম জানাশুনা আছে মানুষ যেটাই আশা করবে। আপনি ভারতীয় “হিন্দুজাতিবাদি সেকুলার ও প্রগতিশীল” বয়ানে আটকে থেকে নিজের কেরিয়ারের সীমা টানতে চাইলে কে ঠেকাবে। অন্তত একাদেমিক ভাবে হলেও তো আপনাকে জানতেই হবে। অথচ ইদানিং আপনার ট্রেন্ড হল এশিয়ান বিদেশি পত্রিকার সাথে কাজ করা, লেখা দেয়া। যেমন আমরা দেখছি আপনি অহরহ ব্যবহার করেছেন ‘ফান্ডামেন্টালিস্ট’ এই শব্দটা। এটা না-বুঝ অবুঝ এক ঘৃণাবাচক শব্দ। অথচ কেরিয়ারে নুন্যতম সিরিয়াস কথিত সেকুলার ও প্রগতিশীলরাই এখন বুঝে গেছে এই শব্দ দুহাজার সালের আগের, মানে গত শতকের। চলতি শতকে নাইন-ইলেভেনের পরে এনিয়ে নতুন শব্দ ধারণা পশ্চিমাজগতই এনেছে। যেগুলোও আবার এখন (২০২১ সালে এসে আফগান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পরে) চ্যালেঞ্জের মুখে। যেমন আমেরিকান থিঙ্কট্যাংক ফেলোরাই এখন প্রকাশ্যে নিজের আর্টিকেলে ‘তথাকথিত ওয়ার অন টেরর’ বলছে। অর্থাত বুশের ‘ওয়ার অন টেরর’ এর দায় নিচ্ছেন না;দায় আমেরিকান প্রশাসনকে দিয়ে সরে যেতে চাইছেন।

আপনি আবদি আবার হেফাজত নিয়ে কথা তুলতে গেছেন। এতে আপনার অজ্ঞানতা আরও ফেটে প্রকাশিত হয়েছে। আগেই বল্লেছি আপনি বাংলাদেশের ইসলামি ধারাগুলো সম্পর্কে অজ্ঞ। পলিটিক্যাল টার্ণগুলো সম্পর্কেও। ফলে আন্দাজে ভারতের হিন্দুমনের উপর দাঁড়িয়ে অনুমানে কিছু বললে তা আপনার বিরুদ্ধেই যাবে। ভারত সরকার হাসিনা হেফাজতের সাথে ডিলিং (আমি সম্পর্ক বলি নাই) একেবারেই পছন্দ করে নাই। এর মানে আপনাকেও মোদির পো ধরতে হবে? নাকি ইন্ডেরপেন্ডেন্টলি ব্যাপারটা বুঝতে হবে? প্রশ্নটা খারাপ ভালোর চেয়েও কেন এমন হয়েছে সেটা বুঝাই আপনার প্রফেশনের দিক থেকে উপযুক্ত করণীয় হতে পারত।
শেষ কথাঃ
ইতিহাস বলে, বিশ শতকে একটা মুসলিম জাতিবাদ অথবা একালে “সারা দুনিয়াকে কেবল মুসলমানের দুনিয়া বানিয়ে” রাজনীতিতে মুসলমানেরা নেমেছে নিজে নিজে নয়। বেকুব অন্যেরা তাদের এভাবে নামতে বাধ্য করেছে। ইতিহাসে দুবার এমন ঘটেছে।
একঃ ভারতের হিন্দুনেতারা নিজেদের খুবই বুদ্ধিমান আর চালাক মনে করে জবরদস্তিতে একটা হিন্দু জাতিবাদের ভারত কায়েম বা হিন্দু জাতিরাষ্ট্রের ভারত কায়েমের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেটা ১৮৮৫ সালে কংগ্রেসের জন্ম থেকেই। যদিও এর আদি উদ্যোগ চিহ্ন খুঁজতে আপনাকে ১৮১৫ সালে যেতে হবে। অথচ হিন্দুনেতারা কেউ বুঝেন নাই যে এটা আত্মঘাতি। তাদের এই হিন্দু জাতিরাষ্ট্রের কায়েমের চিন্তা এই হিন্দুত্ববাদের ভিত্তি খাড়া করা – এটাই মুসলমানদেরকেও এক মুসলমান জাতিরাষ্ট্র গড়ে নেওয়ার দিকে ঠেলে দিতে বাধ্য করবে। হিন্দু জাতিরাষ্ট্র চিন্তা এক মুসলমান জাতিরাষ্ট্রের চিন্তার জনক হবে; এথেকে মুসলমান মনে মুসলমান- জাতিরাষ্ট্র চিন্তা ডেকে আনবে। এবং ঠিক তাই হয়েছিল। আমরা জিন্নাহর হাত ধরে ও মুসলিম লীগ গড়ে নিয়ে পাকিস্তান কায়েম করে নিয়েছিলাম। এখন কমিউনিস্ট আর হিন্দুত্ববাদী মুসলমান-ঘৃণার মনগুলো জিন্নাহকে দোষারোপ করে নিজেকে বাচানোর চেষ্টা করে চলে।

