What's new

USA increasing its Naval Power in Asia

EastBengalPro

FULL MEMBER
Joined
Jun 3, 2014
Messages
690
Reaction score
0
Country
Bangladesh
Location
Bangladesh
আলফাজ আনাম

অর্থনৈতিক ও কৌশলগত গুরুত্ব বিবেচনায় এশিয়া এখন যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। আঞ্চলিক শক্তি থেকে পরাশক্তি হিসেবে চীনের উত্থান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। চীনের বিপরীতে ভারতের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপকভিত্তিক সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে উঠলেও এ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বিশেষ করে নৌশক্তির উপস্থিতি ভারত তার কর্তৃত্বের জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে।


ইতোমধ্যেই জ্বালানি নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক প্রভাব বিস্তারকে সামনে রেখে সম্প্রতি এ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে যুত্তরাষ্ট্র। একই সাথে ছোট দেশগুলোর সাথে সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক বাড়ানোর দিকেও বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।


এশিয়ায় বাড়ছে রণতরী
সম্প্রতি মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিওন প্যানেটা ঘোষণা দেন, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র নৌশক্তি আরো জোরদার করবে। ২০২০ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের মোট যুদ্ধজাহাজের ৬০ শতাংশই এ অঞ্চলে মোতায়েন করা হবে। সিঙ্গাপুরে একটি আঞ্চলিক নিরাপত্তা সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন। সম্মেলনে ৩০ টি দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এশিয়া বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে উল্লেখ করে প্যানেটা বলেন, যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় সামরিক অংশীদারির আওতা বাড়ানো হবে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভবিষ্যতের জন্য এলাকাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সেখানে জোরালো প্রভাব নিশ্চিত করতে ‘সুচিন্তিত ও সুদৃঢ়’ উদ্যোগের অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যদিও তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই কৌশলগত পরিবর্তনের উদ্দেশ্য চীনকে প্রতিহত করা নয়, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণায় চীন ইতোমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। চীনের আশঙ্কা, দক্ষিণ চীন সাগরসহ এ অঞ্চলে চীনের নৌশক্তি বাড়ানোর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র তাদের নৌশক্তি বাড়াচ্ছে।


প্রশান্ত ও আটলান্টিক মহাসাগর অঞ্চলে বর্তমানে প্রায় সমানসংখ্যক মার্কিন নৌবহর মোতায়েন রয়েছে। ২০২০ সালের মধ্যে ওই দুই অঞ্চলে যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা যথাক্রমে ৬০ ও ৪০ শতাংশ করা হবে। এ ছাড়া ডুবোজাহাজ ও নৌযুদ্ধের বিভিন্ন সরঞ্জাম ছাড়াও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মোতায়েন করা হবে যুদ্ধবিমানবাহী ছয়টি রণতরি। মোট ১১টি জঙ্গিবিমানবাহী রণতরির ছয়টি এখন এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মোতায়েন রয়েছে। এর মধ্যে ইউএসএস এন্টারপ্রাইজ চলতি বছর নৌবহর থেকে বাদ পড়লে সেই সংখ্যা পাঁচটিতে নেমে আসবে। তবে ২০১৫ সালে ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড নামে নতুন একটি রণতরী সেখানে পাঠানো হবে। পেন্টাগন বলছে, বাজেটে কাটছাঁটের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবহরের আকার আগামী কয়েক বছরে ছোট করার সম্ভাবনা রয়েছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা যেকোনো মূল্যে বাড়ানো হবে।


