What's new

The Economist - Discrepancy in Dhaka

. . . .
Jammati War criminals should be executed

Bangladesh should be a secular democracy with rule of law and equality to all. Inshallah BD shall rise to become one and be the Canada of south Asia.
 
. . .
Yep you said it ...... in India cows are given priority over humans ...... :wave:

Now cows are animals, they don't have the brain to reason and logic which is why they roam on the street. Humans on the other hand are expected to use their head.

Wit is not ur forte munshi, you should stick to conspiracy theories :lol:
 
.
Show the proof of indian lie? Propaganda is indian blood and this is a prime example of that.

Comeon razakar. Didn't they teach you English in the madrassa you went to?
How can there be proof of a lie if you have already declared it as such.
 
.
Comeon razakar. Didn't they teach you English in the madrassa you went to?
How can there be proof of a lie if you have already declared it as such.

Ha ha nice hindutva spin...typical indian lie and can not show any prrof of their claim, yet as with their fundamentalist teaching indians think repeating lie makes it true.
 
.
Simla Agreement
The treaty was signed in Simla, India, by Zulfiqar Ali Bhutto, the President of Pakistan, and Indira Gandhi, the Prime Minister of India. The agreement also paved the way for diplomatic recognition of Bangladesh by Pakistan. The agreement has been the basis of all subsequent bilateral talks between India and Pakistan.

The agreement did not mention prisoners of war, and a supplementary Simla agreement on repatriation was signed in 1974. Subsequently India released 90,368 Pakistani military prisoners of war, including 195 accused of war crimes or genocide, and a similar number of civilian internees captured in East Pakistan.

We should hang indians first for releasing real war criminals.
 
.
I think British intelligence and the Jewish connection are assisting Jamaat-e-Islami. It is notable that Jamaat-e-Islami rarely criticises Israel and said nothing during the recent Gaza attacks ....
With due respect, you are way off in this case, although most of the time you are right on the money. JI walas always criticize Israeli atrocities; please visit their paper, the 'Daily Sangram' to find it out. And I also think BRIT's agency walas aren't helping Jamaaties either due to the JI's leniency with core Muslimiat, thanks.
 
. .
What make me concerned is that Jamaat changed its party constitution simply to retain its EC registration although by doing so it erased its Islamic identity .....
Remember, AL's killing of over 30,000 JSD supporters in the span of 73-75? It planned to do exactly similar for over 20,000 jailed JI-SHIBIRIES. HOW? If JI walas lost it registration then it was gonna get declared as banned out fit to be liquidated without any consequence. Please, remember saving own's life is 'Farze' and Rasul (PUBH) even signed Hudaibia treaty with Jews in that regard. Having said that I also wanted to point out some of JI's actions like not protesting against Faruk-Rashid's hanging, going under MUA-FUA BASTARD'S run election that were intolerable. Today, Mahmudur Rahman also mentioned about an action(http://www.amardeshonline.com/pages/details/2012/12/12/177553#.UMgi_YP7K8s) that he didn't like and I agreed with him. So, JI wala's deliberate partisanship needed to go, if they wanted more support of people IMO.
 