দুইঃ ঠিক প্রায় একইভাবে প্রেসিডেন্ট বুশ মনে করেছিলেন সোভিয়েত পতনের পরের দুনিয়া একমেরুর দেশ হয়ে গেছে। তিনি এক বিরাট কুতুব। ফলে কেউ তাকে বলার কিছু নাই। এমন ভেবে নাইন-ইলেভেনের হামলার প্রতিশোধের উছিলায় নিজেকে সীমাহীন ক্ষমতাধর ভেবে যা করলেন তা দেখতে আফগানিস্তানে হামলা। কিন্তু ইভেনজেলিক বুশ এর অর্থ দিলেন যে,আমেরিকান আপনারা মুসলমানদের সাথে আর আমেরিকায় থাকবেন না। আর পারলে অন্যান্য দেশেও। মুসলমান – এরা সবাই নাকি আমেরিকার জন্য সন্দেহজনক। অথচ টেরও পেলেন না এতে নিজের জন্য কী ক্ষতিটা করলেন। এতে বুশ আসলে প্রকারন্তরে মুসলমানদেরকে বলে দিলেন মুসলমান তোমরাও এমন একটা দুনিয়ার কথা কল্পনা কর যেখানে মুসলমান ছাড়া আর কেউ নাই। এটাই গ্লোবাল খলিফা-ইজম কায়েমের চিন্তা। অথচ এখন আমেরিকাসহ সারা পশ্চিম বলছে এরা জঙ্গীবাদ, টেরর। এরা ইনক্লুসিভ না। আরও কত কী? দোষের শেষ নাই। আর ভারত ২০০২ সালে থেকে বুশের এই টেররিজমের সাথে হাত মিলিয়েছে। এতে বুশ ভারতের সেই পুরান পাপ “হিন্দু জাতিরাষ্ট্রের” সাথে যা ততদিনে খোলাখুলি হিন্দুত্ববাদ হয়ে গেছে তার সাথে নিজের টেররিজমের বয়ানের মুসলমানবিদ্বেষ – এই দুই বয়ান গাটছাড়া বেধেছেন। এছাড়া কাশ্মীরের ভুল এবং অন্যায়ের উপর চাদর ঢাকতে এটাই বাজপেয়ি করেছিলেন। ফলাফল আমরা সবাই দেখতেই পাচ্ছি।



গৌতম দাস
রাজনৈতিক বিশ্লেষক
২৮ অক্টোবর ২০২১

@Bilal9 ভাই।

Wow! Thanks for posting this - have to read it over the weekend. :-)
 
@itsanufy দাদা। এইটা আপনার জন্য পুরাটা পইড়েন কিন্তু!



আবদির প্রিয় ‘র’ এর ‘মরটাল ফিয়ারে’ জীবন


আবদির প্রিয় ‘র’ এর ‘মরটাল ফিয়ারে’ জীবন
গৌতম দাস
২৮ অক্টোবর ২০২১
https://wp.me/p1sCvy-3MI

[সার-সংক্ষেপঃ ‘মরটাল ফিয়ারে’ [mortal fear] মানে র’ এর হাতে খুন হবার ভয়। আমরা সবাই ভারতের র [RAW] এর হাতে মরার ভয়ে আছি, ‘র’ আমাদের তাড়া করছে। বলেছেন – ভারতীয় সাংবাদিক আবদি]
তাঁর নাম এসএনএম আবদি [SNM ABDI]। গত আশির দশকে ইন্দিরা আমলে ভারতের বিহার পুলিশের এক কান্ড। তারা অপরাধ কমাতে এক সহজ পদক্ষেপ নিয়েছিল। অপরাধীর চোখে এসিড ঢেলে দেওয়া যাতে তারা আর অপরাধ না করতে পারে। করা এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম করে বিষয়টাকে মিডিয়ায় এনে বিখ্যাত হয়েছিলেন এই আবদি। এখনও আবদির পরিচয়ের সাথে তা সবজায়গায় এমন লেখা পাওয়া যাবে। জাতিসংঘের পুরস্কারও পেয়েছিলেন এজন্য। তিনি ভারতের আউটলুক পত্রিকার ডেপুটে এডিটর ছিলেন পরে আরেক ওয়েব মিডিয়া ফাস্ট পোস্ট এর সাথে যুক্ত হয়েছিলেন। সেসময় গত ২০১১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর বাংলাদেশ সফরকালে (তিস্তার পানি দিবার চুক্তি করতে এসেও না দেয়ার সেই সফর) সফরসঙ্গী দলের সদস্য হয়ে আবদি বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। স্মৃতি হাতড়ে সেখান থেকে বলছি।

করোনাকালে বিক্রি ও বিজ্ঞাপন কমে যাওয়ায় ভারতে প্রত্যেকটা মিডিয়াই টিকে থাকার জন্য এক মুশকিলের লড়াইয়ে এখনও পড়ে আছে। সব প্রতিষ্ঠিত মিডিয়াতেই তাদের রিপোর্টের শেষে অর্থ,অনুদান চাঁদা ইত্যাদির আবেদন সংযোজন করা হয়েছে দেখতে পাবেন। আর তাতে ফলাফলে আমরা দেখছি বেশির ভাগ প্রধান ধারার মিডিয়া মোদির দারস্থ হয়েছে।
আরেক দেশে গিয়ে নিয়মিত নাশকতা কর্মকান্ড চালানোর ভারতের গোয়েন্দা এক প্রতিষ্ঠান হল ‘র’। এই ‘র’ স্পনসরড বা অর্থ দিয়ে পরিচালিত এক প্রাইভেট সংবাদ সংস্থা বা এজেন্সি হল এএনআই [ANI] যার প্রধান কাজ হল ফেক নিউজ ছাপা। অর্থাৎ এএনআই-এর কাজ হল ‘র’ স্পনসরড প্রপাগান্ডা বক্তব্যকে নিউজ হিসাবে প্রান্তিক মিডিয়াতে সরবরাহ করা। আর যে প্রান্তিক মিডিয়া এটা ছাপে সে এর বিনিময়েই মোদির ‘সাহায্য’ বা মিডিয়া ফান্ড পেয়ে থাকে। আর এমন নিউজ ছাপার মাধ্যমেই ভারতের মিডিয়াগুলো করোনাকালে তাদের আর্থিক সংকট সামলেছিল। বাংলাদেশের মিডিয়াজগত আরো দুর্বল,এখানে কেউই বাণিজ্যিকভাবে কোনকালেই সফল নয়। তাই ‘র’ স্পনসরড এএনআই এর “নিউজের” আছর বাংলাদেশে আরো বেশি।