চীন-ভারতের অবস্থান
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর এ ঘোষণার মধ্যে চীন ও ভারত প্রথমবারের মতো নৌকার্যক্রম বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছে। এক দিকে মার্কিন রণতরী বাড়ানোর ঘোষণা, অপর দিকে ভারতকে ঘিরে রেখে চীনের নৌ-উপস্থিতি বাড়ানোয় উদ্বিগ্ন ভারত। মিয়ানমারের সিতওয়া ও কোকো দ্বীপ, শ্রীলঙ্কার হাম্বানতোতা, পাকিস্তানের গোয়াদরে চীন বন্দর নির্মাণ করেছে। বাংলাদেশেও গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের ব্যাপারে চীনের আগ্রহ রয়েছে। একই সাথে বাংলাদেশের নৌবাহিনীর সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বাড়ানোকেও ভারত ভালোভাবে নিতে পারছে না। ভারত বিষয়টিকে দেখছে বঙ্গোপসাগরে মার্কিন উপস্থিতির কৌশল হিসেবে। ২০১১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এশিয়ার ২৪টি দেশের সাথে ১৭২টি নৌমহড়ায় অংশ নিয়েছে।



মার্কিন রণতরীর অবস্থান
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন নৌশক্তি বাড়ানোর ঘোষণার পর এগুলোর অবস্থান নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। এশিয়ায় মার্কিন রণতরী বা নৌঘাঁটিগুলোর উপস্থিতির চিত্র দেখলে আমরা বুঝতে পারব জালের মতো এশিয়াকে ঘিরে রেখেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ছয়টি নৌবহর বিশ্বজুড়ে সমুদ্রসীমা নিয়ন্ত্রণ করছে : ১. পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য তৃতীয় নৌবহর। হেডকোয়ার্টার ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়াগো। ২. দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের জন্য চতুর্থ নৌবহর। হেড কোয়ার্টার ফ্লোরিডার মে পোর্ট। ৩. আরব সাগর ও মধ্যপ্রাচ্যের জন্য পঞ্চম নৌবহর। হেড কোয়ার্টার মানামা ও বাহরাইন। ৪. ভূমধ্যসাগর ও ইউরোপীয় অঞ্চলের জন্য ষষ্ঠ নৌবহর। হেড কোয়ার্টার গেতে, ইতালি। ৫. এশিয়া ও পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহর যা সপ্তম নৌবহর নামে পরিচিত। হেড কোয়ার্টার ইয়োকোসুকা, জাপান। ৬. অ্যান্টি-সাবমেরিন যুদ্ধ বিষয়ে গঠন করা হয়েছে দশম নৌবহর। হেড কোয়ার্টার মেরিল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র।



পঞ্চম নৌবহর
পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন নজরদারি বাড়ানোর লক্ষ্যে বাহরাইনে অবস্থান করছে পঞ্চম নৌবহর। এর হেড কোয়ার্টার বাহরাইনের রাজধানী মানামায়। ১৯৭১ সালে দেশটিতে নৌঘাঁটি স্থাপন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি ৫৮ কোটি ডলার ব্যয়ে এই নৌঘাঁটির আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এই নৌবহর পারস্য উপসাগর, লোহিতসাগর, আরব সাগর এবং পূর্ব আফ্রিকা ও কেনিয়ায় মার্কিন সামরিক প্রভাব বজায় রাখার দায়িত্ব পালন করে। আফ্রিকার জিবুতিতে যে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি রয়েছে সেটিও এই নৌবহরের আওতাভুক্ত। ইরাক যুদ্ধে এই নৌবহর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অপারেশন এনডিউরিং ফ্রিডম ও অপরাশেন নিউ ডন নামে ইরাক যুদ্ধে দু’টি সামরিক অভিযান চালানো হয় এই ঘাঁটি থেকে। বাহরাইন ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাতে দু’টি নৌঘাঁটি রয়েছে। এর একটি ফুজাইরাহতে, অপরটি দুবাইয়ের পোর্ট জুবেল আলীতে। এ ছাড়া কাতারে রয়েছে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি। এই নৌবহর ও সামরিক ঘাঁটি থেকে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় মার্কিন সামরিক নজরদারি নিশ্চিত করা হয়।



