What's new

BNP-Jamaat unleash targeted violence on Hindus and Christians in Bangladesh

টুডে ব্লগঃ দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের পোস্টমর্টেম: ধর্মীয় নয়, অধিকাংশ ঘটনার সাথে জড়িত আওয়ামী লীগ

Awami League were found to be involved with most of the atrocities on minorities

দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের পোস্টমর্টেম: ধর্মীয় নয়, অধিকাংশ ঘটনার সাথে জড়িত আওয়ামী লীগ

লিখেছেন লিখেছেন হাসান ০৫ মার্চ, ২০১৩, ০৯:৩৮:৫৭ রাত

1362491897.jpg


শেরপুরে শহীদ মিনার ভাঙচুরের সময় জনতার হাতে যুবলীগ নেতা আটক

সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টি যেভাবে প্রচার করা তার মাধ্যমে সত্যিকার নির্যাতনকারীরা আড়ালে চলে যাচ্ছে এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি অটুট রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে।

রাজধানীর সূত্রাপুরে দুই আওয়ামী লীগ নেতার নেতৃত্বে প্রায় অর্ধশতাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী দুইশ’ বছরের প্রাচীন একটি মন্দিরে হামলা চালিয়ে ৫টি প্রতিমা ভেঙে চুরমার করছে

লালমনিরহাটের সদর উপজেলার ভোলার চওড়া নামক গ্রামে গভীর রাতে ক্ষমতাসীনরা সংখ্যালঘু সমপ্রদায়ের (হিন্দুর ) মহাদেব ও কালীমায়ের মন্দিরে প্রবেশ করে প্রায় ভরি খানেক স্বর্ণালঙ্কার লুট করা ছাড়াও ভেঙ্গে দিয়েছে মহাদেব ঠাকুরের মূর্তি

শেরপুরে মন্দির ভাংচুর করে জায়গা দখল

সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টি যেভাবে প্রচার করা তার মাধ্যমে সত্যিকার নির্যাতনকারীরা আড়ালে চলে যাচ্ছে এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি অটুট রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে।

বাংলাদেশে অন্যান্য ধর্মালম্বীদের উপর অত্যাচার যা হয়, তার সাথে কোন ধর্মীয় কারন বা ধার্মিক কেউ জড়িত থাকার ঘটনাও আমার জানা নেই। অধিকাংশই হয়ে থাকে বিভিন্ন সময়ের ক্ষমতাসীনদের দ্বারা। আমার এলাকায় হিন্দু কিংবা অসহায় মুসলমানদের যেসব সম্পত্তি দখলের ঘটনা ঘটেছে তার সবগুলোই করেছে ক্ষমতাসীনরা।

যদিও বিশেষ দেশের সাথে বিশেষ সম্পর্কের কারনে বিশেষ সম্প্রদায়ের সংশ্লিষ্ট লোকেরা দেশের শীর্ষ পর্যায়ের পদে আসীন হয়ে অন্যরকম সুবিধা পাচ্ছে। তবে বিশেষ সম্প্রদায়ের সাধারন লোকেরা ক্ষমতাসীনদের হাতে বরাবরের মতই নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। দেশে চলছে বাবুদের শাসন Click this link

দেখুন সারা দেশের মত বাংলাদেশ ব্যাংকও চালাচ্ছেন এরা কারা? তাদের দাপটে গভর্ণর বেচারা বড়ই অসহায়!

বিদেশী ম্যানেজারদের কাছে বন্দী পোশাকশিল্প: অবৈধভাবে বসবাসকারী ৬ লাখ ভারতীয়: সারা দেশে দাবড়ে বেড়াচ্ছেন ৪০০০০

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী পরিচয় দেয়া একশ্রেণীর সুবিধাভোগীর হাতে দেশজুড়ে হামলা ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠীর মানুষ। সংখ্যালঘুদের মধ্যে যারা দুর্বল তাদের জায়গা-জমি, ঘরবাড়ি, মন্দির, শ্মশান, সমাধিক্ষেত্র থেকে শুরু করে ভিটেমাটি, সহায়-সম্বল দখল ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে ওইসব সুবিধাভোগীর বিরুদ্ধে। অথচ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছিল, ‘ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করা হবে; কিন্তু বাস্তব ঘটনা পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে, এখন ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুরা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হাতেই বেশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। গত বছরের ৬ জানুয়ারি মহাজোট সরকার গঠনের কয়েকদিন পর থেকেই দখল প্রক্রিয়া ও নির্যাতন শুরু হয়ে এখনও অব্যাহত রয়েছে। মারধর, শ্লীলতাহানির পাশাপাশি আগুনে পুড়িয়ে, কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে বেশ কয়েকটি। এসব বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে নালিশ জানিয়েও কোনো প্রতিকার মিলছে না। কোনো কোনো এলাকায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা নির্যাতিতদের সহযোগিতার বদলে দলীয় দখলবাজ সন্ত্রাসীদের পক্ষ নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। হামলা ও নির্যাতনের তালিকায় কয়েকটি স্থানে পুলিশের নামও রয়েছে।

ঝিনাইদহে আবারো সংখ্যালঘু নির্যাতন ...

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরকারি দলের নেতাকর্মীদের হাতে নির্যাতিত হিন্দু ও জাতিগত সংখ্যালঘুরা ঢাকায় এসে বেশ কয়েকটি সংবাদ সম্মেলন করেও এসব অভিযোগ জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনগুলোর একটির ব্যানারে লেখা ছিল, ‘নৌকার কাণ্ডারী ও মাঝিমাল্লা কর্তৃক হামলা, মামলা, নির্যাতন ও বাপ-দাদার ভিটে-ভূমি, সহায়-সম্পত্তি জবরদখলের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন।’ এসব সংবাদ সম্মেলনে নির্যাতিত হিন্দুরা স্পষ্ট করে বলেছেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাই তাদের জমি, বাড়ি দখলের জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। এর মধ্যে অনেককে নির্যাতনের মাধ্যমে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে।

সরকারদলীয় কয়েকজন সংসদ সদস্যকেও তারা অভিযোগের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। তারা আরও বলেন, বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলেও সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছিল। তবে এ সময় তাদের দেশ বা এলাকা ছেড়ে যেতে হয়নি, এখন পালিয়ে থাকতে হচ্ছে বা দেশান্তরী হতে হচ্ছে। তারা আরও বলেন, বর্তমান সরকার ২০০১ সালের নির্বাচনের পর সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচারের জন্য কমিশন গঠন করেছে। অথচ তারই বিপরীতে সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের হাতে জমিজমা, ভিটেমাটি, সহায়-সম্বল হারিয়ে সংখ্যালঘুদের দেশান্তরী কিংবা উদ্বাস্তু হতে হচ্ছে। মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের হিসাবে, ২০০৯ সালে দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনে ৫৬৯ জন এবং ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠীর ৬১ জন আহত হয়েছে। চলতি বছরের ৯ মাসেও নির্যাতনের শতাধিক ঘটনা ঘটেছে।

পর্যবেক্ষক মহল বলে, দেশ স্বাধীনের পর রক্ষী বাহিনী ও বাকশাল গঠনের পর সবচেয়ে বেশিসংখ্যক হিন্দু পরিবার দেশ ত্যাগ করেছিল বলে অভিযোগ আছে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেও বিপুলসংখ্যক হিন্দু পরিবার নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়। তারই ধারাবাহিকতায় এবারও চলছে নির্যাতন-নিপীড়ন। এসবের মূল উদ্দেশ্য তাদের ভিটেমাটি ও জমিজমা দখলে নেয়া। মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের সেক্রেটারি আদিলুর রহমান খান আমার দেশকে বলেন, রাজনৈতিক ইতিহাস বলছে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুরা বেশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এদের সিংহভাগই আওয়ামী লীগ সমর্থক ও নৌকা প্রতীকের ভোটার। এ কারণে মারলে-কাটলেও তারা কোনো প্রতিউত্তর করতে পারেন না।

বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নেতা সিআর দত্ত বীরউত্তম আমার দেশকে বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠীর মানুষ নানাভাবে হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে এ কথা সত্য। তবে তারা কেউ ব্যক্তিগতভাবে কাছে গিয়ে প্রতিকার চায়নি। তিনি এর আগেও সাংবাদিকদের বলেছিলেন, পত্রিকাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে তিনি নির্যাতনের বেশ কিছু খবর জেনেছেন। আওয়ামী লীগ নেতাদের তারা বিষয়গুলো জানিয়ে প্রতিকার চেয়েছেন। তিনি বলেন, সবার বোঝা উচিত সংখ্যালঘু হিসেবে হিন্দুদের ওপর যে হামলা-নির্যাতন হচ্ছে তা দেশের মানুষ পছন্দ করে না। এগুলো যারাই করুক তারা পার পাবে না। ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের স্বার্থরক্ষার্থে দেশের গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান সিআর দত্ত।

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাসগুপ্ত আমার দেশকে বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার কিছুদিন পর থেকে সংখ্যালঘুদের জমি দখল, ভিটেমাটি থেকে তাদের উচ্ছেদ, মন্দির দখল, সমাধি দখল, মন্দিরে তাদের যেতে বাধা, মারধর ও খুনের ঘটনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেক জায়গায় সংখ্যালঘু নারীকে অপহরণ ও ধর্ষণ করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি, এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িতরা বর্তমান সরকারি দলের পরিচয় দিচ্ছে।

পিরোজপুর, নাটোর, সীতাকুণ্ড ও গফরগাঁওয়ে সরকারি দলের সংসদ সদস্যরাও প্রত্যক্ষভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, তারা কয়েক দফায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত্ করে এর প্রতিকার চেয়েছেন। গত বছর ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করে তারা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী পরিচয়দানকারীদের হাতে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টি জানিয়েছিলেন। পরিষদের নেতারা বলেছিলেন, দুষ্কৃতকারীরা সরকারি দলের লোক বলে পরিচয় দিচ্ছে। ফলে তারা একের পর এক অপরাধ করলেও দলের লোক বলে থানা পুলিশও মামলা নিতে চায় না। ওই সময় আশরাফুল ইসলাম তাদের বলেছেন, তিনিও বিষয়টি কমবেশি জানেন। সরকারি দলবদল না হলে দিনবদল হবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেছিলেন। পরিষদের পক্ষ থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আদলে প্রধানমন্ত্রীর অধীন একটি সেল ও প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলে একটি সংখ্যালঘু সেল করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, প্রস্তাব ইতিবাচক। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। রানা দাসগুপ্ত আরও বলেন, গত ২৮ আগস্ট জন্মাষ্টমী উপলক্ষে পরিষদের নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে সংখ্যালঘুদের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরার পাশাপাশি সরকারি দলের পরিচয়দানকারীদের হাতে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টি তাকে অবগত করেন। তারা প্রধানমন্ত্রীকে তার অধীনে একটি সংখ্যালঘু সেল গঠনের প্রস্তাব দেন। প্রধানমন্ত্রী সে বিষয়ে তাদের আশ্বস্ত করেন।

আমার দেশ-এর অনুসন্ধানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের অসংখ্য চিত্র ওঠে এসেছে। তার মধ্যে প্রায় ৫০টি ঘটনা চাঞ্চল্যকর।

গত ১৯ সেপ্টেম্বর পিরোজপুরের নাজিরপুরে রুহিতলাবুনিয়া গ্রামে মন্দিরের জমি দখল করার জন্য আওয়ামী লীগ নেতা আলাউদ্দিন মাঝি ও অপর আওয়ামী লীগ নেতা মনোরঞ্জন গোলদার গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হয় ২৫ জন। মনোরঞ্জনের দাবি, ৪০ বছর ধরে শ্রী শ্রী গোবিন্দ মন্দিরের কমিটির নিয়ন্ত্রিত জমিটি দখলের জন্য আলাউদ্দিন মাঝির লোকজন হামলা করে প্রতিমাসহ মন্দিরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে।

গত ১১ আগস্ট রাজধানীর সূত্রাপুর ৭৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা হাজী ইসলাম ও সূত্রাপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেনের নেতৃত্বে শতাধিক দলীয় লোক দক্ষিণ মৈশুণ্ডির ২২২, লালমোহন সাহা স্ট্রিটে শ্রী শ্রী রাধাকান্ত ঠাকুরানী লক্ষ্মী জনার্ধনচক্র বিওবিগ্রহ মন্দিরে হামলা করে। তাদের হামলায় ৩৫টি পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ওই হামলার পর এখনও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ৩৫টি হিন্দু পরিবার।

গত ৭ আগস্ট টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার চানতারা গ্রামে সরকারি দল আশ্রিত একদল দুর্বৃত্ত আহমদিয়া জামাতের উপাসনালয় নির্মাণের সময় হামলা চালায়। দুর্বৃত্তরা আহমদিয়াদের বেশ কয়েকটি বাড়ি এবং দুটি পোলট্রি ফার্ম ভাংচুর করে। হামলায় ১০ জন আহত হন। এর আগে গত ১৭ জুন একই জায়গায় আহমদিয়া জামাতের নির্মাণাধীন উপাসনালয়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয়েছিল।