তবু ভারতে এসবের বাইরে থেকে অর্থের লোভ সামলানে এই কষ্টের দিনে টিকে থাকা অল্প ওয়েব পত্রিকাও আছে। যদিও তারা খুবই ছোট ফলে বাজার শেয়ার খুবই কম। তবু এরা অনেকেই যথেষ্ট প্রভাবশালী নিজ মেরিটে। আমার ধারণা এমনদের শীর্ষে আছে এখন সম্ভবত ওয়াইর[WIRE] – এই মিডিয়া। যদিও মেরিটেড পত্রিকাও বছর দশেক আগে রেগুলার না,হঠাত করে কিছু ক্যাশের লোভে দু একটা ‘র’ স্পনসরড প্রপাগান্ডা বক্তব্য ছেপে দিত। আর করোনাকালে এটাই এখন রেগুলার ফেনোমেনা। তাই করোনাকালেও মোদির ফান্ডে আগ্রহ যারা দেখায় নাই বলে মনে হয় তেমনই এক ওয়েব পত্রিকা হল ‘দ্যা কুইন্ট’ [The QUINT]।
এই ‘দ্যা কুইন্ট’ পত্রিকায় আবদি গতকাল বাংলাদেশ ও হাসিনাকে নিয়ে একটা ‘নিচা দেখানো’ [derogatory] লেখা লিখেছেন। তবে কিছু জায়গা খুবই আপত্তিজনক ও অপমানসুচক। এছাড়া ভুল তথ্য ও ভুল ব্যাখ্যায় তা মনগড়া ভাবে লেখা। এসব ছাড়াও লেখকের বাকি সমস্যাটা হিন্দুজাতিবাদের চোখ দিয়ে সব দেখলে যেমন হয় সেই সমস্যা। হিন্দুজাতিবাদের চোখে দেখার এই স্টাইল; এটার একটা ভাল নাম আছে যেটাকে বলে ‘সেকুলার প্রগতিশীল’। অর্থাৎ লেখক আবদি আসলে এক ‘সেকুলার প্রগতিশীল’ সম্পাদক।

হিন্দুজাতিবাদ বা হিন্দুত্ববাদের চোখে ও চর্চায় ভারতের কোন মুসলমানকে তারা যেসব শর্তে তাদের সমাজে থাকতে চলতে বসবাস করতে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বা চাকরির প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতে ও তাদের পাশে বসে তা করতে গেলে যে শর্তে এসব তারা করতে দেয় সেই শর্তেরই আনুষ্ঠানিক নাম হচ্ছে ‘সেকুলার ও প্রগতিশীল’। এই সেকুলার প্রগতিশীল রুল মানে হল হিন্দুত্ববাদ দিয়ে সাজানো (orientation) ধর্মীয়-কালচারাল ভিত্তিতে সেট করা রীতিনীতির এক একচেটিয়া আধিপত্য নিশ্চিত করে এটা। ভারতের বা কলকাতার মুসলমানের সেকুলার প্রগতিশীল নিয়ম রুল ও শর্ত পালন সাপেক্ষেই একমাত্র ভারতীয় সমাজে থাকতে পারে। কাজেই সম্পাদক এসএনএম আবদিও এর বাইরে নন। এটাই তারও ছোট থেকে বেড়ে উঠার শর্ত ও স্মৃতি; যা এখন এই মোদি-যুগে তো আর বদলবার কোন সুযোগই নাই। আবদি সাহসী এবং ইনভেস্টিগেটিভ কাজ করা লোক। মানে খুজে বের করে সামনে আনার মত সাহসী সাংবাদিক বটে। কিন্তু এখানে এসে তার সেই সাহসও অচল। কারণ এটা একার সাহসের প্রশ্ন নয়। এই উপমহাদেশ যেখানে কলুসিত করা হয়েছে সেই ১৮১৫ সাল থেকে। কিভাবে এটা এজায়গায় পৌছালো,এখান থেকে বের হবার পথ কী এনিয়ে কোন ইনভেস্টিগেশনে তিনি অচল অপারগ দেখা যাচ্ছে!

বরং উলটা কারবার দেখা যাচ্ছে।যেমন র [RAW] নিয়ে তিনি ভারতের হিন্দুত্ব -এই কট্টর জাতিবাদী ধারার সকলের মতই গর্বিত। বাংলাদেশে জবরদস্তিতে ভারতের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার প্রধান হাতিয়ার প্রতিষ্ঠান হল এই র। তাই র এর কর্ম-পরিকল্পনা ও এর বাস্তবায়নের ততপরতা মানে তা বাংলাদেশের জন্য তা নাশকতা,স্যাবোটাজ বা অন্তর্ঘাতমূলক কাজ। দেশপ্রেমে বিগলিত আবদি এই র সম্পর্কে লিখতে গিয়ে এমন ফুলা ফুলেছেন যে লিখছেন, “জাতিসংঘের ভেটোসদস্য-ওয়ালা পাঁচ রাষ্ট্রের শক্তি একসঙ্গে করলে যত বাংলাদেশে ভারতের শক্তি-সক্ষমতা এর চেয়েও বেশি” [India wields more influence in Bangladesh than the Security Council’s five permanent members put together.]। বলাই বাহুল্য বাংলাদেশে উপর র এর ক্ষমতার কথাই তিনি বলছেন আমরা দেখছি খুবই আহ্লাদিত হয়ে, হিন্দুত্ব জাতিবাদের জোসে, দেশপ্রেমিকতায়।