সপ্তম নৌবহর
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মার্কিন নৌ-আধিপত্য বজায় রাখছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহর বা সপ্তম নৌবহর। দক্ষিণ চীন সাগর, ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগরের ওপর নজর রাখে এই নৌবহর। জাপানের ইয়োকোসুকায় এই হেডকোয়ার্টার দক্ষিণ কোরিয়ারও কাছাকাছি। কোরিয়া যুদ্ধ, ভিয়েতনাম যুদ্ধ ও উপসাগরীয় যুদ্ধে এই নৌবহর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় নৌবহর সপ্তম নৌবহর। ১০টি টাস্কফোর্সে ৫০ থেকে ৬০টি জাহাজ, ৩৫০টির মতো এয়ারক্রাফট, ৬০ হাজার নৌ ও মেরিন সৈন্য এই নৌবহরে দায়িত্ব পালন করে। এই নৌবহরের আওতায় এশিয়ার সমুদ্র অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ১৮টি জাহাজ স্থায়ীভাবে মোতায়েন রয়েছে। সপ্তম নৌবহরের আওতায় বেশ কয়েকটি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে।



গুয়াম
পশ্চিম প্রশান্ত মহসাগরের দ্বীপ গুয়াম। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপগুলোর একটি গুয়াম। ৫৪১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দ্বীপটির ৩৯ শতাংশ মার্কিন সামরিক স্থাপনার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে মার্কিন নৌঘাঁটি ছাড়াও অ্যান্ডারসন বিমানঘাঁটি, অপরা পোতাশ্রয়, নেভাল কম্পিউটার ও টেলিকমিউনিকেশন স্টেশন এবং জয়েন্ট ফোর্সের হেড কোয়ার্টার রয়েছে। গুয়াম দ্বীপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমুদ্র ও আকাশ যুদ্ধের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হবে। গুয়াম নৌঘাঁটি গুরুত্বপূর্ণ সাবমেরিন স্কোয়াড্রন-১৫ কমান্ডারের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হয়। মার্কিন সেনাবাহিনী প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহর, সপ্তম নৌবহর ও পঞ্চম নৌবহরের বিভিন্ন ধরনের সহায়তা ও যোগাযোগ রক্ষা করা হয় গুয়াম থেকে। গুয়ামের অ্যান্ডারসন বিমানঘাঁটি থেকে যুদ্ধবিমানগুলো বিমান হামলা করে থাকে।



দিয়েগো গার্সিয়া
ভারত মহাসাগরে মার্কিন নৌবাহিনীর সবচেয়ে বড় নৌঘাঁটি দিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপ। সপ্তম নৌবহরের আওতায় এই দ্বীপটি ভারতের দক্ষিণ উপকূল থেকে ১২০০ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণে এবং আফ্রিকা উপকূল থেকে ১৮০০ নটিক্যাল পূর্বে। এ দ্বীপে নৌবহরের অনেক জাহাজ ও সাবমেরিন সহায়ক ঘাটি রয়েছে। এ ছাড়া সামরিক বিমানঘাঁটিও রয়েছে। একসময়ের ব্রিটিশশাসিত এই দ্বীপে ১৯৭১ সালে ঘাঁটি স্থাপনের কাজ শুরু করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এরপর ধাপে ধাপে বৃহৎ সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করা হয়। দ্বীপটিতে ১২ হাজার ফুট দীর্ঘ দু’টি রানওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে বোমারু বিমানগুলো নামতে পারে। এই বিমানঘাঁটি থেকে ইরাক-কুয়েত যুদ্ধে বি-৫২ বোমারু বিমান ব্যাপক বোমাবর্ষণ করে আবার এখানে ফিরে আসত। ২০০১ সালে আফগান ও ইরাক যুদ্ধেও মার্কিন যুদ্ধবিমানগুলো দিয়েগো গার্সিয়ার বিমানঘাঁটি ব্যবহার করেছে।