গত ১২ জুলাই নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার নাকইলে ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠীর এক পল্লীতে আওয়ামী লীগ কর্মী শরীফুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল ভূমিদস্যু জমি দখলের জন্য হামলা চালায়। এ সময় ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠীর অর্ধশতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। হামলাকারীরা সংখ্যালঘু নারী-পুরুষদের মারধর করে।

গত ২৫ মে রাজশাহীর চারঘাটে জমির সীমানা নিয়ে বিরোধে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী আজহার উদ্দিন তার দলবল নিয়ে অনিলচন্দ্র মণ্ডলের বাড়িতে হামলা চালায়। দুর্বৃত্তরা অনিলচন্দ্র, তার স্ত্রী বাসন্তী রানী, ছেলে শ্যামলচন্দ্র মণ্ডল, তার ভাই অভিচরণ মণ্ডল, অভিচরণ মণ্ডলের স্ত্রী শান্তা রানীকে কুপিয়ে জখম করে।

১৭ মে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার ব্রাহ্মণবাজারের সিঙ্গরপুর পানপুঞ্জিতে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সমাধি দখল করে ক্রুস গুঁড়িয়ে দেয় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মতিন ও তার সহযোগীরা। হামলাকারীরা প্রয়াত এক মন্ত্রীর সমাধি গুঁড়িয়ে দেয় এবং আরও ১০টি সমাধির ক্রুস গুঁড়িয়ে দিয়ে সমাধি দখল করে নেয়।

গত ১৪ মে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জের উজয়মারিতে ২২টি সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখল করে নেন আওয়ামী লীগের এক কর্মী। ওই জমিতে ইটভাটা তৈরির কাজ শুরু করেন তিনি। দখলে বাধা দেয়ায় রমেশ মণ্ডলসহ তিনজন আহত হন।

গত ২০ এপ্রিল ঢাকার কেরানীগঞ্জের আতাশুর গ্রামে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মী পরিচয় দিয়ে সালাউদ্দিন, সালাম, মোস্তফা, সাজু, সাজ্জাদ, পিন্টুর নেতৃত্বে একটি দল জমি দখল করতে গেলে বাধা দেয়ায় অজিত করাতি ওরফে খিরমহনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় আহত হয়েছিল ১০ জন হিন্দু।

৫ মার্চ নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামে হিন্দু তিন পরিবারের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয় স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা। কয়েক বছর আগে আওয়ামী লীগ কর্মী আবদুর রাজ্জাকের ছেলে রেজাউলসহ কয়েকজন স্থানীয় হিন্দু নবকুমারের ছেলে প্রদীপ কুমারকে রামদা দিয়ে কোপায়। এতে রেজাউলসহ তিনজনের নামে মামলা হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ওরা মামলাটি তুলে নিতে চাপ দেয়। মামলা না তোলায় সন্ত্রাসীরা নবকুমারের জমি থেকে পাট কেটে নেয়। নবকুমার আরেকটি মামলা করলে তার ভাই শৈলেন্দ্রনাথকে কয়েক দফা মারধর ও বাড়ি লুট করা হয়। ফের ১৩ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করা হয়। সন্ত্রাসীরা বাড়িতে গিয়ে নবকুমারকে মামলা ওঠানোর জন্য সাদা স্ট্যাম্পে সই দিতে বলে। রাজি না হওয়ায় সন্ত্রাসীরা তার পরিবারের সদস্যদের সামনে বাবা-ছেলে ও মা সুধারানীকে বেদম মারধর করে। বাবা ও ছেলেকে টেনেহিঁচড়ে আবদুর রাজ্জাকের বাড়িসংলগ্ন একটি শিমুল গাছে বেঁধে মারধর করা হয়। পরে গলায় রামদা ধরে তাদের কাছ থেকে মামলা তুলে নিতে কাগজে সইও নেয়া হয়। পরে তাদের বাড়িঘরে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয়।

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাখালীতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালাচ্ছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। আমড়াগাছিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মুজিবর রহমান ছায়েদের লোকজন ১ এপ্রিল হিন্দু ধর্মাবলম্বী শংকরের বাড়িতে হামলা করে তার ভাই সুভাষকে জখম করে। ছায়েদের এক ছেলে এএসপি ও ছোট ছেলে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক। ফলে হিন্দুরা প্রশাসনের তেমন কোনো সমর্থন পায়নি। এর কয়েকদিন পরই হিন্দু ব্যবসায়ী বলরাম বেপারির দোকান পুড়িয়ে দেয়া হয়। বলরামের একটি বলদ গরু ধরে নিয়ে জবাই করে খেয়ে ফেলে আওয়ামী লীগ কর্মীরা। একই এলাকার অনিলচন্দ্র হালদারের ছেলে শ্যামলচন্দ্র হালদার ও সুধীর রঞ্জন হালদারের ছেলে সুশান্ত হালদারের প্রায় ২৫ বিঘা জমি দখলের চেষ্টায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের অপর একটি গ্রুপ বেশ কয়েক দফা ওই বাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালায়। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আমড়াগাছিয়া ইউপি মেম্বার বিকাশকেও নির্বাচনে প্রার্থী না হতে হুমকি দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৯ এপ্রিল ওই এলাকার তিন শতাধিক হিন্দু গণস্বাক্ষর দিয়ে ঘটনার প্রতিবাদ জানায়। তারা ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলন ডেকে এসব ঘটনার প্রতিকার চায়। এসব ঘটনার জন্য তারা স্থানীয় এমপিকে দায়ী করে।

সংখ্যালঘু নির্যাতনের ন্যক্কারজনক কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে। স্থানীয় এমপির ছেলে বন বিভাগের গাছ কেটে জায়গা দখলের পর ওই জমিসংলগ্ন জেলেপাড়ার ৭০/৮০টি হিন্দু পরিবারের চলার পথ বন্ধ করে দেন। পরিবারগুলোর অভিযোগ, তাদের উচ্ছেদের জন্য এসব করা হয়েছে। প্রতিকারের দাবিতে তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়ক অবরোধ করেন। প্রশাসন দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মামলা নেয়ার অঙ্গীকার করলে অবরোধ তুলে নেয়া হয়। ওই মামলার তদন্ত এখনও শেষ করতে পারেনি পুলিশ। ফলে পরিবারগুলো এখনও এ নিয়ে চরম উত্কণ্ঠায় রয়েছে।

গত ৫ এপ্রিল সীতাকুণ্ডে সংখ্যালঘুদের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ, নির্যাতন ও হামলা-মামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করায় সংখ্যালঘু নির্যাতন প্রতিরোধ ও কল্যাণ কমিটির সভাপতি আমিরাবাদ মায়াকুঞ্জের বাসিন্দা অমরেন্দ্র মল্লিককে পিটিয়ে এলাকাছাড়া করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা। অমরেন্দ্রের বাড়িতে হামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে ও তাকে উলঙ্গ করে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে তাদের প্রকাশ্যে পেটাতে পেটাতে পৌর ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। ভবনের একটি কক্ষে আটকে রেখে পৌর মেয়র শফির নেতৃত্বে বাবা ও ছেলেকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করেন অমরেন্দ্র। ওই সময় অমরেন্দ্রের বিবাহিত মেয়ে বাবা ও ভাইয়ের খোঁজে কাঁদতে কাঁদতে পৌর ভবনে এলে তাকে পাশের একটি কক্ষে নিয়ে লাঞ্ছিত করা হয়। একইদিন বাবা-ছেলের নামে চুরি ও মারধরের মামলা দিয়ে আদালতে চালান দেয়া হয়। এসব ঘটনার পর সীতাকুণ্ডের স্থানীয় এমপি আবুল কাশেম মাস্টারের ভাগ্নের হাতে শতাধিক সংখ্যালঘু জেলে পরিবার অবরুদ্ধ হওয়ার প্রতিকার চাইতে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনের ব্যানারে অমরেন্দ্র লেখেন, চট্টগ্রামে নৌকার কাণ্ডারী ও মাঝিমাল্লা কর্তৃক হামলা-মামলা, নির্যাতন ও বাপ-দাদার ভিটেভূমি, সহায়-সম্পত্তি জবরদখলের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন।’ অমরেন্দ্র আমার দেশ কার্যালয়ে এসে তার ওপর নির্যাতনের করুণ কাহিনীর বর্ণনা দেন।

গত ২৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ আদিবাসী অধিকার আন্দোলনের সভাপতি সঞ্জীব দ্রং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলন করে ২২ জানুয়ারি তার ওপর হামলার অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, সৌভাগ্যক্রমে তিনি মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছেন।

গত বছর ২২ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়ার তাজপুর গ্রামে দেবোত্তর সম্পত্তি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে বাড়িতে ও খড়ের পালায় দুর্বৃত্তরা অগ্নিসংযোগ করে। এতে রাজবিহারী ঘোষ নামের এক বৃদ্ধ দগ্ধ হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। ঐক্য পরিষদের নেতা অ্যাডভোকেট রানা দাসগুপ্ত বলেন, সরেজমিন অনুসন্ধানে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ আসে।

একই বছরের ২০ ডিসেম্বর সাতক্ষীরার দেবহাটার ঢেবুখালিতে ৩০০ বিঘার একটি ঘের দখল করে নেয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সহযোগিতায় একটি বাহিনী।

গত বছরের ২৫ জুলাই নরসিংদীর পলাশের চরসিন্দুর গ্রামে শ্মশানের জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘুদের চারটি বাড়িঘর ও মূর্তি ভাংচুর এবং তাদের বাড়িতে লুটপাট করা হয়।

১১ জুলাই ঢাকার দোহারের নারিশা পূর্বচর গ্রামে সংখ্যালঘু নৃপেন মালাকারের জমিতে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে তা দখল করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা।

২২ ফেব্রুয়ারি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় উপজেলার বড়মাছুয়া ইউনিয়নের খেজুরবাড়িয়া গ্রামের সিকদার বাড়িসহ চার সংখ্যালঘু পরিবারের পানের বরজ ও খড়ের গাদা পুড়িয়ে দেয়া হয়।

গত বছরের ২২ অক্টোবর আওয়ামী লীগের কর্মী পরিচয় দেয়া একদল সন্ত্রাসী বন্দুক উঁচিয়ে কাফরুল থানার পুলিশের সামনেই ক্যাথলিক খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারী রীতা গমেজের বাড়ির একাংশ দখল করে নেয়। রীতার পরিবার থানায় অভিযোগ করতে গেলে তা নেয়া হয়নি। রীতা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে জানান, তিনিও আওয়ামী লীগের কর্মী। গত নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন। অথচ এখন আওয়ামী লীগের পরিচিত লোকজন পুলিশ-প্রশাসনের সহায়তায় পৈতৃক ভিটেমাটি থেকে তাদের উচ্ছেদ করছে। রীতা অভিযোগ করেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় উপস্থিত আওয়ামী লীগ কর্মীরা তার ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে এবং হুমকি দিয়ে বলে তারা রীতার পরিবারকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করেই ছাড়বেন। ওই সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার দলের লোকজনকে নিবৃত্ত না করে উল্টো বলেন, বাংলাদেশে জমিজিরাত দখলের ঘটনা ঘটছে, এগুলো স্বাভাবিক অপরাধ। এগুলোকে সংখ্যালঘু নির্যাতনের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে কেন? আপনারা তো বিএনপি-জামায়াত সরকারের তুলনায় অনেক ভালো রয়েছেন। আর কী চান? ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৩০ অক্টোবর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের উদাসীনতার অভিযোগ আনা হয় মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টে।

গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় একদল দুষ্কৃতকারী গভীর রাতে মন্দিরে ঢুকে দুর্গা প্রতিমা ভাংচুর করে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বালাশুর গ্রামে নাগমন্দিরে দুষ্কৃতকারীদের হামলায় মন্দিরের সেবায়েতসহ ৮ জন আহত হন। শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হানিফ বেপারির নেতৃত্বে দুষ্কৃতকারীরা এ হামলা চালায়।

গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর মাদারীপুরের রাজৈরের খালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সাতপাড় গ্রামে রামমোহন মণ্ডলের পূজামণ্ডপে পুলিশ এক তরুণীকে উত্ত্যক্ত করে। পূজারিরা এর প্রতিবাদ করায় মধ্যরাতে এসআই কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে পুলিশের সদস্যরা প্রতিমা ভাংচুর করে।

গত বছরের ২২ আগস্ট রাজধানীর সূত্রাপুরের ৯৫, ঋষিকেশ দাস লেনে আওয়ামী লীগ আশ্রিত সন্ত্রাসীরা এক হিন্দু পরিবারের বাড়ি দখল করতে গিয়ে ওই পরিবারের ৯ জনকে মারধর, লুটপাট ও পরে তাদের অপহরণ করে। এর আগে তাদের বাড়িটি বিক্রি করার জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়া হয়েছিল।

গত বছরের ১২ জুন নওগাঁ জেলার পোরশা উপজেলার ছাওর ইউনিয়নে বসবাসরত ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠীর মানুষের ওপর দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে তাদের বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং লুটপাট চালায়। হামলায় ২৫ জন আহত হয়। নূর হোসেন নামে এক আওয়ামী লীগ নেতা জাল দলিল করে জমি দখল করার উদ্দেশ্যে লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠীর নেতা নরেন্দ্রনাথ মুর্মু।