এরপরের বাক্যে এবার খোলাখুলি বলছেন, “ভারতের প্রতিবেশি দেশে রিসার্চ এন্ড এনালাইসিস উইং (RAW বা বাংলায় র) হল সবচেয়ে ভয়ঙ্কর আতঙ্কের প্রতিষ্ঠান, যা এমনকি ক্ষমার অযোগ্য র‍্যাবের চেয়েও নৃশংস” [The Research and Analysis Wing (RAW) is the most dreaded outfit in the neighbouring country surpassing even the brutally unforgiving RAB]।
এখানে এই সেকুলার ও প্রগতিশীল হিন্দুত্ববাদপ্রেমী আবদির কান্ড দেখেন। ভারতের র যদি বাংলাদেশের র‍্যাবের চেয়েও নৃশংসতায় ছাড়িয়ে যাওয়া সংগঠন হয় আর সেক্ষেত্রে তাতে র‍্যাব ক্ষমার অযোগ্য [unforgiving] হলে দেশপ্রেমি আবদির কাছে র RAW কেমন প্রতিষ্ঠান হয়ে দাড়ালো? দেশপ্রেমে ডুবে আবদির এদিকটার কথা খেয়াল নাই। তার কাছে র হল প্রশংসার ও আদরণীয় প্রতিষ্ঠান।
তাঁর এরপরের বাক্য তাঁর তো বটেই মোদী সরকারেরও অনেক কিছুর স্বীকারোক্তি। সব কথার এককথা এই বাক্য। আবদি বলছেন “হাসিনা র এর হাতে মরবার ভয়ে (মরটাল ফিয়ার) জীবন কাটাচ্ছেন” [Hasina lives in mortal fear of RAW.]। বুঝা যাচ্ছে আবদির এমন কেউ নাই খুবই বন্ধুহীন যে তাঁকে বলে দেয় যে এভাবে লেখা যায় না। এতে নিজের বিরুদ্ধেই লেখা হয়ে যায়।

তামাশার কথা হচ্ছে আবদি এতই দেশপ্রেমে আপ্লুত, বীরত্বের কথা ভেবে মসগুল যে তিনি বুঝতেই পারছেন না যে তিনি এক অপরাধীর স্বদেশের-অপরাধের স্টেটমেন্ট বা আত্মস্বীকারোক্তি দিয়ে ফেলছেন। অথচ তাঁর সে খবরই নাই। এর মানে হল র আমাদের প্রধানমন্ত্রীর হবু গুপ্তঘাতক আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী এই গুপ্তঘাতকের ভয়ে সিটিয়ে আছেন। আর জার্নালিস্ট আবদি আমাদেরকে নিজে লিখে এই স্বীকারোক্তি দিচ্ছেন! বা! থ্যাঙ্কু আবদি! খুব সুন্দর করে আমরা আবদির খুবই দেশপ্রেমিকতার কাহিনী জানলাম বটে!
পরের দুই বাক্য আরো স্পষ্টিকরণ বক্তব্য। বলছেন “হাসিনা জানেন তিনি ভারতকে সন্তুষ্ট করে না রাখতে পারলে ক্ষমতাচ্যুত হবেন! তাই ক্ষমতা ধরে রাখতে হাসিনা ভারতকে সন্তুষ্ট করে রাখার নীতি-পলিসি নিয়েছেন” [She knows that she will be toppled if she displeases India. So she has adopted the policy of pleasing India to retain power at any cost.] ।
বুঝা গেল এক দগদগে হিন্দুত্ববাদের দেশপ্রেম ছাড়া তিনি জীবনে আর কিছু শিখেন নাই। আর তিনি তার ভারত সরকারের বাংলাদেশের প্রতি অপততপরতা-গুলো সম্পর্কে ভালই ওয়াকেবহাল!

এক বিরাট জট খুলে গেলঃ
তার মানে আমাদের জন্য এক বিরাট জট খুলে গেল। গত দুর্গাপুজায় কুমিল্লা কাহিনী, যেটা ইকবাল হোসেন এর কোরান শরীফ রেখে আসা, গদা কাধে বীরত্বে ফিরে আসা আর শেষে তার নিজেরই মুসলমান ভাইদেরকে প্রতিবাদে নেমে আসার উস্কানি – এসবটা নিয়ে ১২টা ক্যামেরা লাইভ ফুটেজ সংগ্রহ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রমাণিত স্টোরি, যেটা মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা সবাই জেনে গেছি। এখন বাকি থেকে গেছে ইকবাল হোসেন এন্ড গঙদের পিছনে এসাইনমেন্ট দাতা শক্তিটা কে? তা জানা।
এখন আমরা সম্ভবত বলতে পারি আবদি আমাদের কে বলছেন এই শক্তিটা হল ‘র’। এমন শক্তিধরই নাশকতা বা অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করতে পারে, কারণ,১। এ’শক্তি বাংলাদেশে ভেটোসদস্য-ওয়ালা পাঁচ রাষ্ট্রের চেয়েও বেশি শক্তিশালী। ২। এ’শক্তি বাংলাদেশে এক ভয়ঙ্কর আতঙ্কের নাম, এক প্রতিষ্ঠান। যা এমনকি ক্ষমার-অযোগ্য র‍্যাবের চেয়েও বেশি নৃশংস। ৩। হাসিনা র-এর হাতে মরবার ভয়ে মরটাল ফিয়ারে [mortal fear] দিন কাটাচ্ছেন। ৪। হাসিনা এই গুপ্তঘাতকের হাতে মরবার ভয়ে ভারতকে ক্রমাগত সন্তুষ্ট করেই টিকে আছেন ও চলেছেন।