.
If you know Bengali then read the following article, especially the following part in bracket (সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলাকালে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় মার্কিন দূতাবাসের একটি গাড়ি পিকেটারদের সামনে পড়লে তারা গাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ে। চালক গাড়িটি দ্রুত চালিয়ে নিতে সক্ষম হলেও জানালার কাঁচ ভেঙে যায় এবং চালকও সামান্য আহত হয়। একটি চলন্ত গাড়িকে মার্কিন দূতাবাসের বলে চেনা নিশ্চয়ই পিকেটারদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। সুতরাং, এখানে বিশেষভাবে মার্কিন-বিরোধী কোনো মনোভাব প্রকাশ পাওয়ার সুযোগও ছিল না। কিন্তু, তা সত্ত্বেও ভীত-সন্ত্রস্ত জামায়াতে ইসলামী, রীতিমত আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশের মাধ্যমে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে। সেই বিবৃতিতে ঘটনার দায়দায়িত্ব দলের কাঁধে নিয়ে তারা ক্ষতিপূরণ প্রদানেরও প্রস্তাব দেয়। এখন প্রশ্ন হলো, ওইদিন সারা দেশে ছোট-বড় মিলিয়ে অন্তত শ’খানেক গাড়ি অগ্নিসংযোগ এবং ভাংচুরের শিকার হয়েছে। তাহলে কেবল মার্কিন দূতাবাসের গাড়ি ভাংচুরের জন্য জামায়াতে ইসলামীর দুঃখ প্রকাশ এবং ক্ষতিপূরণ প্রদানের প্রস্তাবের পেছনে যৌক্তিকতা কোথায়? শুধু তাই নয়। একটি বিশেষ গাড়ি ভাংচুরের দায় অপ্রয়োজনীয়ভাবে গ্রহণ করে দলীয়ভাবে জামায়াতে ইসলামী হরতালের দিনে সংঘটিত তাবত্ সহিংসতার দায়-দায়িত্ব কি নিজেদের ঘাড়ে নেয়নি? আনুষ্ঠানিক সেই স্বীকারোক্তির সুযোগ নিয়ে সরকার এর মধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত আমির এবং সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করে দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে অন্যান্য গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে গাড়ি ভাংচুরের অপরাধে ফৌজদারি মামলা দায়ের হলে তাদের পক্ষের আইনজীবীরা মক্কেলকে মুক্ত করতে কী যুক্তির সহায়তা নেবেন সেটা তারাই ভালো জানেন। তবে মার্কিন তোষণের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী যে তাদের আদর্শিক অবস্থান দুর্বল করে ফেলেছে এ বিষয়টি আশা করি, দলটির বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন কর্মী-সমর্থকরা মানবেন।) to find out what really has happened...