গত বছরের ১৪ জুন খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়ের বরাইতলি গ্রামে ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠীর ৩০০ একর জমি স্থানীয় দুর্বৃত্তরা দখল করার চেষ্টার সময় ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠীর সদস্যরা বাধা দিলে সংঘর্ষ বাধে। এতে ১৪ ব্যক্তি আহত হন।

২০০৯ সালের মে মাসে সাতক্ষীরার আবাদের হাটের ঘোষাল পরিবারের ৩৮ বিঘা জমি দখল করে নেয় স্থানীয় যুবলীগের এক ক্যাডার ও তার সহযোগীরা। পরে গ্রামের পাঁচ শতাধিক লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে ওই জমি থেকে দখলবাজদের হটিয়ে দেয়।

সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে গোবিন্দকাটি গ্রামের আওয়ামী লীগের এক নেতা দক্ষিণ শ্রীপুর ইউপির সাবেক মেম্বার স্মৃতি সরকারকে তার জমি থেকে হটিয়ে দিয়েছেন।

গত ১৯ এপ্রিল দিনাজপুর সদর উপজেলার পাড়বড়ইল গ্রামের ১১৩টি ভূমিহীন পরিবারকে উচ্ছেদ করে জোতদারকে জমি দখল করে দিয়েছে পুলিশ। এ সময় পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে ওইসব পরিবারের ঘরবাড়ি।

২০০৯ সালের ৩১ মার্চ সাতক্ষীরা দেবহাটার কালাবাড়িয়ায় মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ ঘোষের মালিকানাধীন ৩০০ বিঘার ঘের দখল করে নেয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা। ১৯৭৯ সালে সুভাষ ঘোষের বাবা ওই জমি সরকারের কাছ থেকে নিলামে কেনেন। দখলে বাধা দিলে তার স্বজনদের পিটিয়ে আহত করা হয়।

১ ৫ মার্চ সাতক্ষীরা সদর উপজেলার যুগিপোতা গ্রামের রবিন মণ্ডলের ১২ বিঘা জমির চিংড়িঘের দখল করে নিয়েছে আওয়ামী লীগ আশ্রিত তিন সন্ত্রাসী। এতে বাধা দেয়ায় রবিন মণ্ডলকে তারা মারধর করে। পরে জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার সহযোগিতায় এ ঘটনায় উল্টো রবিন মণ্ডলের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি মামলা করা হয়।

গত বছরের ২৭ মার্চ ফেনী সদর উপজেলার কাজীরবাগ বাজারে যুবলীগ ক্যাডার সুমনের নেতৃত্বে বেলাল হোসেন অপেল, মহিউদ্দিন নূরন নবী, অনিক বিশ্বাস, দেলু, মো. ইসমাইল, নিজাম উদ্দিন, মো. আজাদ ও আবদুর রহিম সশস্ত্র হামলা চালিয়ে সংখ্যালঘু হীরা বণিকের ঘরবাড়ি ভাংচুর এবং ৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে।

গত বছর ২৮ মার্চ জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভাদসা ইউনিয়নের পণ্ডিতপুরের হিন্দু ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত সরকারপাড়ার বিমলচন্দ্র সরকারের বাড়িতে সরকারি দল আশ্রিত সন্ত্রাসীরা অগ্নিসংযোগ করলে গোয়ালঘরে থাকা চারটি গরু পুড়ে মারা যায় এবং আরও তিনটি গরু অগ্নিদগ্ধ হয়।

গত বছর ৩০ মার্চ রাজধানীর সূত্রাপুরে ৫০ বছরের পুরনো একটি মন্দির ভেঙে ফেলে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা। ৩২ কাঠা সম্পত্তি রয়েছে এই মন্দিরের। ওই সম্পত্তিতে হিন্দু-মুসলমান মিলে মোট ৬৮টি পরিবার বসবাস করে। আওয়ামী লীগ সমর্থক সালেহ এবং তার দুই ছেলে দিপু ও আসাদ ১৩টি হিন্দু পরিবারকে উচ্ছেদ করে মন্দিরের সম্পত্তি দখল করে নেয়। ওই সময় শিব, কালী ও সরস্বতীর প্রতিমা ভেঙে ফেলা হয়।

একই তারিখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর এলাকার উত্তর পৈরতলা দারিয়াপুরে শহর আওয়ামী লীগ সভাপতি মুসলিম মিয়া এবং তার পরিবারের হামলার শিকার হয় জেলে পরিবারসহ কয়েকশ’ সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবার।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়িতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সমর্থক বাঙালিদের সঙ্গে ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠীর সদস্যদের সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে খাগড়াছড়ি পৌরসভার এক কর্মচারী নিহত হন। এ সময় ৬৬টি বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয় এবং প্রায় ৫০ জন আহত হন। পূর্ব বিরোধের জের ধরে গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার গঙ্গারাম ও বেতছড়ি গ্রামে ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে স্থানীয় বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় প্রায় ২০০ বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়।

গত বছরের ২২ আগস্ট রাজধানীর সূত্রাপুরের ৯৫ ঋষিকেশ দাস লেনে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা এক হিন্দু পরিবারের বাড়ি দখল করতে তাদের নয়জনকে মারধর, লুটপাট এমনকি পরে তাদের অপহরণ করে। এর আগে তাদের বাড়িটি কেনার জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া হয়েছিল। পরে দীর্ঘ আট ঘণ্টা চেষ্টার পর সূত্রাপুর থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। এ ঘটনায় বিভিন্ন মহলের চাপে আওয়ামী লীগের স্থানীয় চার নেতাকে গ্রেফতার করা হয়।

২ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দাবিতে মানববন্ধন করে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। সংখ্যালঘুরা তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।

২০ এপ্রিল কেরানীগঞ্জে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সম্পত্তি দখল করতে গিয়ে অজিত করাতি ওরফে ক্ষীরমোহনকে (৫৫) পিটিয়ে হত্যা করে। এ সময় চারটি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটও করা হয়। অজিত করাতিকে পিটিয়ে হত্যার ভিডিও ফুটেজ ক্যামেরায় ধারণ করায় পুলিশ সাংবাদিকদের লাঞ্ছিতও করে।

গত বছর ২২ ডিসেম্বর রাতে সিংড়ার তাজপুর গ্রামে দেবোত্তর সম্পত্তি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে বাড়িতে ও খড়ের পালায় দুর্বৃত্তরা অগ্নিসংযোগ করে। এতে রাজবিহারী ঘোষ নামে একজন বৃদ্ধ দগ্ধ হন। দুই দিন পর তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। ঐক্য পরিষদের নেতা অ্যাডভোকেট রানা দাসগুপ্ত অভিযোগ করেছেন, আমি ওই গ্রামে তদন্ত করতে যাই। পরে দেখি ৯০ একর জমি নিয়েই এ বিরোধের সূত্রপাত। পরিস্থিতি অনুযায়ী উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাদেরই স্থানীয় সংখ্যালঘুরা দায়ী করেছেন।

গত বছরের ২৫ জুলাই নরসিংদীর পলাশের চরসিন্দুর গ্রামে শ্মশানের জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘুদের চারটি বাড়িঘর ও মূর্তি ভাঙচুর এবং তাদের বাড়িতে লুটপাট করা হয়।

১১ জুলাই দোহারের নারিশা পূর্বচর গ্রামে সংখ্যালঘু নৃপেন মালাকারের জমিতে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দখল করা হয়।

২২ ফেব্রুয়ারি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বড়মাছুয়া ইউনিয়নের খেজুরবাড়িয়া গ্রামের সিকদারবাড়িসহ চার সংখ্যালঘু পরিবারের পানের বরজ ও খড়ের গাদায় আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

মহাজোট সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার কয়েকদিনের মাথায় বিদেশ ফেরত এক ছাত্রলীগ নেতা পুরনো সাতক্ষীরায় দেবেন্দ্র চ্যাটার্জির মালিকানাধীন জমি দখল করে নেয়।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন বলছেন, চারদলীয় জোট সরকারের আমলে রাজনৈতিক কারণে তাদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল; কিন্তু বর্তমানে এর সঙ্গে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। দিন দিন নির্যাতনের মাত্রা বেড়েই চলেছে। সংবিধান অনুযায়ী সব ধর্ম এবং জাতির মানুষের সমান আইনি সুবিধা ও নিরাপত্তা পাওয়ার কথা। মানবাধিকার সংস্থা অধিকার জানায়, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠীর মানুষের আইনসঙ্গত অধিকার সংরক্ষণ এবং তাদের ভূমি অধিকার ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। রাষ্ট্র তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে।

ক্ষমতাসীনদের হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়। তাদের জায়গাজমি দখল করে নিচ্ছে সরকারদলীয় নামধারী কিছু সন্ত্রাসী। পেট্রল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে কয়েকজনকে। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের কাছে নালিশ জানিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। আওয়ামী লীগের নেতারা তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার বদলে দলীয় দখলবাজ সন্ত্রাসীদের পক্ষ নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নির্যাতিত হিন্দুরা ঢাকায় এসে বেশ কয়েকবার সংবাদ সম্মেলন করেও অভিযোগ জানিয়েছেন। তারা স্পষ্ট করে বলেছেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা হিন্দুদের জমি, বাড়ি দখলের জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। এর মধ্যে অনেককে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। সরকারদলীয় কয়েকজন সংসদ সদস্যকেও তারা অভিযোগের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। এর মধ্যে পিরোজপুরের হিন্দুরা দলমত নির্বিশেষে গণস্বাক্ষর দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের অত্যাচারের প্রতিকারের আবেদন জানিয়েছেন। চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলন করার অপরাধে সরকারদলীয় লোকজন অমরেন্দ্র মল্লিকের পরিবারের সদস্যদের নামে চুরি ও মারপিটের মিথ্যা মামলা দেন। পরে তার বাড়িতে হানা দিয়ে সবাইকে বেদম পেটান। অমরেন্দ্র মল্লিককে স্ত্রী-পুত্র-কন্যার সামনে উলঙ্গ করে মারধর করা হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন। পরে হাজারো মানুষের সামনে দিয়ে প্রথমে পৌরসভা ভবনে নিয়ে আরেক দফা নির্যাতন করা হয়। অমরেন্দ্রের বিবাহিত কন্যাকে আটকে রেখে অপমান করা হয়। শেষে তাদের থানায় হস্তান্তর করা হয়। পুলিশ মিথ্যা মামলায় তাদের আদালতে চালান দেয়। গত চারদলীয় জোট সরকারের আমলেও সংখ্যালঘূ নির্যাতন হয়েছিল। বর্তমান সরকার ২০০১ সালের নির্বাচনের পর হিন্দুদের ওপর হামলার বিচারের জন্য কমিশন গঠন করে বিচারের আয়োজন করছে। অন্যদিকে সরকার দলীয় নেতা-কর্মীদের হাতে জমিজমা, বাড়িঘর হারিয়ে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে সংখ্যালঘুরা- বিষয়টি দুখজনক।

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নেতা সি আর দত্ত বীরউত্তম এ ব্যাপারে সোমবার এ প্রতিবেদককে বলেন, ঘটনা সত্য। এগুলো আমি অবহিত হয়েছি। আমরা এর বিরুদ্ধে কাজ শুরু করব। আওয়ামী লীগকে এর মধ্যেই আমরা জানিয়েছি। আমার কথা হলো – সবার বোঝা উচিত সংখ্যালঘু হিসেবে হিন্দুদের ওপর যে হামলা-নির্যাতন হচ্ছে তা দেশের মানুষ পছন্দ করে না। এগুলো যারাই করুক পার পাবে না। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। এ স্থান থেকে সরকারকে যারা বিচ্যুত করছে তারা পার পাবে না। এদের রক্ষার্থে দেশের গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসতে আহবান জানিয়েছেন সি আর দত্ত।

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাসগুপ্ত মঙ্গলবার বলেন, গত বছরের জুলাই থেকে সংখ্যালঘুদের জমি দখল, ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ, মন্দির দখল, মন্দিরে যেতে বাধা ও খুনের ঘটনা লক্ষ্য করছি। অনেক জায়গায় সংখ্যালঘু নারী অপহরণ ও ধর্ষণ করা হচ্ছে। আমরা দেখেছি এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িতরা বর্তমান সরকারি দলের লোকজন। পিরোজপুর, নাটোর এবং গফরগাঁওয়ের সরকারি দলের সংসদ সদস্যরাও প্রত্যক্ষভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারে জড়িত হওয়ারও প্রমাণ পেয়েছি। আমরা চার মাস আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে প্রতিকার চেয়েছি। গত বছর ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের হাতে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টি জানিয়েছি। বলেছি, দুষ্কৃতকারীরা সরকারি দলের লোক বলে পরিচয় দিচ্ছে। সরকারি দলের লোকেরা অপরাধ করে বলে থানাও মামলা নিতে চায় না। এ সময় আশরাফুল ইসলাম আমাদের বলেছেন, তিনিও বিষয়টি কমবেশি জানেন। সরকারি দল বদল না হলে দিনবদল হবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেছিলেন। আমরা তাকে পশ্চিমবঙ্গের আদলে প্রধানমন্ত্রীর অধীনে ও দলে একটি সংখ্যালঘু সেল করার প্রস্তাব দেই। তিনি বলেছিলেন, প্রস্তাব ইতিবাচক। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। পরে বিষয়টি আর এগোয়নি।