অতএব ইকবাল হোসেন এন্ড গঙদের পিছনে এসাইনমেন্ট দাতা শক্তিটাই RAW বা বাংলায় ‘র’। এই অপততপরতা বা অ-কাজ সে করতে পেরেছে এক সহজ ফর্মুলায় যে মন্দিরে কোরান শরীফ মানেই তা হিন্দুদের কাজ বলে ভাড়াটে কিছু মুসলমানকে দিয়েই উস্কানি তোলা। আবার এরাই এর মানে দিয়েছে এটাই হিন্দুদের হাতে কোরান শরীফের অবমাননা। অথচ এটা যে ‘হিন্দুদের কাজ’ না হয়ে, ইকবাল হোসেন এন্ড গঙদের কাজ হতে পারে এবং হয়েছে – এবং ইকবালদের পিছনের শক্তি যে আবার বিদেশি ‘হিন্দুরাই’ হতে পারে, র নিজেই হতে পারে, এসব নিয়ে চিন্তা করতে কেউ চায় নাই। মনে হতে পারে যারা রাস্তায় কথিত সাম্প্রদায়িকতা লড়েছে এরা “অশিক্ষিত” মুসলমান তাই এসব বুঝেন নাই। না বভুঝেই করেছে। তাই কী? না তা একেবারেই মিথ্যা কথা।
হিন্দুদের মন্দির বা মুর্তি ভাঙলে তা মুসলমানদের কাজ না হয়ে যায় না। এই হল গত দুশ বছরের অনুমান। অন্যের মুর্তি বা মসজিদ ভেঙ্গেও যে অন্যের উপর দোষ চাপানো সম্ভব অতএব আমাদের ফ্যাক্টসে যেতে হবে সবার আগে। সত্য-মিথ্যা মিলিয়ে অনুমান যেটাকে এখনও সত্যি কিনা তা নিয়ে কেউ ভেঙ্গে খুলে দেখতে যাচাইয়ে রাজি না। তাই কুমিল্লার ঘটনায় শহুরে আর শিক্ষিত পড়ালেখাওয়ালারা আগাম মুখস্ত বলে গেছেন এটা “মৌলবাদীদের” কাজ। কেউ আরও আগেবাড়িয়ে এটা ‘জঙ্গীবাদের’ কাজ বলেছেন।

এককথায়, এটা সংগঠিত মুসলমানের কাজ,আগাম এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তা প্রতিষ্ঠা করেছে শিক্ষিতরাই। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিগুলো যেমন। সাথে বিবৃতিদাতারাও আছে। তাদের একটা মুখস্ত শব্দ আছে ‘সাম্প্রদায়িকতা’, মানে হিন্দু-মুসলমানের ক্যাচাল। এরা সেই ফর্মুলায় ফেলে চোখ বন্ধ করে মুসলমান বা ইসলামি রাজনীতিকদের দায়ী করছেন। অথচ এতে যে এই শিক্ষক সমিতির নেতাদের পছন্দের দল ও নেত্রী হাসিনাও দায়ী হচ্ছেন তাতেও তারা কেয়ার করছেন না। এতই তাদের হিন্দুজাতিবাদি সেকুলার ও প্রগতিশীল পরিচয়ের প্রতি লোভ ও নেক।
এমনকি আবদি যেখানে বলছেন হাসিনা ‘র’ এর ভয়ে পালিয়ে কাপতেছেন,যেকোনভাবে ভারতকে সন্তুষ্টি করতে লেগে আছেন! অথচ তাতে বাংলাদেশের সেকুলার ও প্রগতিশীল পরিচয়ের জগতে কোন বিকার নাই। হাসিনার দুর্ভাগ্য এটাই! অন্তত আবদিও তো হিন্দুজাতিবাদি সেকুলার ও প্রগতিশীলই! তাই না? যদিও এসব শিক্ষক সমিতি বা সাথে ৪৭ জনএর বিবৃতিবাজরা জেনে অথবা না জেনে কিন্তু ইতোমধ্যেই হাসিনার হাত ছেড়ে দিয়ে ইকবাক হোসেন এন্ড গঙদের পিছনের নেতাদের হাত আকড়ে ধরে নিয়েছে।

বেচারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যতই চিৎকার করে ভারতের বুঝবার মত ভাষায় বলছেন, Attack on Hindus not communal issue, but conspiracy, – যা ভারতের সব প্রধান পত্রিকায় ছাপা হয়েছে তবু ভারতের কেউই হাসিনা ও তার মন্ত্রীদের কথা আমল করছে না। সবাই এটা হিন্দু-মুসলমানের কথিত সাম্প্রদায়িকতার ক্যাচাল, এমন মুখস্ত প্রচলিত ব্যাখ্যার বাইরে যেতে রাজি হয় নাই। দেখা যাচ্ছে র’ এর এই ব্যাখ্যা হাসিনা ও মন্ত্রীদের হারিয়ে দিয়েছে। অবশ্য বাংলাদেশেও হাসিনা ও মন্ত্রীদের বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব আছে অনেক আগে থেকেই। এরা এরই সুযোগটা নিয়েছে এমনকি আওয়ামি দলীয় শিক্ষক সমিতিও হাসিনা ও মন্ত্রীদের পক্ষে নাই; তারা র এর অবস্থানের পক্ষে দাড়িয়ে গেছে।
আবদিও সেকাজটাই করেছেন। তিনি হাসিনাকে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আর্ডেন্ট এর মত হতে পারেন নাই বলে সমালোচনা করেছেন। মানে আবদি বলতে চাইছেন, হাসিনারও ব্যাপারটাকে কথিত ‘সাম্প্রদায়িকতার’ গল্পের ফ্রেমে ফেলে ইকবাক হোসেন এন্ড গঙদের পিছনে যারা আছে,যাদেরকে ‘মৌলবাদী’ বা ‘জঙ্গি’ (যে শব্দগুলো একটা হিন্দুত্ববাদী সেকুলার ও প্রগতিশীল মন শুনতে পছন্দ করে) বলে হাসিনার এদের নিন্দা করা উচিত ছিল। অর্থাৎ হাসিনা যতই বলেন এটা not communal issue, but conspiracy সেটা আবদিও তা শুনতে রাজি না।