মন্তব্য প্রতিবেদন : মান-মর্যাদা আর রইল না
মাহমুদুর রহমান

গত সপ্তাহে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ডাকে এবং বিএনপির নৈতিক সমর্থনে দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়েছে। মহাজোট সরকারের চার বছরের ডজন খানেক হরতালের মধ্যে এটাই সবচেয়ে সহিংস ছিল। অবশ্য এই সপ্তাহের অবরোধে আরও রক্ত ঝরেছে। তবে আজকের লেখায় অবরোধ প্রসঙ্গ বাদ রাখছি। হরতালকারীদের পিকেটিংয়ে স্বতঃস্ফূর্ততা এবং অধিক মাত্রায় অংশগ্রহণের কারণেও জামায়াতের হরতালটি ভিন্ন মাত্রা লাভ করেছে। দু’ সপ্তাহ আগে লেখা ‘দেয়াল লিখন পড়ুন’ শিরোনামের মন্তব্য প্রতিবেদনে জামায়াত এবং শিবির কর্মীদের দলীয় আদর্শের প্রতি আনুগত্য এবং লড়াকু মনোভাবের প্রশংসা করেছিলাম। হরতালের দিনে পুলিশ ও সরকারি ক্যাডার বাহিনীর যৌথ হামলা প্রতিরোধে জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের সাহস করে রাজপথে অবস্থান ধরে রাখার দৃশ্য এখন সর্বত্র আলোচনার বিষয়। হরতাল ডেকে ঘরে বসে কিংবা মোবাইল বন্ধ করে নিরাপদ দূরত্বে থাকার ভীরুতার বিপরীতে সাহসের এই প্রদর্শনী ফ্যাসিস্ট সরকারের লাঠিয়াল প্রশাসনকে দৃশ্যতই বিচলিত করে তুলেছে। সেই হরতালের রাতে বাংলাভিশনের টক শোতে এই মুহূর্তে সম্ভবত সবচেয়ে জনপ্রিয় ‘টকশো স্টার’ নিউ-এজ সম্পাদক নুরুল কবির এসেছিলেন। আলট্রা-সেক্যুলার এই সম্পাদক কট্টর জামায়াত-বিরোধী হয়েও সে রাতে দেশব্যাপী হরতালের সফলতা স্বীকার করে নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর ক্রমবর্ধমান সাংগঠনিক সক্ষমতায় তার বামপন্থী অবস্থান থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিস্ময়ের ব্যাপার হলো দিনাজপুরে একজন শিবির কর্মীর অমূল্য প্রাণ এবং হাজারের ওপর কর্মী-সমর্থকদের ওপর অমানুষিক নির্যাতনের বিনিময়ে প্রাপ্ত সারাদিনের রাজনৈতিক সফলতা জামায়াত নেতৃবৃন্দ রাতে অপ্রত্যাশিতভাবে বিদেশি মনিবের পদতলে বিসর্জন দিয়েছেন। ঘটনাটি এ রকম।
সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলাকালে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় মার্কিন দূতাবাসের একটি গাড়ি পিকেটারদের সামনে পড়লে তারা গাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ে। চালক গাড়িটি দ্রুত চালিয়ে নিতে সক্ষম হলেও জানালার কাঁচ ভেঙে যায় এবং চালকও সামান্য আহত হয়। একটি চলন্ত গাড়িকে মার্কিন দূতাবাসের বলে চেনা নিশ্চয়ই পিকেটারদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। সুতরাং, এখানে বিশেষভাবে মার্কিন-বিরোধী কোনো মনোভাব প্রকাশ পাওয়ার সুযোগও ছিল না। কিন্তু, তা সত্ত্বেও ভীত-সন্ত্রস্ত জামায়াতে ইসলামী, রীতিমত আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশের মাধ্যমে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে। সেই বিবৃতিতে ঘটনার দায়দায়িত্ব দলের কাঁধে নিয়ে তারা ক্ষতিপূরণ প্রদানেরও প্রস্তাব দেয়। এখন প্রশ্ন হলো, ওইদিন সারা দেশে ছোট-বড় মিলিয়ে অন্তত শ’খানেক গাড়ি অগ্নিসংযোগ এবং ভাংচুরের শিকার হয়েছে। তাহলে কেবল মার্কিন দূতাবাসের গাড়ি ভাংচুরের জন্য জামায়াতে ইসলামীর দুঃখ প্রকাশ এবং ক্ষতিপূরণ প্রদানের প্রস্তাবের পেছনে যৌক্তিকতা কোথায়? শুধু তাই নয়। একটি বিশেষ গাড়ি ভাংচুরের দায় অপ্রয়োজনীয়ভাবে গ্রহণ করে দলীয়ভাবে জামায়াতে ইসলামী হরতালের দিনে সংঘটিত তাবত্ সহিংসতার দায়-দায়িত্ব কি নিজেদের ঘাড়ে নেয়নি? আনুষ্ঠানিক সেই স্বীকারোক্তির সুযোগ নিয়ে সরকার এর মধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত আমির এবং সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করে দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে অন্যান্য গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে গাড়ি ভাংচুরের অপরাধে ফৌজদারি মামলা দায়ের হলে তাদের পক্ষের আইনজীবীরা মক্কেলকে মুক্ত করতে কী যুক্তির সহায়তা নেবেন সেটা তারাই ভালো জানেন। তবে মার্কিন তোষণের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী যে তাদের আদর্শিক অবস্থান দুর্বল করে ফেলেছে এ বিষয়টি আশা করি, দলটির বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন কর্মী-সমর্থকরা মানবেন। প্রসঙ্গক্রমে অন্য একটি বিষয়ের অবতারণা করছি।