তিন এমপির বিরুদ্ধে অভিযোগ : হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা সংখ্যালঘু নির্যাতনের জন্য সরকারি দলের তিনজন এমপিকে সরাসরি দায়ী করেছেন। তারা বলছেন, এদের প্রশ্রয়েই তাদের অনুসারীরা সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করেছেন।

৫ মার্চ নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামের তিনটি সংখ্যালঘু পরিবারের বাড়িঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। এ বিষয়ে মামলা করতেও নির্যাতিতদের অনেক বেগ পেতে হয়েছে। ১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগ কর্মী আবদুর রাজ্জাকের ছেলে রেজাউল করিমের নেতৃত্বে কয়েকজন সন্ত্রাসী স্থানীয় বাসিন্দা নবকুমারের পুত্র প্রদীপ কুমারকে রামদা দিয়ে কোপায়। এ ব্যাপারে বড়াইগ্রাম আমলি আদালতে রেজাউলসহ তিনজনের নামে মামলা হয়। মামলাটি এখনো চলছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ওরা মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেয়। মামলা তুলে না নেওয়ায় সন্ত্রাসীরা তার জমির পাট কেটে নেয়। এ ব্যাপারে নবকুমার আরেকটি মামলা করেন। এতে ওরা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে প্রদীপের চাচা শৈলেন্দ্রনাথ প্রামাণিককে কয়েকদফা মারধর এবং বাড়িঘর লুটপাট করে। এসব ঘটনায় ১৩ জনকে আসামি করে আদালতে আরো একটি মামলা হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে সন্ত্রাসীরা প্রদীপ কুমারের বাড়িতে গিয়ে নবকুমারকে মামলা উঠানোর জন্য সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করতে বলে। তাতে রাজি না হওয়ায় সন্ত্রাসীরা তার পরিবারের সদস্যদের সামনে বাবা-ছেলে ও মা সুধারানীকে বেদম মারধর করে। তাতেও রাজি না হওয়ায় বাবা-ছেলেকে টেনেহিঁচড়ে আবদুর রাজ্জাকের বাড়িসংলগ্ন রাস্তার পাশে শিমুলগাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে বেদম মারধর করে। শেষ পর্যন্ত গলায় রামদা ধরে তাদের কাছ থেকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য কাগজে সই নেয়। এরপরও মামলা তুলে না নেওয়ায় তাদের বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। নির্যাতনের বিষয়টি আওয়ামী লীগ নেতাদের জানালেও তারা অপরাধীদের পক্ষ নিয়ে সালিশ করার নামে মামলা তোলার ব্যবস্থা করেন। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। রানা দাসগুপ্ত বলেন, এ ঘটনায় তিনি ওসির সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু স্থানীয় এমপির কারণে মামলা নেওয়া যাচ্ছে না বলে ওসি জানিয়ে দেন। পরে এমপি আবদুস সাত্তারের সঙ্গে কথা বলি। তিনি আমাকে বলেন, ওরা তো গয়েশ্বর। আমি তাদের বললাম, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে হিন্দুরা গয়েশ্বর আর বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে সুরঞ্জিত। তাহলে হিন্দুরা যাবে কোথায়? আর গয়েশ্বর হওয়ার কারণে কি তাদের উচ্ছেদ করে দেবেন? এর কোনো জবাব ওই এমপি দেননি। পরে জানতে পারি আগুন দেওয়ার আগের দিন এমপি ওই সন্ত্রাসীদের নিয়ে থানায় গেছেন। তিনি ওসিকে বলে দিয়েছেন, এরা আমাদের লোক। এদের কথামতো থানা চলবে। এদের বিরুদ্ধে যেন মামলা না নেওয়া হয়। পরদিনই তারা আগুন দিয়ে তিনটি ঘর পুড়িয়ে দেয়। পরে বিভিন্ন মহলে যোগাযোগের পর এসপি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মামলা নিতে নির্দেশ দেন।

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার দক্ষিণ সোনাখালীতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালাচ্ছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। আমড়াগাছিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মুজিবর রহমান ছায়েদ ও তার বাহিনী ১ এপ্রিল শঙ্করের বাড়িতে হামলা করে তার ভাই সুভাষকে আহত করেন। ছায়েদের এক ছেলে এএসপি ও ছোট ছেলে আশরাফ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক। এ কারণে হিন্দুরা প্রশাসনের তেমন কোনো সমর্থন পাচ্ছেন না। মারধরের পর একই এলাকার হিন্দু বলরাম বেপারীর দোকানে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এর কয়েকদিন আগে বলরামের বড় একটি বলদ গরু ধরে নিয়ে জবাই করে খেয়ে ফেলেন আওয়ামী লীগ কর্মীরা। দক্ষিণ সোনাখালীর অনিল চন্দ্র হালদারের পুত্র শ্যামল চন্দ্র হালদার ও সুধীর রঞ্জন হালদারের পুত্র সুশান্ত হালদারের প্রায় ২৫ বিঘা জমি দখলের চেষ্টা করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। এই জমির মালিকানা নিয়ে সুরেন্দ্রনাথ তালুকদার কয়েকজন আওয়ামী লীগ কর্মীর বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা আমড়াগাছিয়া ইউপি মেম্বার বিকাশকেও নির্বাচনে প্রার্থী না হতে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। ১৯ এপ্রিল ওই এলকার হিন্দুরা একজোট হয়ে গণস্বাক্ষর দিয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। তারা এ ঘটনার জন্য স্থানীয় এমপিকে দায়ী করেন। পরদিন বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ ছাপা হলে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে এমপি প্রতিবাদপত্র পাঠান। এ ঘটনায় মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ জনস্বার্থে একটি রিট হাইকোর্টে দায়ের করে। রিট আবেদনে জমি দখলের ঘটনায় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর নীরব ভূমিকা পালনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পিরোজপুরের এসপি ও মঠবাড়িয়ার ওসিকে ৬ মে হাইকোর্টে হাজির হয়ে তাদের ভূমিকা ব্যাখ্যা করতে বলেন হাইকোর্ট।

শুনানিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা ডা. আনোয়ার হোসেনের প্রতিবাদের বিষয়টি জানানো হলে আদালত বলেন, আওয়ামী লীগ সাম্প্রদায়িকতার বিপক্ষে। কিন্তু এ ধরনের কর্মকান্ডের মাধ্যমে স্থানীয় সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের বদনাম করছেন।

রাজধানী থেকে তৃণমূল : শুধু হিন্দু নয়, অন্য সংখ্যালঘু ধর্মাবলম্বীরাও আওয়ামী লীগের নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এমনকি রাজধানীর খ্রিস্টান সম্প্রদায় সংখ্যালঘুদের জানমাল রক্ষায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উদাসীনতার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টে নালিশও জানিয়েছে।

পরিষদ নেতারা অভিযোগ করেন, বরিশালের অশ্বিনী কুমার টাউন হলের সামনের মন্দিরে গত কোরবানির সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদিকা গরু ঝুলিয়ে কোরবানি দিয়েছেন।

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের এমপির পুত্র বনবিভাগের গাছ কেটে জায়গা দখল করেই ক্ষান্ত হননি, তিনি জমিসংলগ্ন জেলেপাড়ার ৭০-৮০টি সংখ্যালঘু পরিবারের চলার পথ বন্ধ করে দেন। এদের উচ্ছেদের জন্য এ পন্থা নেন বলে ওই পরিবারগুলো অভিযোগ করে। পরে তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়ক অবরোধও করেন। পরে প্রশাসন এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মামলা নেওয়ার অঙ্গীকার করলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। মামলার বাদীপক্ষের অ্যাডভেঅকেট অজিত কুমার অধিকারী বুধবারকে বলেন, ওই মামলার তদন্ত এখনো শেষ করতে পারেনি পুলিশ। পরিবারগুলো এখনো এ নিয়ে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলন করার অপরাধে নির্যাতন : চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে সংখ্যালঘুদের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ, নির্যাতন ও হামলা মামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করায় অমরেন্দ্র মল্লিককে পিটিয়ে এলাকাছাড়া করেছে স্থানীয় এমপি ও পৌর মেয়রের অনুসারী আওয়ামী লীগ নামধারী কিছু নেতাকর্মী। অমরেন্দ্রর বাড়িতে হামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলের সঙ্গে তাকে উলংগ করে বেধড়ক মারপিট করে ওই সন্ত্রাসীরা। পরে প্রকাশ্যে পেটাতে পেটাতে পৌরভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একটি কক্ষে আটকে রেখে পৌর মেয়র ডাকাত নায়েক শফির নেতৃত্বে পিতা ও পুত্রকে বেধড়ক মারধর করা হয়। এসময় অমরেন্দ্রর বিবাহিত কন্যা কাদঁতে কাঁদতে পৌর ভবনে হাজির হলে তাকেও পাশের একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রেখে শ্লীলতাহানী করা হয়। পরে পিতা পুত্রের নামে একই দিন চুরি ও মারপিটের মামলা দিয়ে আদালতে চালান দেয়া হয়।

মধ্যযুগীয় এ ঘটনাটি সীতাকুন্ড পৌর এলাকায় গত ৫ মে ঘটলেও কোন পত্রিকায় সংবাদ হয়নি। স্থানীয় সাংবাদিকরা সাহসই পাননি- এ নিয়ে কোন সংবাদ লেখার। এর আগে সীতাকুন্ডে তীর্থযাত্রীদের গণডাকাতি করা হলেও কোন খবর হয়নি। অমরেন্দ্র চট্টগ্রামে চিকিৎসাও নিতে পারেন নি। তিনি ঢাকায় পালিয়ে এসেছেন। আজ আমার অফিসে বসে তার ওপর বর্বর যুগের কায়দায় নির্যাতনের বর্ণনা দেন।

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের আমিরাবাদ মায়াকুঞ্জের এলাকার অমরেন্দ্র মল্লিক সরকার দলীয় সন্ত্রাসীদের নির্যাতনের প্রতিবাদে গত ৫ এপ্রিল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন। তিনি সংখ্যালঘু নির্যাতন প্রতিরোধ ও কল্যান কমিটির সভাপতি। ওই সংগঠনের ব্যানারেই তিনি সীতাকুন্ডের স্থানীয় এমপি আবুল কাশেম মাস্টারের ভাগ্নের হাতে শতাধিক সংখ্যালঘু জেলে পরিবার অবরুদ্ধ হওয়ার প্রতিকার চাইতে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি ব্যানারে লিখেছিলেন, চট্টগ্রামে নৌকার কান্ডারী ও মাঝিমাল্লা কর্তৃক হামলা মামলা নির্যাতন ও বাপ দাদার ভিটে ভূমি সহায় সম্পত্তি জবরদখলের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন। এমপি ভাগ্নে বন বিভাগের গাছপালা উজাড় করে জাহাজ ভাংগার ইয়ার্ড তৈরী করে সংবাদ শিরোণাম হয়েছিলেন। কিন্তু সরকারী জমির পর তার লোলুপ দৃষ্টি গিয়ে সংখ্যালঘু পরিবারগুলোর জমির ওপর পড়ে। তিনি টাকা নিয়ে ওই এলাকা ছেড়ে দিতে সংখ্যালঘুদের নির্দেশ দেন। কিন্তু হিন্দুরা নিজেদের বাপ দাদার ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যত্র যেতে অস্বীকৃতি জানালে পরিবারগুলোর বাড়ি থেকে বের হওয়ার একমাত্র রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়। এছাড়াও শ্মশানঘাটে যাওয়ার রাস্তায় মুরগির খামার তৈরী করে এমপির ভাগ্নে। এর প্রতিবাদে সংখ্যালঘু পরিবারগুলো ঢাকা চট্টগ্রাম সড়ক অবরোধ করে। একপর্যায়ে প্রশাসন এ ঘটনায় তদন্ত ও মামলা নেয়ার কথঅ বললে তারা অবরোধ তুলে নেন। মামলা হলেও দীর্ঘদিন ধরে তনন্তর নামে ঝুলে রয়েছে। এরই ফাঁকে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি কাড়তেই তারা সংবাদ সম্মেলন করেন। পরদিন বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ ছাপা হলেই এমপি ও পৌর মেয়র বাহিনী ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। সংখ্যালঘুদের নামে একের পর এক মামলা দেয়া হয়। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শচীন্দ্রলাল দের নামেও একটি ৫০৬ ধারায় হুমকির মামলা দেয়া হয়েছে। তিনিও ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