অথচ এত সাহসী* সাংবাদিক আবদি কিন্তু দেখেনই নাই যে হাসিনা সরাসরি মোদীকে হুশিয়ারী দিয়েছেন অন্তত বিবিসি তা যতটা সম্ভব স্পষ্ট করে ছেপেছে? এটা আবদি এড়িয়ে গেছেন কেন? দেশপ্রেমে? হাসিনা মোদিকে দায়ী করেছে বলে? তাই আপনার জন্য রিস্ক হয়ে যায়? এর মানে আপনি মোদীকে সার্ভিস দিতেই কী এই লেখা লিখেছেন? এমন বহু প্রশ্ন উঠতে পারে।
একারণেই একথাটাই আমি বলছি যে যতই সাহসী মেডেল পাওয়া হন না কেন, ভারতীয় মুসলমানদের হিন্দুজাতিবাদি সেকুলার ও প্রগতিশীলই থাকতে হয়!
সবশেষে একটা প্রসঙ্গ বলে শেষ করব। তাহল, আবদি বাংলাদেশের বা দুনিয়ার ইসলামি রাজনৈতিক ধারাগুলো সম্পর্কে ধারণায় সীমাহীন অজ্ঞানতা,এটা পীড়াদায়ক! এসম্পর্কে ভারতের একজন সাধারণ হিন্দুর যে ধারণা আপনার ধারণা এর উর্ধে না। আপনি সাহসী জার্ণালিস্ট আর অন্তত পারিবারিক পরিচয়ে মুসলমান – অন্তত এটুকুর খাতিরে আপনার নুন্যতম জানাশুনা আছে মানুষ যেটাই আশা করবে। আপনি ভারতীয় “হিন্দুজাতিবাদি সেকুলার ও প্রগতিশীল” বয়ানে আটকে থেকে নিজের কেরিয়ারের সীমা টানতে চাইলে কে ঠেকাবে। অন্তত একাদেমিক ভাবে হলেও তো আপনাকে জানতেই হবে। অথচ ইদানিং আপনার ট্রেন্ড হল এশিয়ান বিদেশি পত্রিকার সাথে কাজ করা, লেখা দেয়া। যেমন আমরা দেখছি আপনি অহরহ ব্যবহার করেছেন ‘ফান্ডামেন্টালিস্ট’ এই শব্দটা। এটা না-বুঝ অবুঝ এক ঘৃণাবাচক শব্দ। অথচ কেরিয়ারে নুন্যতম সিরিয়াস কথিত সেকুলার ও প্রগতিশীলরাই এখন বুঝে গেছে এই শব্দ দুহাজার সালের আগের, মানে গত শতকের। চলতি শতকে নাইন-ইলেভেনের পরে এনিয়ে নতুন শব্দ ধারণা পশ্চিমাজগতই এনেছে। যেগুলোও আবার এখন (২০২১ সালে এসে আফগান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পরে) চ্যালেঞ্জের মুখে। যেমন আমেরিকান থিঙ্কট্যাংক ফেলোরাই এখন প্রকাশ্যে নিজের আর্টিকেলে ‘তথাকথিত ওয়ার অন টেরর’ বলছে। অর্থাত বুশের ‘ওয়ার অন টেরর’ এর দায় নিচ্ছেন না;দায় আমেরিকান প্রশাসনকে দিয়ে সরে যেতে চাইছেন।

আপনি আবদি আবার হেফাজত নিয়ে কথা তুলতে গেছেন। এতে আপনার অজ্ঞানতা আরও ফেটে প্রকাশিত হয়েছে। আগেই বল্লেছি আপনি বাংলাদেশের ইসলামি ধারাগুলো সম্পর্কে অজ্ঞ। পলিটিক্যাল টার্ণগুলো সম্পর্কেও। ফলে আন্দাজে ভারতের হিন্দুমনের উপর দাঁড়িয়ে অনুমানে কিছু বললে তা আপনার বিরুদ্ধেই যাবে। ভারত সরকার হাসিনা হেফাজতের সাথে ডিলিং (আমি সম্পর্ক বলি নাই) একেবারেই পছন্দ করে নাই। এর মানে আপনাকেও মোদির পো ধরতে হবে? নাকি ইন্ডেরপেন্ডেন্টলি ব্যাপারটা বুঝতে হবে? প্রশ্নটা খারাপ ভালোর চেয়েও কেন এমন হয়েছে সেটা বুঝাই আপনার প্রফেশনের দিক থেকে উপযুক্ত করণীয় হতে পারত।
শেষ কথাঃ
ইতিহাস বলে, বিশ শতকে একটা মুসলিম জাতিবাদ অথবা একালে “সারা দুনিয়াকে কেবল মুসলমানের দুনিয়া বানিয়ে” রাজনীতিতে মুসলমানেরা নেমেছে নিজে নিজে নয়। বেকুব অন্যেরা তাদের এভাবে নামতে বাধ্য করেছে। ইতিহাসে দুবার এমন ঘটেছে।
একঃ ভারতের হিন্দুনেতারা নিজেদের খুবই বুদ্ধিমান আর চালাক মনে করে জবরদস্তিতে একটা হিন্দু জাতিবাদের ভারত কায়েম বা হিন্দু জাতিরাষ্ট্রের ভারত কায়েমের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেটা ১৮৮৫ সালে কংগ্রেসের জন্ম থেকেই। যদিও এর আদি উদ্যোগ চিহ্ন খুঁজতে আপনাকে ১৮১৫ সালে যেতে হবে। অথচ হিন্দুনেতারা কেউ বুঝেন নাই যে এটা আত্মঘাতি। তাদের এই হিন্দু জাতিরাষ্ট্রের কায়েমের চিন্তা এই হিন্দুত্ববাদের ভিত্তি খাড়া করা – এটাই মুসলমানদেরকেও এক মুসলমান জাতিরাষ্ট্র গড়ে নেওয়ার দিকে ঠেলে দিতে বাধ্য করবে। হিন্দু জাতিরাষ্ট্র চিন্তা এক মুসলমান জাতিরাষ্ট্রের চিন্তার জনক হবে; এথেকে মুসলমান মনে মুসলমান- জাতিরাষ্ট্র চিন্তা ডেকে আনবে। এবং ঠিক তাই হয়েছিল। আমরা জিন্নাহর হাত ধরে ও মুসলিম লীগ গড়ে নিয়ে পাকিস্তান কায়েম করে নিয়েছিলাম। এখন কমিউনিস্ট আর হিন্দুত্ববাদী মুসলমান-ঘৃণার মনগুলো জিন্নাহকে দোষারোপ করে নিজেকে বাচানোর চেষ্টা করে চলে।