আমার সর্বশেষ মন্তব্য-প্রতিবেদনে মিসরের ইখওয়ানুল মুসলেমিন (মুসলিম ব্রাদারহুড)-এর দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস বর্ণনা করতে গিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির কিছু সমালোচনা করেছিলাম। সেই সমালোচনায় দলটির নেতা-কর্মী-সমর্থকের একাংশ ব্যথিত হয়ে আমার দেশ পত্রিকা এবং সোনার বাংলাদেশ ওয়েবসাইটে প্রশ্ন আকারে বিভিন্ন মন্তব্য লিখেছেন। ইখওয়ানুল মুসলেমিন এবং জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি অভিন্ন দাবি করে তারা জানতে চেয়েছেন, কোন পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি ভ্রান্ত বলে আমি মন্তব্য করেছি। আমি ধরে নিচ্ছি জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্র শিবিরের কর্মীরা হাসান-আল-বান্না, সৈয়দ কুতুব এবং জয়নাব গাজ্জালীর বইপত্র আমার চেয়ে অনেক বেশি পড়েছেন। মিসরের ইসলামী দলটির ইতিহাস সম্পর্কেও তাদের জানাশোনা অনেক বেশি। পঞ্চাশ এবং ষাটের দশকে মিসরের এক সময়ের জনপ্রিয় নেতা জামাল আবদেল নাসেরের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ইখওয়ানুল মুসলেমিনের সংগ্রামে পশ্চিমা বিশ্বের এক প্রকার কৌশলগত সমর্থন ছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন সমর্থিত নাসের সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত সব গোষ্ঠীকেই ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরাইলের পশ্চিমা মিত্ররা সে সময় বন্ধু বিবেচনা করত। ‘শত্রুর শত্রু আমার বন্ধু’ নীতি সবাই সময়-সুযোগ মতো গ্রহণ করে থাকে। কিন্তু, ১৯৭৩ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধ (Yom Kippur War) মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতির দৃশ্যপট পাল্টে দেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলের একাধিপত্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাতের দিকে বন্ধুত্বের হাত প্রসারিত করে। মিসরের প্রেসিডেন্ট সেই সময় ইসরাইল সফর করে সারা বিশ্বকে চমকে দেন এবং দেশবাসীকে তার বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ করে তোলেন। এই ইসরাইল প্রীতির প্রতিক্রিয়ায় পরবর্তী সময়ে সামরিক প্যারেড চলাকালে আনোয়ার সাদাত বিদ্রোহী সেনার গুলিতে নিহত হলে তার উত্তরসূরি হোসনি মোবারক অধিকতর মার্কিন ঘেঁষা নীতি অনুসরণ করেন।
উপর্যুপরি তিন স্বৈরশাসকের পঞ্চাশ বছরেরও অধিক সময়ের শাসনকাল ইখওয়ানুল মুসলেমিনকে নিরন্তর সংগ্রামের মধ্য দিয়েই অতিবাহিত করতে হয়েছে। শত শত নিরাপরাধ নারী-পুরুষকে কেবল ইসলামী আদর্শ ধারণ করার অপরাধে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। এমন সময়ও গেছে, যখন মিসরে প্রকাশ্যে ইখওয়ানুল মুসলেমিন শব্দটি উচ্চারণ করা পর্যন্ত অপরাধ রূপে গণ্য হতো। দলের সদস্যদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে সরকারের ছদ্মবেশী এজেন্টরা সর্বত্র ঘুরে বেড়াত। এত নির্যাতন সত্ত্বেও মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতৃবৃন্দ কখনই মিসরের জনগণের স্বাধিকারের আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে কোনো অবস্থান গ্রহণ করেননি অথবা নীতি বিসর্জন দিয়ে সাম্রাজ্যবাদের সঙ্গে কোনো আপসরফা করেননি। আদর্শের প্রতি অবিচল থাকার পরিণতিতেই ছয় দশকের দীর্ঘ সংগ্রাম শেষে দলটি গণআন্দোলনের জোয়ারে সম্প্রতি রাষ্ট্রক্ষমতা লাভ করেছে। তবে প্রেসিডেন্ট মুরসির বিরুদ্ধে মোবারকপন্থীদের আন্দোলন থেকে পরিষ্কার হয়ে উঠেছে যে, মিসরে ইসলামী শক্তির বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন সভ্যতার দেশটিতে আরব বসন্তের জাগরণ স্থায়ী রূপ পেতে হয়তো আরও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে।