যেভাবে সপরিবারে নির্যাতিত হলেন অমরেন্দ্র

নির্যাতনের শিকার অমরেন্দ্র মল্লিক খোড়াতে খোড়াতে নিউ এজ অফিসে এসেছিলেন। তার এক হাত ভেংগে গেছে। শরীরে নির্যাতনের অসংখ্য চিহ্ন। কাদতেও যেন ভুলে গেছেন তিনি। একটি সভ্য সমাজে কিভবে জনসমাক্ষে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে তা বুঝেও উঠতে পারছেন না। বর্তমানে ঢাকায় গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হিন্দু বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রানা দাসগুপ্ত আমাকে তার সন্ধান দেন। বলেন, অসুস্থ থাকার কারণে অমরেন্দ্রর পাশে দাড়াতে পারিনি। সংখ্যালঘু নিয়ে রাজনীতি করে আওয়ামী লীগ সরকারও এর পাশে দাড়াবে বলে মনে হয়না। আপনারা সাংবাদিকরা এর জন্য কিছু করুন। আমি তাকে আমার অফিসে আসতে বলি। কোনক্রমে অফিসে হাজির হয়ে অমরেন্দ্র তার উপর নির্যাতনের বর্ণনা দেন। বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর সরকার দলীয় ক্যাডারদের হামলা মামলা ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করায় কর্মকান্ডে স্থানীয় এমপি প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হন। গত ৫ মে দুপুর আড়াইটায় কিছু আওয়ামী লীগ নেতা কর্মী আমার বাড়িতে যান। তারা গিয়েই আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পড়–য়া পুত্র শিমুল মল্লিককে বেধড়ক মারধর শুরু করে। আমি খবর পেয়ে বাড়ি যাই। আমাকে সামনে পেয়ে আমার ওপরেও চড়াও হয়। আমরা দ্রুত ঘরের ভেতর ঢুকে পড়ার চেষ্টা করি। কিন্তু তারা দড়জা লাগানোর সময় দেয়নি। ঘড়ের ভেতর ঢুকে আমাকে ও আমার পুত্রকে মেঝেতে ফেলে দিয়ে মারধর করতে থাকে। আমাকে পরিবারের সামনেই উলংগ করে ফেলে পেটাতে থাকে। পরে আমাকে দড়ি দিয়ে পিছমোড়া বেঁধে কিল ঘুষি মারতে মারতে টেনে বাইরে নিয়ে যায়। আরেকটি গ্র“প ঘরে ভাংচুর ও তল্লাশী চালায়। আমার কন্যার স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। পরে প্রকাশ্যে রাস্তায় পেটাতে পেটাতে পৌর ভবনের একটি কক্ষে নিয়ে আামকে ও শিমুলকে আটক করে। আমার বিবাহিত কন্যা পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে সেখানে উপস্থিত হলে তাকেও পাশের একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রাখা হয়। এসময় পৌর মেয়র কক্ষে ঢুকে গালিগালাজ করতে থাকেন। তিনি চিৎকার দিয়ে বলেন, শুয়ারের বাচ্চা, সংবাদ সম্মেলন করিস। এখন তোর আইন কানুন কই? কথায় কথায় তিনি থাপ্পড় মারতে মারতে নিচে ফেলে দেন। একই সঙ্গে শিমুলকেও মারা হয়। একপর্যায়ে পৌর মেয়র চিৎকার দিয়ে বলেন, চোখ বেধে দুরমুজ দিয়ে এর হাড্ডিগুড্ডি চুড়মার করে দাও। এরপরই আমার চোখ কালো কাপড় দিয়ে বেধে লাঠি দিয়ে পেটানো শুরু করে কয়েক কাউন্সিলর। এসময় আমার শরীর অবশ হয়ে পড়ে। আমি তাদের পা ধরে বলি, আমার শরীর অবস হয়ে গেছে। আমি পঙ্গু হয়ে গেছি। এ অবস্থায় মারধর করলে আমি আর বাচবো না। তারা আমার কথায় কোন কর্ণপাত করেনি। একজন কাউন্সিলর আমার পকেটে হাত দিয়ে মোবাইল নিয়ে যায়। এরপর মাটিতে ফেলে আমার বুকের ওপর উঠে তামাশা করেই নাচতে থাকে। পাশের কক্ষে আমার মেয়েকে আটকে রেখে তার বুকে হাত দিয়েছে। অশ্লীল গালিগালাজ করে যা করা হয়েছে তা বাবা হয়ে আমি কিভাবে বলবো? বিকাল চারটা পর্যন্ত আমদের সেখানে আটক রেখে নির্যাতন করা হয়। আমরা নিস্তেজ হয়ে পড়লে আমাদের বেঁধে থানার দিকে টেনেহেঁচড়ে নিয়ে যায়। এসময় হাজার হাজার মানুষ আমাদের করুন দৃশ্য দেখতে থাকে। আমি বলতে থাকি আপনারা দেখুন, আমাদের ওপর কিভাবে অত্যাচার হচ্ছে। আমি ডায়াবেটিসের রোগী। হাত পা নাড়াতে পারছিনা। আমাকে আগে একজন চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাও। তারা আমাকে উল্টো মারধর করে থানায় নিয়ে যায়। পরে আমার অবস্থা দেখে একজন চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হয়। চিকিৎসক কিছু এক্সরে করতে দেন। আমি বললাম আমাকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করেন। তিনি আমাকে হাসপাতালে রাখতে রাখতে পারলেন না। আমাকে ফোন করে ওসি মনিরুল ইসলাম গালিগালাজ করতে থাকেন। বলেন, শুয়োরের বাচ্চা হাসপাতাল থেকে স্বেচ্চায় থানায় চলে আয়। নইলে পেটাতে পেটাতে নিয়ে আসবো। রাতে গিয়ে দেখি একজন এসআই একটি মামলা লিখছেন। আমাদের নামে চুরি ও মারপিটের মামলা দেয়া হয়েছে। আমরা নাকি আমাদের বাড়িতে যেসব লোকজন গেছে তাদের মারধর করেছি। পরের দিন আমাকে ও পুত্রকে আদালতে চালান দেয়া হয়। আমি থানার ওসিকে বলেছিলাম, আমার উপর যে নির্যাতন হয়েছে, তা তো নিজের চোখে দেখেছেন। আমি পুলিশের কর্মকর্তা থাকতে এ ধরনের অনেক মৌখিক এজাহার নিয়েছিলাম। কিন্তু ওই কর্মকর্তা কোন এজাহার নেননি। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভেঅকেট রানাদাস গুপ্ত বলেন, অমরেন্দ্রর ওপর যে নির্যাতন হয়েছে তা অকল্পনীয়। আমি তাকে মামলা করতে বলেছিলাম। কিন্তু তিনি নিজেই পঙ্গু হয়ে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় অবস্থান করছেন। তিনি সাংবাদিকদের সহায়তা চান। সংবাদ সম্মেলন করার অপরাধে সংগঠনের সচিব শচীন্দ্র কুমার দে’র বিরুদ্ধেও ৫০৬ ধারায় একটি মামলা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে সীতাকুন্ড থানায় যোগাযোগ করা হলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ জানান, আমি ১২ মে দায়িত্ব নিয়েছি। আগের ওসি বর্তমানে নোয়াখালীতে বদলি হয়েছেন। তাকে থানায় এসে আমার কাছে অভিযোগ দিতে বলুন।

খ্রিস্টানদের নিরাপত্তায় আন্তর্জাতিক সহায়তা কামনা : গত বছরের ৩০ অক্টোবর ঢাকার কাফরুলের একটি খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বসতবাড়ি বেদখলকারীর বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের উদাসীনতার অভিযোগ করা হয় মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টে। ২ নভেম্বর এনা এ সংবাদটি প্রচার করে। এতে বলা হয়, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার গ্যারান্টি না পেলে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সহায়তা বন্ধের আহবান জানিয়েছে দেশের খ্রিস্টান সম্প্রদায়।

ঢাকা ক্রিস্টিয়ান ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের (সিডিএ) নির্বাহী পরিচালক উইলিয়াম নিকলাস গমেজ এ পত্রটি লেখেন। ওই পত্রের কপি যুক্তরাষ্ট্রের তিনজন সিনেটর এবং জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনকেও দেওয়া হয়। ২২ অক্টোবর আওয়ামী লীগ নামধারী একদল সন্ত্রাসী বন্দুক উঁচিয়ে কাফরুল থানার পুলিশের সামনেই ক্যাথলিক খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সদস্য রীতা গমেজের বাড়ির অধিকাংশ জমি জবর-দখল করে। রীতা গমেজের পরিবার থেকে পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ করতে গেলে তা নেওয়া হয়নি। রীতা গমেজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে জানান, তিনিও আওয়ামী লীগের কর্মী। গত নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন। অথচ এখন আওয়ামী লীগের পরিচিত লোকজনই পুলিশ-প্রশাসনের সহায়তায় ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের পৈতৃক ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করছে। অভিযোগপত্রে বলা হয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় উপস্থিত আওয়ামী লীগ কর্মীরা এ সময় রীতা গমেজের ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করেন এবং হুমকি দেন, তারা তাদের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করবেনই। এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার দলের লোকজনকে নিবৃত্ত না করে উল্টো বলেন, বাংলাদেশে জমিজিরাত দখলের ঘটনা ঘটছে, তাকে সংখ্যালঘু নির্যাতনের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে কেন? এটা তো স্বাভাবিক একটি অপরাধ। আওয়ামী লীগের সদস্যরাও তো এহেন পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন। আপনারা তো বিএনপি-জামায়াত সরকারের তুলনায় অনেক ভালো রয়েছেন। আর কী চান?

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বর্তমান সরকারের আমলে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা থেকে ২৫টি সংখ্যালঘু পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ কর্মীরা সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর জবর-দখল করছেন।

১৫ মে রাতের আধাঁরে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা ও তার সহযোগীরা উপজেলার পানপুঞ্জির খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কবরস্থান দখল করে ক্রুশ গুঁড়িয়ে দিয়েছেন।

সাতক্ষীরা থেকে সাংবাদিক সুভাষ চৌধুরী তার পাঠানো রিপোর্টে জানান, চারদলীয় জোট সরকারের পাঁচ বছরের মতো এবারো সাতক্ষীরার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ নির্যাতিত হচ্ছেন। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন তারা। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের জায়গাজমি দখল করে নিচ্ছে সরকারদলীয় সন্ত্রাসীরা। নির্যাতিতরা অভিযোগ দিতেও ভয় পাচ্ছেন।

এসব ঘটনা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে নালিশ জানিয়েও ক্ষতিগ্রস্তরা কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না। তারা জানান, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের পক্ষাবলম্বন করে। এর ফলে তারা নিজেদের জমি নিজেদের মতো করে আর ব্যবহার করতে পারছেন না।

মহাজোট ক্ষমতাসীন হওয়ার মাত্র ক’দিনের মাথায় বিদেশফেরত এক ছাত্রলীগ নেতা পুরান সাতক্ষীরায় দেবেন্দ্র চ্যাটার্জির মালিকানাধীন জমি হস্তান্তরের আইনগত জটিলতার ফাঁকে দখল করে নিয়েছেন। সেখানে বিশাল এক বাড়ি তৈরি করেছেন তিনি।

২০০৯ সালের মে মাসে সাতক্ষীরার আবাদের হাটের ঘোষাল পরিবারের ৩৮ বিঘা জমি দখল করে নেয় যুবলীগের এক ক্যাডার ও তার সহযোগীরা। এ নিয়ে গণমাধ্যমে লেখালেখি শুরু হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ঘোষাল পরিবার আইন আদালতের আশ্রয় নেয়। পরে গ্রামের পাঁচশতাধিক লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে ওই জমি থেকে দখলবাজদের হটিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ওই নেতাকে সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের সভাপতির পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

কালিগঞ্জের গোবিন্দকাটি গ্রামের আওয়ামী লীগের আরেক নেতা দক্ষিণ শ্রীপুর ইউপির সাবেক মেম্বার স্মৃতি সরকারকে তার ভোগদখলীয় জমি থেকে হটিয়ে দিয়েছেন। স্মৃতি সরকার জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছ থেকে ওই জমি আইনি প্রক্রিয়ায় গ্রহণ করে তার নেতৃত্বে সুফলভোগীরা চাষবাস করে আসছিলেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর কালিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতায় তা দখল করে নেওয়া হয়। স্মৃতি মেম্বার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েও কোনো সুফল পাননি।

২০০৯ সালের ৩১ মার্চ দেবহাটার কালাবাড়িয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ ঘোষের মালিকানাধীন ৩০০ বিঘার ঘের দখল করে নেয় ভূমিহীন আওয়ামী লীগ নামধারী সন্ত্রাসীরা। সুভাষ ঘোষ জানান, ১৯৭৯ সালে তার বাবা ওই জমি সরকারের কাছ থেকে নিলামে কেনেন। দখলে বাধা দিলে তার স্বজনদের পিটিয়ে আহত করা হয় ।

একই বছরের ২০ ডিসেম্বর দেবহাটার ঢেবুখালিতে ৩০০ বিঘার অপর একটি ঘের দখল করে নেয় আরেক ডাকাত বাহিনী। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, ১৯৬৮-৬৯ সালে মণিলাল স্বর্ণকার তার পুত্র তপন, স্বপন, শঙ্কর, কিঙ্কর, রমেশ ও তাদের মা মৈত্রী স্বর্ণকারের নামে দানপত্র করে দেন। এর আগে সরকার ১৯৮৩ সালে ওই জমির একাংশ খাস করে নেয়। স্বর্ণকার পরিবার আইনগত লড়াই করে ইনজাংশন লাভ করে। ২০ ডিসেম্বর ওই ডাকাত দল বোমাবাজি করে ওই জমি দখল করে নেয়। এ দুটি ঘটনার পেছনে আওয়ামী লীগের কয়েক নেতার হাত রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে চলতি মে মাসের ১৪ তারিখে কালিগঞ্জের উজয়মারিতে ২২টি সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখল করে নেন আওয়ামী লীগের আরেক কর্মী। এরপরই ওই জমিতে ইটভাটা তৈরির কাজ শুরু করেন তিনি। এতে বাধা দিতে গিয়ে জমির মালিক রমেশ মন্ডলসহ আহত হন তিনজন। সদর উপজেলার যুগিপোতা গ্রামের রবিন মন্ডলের ১২ বিঘা জমির চিংড়ি ঘের দখল করে নিয়েছে তিন সন্ত্রাসী। এতে বাধা দেওয়ায় রবিন মন্ডলকে তারা মারধর করে। পরে জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার সহযোগিতায় ১৫ মার্চ এ ঘটনায় উল্টো রবিন মন্ডলের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।