দুইঃ ঠিক প্রায় একইভাবে প্রেসিডেন্ট বুশ মনে করেছিলেন সোভিয়েত পতনের পরের দুনিয়া একমেরুর দেশ হয়ে গেছে। তিনি এক বিরাট কুতুব। ফলে কেউ তাকে বলার কিছু নাই। এমন ভেবে নাইন-ইলেভেনের হামলার প্রতিশোধের উছিলায় নিজেকে সীমাহীন ক্ষমতাধর ভেবে যা করলেন তা দেখতে আফগানিস্তানে হামলা। কিন্তু ইভেনজেলিক বুশ এর অর্থ দিলেন যে,আমেরিকান আপনারা মুসলমানদের সাথে আর আমেরিকায় থাকবেন না। আর পারলে অন্যান্য দেশেও। মুসলমান – এরা সবাই নাকি আমেরিকার জন্য সন্দেহজনক। অথচ টেরও পেলেন না এতে নিজের জন্য কী ক্ষতিটা করলেন। এতে বুশ আসলে প্রকারন্তরে মুসলমানদেরকে বলে দিলেন মুসলমান তোমরাও এমন একটা দুনিয়ার কথা কল্পনা কর যেখানে মুসলমান ছাড়া আর কেউ নাই। এটাই গ্লোবাল খলিফা-ইজম কায়েমের চিন্তা। অথচ এখন আমেরিকাসহ সারা পশ্চিম বলছে এরা জঙ্গীবাদ, টেরর। এরা ইনক্লুসিভ না। আরও কত কী? দোষের শেষ নাই। আর ভারত ২০০২ সালে থেকে বুশের এই টেররিজমের সাথে হাত মিলিয়েছে। এতে বুশ ভারতের সেই পুরান পাপ “হিন্দু জাতিরাষ্ট্রের” সাথে যা ততদিনে খোলাখুলি হিন্দুত্ববাদ হয়ে গেছে তার সাথে নিজের টেররিজমের বয়ানের মুসলমানবিদ্বেষ – এই দুই বয়ান গাটছাড়া বেধেছেন। এছাড়া কাশ্মীরের ভুল এবং অন্যায়ের উপর চাদর ঢাকতে এটাই বাজপেয়ি করেছিলেন। ফলাফল আমরা সবাই দেখতেই পাচ্ছি।



গৌতম দাস
রাজনৈতিক বিশ্লেষক
২৮ অক্টোবর ২০২১

@Bilal9 ভাই।
Goutam Das should have learned from his namesake what journalism is. I gone through the news twice but failed to understand what he was trying to convey. Who is he?

Summery to me
1. RAW funds news agencies in India.
2. RAW will kill Hasena if she doesn't hear their word.
3. Kumilla Incident was done by RAW.
4. No one in India believes the words of your Minister that its not a communal riot.
5. Hindus only forced Muslims to create a diff nation.

The article is very poorly wrtten with no evidense and all speculation. Journalisim means putting out real facts and let people decide.

snm abdi- he is totally an opportunist. Has gone to jail on a rape case, got acquitted only when his aid married that lady.

Now I will put words to three famous politicians
1. Jyoti Basu - If govt doesn't want riot can't happen. He proved that in his rule of 25 years. Pre and post his rule riot has happened,
2. Manmohon Singh - at least 25 per cent of the population of Bangladesh swear by the Jamiat-ul-Islami and they are very anti-Indian. I can see in this forum some of your countrymen reacts positively when one said why in BD a Islamist country Idol worship will happen. Another gem in this forum, people claimed Chattagram is a Hindu name when it actually came from a Muslim background. This falseness is one of the reason why enimity increases.
3. Begum Khaleda Jia - in 1996 she told that Azan would be replaced in Bangladesh by blowing of conchshells if Awami League came to power.
during the prime ministership of Begum Zia around 3000 temples in Bangladesh were damaged, many women raped and properties of Hindus destroyed following the demolition of Babri mosque in India in December 1992.
As a mark of protest, Hindus in Bangladesh did not celebrate their biggest religious festival Durga Puja with traditional pomp and instead restricted it to a symbolic puja ignoring threats from the then ruling party BNP and its frontal outfits, both overtly and covertly. At least 20 people died.
So that was not a communal riot?
Prime minister of a country, now the main opposition openly calling for a religious divide and still BD people are calling for a high moral ground.

Anyway, during my professional carrier I have worked with diff govt agencies, RAW has clout but not as much you people believe. its funding is not up to the mark. The main problem with RAW is its an excellent reactive agency but not a proactive one. There are at leasr 10+ books on raw, some of them wrtten by their old directors. You can get a glimps of what happens there.
 
Last edited:
Goutam Das should have learned from his namesake what journalism is. I gone through the news twice but failed to understand what he was trying to convey. Who is he?

Summery to me
1. RAW funds news agencies in India.
2. RAW will kill Hasena if she doesn't hear their word.
3. Kumilla Incident was done by RAW.
4. No one in India believes the words of your Minister that its not a communal riot.
5. Hindus only forced Muslims to create a diff nation.

The article is very poorly wrtten with no evidense and all speculation. Journalisim means putting out real facts and let people decide.

snm abdi- he is totally an opportunist. Has gone to jail on a rape case, got acquitted only when his aid married that lady.