গভীর সমুদ্রে মার্কিন ও ব্রিটিশ জাহাজগুলো ভেড়ার মতো স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। এয়ারক্রাফট হ্যাঙ্গার, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ভবন এবং বিশাল এয়ার টার্মিনাল স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৩ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল জ্বালানি মজুদের ব্যবস্থা রয়েছে এ দ্বীপে। একসময় ভারতের পক্ষ থেকে দ্বীপটিকে সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহারের সমালোচনা করা হলেও এখন আর ভারতের রাজনীতিবিদেরা এর সমালোচনা করেন না। ২০০১ সাল থেকে বিভিন্ন সময় ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের নৌ ও সেনাবাহিনী দিয়েগো গার্সিয়ায় সামরিক মহড়ায় অংশ নিয়েছে।


গুয়ানতানামো বে’র মতো দিয়েগো গার্সিয়ার সামরিক ঘাঁটিতে বন্দী নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। ২০০৭ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অল পার্টি ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটি ঘোষণা করে, দিয়েগো গার্সিয়ায় বন্দী নির্যাতনের অভিযোগ তারা তদন্ত করবে।


ইয়োকোসুকা নৌঘাঁটি, জাপান
জাপানে বিভিন্ন দ্বীপে মার্কিন বিমান ও নৌবাহিনীর অনেক ঘাঁটি রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা চুক্তির আওতায় এসব ঘাঁটি স্থাপন করা হয়। ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, ৩৫ হাজার ৬৮৮ মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা জাপানে কর্মরত রয়েছে। এর সাথে কর্মরত রয়েছে পাঁচ হাজার ৫০০ বেসামরিক নাগরিক। মার্কিন সপ্তম নৌবহরের ঘাঁটি রয়েছে ইয়োকোসুকাতে, তৃতীয় মেরিন এক্সপিডিটেশনারি ফোর্সের ঘাঁটি রয়েছে ওকিনাওয়া দ্বীপে, মার্কিন বিমান বাহিনীর দু’টি ঘাঁটি রয়েছে মিসওয়া ও কাদিনা দ্বীপে। এ ছাড়া জাপানের বিভিন্ন দ্বীপে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি রয়েছে। সপ্তম নৌবহরের কমান্ড শিপ ইউএসএস ব্লু রিজ-এর অবস্থান ইয়োকোসুকায়। এখানে রয়েছে এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার জর্জ ওয়াশিংটন, ডেস্ট্রয়ার স্কোয়াড্রন-১৫-এর অবস্থানও এখানে।


সপ্তম নৌবহর পরিচালিত হয় জাপান থেকে। জাপানের বিভিন্ন দ্বীপে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি নিয়ে জাপানিদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। ওকিনাওয়া দ্বীপের জাপানি নাগরিকদের আন্দোলন বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সময় আলোচিত হয়েছে। ইতোমধ্যে ওকিনাওয়া দ্বীপ থেকে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি কমানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইয়োকোসুকা দ্বীপেও একাধিক মার্কিন নাগরিক খুনের ঘটনা ঘটেছে। মার্কিন সেনাসদস্যদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।



দক্ষিণ কোরিয়া
জাপানের পর এশিয়ায় মার্কিন সামরিক উপস্থিতি রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে সামরিক বাহিনীর ছোট-বড় মিলিয়ে ১১টি ঘাঁটি রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে রয়েছে নৌঘাঁটি। সপ্তম নৌবহরের আওতায় এই নৌঘাঁটি পরিচালিত হয়।



ভারতের চাপ বাড়ছে
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এশিয়ায় মার্কিন নৌশক্তি বাড়তে থাকে। জাপান হয়ে ওঠে এ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক শক্তির মূল কেন্দ্রবিন্দু। ব্রিটিশদের কাছ থেকে দিয়েগো গার্সিয়ায় ঘাঁটি গাড়ার সুযোগ পাওয়ার পর থেকে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি আরো বাড়তে থাকে। বিশ্বরাজনীতিতে চীনের সামরিক ও অর্থনৈতিক আধিপত্য যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া নীতিতে যে পরিবর্তন আনে, মিয়ানমারের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সে গুরুত্ব আরো বেড়ে যায়। বাংলাদেশ, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার মতো সমুদ্র উপকূলের ছোট দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক হয়ে ওঠে অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। এসব দেশের নৌবাহিনীর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। ভবিষ্যতে তা আরো বাড়বে বলে আভাস দিচ্ছে মার্কিন সামরিক ও বেসামরিক নেতৃত্ব। তারা ঢাকাকে যেমন দেখছেন না দিল্লির চোখে, তেমনি নাইপিডোকে দেখছে না বেইজিংয়ের চোখে। ফলে ছোট ছোট এসব দেশের গুরুত্ব যেমন বাড়ছে, তেমনি ঝুঁকিও বাড়ছে।