অপরদিকে ১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলাম তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রায় প্রতিটি মানুষের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে যে পর্বতপ্রমাণ ভুল করেছে আজ তার মূল্য না চুকিয়ে উপায় নেই। পাকিস্তানের জালিম শাসকদের পক্ষাবলম্বন ইসলামের মহান আদর্শের পরিপন্থী কাজ হিসেবে অবশ্যই সবাইকে মানতে হবে। ২৫ মার্চ মধ্যরাতে দখলদার বাহিনী গণহত্যা আরম্ভ করার পর স্বাধীনতা সংগ্রামের বিরোধিতা করার নীতির পক্ষে কোনো যুক্তি প্রদর্শনের সুযোগ নেই। ১৯৮৬ সালে জেনারেল এরশাদের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ, ১৯৯৬ সালে ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে জয়লাভ করাতে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান এবং ২০০৭ সালে সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের দ্বারা বিভ্রান্ত হওয়াও জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক ভুলের ধারাবাহিক উদাহরণ। আশঙ্কা করছি, গত সপ্তাহের হরতালে মার্কিন দূতাবাসের সামান্য গাড়ি ভাংচুরে নতজানু প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে দলটি পুনরায় ভুলের ফাঁদে পা দিয়েছে। সেক্যুলারের ছদ্মাবরণে একটি ইসলাম বিদ্বেষী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলের রক্ষক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের করুণা ভিক্ষার প্রচেষ্টা কোনো ইসলামী দলের আদর্শের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে পারে না। এই পদক্ষেপ নিয়ে জামায়াতে ইসলামী প্রকৃতপক্ষে সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদ বিরোধী বাংলাদেশের স্বাধীনতাপ্রিয়, প্রকৃত ইসলামপন্থী জনগণের মান-মর্যাদার হানি ঘটিয়েছে। আমার মন্তব্যে দলটির নেতা-কর্মী, সমর্থকরা আবারও আহত বোধ করলেও আমি নাচার। অকপটে সত্য কথা বলার জন্যই মইন-ফখরুদ্দীনের ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদে ২০০৭ সালে অপটু হাতে কলম তুলে নিয়েছিলাম। ক্ষমতাবানদের সঙ্গে আঁতাত না করে চলার জন্য পরিবারসহ আমাকে অনেকভাবে মূল্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। তবু, আদর্শচ্যুত হয়ে নিজের পিঠ বাঁচানোর কৌশল নিতে আমি রাজি নই।
মান-মর্যাদার প্রশ্নে এবারের বিজয়ের মাস নিয়ে খানিক আলোচনা করা যাক। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে রাজনৈতিক নেতৃত্ব দেয়ার সুবাদে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ নিজেদের বাংলাদেশের মালিক রূপে যে বিবেচনা করে থাকেন সে বিষয়টি সংসদে সরকারি দলের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী স্পষ্ট করেই বলেছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সোল এজেন্সির দাবিদারদের প্রকাশ্যে দেশের মালিকানা দাবি করার বিষয়টি সময়ের ব্যাপার ছিল মাত্র। আমি সর্বদাই বলে এসেছি, আওয়ামী লীগ একটি আপাদমস্তক ফ্যাসিবাদী দল। সাজেদা চৌধুরীর বক্তব্যের মাধ্যমে দলটি সম্পর্কে আমার এতদিনের মূল্যায়ন নতুনভাবে প্রমাণিত হয়েছে। গত সাতদিন ধরে টেলিভিশনে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এবং দলীয় বুদ্ধিজীবীকুলের কাছ থেকে নানারকম জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য শোনার সৌভাগ্য হয়েছে। তাদের বক্তব্যে একটি লক্ষণীয় মিল খুঁজে পেয়েছি। সবাই একবাক্যে বলেছেন, বিজয়ের মাসে হরতাল আহ্বান করে জামায়াতে ইসলাম রীতিমত কবিরা গোনাহ্ করে ফেলেছে। দেশের স্বঘোষিত মালিকরা তাদের জীবিত রেখেছে এতেই জামায়াতে ইসলামীর কোটির অধিক কর্মী-সমর্থকের কৃতার্থ থাকা উচিত। বিজয়ের মাসে সেই দলের হরতাল ডাকার ধৃষ্টতায় আওয়ামী মহলের সহ্যের সীমা পেরিয়ে গেছে। মিরপুরে পুলিশ প্রহরায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের বীর পুঙ্গবদের শিবির কর্মীদের গণপিটুনি দেয়ার দৃশ্য থেকেও তাদের ক্রোধের মাত্রা বেশ বোঝা গেছে। টেলিভিশনে