Now I will put words to three famous politicians
1. Jyoti Basu - If govt doesn't want riot can't happen. He proved that in his rule of 25 years. Pre and post his rule riot has happened,
2. Manmohon Singh - at least 25 per cent of the population of Bangladesh swear by the Jamiat-ul-Islami and they are very anti-Indian. I can see in this forum some of your countrymen reacts positively when one said why in BD a Islamist country Idol worship will happen. Another gem in this forum, people claimed Chattagram is a Hindu name when it actually came from a Muslim background. This falseness is one of the reason why enimity increases.
3. Begum Khaleda Jia - in 1996 she told that Azan would be replaced in Bangladesh by blowing of conchshells if Awami League came to power.
during the prime ministership of Begum Zia around 3000 temples in Bangladesh were damaged, many women raped and properties of Hindus destroyed following the demolition of Babri mosque in India in December 1992.
As a mark of protest, Hindus in Bangladesh did not celebrate their biggest religious festival Durga Puja with traditional pomp and instead restricted it to a symbolic puja ignoring threats from the then ruling party BNP and its frontal outfits, both overtly and covertly. At least 20 people died.
So that was not a communal riot?
Prime minister of a country, now the main opposition openly calling for a religious divide and still BD people are calling for a high moral ground.

Anyway, during my professional carrier I have worked with diff govt agencies, RAW has clout but not as much you people believe. its funding is not up to the mark. The main problem with RAW is its an excellent reactive agency but not a proactive one. There are at leasr 10+ books on raw, some of them wrtten by their old directors. You can get a glimps of what happens there.
@itsanufy, আহ দাদা ভাই চ্যাতেন কেন? রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন! :lol:

লেখাটা তো আর আমি লেখি নাই, গৌতম দাস লিখছেন ( তাও আবার হিন্দুত্ববাদী আবদির লেখার জের ধরে) ।

উনি ( গৌতম দাস) একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক। "র" নিয়ে লেখাটার গুনাগুন না হয় উনাকেই বর্ননা করে আসেন উনার সাইটে কমেন্ট করে, দেখে কি উত্তর দেন উনি, বা উত্তরে আরেকটা বিশ্লেষণ ধর্মী লেখা দিয়ে আপনার যুক্তি খন্ডন করেন কিনা!

আমি হলাম আদার ব্যাপারী, আমাকে জাহাজের খবর দিয়ে লাভ কি? আমি তো এর তার কাছে শুনে, বা এর ওর লেখা পড়ে নিজের যুক্তিতে যেটা মেলে সেটাই বলার চেষ্টা করি!

চাইলে উনার সব লেখা পড়ে দেখতে পারেন আস্তে আস্তে। উনার অতীতের অনেক ভবিষ্যৎ বানীই ফলে গেছে, বিশেষ করে ভারত আর আমেরিকা কে নিয়ে!

উনি অবশ্য পিনাকীর মত অত ফেমাস না, তাই চিনেন নাই আপনি! সেটার দরকারই বা কি? নাম দিয়ে নয়, আসেন আমরা কাজ দিয়ে মানুষ চিনি! :-)

নেন বদলে যাওয়া ইস্কনকে নিয়ে উনার লেখা ২০১৯ সালের আরেকটা লেখার লিংক দেই। চাইলে দেখে আসতে পারেন!

 
Last edited:

She is a nutcase as usual. I don't see her crying about Muslims being tortured and even killed in India....

Instead of talking about a few thugs/miscreants (which can exist in any country), she is blackballing the whole country of Bangladesh.

Fake Hindutva hypocrite.
Goutam Das should have learned from his namesake what journalism is. I gone through the news twice but failed to understand what he was trying to convey. Who is he?

Summery to me
1. RAW funds news agencies in India.
2. RAW will kill Hasena if she doesn't hear their word.
3. Kumilla Incident was done by RAW.
4. No one in India believes the words of your Minister that its not a communal riot.
5. Hindus only forced Muslims to create a diff nation.

The article is very poorly wrtten with no evidense and all speculation. Journalisim means putting out real facts and let people decide.

snm abdi- he is totally an opportunist. Has gone to jail on a rape case, got acquitted only when his aid married that lady.

Now I will put words to three famous politicians
1. Jyoti Basu - If govt doesn't want riot can't happen. He proved that in his rule of 25 years. Pre and post his rule riot has happened,
2. Manmohon Singh - at least 25 per cent of the population of Bangladesh swear by the Jamiat-ul-Islami and they are very anti-Indian. I can see in this forum some of your countrymen reacts positively when one said why in BD a Islamist country Idol worship will happen. Another gem in this forum, people claimed Chattagram is a Hindu name when it actually came from a Muslim background. This falseness is one of the reason why enimity increases.
3. Begum Khaleda Jia - in 1996 she told that Azan would be replaced in Bangladesh by blowing of conchshells if Awami League came to power.
during the prime ministership of Begum Zia around 3000 temples in Bangladesh were damaged, many women raped and properties of Hindus destroyed following the demolition of Babri mosque in India in December 1992.
As a mark of protest, Hindus in Bangladesh did not celebrate their biggest religious festival Durga Puja with traditional pomp and instead restricted it to a symbolic puja ignoring threats from the then ruling party BNP and its frontal outfits, both overtly and covertly. At least 20 people died.
So that was not a communal riot?
Prime minister of a country, now the main opposition openly calling for a religious divide and still BD people are calling for a high moral ground.

Anyway, during my professional carrier I have worked with diff govt agencies, RAW has clout but not as much you people believe. its funding is not up to the mark. The main problem with RAW is its an excellent reactive agency but not a proactive one. There are at leasr 10+ books on raw, some of them wrtten by their old directors. You can get a glimps of what happens there.

Dada - please correct your spelling and grammar errors before posting. :-)

Hazar holeyo bon biye korecchen - tai kono montobbo korlam na.
 
Last edited:
Back
Top Bottom