এদিকে আরেক আওয়ামী লীগ নেতা শ্যামনগরের গোপালপুরের সুরেশ মন্ডলের দুই বিঘা জমি জোর করে দখল করে নিয়েছেন। তিনি সুরেশ মন্ডলের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা ও ফেনী আদালতে একাধিক মিথ্যা মামলাও করেছেন।

বর্তমান সরকারের দলীয় নির্বাচনী ইশতেহারে পাঁচবার ‘সংখ্যালঘু’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছিল। ইশতেহারের অগ্রাধিকারের ৫.৪ স্থানে ছিল ‘ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করা হবে।’ কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে – দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা আওয়ামী লীগেরই নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা বলছেন, চারদলীয় জোট সরকারের আমলে রাজনৈতিক কারণে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে এর সঙ্গে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। দিন দিন এটা বেড়েই চলেছে। সভ্য গণতান্ত্রিক সমাজে সব সম্প্রদায়ের মানুষের সমান আইনি সুবিধা ও নিরাপত্তা পাওয়ার কথা। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের লোকদের দ্বারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরা যে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন তাতে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক, আমরা কোন গণতান্ত্রিক সমাজে বাস করছি।

অধিকারের রিপোর্ট : হাসিনা সরকারের সোয়া দুই বছরে সংখ্যালঘু নির্যাতনের শিকার ৮১৩, ৫১টি মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুর

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের গত সোয়া দুই বছরে ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর উপর অমানবিকভাবে নির্যাতন হয়েছে। সংখ্যালঘু নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৮১৩ ব্যক্তি ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এ নির্যাতনের কারণে ৩ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৭৬৬ জন এবং ৫১টি মন্দিরে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে। ১২ জনের জমি দখল করা হয়েছে, ৪ জনের ঘর ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। সংখ্যালঘু নির্যাতনের অধিকাংশ ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার সংগঠন ‘‘অধিকার’’ এর গবেষণাধর্মী রিপোর্ট থেকে এ তথ্য জানা যায়।

মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’-এর ২০১১ সালের জানুয়ারি-মার্চ মাসের রিপোর্টে বলা হয়, ১৩ জানুয়ারি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা পৌরসভা নির্বাচনের পর সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী তৈয়বুর রহমান পরাজিত হলে তার সমর্থকরা শহরের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে ব্যবসায়ীদের মারপিট করে ও তাদের দোকান বন্ধ করে দেয়। যাদের দোকানে হামলা করা হয় তারা অধিকাংশই হিন্দু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ব্যবসায়ী বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনার পর শৈলকুপা শহরের হিন্দু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মালিকানাধীন স্বর্ণকারপট্টির অধিকাংশ দোকান বন্ধ হয়ে যায়। হামলার শিকার প্রিয়াংকা জুয়েলার্স এর মালিক কজ্জল দে কে আহত অবস্থায় শৈলকুপা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। কজ্জল দে জানান, তিনি রাজনীতি করেন না। ভোট দেয়ার অভিযোগে তার ওপর হামলা করা হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশ ৩ জনকে আটক করেছে।

‘অধিকার’-এর ২০১০ সালে রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ওপর হামলার ঘটনায় ২ জন নিহত এবং ২৪৪ জন আহত হয়েছে। এছাড়া ২৩টি মন্দির ভাংচুর হয়েছে। অপরদিকে জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ওপর হামলার ঘটনায় ৬ জন নিহত এবং ১৪০ জন আহত হয়েছেন। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১০ মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার দেউলভোগ গ্রামে দুর্বৃত্তরা কালী মন্দিরে হামলা চালিয়ে দূর্গা প্রতিমা ভেঙ্গে ফেলেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মন্দির কমিটির নেতারা জানান, আলেক মিয়া, মিজানুর ও আশিকুরের নেতৃত্বে দুর্বৃত্তরা ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১০ মন্দিরের জায়গা দখল করতে গেলে তারা বাঁধা দেন। এতে দুর্বৃত্তরা মন্দিরে পূজা করলে তাদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ মিজানুরকে গ্রেফতার করেছে। ১১ অগাস্ট ২০১০ ঢাকার সূত্রাপুরের লালমোহন সাহা স্ট্রিটে ৭৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা হাজি ইসলাম ও সুত্রাপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেনের নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত পিস্তল, রামদা, হকিস্টিক ও শাবল নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্রীশ্রী রাধাকান্ত ঠাকুরানী লক্ষ্মী জর্নাধনচক্র জিওবিগ্রহ মন্দিরে হামলা চালায়। এ সময় দুর্বৃত্তরা মন্দিরের দরজা জানালা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে পাঁচটি প্রতিমা ভেঙ্গে ফেলে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মন্দির কমিটির সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি গৌরগোপাল সাহা ও সেক্রেটারি শ্রী মলচন্দ্র ঘোষ অভিযোগ করেছেন, ‘‘আওয়ামী লীগ নেতারা দুর্বৃত্ত দিয়ে মন্দির ভাঙচুর করে এর মূল্যবান সম্পত্তি দখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এদের ভয়ে তারা এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।’’ ৭ আগস্ট ২০১০ টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার চানতারা গ্রামে একদল দুর্বৃত্ত আহমদীয়া জামাতের মসজিদ নির্মাণের সময় হামলা করে। হামলাকালে দুর্বৃত্তরা আহমদীয়া সম্প্রদায়ের সদস্যদের বেশ কয়েকটি বাড়ি এবং দুইটি পোলট্রি ফার্ম ভাংচুর করে। দুর্বৃত্তদের হামলায় আহমদীয়া সম্প্রদায়ের ১০ জন সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ কাউকেই গ্রেফতার করেনি।

উল্লেখ্য, ১৭ জুন ২০১০ এই দুর্বৃত্তরাই একই জায়গায় আহমদীয়া জামাতের নির্মাণাধীন মসজিদে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছিল। ১২ জুলাই ২০১০ নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার নাকইলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠির এক পল্লীতে ক্ষমতাসীন দলের শরীফুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল ভূমিদস্যু হামলা চালায়। এ ঘটনায় ক্ষুদ্রজাতি গোষ্ঠির প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট হয়। এ সময় হামলাকারীরা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠির নারী-পুরুষদের প্রচন্ড মারপিট করে।

জাল দলিল করে জমি দখল করার জন্যে এ হামলা করা হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন। ১২ জুন ২০১০ হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কল্পনা চাকমার অপহরণের ১৪ বছর উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন রাঙামাটি শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। আইন-শৃক্মখলা পরিস্থিতির কারণ দেখিয়ে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক সভার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ হওয়া সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিবাসীদের তাদের নিজ নিজ জমিতে পুনর্বাসিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ। বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি মোঃ দেলোয়ার হোসেনকে নিয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ গত ৬ মে ২০১০ এই নির্দেশ প্রদান করেন। ১৯ এপ্রিল ২০১০ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিবাসীদের পক্ষে শংকর মিত্র অভিযোগ করেন আমড়াগাছিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবর রহমান ছায়েদ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কামরুল ইসলাম এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য হাবিবুর রহমান, জালাল, আমির হোসেন মানিক, হাসান হোসেন, তোপা, হারেস ও তাজুলের অত্যাচারে তারা দিশেহারা। তারা তাদের ভিটেমাটিতে থাকতে পারছেন না। তাদের ৫শ’ বিঘা জমি দখল করে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে।

মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’-এর ২০০৯ সালের রিপোর্টে সংখ্যালঘু নির্যাতন সম্পর্কে বলা হয়েছে, এ বছরে ধর্মীয় সংখ্যালঘু ব্যক্তি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৫৬৯ ব্যক্তি ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। তার মধ্যে ৫০২ জন আহত হয়েছে, ১ জন নিহত হয়েছে, ১২ জনের জমি দখল করা হয়েছে, ৪ জনের ঘর ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে এবং ২৮টি মন্দির ভাংচুর করা হয়েছে। গত ২৭ মার্চ ফেনী সদর উপজেলার কাজীরবাগ বাজারে যুবলীগ ক্যাডার সুমনের নেতৃত্বে বেলাল হোসেন অপেল, মহিউদ্দিন নূরন নবী, অনিক বিশ্বাস, দেলু, মো. ইসমাইল, নিজাম উদ্দিন, মো. আজাদ ও আব্দুর রহিম সশস্ত্র হামলা করে সংখ্যালঘু হীরা বণিকের ঘরবাড়ি ভাংচুর এবং ৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে। ২৮ মার্চ জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভাদসা ইউনিয়নের পন্ডিতপুরের হিন্দু ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত সরকার পাড়ার বিমল চন্দ্র সরকারের (৫০) বাড়িতে একদল দুষ্কৃতিকারী অগ্নিসংযোগ করলে গোয়ালঘরে থাকা ৪টি গরু অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যায় এবং আরো ৩টি গরু অগ্নিদগ্ধ হয়। রাজধানী ঢাকার সূত্রাপুরে পঞ্চাশ বছরের পুরানো একটি মন্দির ভেঙ্গে ফেলেছে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা। স্থানীয় সূত্র জানায়, ৩২ কাঠার সম্পত্তি রয়েছে এই মন্দিরের। এই সম্পত্তিতে হিন্দু-মুসলমান মিলে মোট ৬৮টি পরিবার বসবাস করে। ৩০ মার্চ আওয়ামী লীগ সমর্থক সালেহ এবং তার দুই ছেলে দিপু ও আসাদ ১৩ টি হিন্দু পরিবারকে উচ্ছেদ করে মন্দিরের সম্পত্তি দখল করে নেয়। এই সময় শিব, কালী এবং সরস্বতীর প্রতিমা ভেঙ্গে ফেলা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর এলাকার উত্তর পৈরতলা দারিয়াপুরে শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুসলিম মিয়া এবং তার পরিবারের অত্যাচার-নির্যাতনে অতিষ্ঠ এলাকার জেলে পরিবারসহ কয়েকশ’ সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবার। নির্যাতিত পরিবারের সদস্য মৎসজীবী হরে কৃষ্ণ দাস বলেন, প্রায়ই তাদের বাড়ি-ঘরে হামলা করে কিশোরী ও মহিলাদের সম্মানহানি এবং লুট-পাট চালানো হয়। ২২ আগস্ট রাজধানী ঢাকার সূত্রাপুরে জমি দখলের উদ্দেশ্যে এক হিন্দু পরিবারের নারী শিশুসহ ৯ সদস্যকে অপহরণের প্রায় আটঘণ্টা পর তাদের উদ্ধার করে পুলিশ। ডিবি পুলিশ পরিচয়ে হৃষিকেশ দাস লেনের ৯৫ নম্বর বাড়ি থেকে তাদের অপহরণ করা হয়। এ সময় ওই বাড়ি থেকে স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা পয়সা লুট করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ স্থানীয় আওয়ামী লীগের চার কর্মীকে গ্রেফতার করে। ১০ সেপ্টেম্বর রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় একদল দুষ্কৃতিকারী গভীর রাতে মন্দিরে ঢুকে দুর্গা প্রতিমা ভাংচুর করে। ২৫ সেপ্টেম্বর মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বালাশুর গ্রমে নাগমন্দিরে দুষ্কৃতিকারীদের হামলায় মন্দিরের সেবাইতসহ ৮ জন আহত হন। শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক হানিফ বেপারীর নেতৃত্বে দুষ্কৃতকারীরা এই হামলা চালায়। গত ২৮ সেপ্টেম্বর মাদারীপুরের রাজৈরে খালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সাতপাড় গ্রামে রামমোহন মন্ডলের পূজামন্ডপে পুলিশ এক তরুণীকে উত্ত্যক্ত করে। পূজারীরা এর প্রতিবাদ করায় মধ্যরাতে এসআই কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে পুলিশের সদস্যরা প্রতিমা ভাঙ্চুর করেন। চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলাধীন কারাল গ্রামের নাথপাড়ায় বসবাসকারী নিম্নবর্ণের হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় ৩০০ সদস্য উচ্ছেদের ঝুঁকিতে রয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ ১৯৯০-এর দশক থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করছে যা সরকারিভাবে আরএনআইএমপি-২ নামে পরিচিত। সম্প্রতি এ প্রকল্পে পরিবর্তন আনা হয়েছে। পরিবর্তিত প্রকল্পে কারাল গ্রামের নাথপাড়ার বাসিন্দাদের ভূমিকে অধিগ্রহণের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ পটিয়া বাইপাস নির্মিত হবে। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ তারিখে কারাল গ্রামের নাথপাড়ার বাসিন্দাদের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই মর্মে একটি নোটিশ জারি করা হয় যে, ১৪ অক্টোবর ২০০৯ তারিখের মধ্যে তাদেরকে ওই এলাকা ছেড়ে দিতে হবে, অথচ নোটিশ জারির আগে পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের কোন ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়নি। উচ্ছেদের শিকার বাসিন্দাদের প্রত্যেককে তাদের বাসস্থানের জন্য নতুন জমি কেনার খরচ বাবদ ৫০ হাজার করে টাকা দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে যা যথেষ্ট নয়। তাছাড়া এ ব্যাপারে লিখিতভাবে কোন প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়নি। বাংলাদেশে জমির ঘোষিত বাজার দর ও প্রকৃত বাজার দরের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। সংশিষ্ট এলাকায় এক একর জমির সরকার-নির্ধারিত মূল্য এক লাখ টাকা হলেও বাস্তবে এক একর জমি বিক্রি হয় প্রায় এক কোটি টাকায়। এই এলাকার ৩০০ অধিবাসী পুরুষানুক্রমে হস্তশিল্পের পেশায় জড়িত। নাথ সম্প্রদায়ের দুই নেতা শ্রীমত শুভসন্ধ্যা অবধূত এবং দিলীপ দে মনে করেন, সংখ্যালঘু হিসেবে তারা সরকারের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন।