সেদিনের দৃশ্য ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের লগি-বৈঠার তাণ্ডবের দৃশ্য স্মরণ করিয়ে দিচ্ছিল। বিএনপির গত রোববারের অবরোধের দিনেও আওয়ামী ক্যাডারদের একই ভূমিকায় দেখা গেছে। এখানে উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালে এই বিজয়ের মাসেই জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক-বাহকের দাবিদার আওয়ামী লীগ ৭২ ঘণ্টার লাগাতার হরতাল দিয়েছিল। তবে কীনা শ্রীকৃষ্ণের জন্য যেটা লীলাখেলা, আমজনতার জন্য সেটাই গুরুতর অপরাধ। জামায়াতে ইসলামীকে মোকাবেলার কৌশল পাল্টে আওয়ামী লীগ তাদের এক সময়ের তাবত্ বি-টিমকে এবার মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১৯৭৫ সালের ফ্যাসিস্ট বাকশালের সঙ্গী-সাথীরা সবাই অবশেষে ঘোমটা খুলে একজোট হচ্ছেন। এদেরকে লক্ষ্য করেই বিশিষ্ট সমাজচিন্তক ও বাম রাজনীতির তাত্ত্বিক বদরুদ্দিন উমর বাকশালের গর্ভে জন্ম নেয়ার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন। জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি নিয়ে বাকশালের সব প্রেতাত্মা আগামী ১৮ তারিখে হরতালের ডাক দিয়েছে। যাই হোক, ১৬ কোটি মানুষের মাতৃভূমির স্বঘোষিত মালিক-মোক্তাররা বিজয়ের মাসে দেশবাসীর জন্য কী কী প্রকার উপহারের বন্দোবস্ত রেখেছেন জাতির মান-মর্যাদাবিষয়ক আলোচনায় তার দিকে খানিক দৃষ্টিপাত করি।
এ মাসের ৫ তারিখে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ২০১২ সালের বিশ্ব দুর্নীতির ধারণা সূচক প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের গত এক বছরে দুর্নীতির ভয়াবহ বিস্তারের ফলে প্রত্যাশিতভাবেই আমাদের অবস্থানের ২৪ ধাপ অবনমন ঘটেছে। এ ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ায় আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছি। আফগানিস্তানসহ এ অঞ্চলের সাতটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়া কেবল পাকিস্তানের ৫ ধাপ অবনতি হয়েছে। শুধু তাই নয়। দুর্নীতির হিসাব কষার যে স্কোর পদ্ধতি রয়েছে তাতেও আমরা গত বছরের তুলনায় ১ নম্বর কম পেয়েছি। পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় একমাত্র দখলদার ন্যাটো সেনাবাহিনী কবলিত আফগানিস্তান ছাড়া আর কোনো দেশেরই স্কোর অন্তত কমেনি। এ বছর ১০০ নম্বরের মধ্যে আমরা পেয়েছি সাকুল্যে ২৬। কথিত সৃজনশীল পরীক্ষা পদ্ধতির কল্যাণে দেশে গোল্ডেন জিপিএ এবং জিপিএ-৫ এর ছড়াছড়ি চললেও দুর্নীতির পরীক্ষায় আমাদের অবস্থা ‘এফ’ অর্থাত্ ফেলের চেয়েও খারাপ। দুর্নীতিতে দক্ষিণ এশিয়ায় চ্যাম্পিয়নশিপ করায়ত্ত করার পর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের তকমা পুনরুদ্ধার করতেও আর বোধহয় খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন হবে না। এই অপমানের মনোবেদনা কমানোর ব্যর্থ চেষ্টায় একটা হালকা গল্প বলি। যেসব পাঠক গল্পটি জানেন নিজ গুণে লেখককে ক্ষমা করবেন। বার্ষিক পরীক্ষায় ফল প্রকাশের দিনে ছেলে কাঁদতে কাঁদতে বাসায় ফিরেছে। পিতা অবস্থা বুঝতে পেরে গম্ভীর মুখে বললেন, ‘কী ফেল করেছো তো?’ ছেলের কান্না আরও বেড়ে গেল। কোনোক্রমে জবাব দিল, ‘ফেল করলে তো ভালোই ছিল, আমাকে আরও এক ক্লাস নিচে নামিয়ে দিয়েছে।’ আমাদের অবস্থাও ওই ফেল করা ছেলের মতোই। সর্বব্যাপী অবক্ষয়ে জাতি হিসেবে আর কত নিচে নামতে হবে তারই হদিস করতে পারছি না। দুর্নীতির আলোচনায় ফিরে আসি।