আঞ্চলিক শক্তি বিশেষ করে ভারত চায় না এ অঞ্চলের ছোট দেশগুলো সামরিক শক্তি বাড়–ক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঘনিষ্ট সর্ম্পককেও ভারত দেখছে সন্দেহের চোখে। মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর ওয়াশিংটন চাইছে বাংলাদেশের সাথে মিয়ানমারের সর্ম্পক ঘনিষ্ট হোক। এখানে রয়েছে দিল্লির আপত্তি, মিয়ানমার ও আসিয়ানের দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের ঘনিষ্ট সর্ম্পকের ক্ষেত্রে ভারতের রয়েছে অনাগ্রহ। কারণ এর ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে ভারত নির্ভরতা আর থাকবে না। দক্ষিণ এশিয়ায় ইতোমধ্যে শ্রীলংকা, মালদ্বীপ ও নেপালে দেশটির প্রভাব অনেকাংশে খর্ব হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য মিয়ানমারের সাথে সর্ম্পক জোরদারের উদ্যেগ নিতে হবে। আর এখানেই বাংলাদেশের ওপর থাকবে ভারতের নানামুখী চাপ। আঞ্চলিক শক্তি ও পরাশক্তির মাঝে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানের ওপর নির্ভর করবে বাংলাদেশের মতো ছোট দেশগুলোর সার্বভৌমত্ব ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন। না হলে এসব দেশকে জ্বলতে হবে চুলা থেকে চুল্লির আগুনে।

Source: onnodiganta
 
Last edited:
অর্থনৈতিক ও কৌশলগত গুরুত্ব বিবেচনায় এশিয়া এখন যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। আঞ্চলিক শক্তি থেকে পরাশক্তি হিসেবে চীনের উত্থান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। চীনের বিপরীতে ভারতের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপকভিত্তিক সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে উঠলেও এ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বিশেষ করে নৌশক্তির উপস্থিতি ভারত তার কর্তৃত্বের জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে।


ইতোমধ্যেই জ্বালানি নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক প্রভাব বিস্তারকে সামনে রেখে সম্প্রতি এ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে যুত্তরাষ্ট্র। একই সাথে ছোট দেশগুলোর সাথে সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক বাড়ানোর দিকেও বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।


এশিয়ায় বাড়ছে রণতরী
সম্প্রতি মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিওন প্যানেটা ঘোষণা দেন, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র নৌশক্তি আরো জোরদার করবে। ২০২০ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের মোট যুদ্ধজাহাজের ৬০ শতাংশই এ অঞ্চলে মোতায়েন করা হবে। সিঙ্গাপুরে একটি আঞ্চলিক নিরাপত্তা সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন। সম্মেলনে ৩০ টি দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এশিয়া বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে উল্লেখ করে প্যানেটা বলেন, যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় সামরিক অংশীদারির আওতা বাড়ানো হবে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভবিষ্যতের জন্য এলাকাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সেখানে জোরালো প্রভাব নিশ্চিত করতে ‘সুচিন্তিত ও সুদৃঢ়’ উদ্যোগের অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যদিও তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই কৌশলগত পরিবর্তনের উদ্দেশ্য চীনকে প্রতিহত করা নয়, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণায় চীন ইতোমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। চীনের আশঙ্কা, দক্ষিণ চীন সাগরসহ এ অঞ্চলে চীনের নৌশক্তি বাড়ানোর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র তাদের নৌশক্তি বাড়াচ্ছে।