অধিকারের এ রিপোর্ট প্রমাণ করেছে যে, আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। তারা সেকুলারের কথা বলে একদিনে ইসলামপন্থীদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে অন্যদিকে সংখ্যালঘুদের অধিকারও নষ্ট করছে। এ অবস্থায় দেশের ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার উচিত আওয়ামী লীগের বিষয়ে সজাগ থাকা।

তথ্যসূত্র:
- সারাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে আ’লীগ কর্মীরা- আমার দেশ
- অধিকার
- ক্ষমতাসীনদের হাতে সংখ্যালঘু নির্যাতন - সাপ্তাহিক বুধবার

বিষয়: বিবিধ
বিজয়ী পতাকা লিখেছেন : প্রিয়তে রাখলাম।

০৫ মার্চ ২০১৩ রাত ০৯:৫৩
বিজয়ী পতাকা লিখেছেন : হাসান ভাই, আপনার এই ছবিটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে।
বিজয়ী পতাকা লিখেছেন : এগুলো করবে বলেই officially তাদের exclusive announcement বিবৃত করতেই হয় প্রতিবারের মত সময়:
ডা. ইমরান এইচ সরকার বলেন, “স্বাধীনতাবিরোধীরা যখনই বিপদে পড়েছে, তখনই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করেছে। আমরা মুসলমান ভাইদের বলছি, আপনারা মসজিদে নামাজ পড়ে মন্দির পাহারা দেবেন। হিন্দু ভাইয়েরা মসজিদের নিরাপত্তা দেবেন। যাতে কেউ ধর্মীয় দাঙ্গা বাধাতে না পারে।”

০৫ মার্চ ২০১৩ রাত ১০:০০
হাসান লিখেছেন :
জুনাইদ হোসেন সবুজ লিখেছেন : ঢাকার দোহারের নারিশা পূর্বচর গ্রামে সংখ্যালঘু নৃপেন মালাকারের জমিতে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে তা দখল করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা। amar elakay ghotse eta

জুমানা লিখেছেন : দিগন্ত টিভির ব্রেকিং নিউজে দেখলাম-বগুড়ার শেরপুরে একটি মাদরাসার শহীদ মিনার ভাঙ্গার সময় শহর যুবলীগের যুগ্ন সম্পাদক তবিবুর রহমান টিপু হাতে নাতে আটক। আল্লাহ জালিমের সব ষড়যন্ত্র এমনি করে মানুষের সামনে প্রকাশ করে দিন।
 
so what is India going to do about BAL's politically motivated attack on Bangladeshi Hindus? pretext for another invasion?
 
"does their religion teach them this"? really? really dude?
do you really want to bring our religion into bangladeshi politics?
i don't want to do you ma and began so just quit while your a ahead.
sala yindoo.
'Sala'? Means brother-in-law! Yeah right! Your sister...Oh well, never mind.
 
'Sala'? Means brother-in-law! Yeah right! Your sister...Oh well, never mind.
Saley tu "sala" ka mutlab nahin janta?
A sala is a person whose sister you marry.
A sala is a brother in law technically but a sala can only be your wife's brother.
At least Pakistan. I don't know how you yindoos work.
 
Before the polls you guys were saying that the BNP and Jamaat were not involved in the violence and it was all RAWAMI propaganda. Now that Awami League has won the election who is propagating the post election violence??
 
Here comes Kalu_Miah the Arab worshiper with his funny post. :omghaha:

@ Kallu Miah's IQ is 100 times more than you.
@ What you are ? What is your identity ? You are a "Tolpi Bahak" of Awami Leaque and RAW.
@ You are a shameless ?
@ You are making a castle on the air !
@ We are here a real patriat of Bangladesh.
@ We have no link with Jammat rather sometimes we criticise Jammat.
@ So far Jammati's have done any activity which is harmful for Bangladesh.
@ Yes , it is true that Jamat did not supported the liberation movement but does it mean that throughout their life they would remain out of Politics ?
@ Always talking about Jammat ! Jammat !Jammat ! why ? Are they inching you ?
@ A country like Bangladesh where every one has an equel right.
@ I donnot understand how come one party can bann another party of the same status ??????
 
Last edited:
what happening against minority is unacceptable and unfortunate . when the joint force in the field and Jamaat and BNP are on run in this situation how can they attack minority . and if they are really involve then why the govt is not arresting them but blaming jamaat BNP . in this country whenever any attack took place against minority media blindly blame Jamaat . in any neutral investigation would prove that actually this kind of attack either carried our by awami league or it was just personal/ local confrontation where politics or religious is not the cause .

1544438_607127819375186_1802619871_n.jpg

As a true Muslim Jamaat Shibir trust in this verse .
 
Last edited:
Like many other posters commented before, this is RAW instructed post election make-the-hindu-victim campaign, so they can initiate their mass killings of BNP-Jamat activists. It is an ominous sign.

I can see a lot of property being damaged, but has anyone been hurt? If there is proof, please someone post it. The fact that no one was injured is also proof that it is a false flag operation by Indo-Awami's to blame BNP-Jamat.

Didn't you read the articles about people being attacked and got injured??

"Attacks remind people of the horror unleashed by Pakistani forces 43 years ago"
 
Why do Indians suddenly care about Bangladeshi Hindus??

Interesting point....victims called the Police and Awami league leaders and nobody came to fight of 'Jamaat-BNP'...interesting point indeed....nobody has been arrested or brought into custody....nobody has been questioned yet they already know it was 'BNP-Jamaat'!If they already know why isn't 'protector of minorities' BAL not taking any action??

another 71 is in process ...... Keep faith India will come to rescue Bangali people against 'rogue elements' ....
Bangladesh.gif
India.gif
 
injured-voter-.jpg

A man being taken to a hospital after Jamaat activists beat him up for going to a polling station to vote in Satkania of Chittagong yesterday. Photo: Anurup Kanti Das

Terror on Hindus
BNP-Jamaat men vandalise 130 houses, burn another 10 in Abhaynagar

A farmer passing by, Aftab Hossain said,"They [Jamaat-Shibir] threatened us with dire consequences if we vote. Why get into all the hassle?"

Terror on Hindus | BNP-Jamaat men vandalise 130 houses, burn another 10 in Abhaynagar



Govt urged to rebuild damaged houses of minorities


DHAKA, Jan, 7, 2014 (BSS) - Leaders of different organizations today urged the government to give proper compensation to the affected families and rehabilitate those including the minorities whose houses were burned and damaged by the opposition activists before and after the 10th national polls.

They made their demands while speaking at a human-chain in front of the Jatiya Press Club organized by the Bangladesh-Hindu- Buddha-Christian Oikka Parishad this afternoon.

After the election on January 5, the parishad leaders, said houses, business establishments and temples in different areas of
Jessore, Dinajpur, Takurgaon, Chittagong, Satkhira were looted,
torched and ransacked by the activists of Jamaat- Shibir and BNP.

In a joint statement 251 members of Bangabandhu Sangskritik Jote condemned the BNP-Jamaat for attack on the houses of minority communities and Awami League leaders and Workers

They accused the Jamaat-Shibir and BNP of carrying out attack on the houses of minorities and Awami League workers saying that the vested quarters were creating anarchic situation across the country to compel the minority communities to leave the country.

The signatories to the statement were Tarana Halim MP, Arun
Sarkar Rana, ATM Samsuzzaman, Syed Hasan Imam, Ali Zaker, Ferdousi Mazumder, Pijush Bandopadaya, Mobarak Ali Sikder, Asaduzzaman Noor MP, Sukumar Ranjan Gosh MP, Shaheen Monowara Haq MP, Film Actor Razzak and Pinu Khan MP.

Bangladesh Sangbad Sangstha (BSS)
 
Last edited:
I think all of this is leading to one thing Bangabhumi with clandestine help from Banga Sena:
Bangabhumi - Wikipedia, the free encyclopedia
Banga Sena - Wikipedia, the free encyclopedia
Border Delineation and Geopolitical Wrangling between India and Bangladesh | GeoCurrents
"
Hindus-Bangladesh-Map.jpg


Bangladesh’s cooperation with India is likely linked to its desire for concessions on related issues. Dhaka’s economic concerns were discussed in last Thursday’s post; also to note is its call for New Delhi to crack down on opponents of the Bangladeshi government active on Indian soil. Of particular concern is Bangabhumi Andolan, an organization dedicated to carving out a Hindu-dominated country from southeastern Bangladesh. Although Hindus are relatively numerous in this region (see map), they are still clearly outnumbered by Muslims. Bangabhumi Andolan hopes to create a Hindu majority through the immigration of those who left or were forced out of the region during and after the partition of 1947, although the removal of Muslims would probably be necessary as well. In 2003, movement organizers symbolically declared the independence of the Hindu Republic of Bangabhumi (alternatively called Bir Bango).

Bangabhumi-map1.jpg


Although Bangabhumi Andolan does not seem to be very potent, Bangladesh is worried. According to Bangladeshi sources, “the movement has set up more than a dozen training centres with clandestine supply of money and arms … with the objective of arms struggle for creation of the Hindu land.” It has also staged public rallies on Indian territory, most recently in July 2010. Both Bangladeshi and Pakistani sources have accused India of supporting Bangabhumi Andolan in order to destabilize Bangladesh. According to Pakistan Defense, the Indian external intelligence agency RAW (Research and Analysis Wing) created the group in order to “disintegrate Bangladesh.” Several hard-core Hindu nationalist groups have rallied to the cause. A 2003 article on an extremist website asks, “how long can the Hindus live under House-Arrest in the Barbaric Bhoot-Bangla of Bangladesh?” The article itself is tellingly entitled, “Recognize The New Hindu State As You Cowards Recognize Islamic Bogusdesh.” (According to the website in which it appears, Bangladesh is a “bogus” country—hence “Bogusdesh”—originally “created by the British … [as East Pakistan] to cut off direct land, spiritual, trade and cultural communications between Hindu Bharat and Buddhist Myanmar.”)

If the Indian intelligence agency RAW has indeed created Bangabhumi Andolan to use against Bangladesh, it could be playing with a two-edged sword. Recent reports claim that the organization also wants to hive off a section of the Indian state of West Bengal for its proposed country, thus potentially diminishing India. It is entirely possible, however, that Bangladeshi partisans would regard such claims to Indian territory as a mere smokescreen, designed to superficially distance Bangabhumi Andolan from its handlers in Indian intelligence. In South Asian geopolitics, such allegations of subterfuge are hard to escape."

Sorry, we don't have inclination to support Bangabhumi Andolan however potent or impotent they are. You have started another propaganda to persecute Hindus. Haven't they endured enough pre and post election violence that you bring up this to rile up more attacks.
 
India orchestrated and Awami League executed attack on these hindus. And hindus willingly playing victim act for money. Look at the act of being injured, yet none died. This is epic bollywood production.
 
Bangladesh: Hindus on the run, temples destroyed as BNP-Jamaat unleash targeted violence

bangladesh.jpg




Activists of main Opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) and its key-ally fundamentalist Jamaat-e-Islami attacked Hindu households in western Jessore and northwestern Dinajpur, local media reports said.

The threat of life has forced hundreds of minority Hindus to leave home in panic as post-poll terror strikes have gained momentum in several districts of Bangladesh even as the 48-hour hartal has entered second day on Tuesday.

The Daily Star and several other newspapers said the activists vandalised 130 Hindu houses and torched another 10 in Malopara village on Sunday night as they went to cast votes defying the Opposition call for the boycott.

5 killed in post-poll violence in Bangladesh

As per a Daily Star report, locals said they had called police, ruling Awami league leaders and the administration over the mobile phones but nobody came to help. Police were seen after 9 pm, when it was all over.

Police, however, said 70 to 80 men attacked the village but joint forces comprising police and paramilitary Border Guard Bangladesh chased them away.

85 people have so far lost their lives in the unrest.

Hindus, their houses and temples had come under attacks in districts like Noakhali, Satkhira and Sirajganj.

The activists threatened the Hindus of dire consequence for voting, sparking panic and prompting the Army ‘striking forces’ intervention.

“Some 400 Hindus were forced to flee their homes and take refuge on the other side of the local Bhairab river fearing fresh attacks,” Bangladesh Hindu-Bouddho-Cristian Oikya Parishad vice president Kajal Debnath told sources.