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক বিশ্বব্যাপী দুর্নীতি সূচক প্রকাশিত হওয়ার দিনটিতে পদ্মাসেতু প্রকল্পে দুর্নীতি তদন্তে বিশ্বব্যাংক কর্তৃক গঠিত বিশেষজ্ঞ দল ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। মন্ত্রী পর্যায়ের প্রমাণিত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের নিয়ে দুদকের সঙ্গে মতান্তর ঘটায় সে রাতেই তারা অত্যন্ত রুষ্ট হয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে গেছেন। দুদক কর্তৃক নিয়োজিত অনুসন্ধান টিম সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন এবং প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় নিক্সন চৌধুরীসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন কমিশনে জমা দিলেও উপরের চাপে দুদক চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয়কে বাদ দিয়ে মামলা করার প্রস্তাব করেন। সঙ্গত কারণেই উপর মহলের দুর্নীতিকে উত্সাহ প্রদানকারী এই অন্যায় প্রস্তাবে বিশ্বব্যাংক সম্মত হয়নি। আলোচনা ভেঙে যাওয়ার পর দুদক কার্যালয় ত্যাগের আগে বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সাবেক চিফ প্রসিকিউটর লুই গাব্রিয়েল মোরেনো ওকাম্পো দৃশ্যত বিরক্তির সঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, আর কিছু বলার নেই, আমরা বিমানবন্দরে যাচ্ছি। আর স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আজ্ঞাবহ দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান মন্তব্য করেন, ‘মামলা বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী হবে, অনুসন্ধান কমিটি যে প্রতিবেদন দিয়েছে সেটা পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। এতে কিছুদিন সময় লাগলে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে না।’ এই ঘটনায় মহাভারত অশুদ্ধ না হলেও দক্ষিণের মানুষের অনেক স্বপ্নের পদ্মা সেতু প্রকল্পের কফিনে শেষ পেরেক যে মারা হয়ে গেল এই সহজ কথাটি মেরুদণ্ডহীন, দলবাজ আমলাটিকে কে বোঝাবে? তাছাড়া মামলা দায়েরের মাধ্যমে জাতির ললাটে দুর্নীতিবাজের সিল খানিকটা হলেও মোছার একটা সুযোগ হাতছাড়া করার দায় সরকারের শীর্ষ নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশনকেও গ্রহণ করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে ঢাকায় নিযুক্ত বিশ্বব্যাংক প্রধান এক বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছেন যে, দুর্নীতির পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্ত ব্যতিরেকে তারা পদ্মা সেতুতে আর অর্থায়ন করবেন না। অর্থাত্ দশ মণ ঘিও পুড়বে না, রাধাও নাচবে না। দফতরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তর প্রমাণিত দুর্নীতি প্রসঙ্গে গোলাম রহমান কিছুদিন আগে ঔদ্ধত্যের সঙ্গে মন্তব্য করেছিলেন, পিওন-ড্রাইভারের সাক্ষীতে তো আর মামলা হয় না। মনে প্রশ্ন জাগছে, ক্ষমতার পালাবদল সাপেক্ষে দুদক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে দুর্নীতিতে সহায়তা প্রদান ও দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি করার অভিযোগে মামলা হলে, তার সাক্ষী কারা হবেন? মোদ্দা কথা, শেখ হাসিনা এবারের বিজয়ের মাসকে দুর্নীতির মাসে পরিণত করেছেন।
বাঙালিরা স্বভাবগতভাবেই আবেগপ্রবণ জাতি। প্রতি বছর বিজয়ের মাস এলে আমাদের সেই আবেগ বাঁধভাঙা জোয়ারের মতো সব পরিমিতিবোধকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। ভাষা আন্দোলনের মাস এবং স্বাধীনতার মাসেও যে কোনো বিদেশি পর্যবেক্ষক বাংলাদেশে এলে একই চিত্র দেখতে পাবেন। আর দল হিসাবে আওয়ামী লীগ তো দেশের মালিকানা দাবি করার পাশাপাশি ফেব্রুয়ারি, মার্চ, আগস্ট এবং ডিসেম্বর এই চার মাস রীতিমত দখল করে বসে আছে। সম্ভব হলে আওয়ামী পন্থীরা চার মাসে সব ভিন্ন মতাবলম্বীর জন্য বাংলাদেশে অবস্থান নিষিদ্ধ করে দিত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সোল এজেন্সির দাবিদার সেই দল এবারের বিজয়ের মাসেই দেশের প্রতিটি নাগরিকের মান-মর্যাদা মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে। দুর্নীতি সূচকের ভয়াবহ অবনতি ঘটার সংবাদের পাশাপাশি পদ্মা সেতু ডোবানো হয়েছে এই বিজয়ের মাসেই। সুশাসন শিকেয় তুলে কেবল মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের গল্প ফেরি করে দেশ পরিচালনা করার নীতি মেয়াদের শেষ বছরে ক্ষমতাসীনদের জন্য বুমেরাং হয়ে দেখা দিয়েছে। অবশ্য ষড়যন্ত্র-তত্ত্ব প্রিয় প্রধানমন্ত্রী এখানেও ষড়যন্ত্র আবিষ্কার করে ফেলতে পারেন। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো শেখ হাসিনার যে কোনো বক্তব্য তা যতই অযৌক্তিক হোক না কেন সমস্বরে তার প্রচারণায় নেমে যাওয়া। আমি একেবারেই অবাক হব না যদি আমাদের অতিকথন প্রিয় প্রধানমন্ত্রী ডিসেম্বর মাসে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন প্রকাশ এবং বিশ্বব্যাংকের বিশেষজ্ঞ দলের পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি তদন্তে ঢাকা আগমনের সঙ্গে স্বাধীনতা বিরোধিতা এবং যুদ্ধাপরাধের বিচার বানচালের প্রচেষ্টার মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে পান।
লন্ডনের প্রভাবশালী সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘দি ইকোনমিস্ট’ তথাকথিত ‘আন্তর্জাতিক’ ট্রাইব্যুনালের একজন বিচারপতির টেলিসংলাপের দলিল-দস্তাবেজ জেনে যাওয়ার পর এমনিতেই বাংলাদেশের সামগ্রিক বিচার ব্যবস্থাই বিশ্ব জনমতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছে। এখানে উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী পুত্রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের সংবাদ এবং এদেশের বিচার বিভাগের সার্বিক অবক্ষয়ের কাহিনী প্রকাশ করেই আমার দেশ সরকারের রোষানলে পতিত হয়েছিল। পত্রিকার একজন সম্পাদক ও কলামিস্ট হিসেবে সেই ঘটনার ৩ বছর পর মাথা উঁচু করে দাবি করতে পারি যে আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত সব সংবাদ এবং আমার প্রতিটি কলামের বস্তুনিষ্ঠতা আজ প্রমাণিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্রোধে অন্ধ হয়ে আদালত ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে আমাদের কন্ঠরোধের যাবতীয় চেষ্টা গ্রহণের পরিবর্তে সেই সময় সততা ও সুশাসনের পথে ফিরে এলে আজ তাকে হয়তো এই বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হতো না। বাংলাদেশের মান-মর্যাদাও অক্ষুণ্ন থাকত। সর্বক্ষণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে যারা মুখে ফেনা তুলে ফেলেন, তাদের উদ্দেশ্য করে বলতে চাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অর্থ কোনো ব্যক্তি অথবা দলের স্তাবকে পরিণত হয়ে তাদের পূজা করা নয়। দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন প্রতিষ্ঠা, দল-মত জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সব নাগরিকের মানবাধিকার নিশ্চিতকরণ, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাষ্ট্র পরিচালনা এবং দেশের সম্পদ সাধারণ জনগোষ্ঠীর মাঝে সুষমভাবে বণ্টন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার মাধ্যমেই কেবল মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনার বাস্তবায়ন সম্ভব। বলদর্পী, ক্ষমতান্ধ, দুর্নীতিপরায়ণ মহাজোট সরকার গত ৪ বছরে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের মাধ্যমে বাংলাদেশের ভিত্তিমূল দুর্বল করে ফেলেছে। এদের কাছ থেকে পরিত্রাণ ভিন্ন এদেশে একবিংশ শতকের উপযোগী একটি আধুনিক, গণমুখী রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব নয়। ফ্যাসিস্ট শাসকদের হাত থেকে পরিত্রাণের উপায় দেশের ঐক্যবদ্ধ জনগণকেই খুঁজে নিতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অথবা ভারতের মুখাপেক্ষী হয়ে আমরা প্রকৃত সার্বভৌম, জনকল্যাণমুখী রাষ্ট্র নির্মাণ করতে পারব না। আসুন, নিজেদের ঐক্যবদ্ধ করে দুর্নীতিবাজ, অত্যাচারী শাসকগোষ্ঠীকে পরাজিত করার সংগ্রামে এই মহান বিজয়ের মাসে সংকল্পবদ্ধ হই। তাহলেই কেবল আমাদের হারিয়ে যাওয়া মান-মর্যাদা পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা প্রদর্শনে সক্ষম হব।
পুনশ্চ : বিজয়ের মাসে আমাদের লড়াকু ক্রিকেটাররা দেশের মান-মর্যাদা কেবল বৃদ্ধিই করেনি, চার বছরের দুঃশাসনে ম্রিয়মাণ জাতিকে খানিকক্ষণের জন্য হলেও ঐক্যবদ্ধভাবে আনন্দের জোয়ারে অবগাহন করার সুযোগ করে দিয়েছে। তাদের আমার প্রাণঢালা অভিনন্দন।
ই-মেইল : admahmudrahman@gmail.com
 
.

Pakistan Affairs Latest Posts

Back
Top Bottom