প্রশান্ত ও আটলান্টিক মহাসাগর অঞ্চলে বর্তমানে প্রায় সমানসংখ্যক মার্কিন নৌবহর মোতায়েন রয়েছে। ২০২০ সালের মধ্যে ওই দুই অঞ্চলে যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা যথাক্রমে ৬০ ও ৪০ শতাংশ করা হবে। এ ছাড়া ডুবোজাহাজ ও নৌযুদ্ধের বিভিন্ন সরঞ্জাম ছাড়াও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মোতায়েন করা হবে যুদ্ধবিমানবাহী ছয়টি রণতরি। মোট ১১টি জঙ্গিবিমানবাহী রণতরির ছয়টি এখন এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মোতায়েন রয়েছে। এর মধ্যে ইউএসএস এন্টারপ্রাইজ চলতি বছর নৌবহর থেকে বাদ পড়লে সেই সংখ্যা পাঁচটিতে নেমে আসবে। তবে ২০১৫ সালে ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড নামে নতুন একটি রণতরী সেখানে পাঠানো হবে। পেন্টাগন বলছে, বাজেটে কাটছাঁটের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবহরের আকার আগামী কয়েক বছরে ছোট করার সম্ভাবনা রয়েছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা যেকোনো মূল্যে বাড়ানো হবে।


চীন-ভারতের অবস্থান
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর এ ঘোষণার মধ্যে চীন ও ভারত প্রথমবারের মতো নৌকার্যক্রম বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছে। এক দিকে মার্কিন রণতরী বাড়ানোর ঘোষণা, অপর দিকে ভারতকে ঘিরে রেখে চীনের নৌ-উপস্থিতি বাড়ানোয় উদ্বিগ্ন ভারত। মিয়ানমারের সিতওয়া ও কোকো দ্বীপ, শ্রীলঙ্কার হাম্বানতোতা, পাকিস্তানের গোয়াদরে চীন বন্দর নির্মাণ করেছে। বাংলাদেশেও গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের ব্যাপারে চীনের আগ্রহ রয়েছে। একই সাথে বাংলাদেশের নৌবাহিনীর সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বাড়ানোকেও ভারত ভালোভাবে নিতে পারছে না। ভারত বিষয়টিকে দেখছে বঙ্গোপসাগরে মার্কিন উপস্থিতির কৌশল হিসেবে। ২০১১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এশিয়ার ২৪টি দেশের সাথে ১৭২টি নৌমহড়ায় অংশ নিয়েছে।



মার্কিন রণতরীর অবস্থান
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন নৌশক্তি বাড়ানোর ঘোষণার পর এগুলোর অবস্থান নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। এশিয়ায় মার্কিন রণতরী বা নৌঘাঁটিগুলোর উপস্থিতির চিত্র দেখলে আমরা বুঝতে পারব জালের মতো এশিয়াকে ঘিরে রেখেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ছয়টি নৌবহর বিশ্বজুড়ে সমুদ্রসীমা নিয়ন্ত্রণ করছে : ১. পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য তৃতীয় নৌবহর। হেডকোয়ার্টার ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়াগো। ২. দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের জন্য চতুর্থ নৌবহর। হেড কোয়ার্টার ফ্লোরিডার মে পোর্ট। ৩. আরব সাগর ও মধ্যপ্রাচ্যের জন্য পঞ্চম নৌবহর। হেড কোয়ার্টার মানামা ও বাহরাইন। ৪. ভূমধ্যসাগর ও ইউরোপীয় অঞ্চলের জন্য ষষ্ঠ নৌবহর। হেড কোয়ার্টার গেতে, ইতালি। ৫. এশিয়া ও পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহর যা সপ্তম নৌবহর নামে পরিচিত। হেড কোয়ার্টার ইয়োকোসুকা, জাপান। ৬. অ্যান্টি-সাবমেরিন যুদ্ধ বিষয়ে গঠন করা হয়েছে দশম নৌবহর। হেড কোয়ার্টার মেরিল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র।