Other reports said Hindus came under attack also at Pornia area in northwestern Dinajpur overnight where the Opposition activists severely assaulted 10 elderly people of the community and vandalised over 10 houses for defying their calls for election boycott.

But Government has asked the Army to intervene thereby forcing the activists to flee.

“We demand intensified protection…we don’t want to be traded off politically or used for anybody’s political purpose,” Debnath told sources in an apparent reference to a perception that the Hindus were traditionally supporters of Awami League, which pursue a policy of secularism.

He added: “Keep me (Hindus) beyond (political) focus, I don’t want to be a victim.”

According to media reports, only a small number of Hindus cast their votes in north-western Lalmonirhat and southwestern Satkhira either fearing attacks by Opposition activists.

They said most of the Hindu villagers were annoyed with the Government for not taking adequate steps for their protection during earlier such attacks in recent months when the Opposition spearheaded anti-Government campaigns.

Meanwhile Dhaka Tribune reported, Rapid Action Battalion personnel recovered 29 petrol bombs in Kumargara village of Chatmohor upazila early on Tuesday.

The elite force members also recovered 12 crude bombs and four rounds of bullets.

Bangladesh: Hindus on the run, temples destroyed as BNP-Jamaat unleash targetted violence | Niti Central

চাঁপাতলায় শুধুই কান্না
রাজীব নূর ও মাসুদ আলম, অভয়নগর (যশোর) থেকে | আপডেট: ১১:১৯, জানুয়ারি ০৭, ২০১৪ | প্রিন্ট সংস্করণ


52cb1ace1d841-38.jpg


নৌকা থেকে নেমে পোঁটলা-পুঁটলি মাথায় ও কাঁধে নিয়ে বাড়ির দিকে হাঁটছে শতাধিক নারী-পুরুষ-শিশু। চোখে-মুখে আতঙ্ক। ভৈরব নদের তীরে দাঁড়ানো শত শত লোক তাদের স্বাগত জানাচ্ছেন। এ যেন শরণার্থী শিবির থেকে ঘরে ফেরা।
বাড়িতে ফিরেই নিজের সাজানো ঘরের বীভৎস চেহারা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন চন্দনা বিশ্বাস (৩৭)। তাঁর তিন মেয়ে, এক ছেলে। হামলাকারীরা পুড়িয়ে দিয়েছে তাঁর ঘরের আসবাব, লেপ-তোশক, বিছানা। জীবনধারণের একমাত্র অবলম্বন মাছ ধরার জালগুলোও অক্ষত নেই। করেছে লুটপাটও। আতঙ্কে স্তব্ধ চন্দনার স্বামী সঞ্জয় বিশ্বাস (৪০)। অজানা ভবিষ্যতের কথা ভেবে শঙ্কিত তাঁদের মতো শত শত নারী-পুরুষ-শিশু।
গত রোববার ভোট শেষ হওয়ার পর সন্ধ্যায় যশোরের অভয়নগর উপজেলার চাঁপাতলা গ্রামের মালোপাড়ায় তাণ্ডব চালায় দুর্বৃত্তরা। জ্বালিয়ে দেয় বসতবাড়ি। এরপর গ্রামের প্রায় সবাই ভৈরব নদের ওপারে দেয়াপাড়ায় আশ্রয় নেন। গতকাল তাঁরা নিজেদের বাড়িতে ফিরে আসেন।
কাল ওই গ্রামের সর্বত্র ছিল কান্নার রোল। খাওয়ার মতো কিছু ছিল না ঘরে। কী খাবেন, রাতে আবার সেই নারকীয় হামলা হবে কি না, সেই আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তায় বিধ্বস্ত ঘরের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে মানুষগুলো।
যশোর-৪ আসনের নবনির্বাচিত সাংসদ রণজিত রায়, জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজুর রহমান ও পুলিশ সুপার জয়দেব ভদ্রসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং আওয়ামী লীগের নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে ২০০ কম্বল, দুই টন চাল ও নগদ এক লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ঘটনার এক ঘণ্টা আগে বিষয়টি আঁচ করতে পেরে আওয়ামী লীগের নেতা ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হলেও কেউ তাদের রক্ষায় এগিয়ে আসেনি।
ক্ষোভ ঝরে পড়ে বাসন্তী সরকারের (৪৫) কণ্ঠে, ‘আক্রান্ত হওয়ার পর সাহায্যের জন্য বারবার মোবাইলে আওয়ামী লীগ নেতাদের অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তাঁরা এগিয়ে আসেননি। এখন এসে সবাই দরদ দেখাচ্ছেন।’
চাঁপাতলা গ্রামের এক প্রান্তে অবস্থিত নিম্নবর্গীয় হিন্দুদের ১১২টি পরিবার পুরুষ পরম্পরায় বসবাস করে আসছে। পেশায় মূলত মৎস্যজীবী এ পরিবারগুলোর সবাই হামলার শিকার হয়েছে। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ওই পাড়ার ১০টি বাড়ি। ১০২টি পরিবারের মাত্র দুটি ঘর ছাড়া সব ঘরেই ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চালানো তাণ্ডবে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। গুরুতর আহত চারজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় প্রশাসন বলছে, জামায়াত-শিবির এ তাণ্ডব চালিয়েছে। জামায়াত-শিবিরের স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তাঁদের পাওয়া যায়নি।
এলাকাবাসী বলেন, জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডবে আতঙ্কিত হয়ে সাঁতরে নদ পাড়ি দিতে হয়েছিল তাঁদের অনেককেই। নদ পাড়ি দিয়ে দেয়াপাড়া গ্রামের পালপাড়া এলাকার পূজামণ্ডপে আশ্রয় নেন কালীদাসী সরকার। তিনি বলেন, ‘১৫ বছরের ছেলের হাত ধরে সাঁতরে নদী পাড়ি দিয়েছি। একে তো শীতকাল। তারপর সন্ধ্যা। মনে হচ্ছিল নদীর হিম পানিতে বুঝি ডুবে মারা যাব।’
নদ পাড়ি দিতে গিয়ে পরনের শাড়িটিও হারিয়েছেন মায়া রানী মণ্ডল। পরে দেয়াপাড়ার একজনের শাড়ি পরে বাড়ি ফিরেছেন। ২০ বছর আগে স্বামীকে হারিয়েছেন মায়া। তিনটি অনাথ মেয়েকে বড় করে বিয়ে দিয়েছেন। এখন একা থাকেন ছোট্ট একটি ঘরে। গতকাল বাড়ি ফিরে দেখেন তাঁর ঘরটি আর বসবাসের উপযোগী নেই।
মালোপাড়ার আতঙ্কিত মানুষকে সাহায্য করার জন্য দেয়াপাড়ার পালপাড়া থেকে নৌকা নিয়ে এগিয়ে এসেছিল কেউ কেউ। দেয়াপাড়ার সেই সব মানুষের একজন রবীন্দ্রনাথ ব্যানার্জি বলেন, ‘আমরা আসতে না পারলে নদে ডুবে মারা যেত ছোট বাচ্চারা। বাচ্চারা বাড়ি ফেরার কথা শুনে ভয়ে আতঙ্কে শিউরে উঠছে।’
তাণ্ডবের সময় গ্রাম ছেড়ে যায়নি নির্মল বর্মণের পরিবার। তাঁর পুত্রবধূ সঞ্চিতা বলেন, ‘আমিই শ্বশুর মশাইকে বলেছিলাম, বাবা আমরা কোথাও যাব না। মরলে সবাই একসঙ্গে মরব। কানবার যেন কেউ না থাকে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁপাতলার পাশের চেঙ্গুটিয়া ও বালিয়াডাঙ্গা গ্রাম দুটিতে জামায়াত-শিবিরের শক্তিশালী ঘাঁটি। অভয়নগর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির আবদুল আজিজের গ্রামের বাড়ি বালিয়াডাঙ্গায়। এ দুটি গ্রামের জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষিত হওয়ার পর থেকে যশোর-খুলনা মহাসড়কের একটি বড় এলাকাজুড়ে নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ভোটের দুই দিন আগে শুক্রবার পানের বরজে আগুন দেওয়া হয় বলে জানান মালোপাড়ার বাসিন্দা সুনীল কুমার সরকার। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে তারা একবার গ্রামে এসে দেখে গিয়েছিল। আতঙ্কিত গ্রামবাসী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন।
পুলিশ সুপার জয়দেব ভদ্র বলেন, মালোপাড়ায় একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প করা হয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত ওই পাড়ার বাসিন্দারা নিরাপদ বোধ করবেন না, ততক্ষণ ক্যাম্পটি থাকবে।
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক বলেন, নির্বাচনী ব্যস্ততার জন্য মালোপাড়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া যায়নি। নির্বাচনের পর এমন হামলা হবে, তা ধারণার মধ্যে ছিল না। তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে এ ঘটনার জন্য জামায়াত-শিবির দায়ী, এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। এরই মধ্যে অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ ৩০ জনের নাম পেয়েছে।

http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/117478/চাঁপাতলায়_শুধুই_কান্না

'Prothom Dailer Alo' and 'Daily Wannabe Star' are commie Moitta and Mahfuizza Mo-Fo runs propaganda pieces that haven't said a single truth while disseminating news about JI-SHIBIRIES, AFAIK. Now fake is out and even in Barishals attacks are AWAMY terror's handy work...

1546075_10153731397500691_1955231783_n.jpg
 
Post-poll attacks on minorities continue

Police and the victims Tuesday filed cases against 399 persons in connection with the post-poll attacks on the members of Hindu community in Jessore and Dinajpur districts.

In Jessore, a case was filed against 39 named and 250 unnamed persons with Abhoynagar police station for Sunday’s attacks on Hindu houses at Chapatola village under Abhoynagar upazila.

Police detained two Jamaat activists for their suspected involvement in the attacks.

They also launched special drives to nab those involved in the heinous attacks on Hindu people.

“A temporary police camp has been set up in the area to ward off further untoward incident,” police said.

As soon as voting ended on Sunday, BNP and Jamaat-Shibir men looted, vandalised and burned more than 50 Hindu houses at Chapatola village, the sources said.

Villagers took shelter near Deyapara village after crossing the river Bhairab, swimming or by boat or trawler.

Locals alleged that they had called police, Awami league leaders and the administration over mobile phone to help them but nobody came in time.

On Tuesday, several hundred Hindu families who fled their homes due to post-poll violence at Chapatola village returned to their houses with the help of the administration.

In Dinajpur, two victims filed two separate cases against 60 named and 50 unnamed persons with Kotwali police station over Sunday’s attack on Hindu houses at Kornai village under the sadar upazila.

Police detained five in connection with the attacks on the houses and shops of Hindu people and Awami League supporters.

A temporary police camp has also been set up in the village following the attacks.

A three-member committee headed by additional district magistrate Abu Raihan has been formed to probe the incident.

Jamaat-Shibir men equipped with sharp weapons launched attacks and set fire to least 350 houses and 50 shops in five villages, including Pritampara, Sahapara, Profullahpara, Telipara, and Kornai around 5:30pm Sunday.

Several hundred Hindu people, including women and children, fled their homes after the attack. They returned to their houses on Monday.

The district administration distributed 100 blankets and 350kgs of rice to the affected families.

The deputy commissioner said the affected people would be given financial help and CI sheets to rebuild their houses and shops.

On Sunday BNP-Jamaat men also attacked Hindu houses in Thakurgaon, Chittagong, Rangpur and Bogra districts.

daily sun | First Page | Post-poll attacks on minorities continue


Seven arrested for attacks on Hindus in Bangladesh
World | Press Trust of India | Updated: January 07, 2014 23:46 IST


Dhaka: Seven activists of the opposition BNP and Jamaat-e-Islami were arrested for attacks on Bangladesh's minority Hindu community even as Prime Minister Sheikh Hasina today promised stern action against the perpetrators.

Two Jamaat activists were arrested yesterday while five Bangladesh Nationalist Party supporters were arrested today for attacks on Hindus in Jessore and Dinajpur.

A senior police office in Dinajpur said they were arrested after victims named those responsible for the attacks.

The Hindus were targeted after members of the community voted in defiance of the opposition's call to boycott Sunday's controversial general elections that were swept by Hasina's Awami League party.

The worst attacks were reported from western Jessore on election day, when suspected opposition activists vandalised 130 Hindu homes and torched another 10 in Malopara village.

Police said 70 to 80 men attacked Malopara. Opposition activists threatened Hindus with dire consequences for voting,prompting the army's intervention.

According to media reports, Hindus were also attacked in Lalmonirhat, Gaibandha and Thakurgaon in the same region.

Hasina condemned the attacks and told a meeting of her victorious Awami League-led alliance: "Everyone responsible for the attacks on the minority community will face stern punishment. I have never compromised with terrorism."

She said the paramilitary Border Guard Bangladesh, anti-crime Rapid Action Battalion and police have launched a massive campaign to track down those responsible for attacks.

Hasina accused the BNP and the fundamentalist Jamaat-e-Islami of intimidating Hindus on the grounds that they are perceived as traditional supporters of her Awami League.

"The attack on the minority community indicates that the character of BNP and Jamaat-e-Islami remains unchanged," she said.

Seven arrested for attacks on Hindus in Bangladesh | NDTV.com
 
Back
Top Bottom