পঞ্চম নৌবহর
পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন নজরদারি বাড়ানোর লক্ষ্যে বাহরাইনে অবস্থান করছে পঞ্চম নৌবহর। এর হেড কোয়ার্টার বাহরাইনের রাজধানী মানামায়। ১৯৭১ সালে দেশটিতে নৌঘাঁটি স্থাপন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি ৫৮ কোটি ডলার ব্যয়ে এই নৌঘাঁটির আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এই নৌবহর পারস্য উপসাগর, লোহিতসাগর, আরব সাগর এবং পূর্ব আফ্রিকা ও কেনিয়ায় মার্কিন সামরিক প্রভাব বজায় রাখার দায়িত্ব পালন করে। আফ্রিকার জিবুতিতে যে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি রয়েছে সেটিও এই নৌবহরের আওতাভুক্ত। ইরাক যুদ্ধে এই নৌবহর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অপারেশন এনডিউরিং ফ্রিডম ও অপরাশেন নিউ ডন নামে ইরাক যুদ্ধে দু’টি সামরিক অভিযান চালানো হয় এই ঘাঁটি থেকে। বাহরাইন ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাতে দু’টি নৌঘাঁটি রয়েছে। এর একটি ফুজাইরাহতে, অপরটি দুবাইয়ের পোর্ট জুবেল আলীতে। এ ছাড়া কাতারে রয়েছে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি। এই নৌবহর ও সামরিক ঘাঁটি থেকে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় মার্কিন সামরিক নজরদারি নিশ্চিত করা হয়।



সপ্তম নৌবহর
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মার্কিন নৌ-আধিপত্য বজায় রাখছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহর বা সপ্তম নৌবহর। দক্ষিণ চীন সাগর, ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগরের ওপর নজর রাখে এই নৌবহর। জাপানের ইয়োকোসুকায় এই হেডকোয়ার্টার দক্ষিণ কোরিয়ারও কাছাকাছি। কোরিয়া যুদ্ধ, ভিয়েতনাম যুদ্ধ ও উপসাগরীয় যুদ্ধে এই নৌবহর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় নৌবহর সপ্তম নৌবহর। ১০টি টাস্কফোর্সে ৫০ থেকে ৬০টি জাহাজ, ৩৫০টির মতো এয়ারক্রাফট, ৬০ হাজার নৌ ও মেরিন সৈন্য এই নৌবহরে দায়িত্ব পালন করে। এই নৌবহরের আওতায় এশিয়ার সমুদ্র অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ১৮টি জাহাজ স্থায়ীভাবে মোতায়েন রয়েছে। সপ্তম নৌবহরের আওতায় বেশ কয়েকটি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে।



গুয়াম
পশ্চিম প্রশান্ত মহসাগরের দ্বীপ গুয়াম। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপগুলোর একটি গুয়াম। ৫৪১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দ্বীপটির ৩৯ শতাংশ মার্কিন সামরিক স্থাপনার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে মার্কিন নৌঘাঁটি ছাড়াও অ্যান্ডারসন বিমানঘাঁটি, অপরা পোতাশ্রয়, নেভাল কম্পিউটার ও টেলিকমিউনিকেশন স্টেশন এবং জয়েন্ট ফোর্সের হেড কোয়ার্টার রয়েছে। গুয়াম দ্বীপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমুদ্র ও আকাশ যুদ্ধের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হবে। গুয়াম নৌঘাঁটি গুরুত্বপূর্ণ সাবমেরিন স্কোয়াড্রন-১৫ কমান্ডারের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হয়। মার্কিন সেনাবাহিনী প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহর, সপ্তম নৌবহর ও পঞ্চম নৌবহরের বিভিন্ন ধরনের সহায়তা ও যোগাযোগ রক্ষা করা হয় গুয়াম থেকে। গুয়ামের অ্যান্ডারসন বিমানঘাঁটি থেকে যুদ্ধবিমানগুলো বিমান হামলা করে থাকে।



দিয়েগো গার্সিয়া
ভারত মহাসাগরে মার্কিন নৌবাহিনীর সবচেয়ে বড় নৌঘাঁটি দিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপ। সপ্তম নৌবহরের আওতায় এই দ্বীপটি ভারতের দক্ষিণ উপকূল থেকে ১২০০ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণে এবং আফ্রিকা উপকূল থেকে ১৮০০ নটিক্যাল পূর্বে। এ দ্বীপে নৌবহরের অনেক জাহাজ ও সাবমেরিন সহায়ক ঘাটি রয়েছে। এ ছাড়া সামরিক বিমানঘাঁটিও রয়েছে। একসময়ের ব্রিটিশশাসিত এই দ্বীপে ১৯৭১ সালে ঘাঁটি স্থাপনের কাজ শুরু করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এরপর ধাপে ধাপে বৃহৎ সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করা হয়। দ্বীপটিতে ১২ হাজার ফুট দীর্ঘ দু’টি রানওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে বোমারু বিমানগুলো নামতে পারে। এই বিমানঘাঁটি থেকে ইরাক-কুয়েত যুদ্ধে বি-৫২ বোমারু বিমান ব্যাপক বোমাবর্ষণ করে আবার এখানে ফিরে আসত। ২০০১ সালে আফগান ও ইরাক যুদ্ধেও মার্কিন যুদ্ধবিমানগুলো দিয়েগো গার্সিয়ার বিমানঘাঁটি ব্যবহার করেছে।


গভীর সমুদ্রে মার্কিন ও ব্রিটিশ জাহাজগুলো ভেড়ার মতো স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। এয়ারক্রাফট হ্যাঙ্গার, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ভবন এবং বিশাল এয়ার টার্মিনাল স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৩ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল জ্বালানি মজুদের ব্যবস্থা রয়েছে এ দ্বীপে। একসময় ভারতের পক্ষ থেকে দ্বীপটিকে সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহারের সমালোচনা করা হলেও এখন আর ভারতের রাজনীতিবিদেরা এর সমালোচনা করেন না। ২০০১ সাল থেকে বিভিন্ন সময় ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের নৌ ও সেনাবাহিনী দিয়েগো গার্সিয়ায় সামরিক মহড়ায় অংশ নিয়েছে।


গুয়ানতানামো বে’র মতো দিয়েগো গার্সিয়ার সামরিক ঘাঁটিতে বন্দী নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। ২০০৭ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অল পার্টি ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটি ঘোষণা করে, দিয়েগো গার্সিয়ায় বন্দী নির্যাতনের অভিযোগ তারা তদন্ত করবে।


ইয়োকোসুকা নৌঘাঁটি, জাপান
জাপানে বিভিন্ন দ্বীপে মার্কিন বিমান ও নৌবাহিনীর অনেক ঘাঁটি রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা চুক্তির আওতায় এসব ঘাঁটি স্থাপন করা হয়। ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, ৩৫ হাজার ৬৮৮ মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা জাপানে কর্মরত রয়েছে। এর সাথে কর্মরত রয়েছে পাঁচ হাজার ৫০০ বেসামরিক নাগরিক। মার্কিন সপ্তম নৌবহরের ঘাঁটি রয়েছে ইয়োকোসুকাতে, তৃতীয় মেরিন এক্সপিডিটেশনারি ফোর্সের ঘাঁটি রয়েছে ওকিনাওয়া দ্বীপে, মার্কিন বিমান বাহিনীর দু’টি ঘাঁটি রয়েছে মিসওয়া ও কাদিনা দ্বীপে। এ ছাড়া জাপানের বিভিন্ন দ্বীপে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি রয়েছে। সপ্তম নৌবহরের কমান্ড শিপ ইউএসএস ব্লু রিজ-এর অবস্থান ইয়োকোসুকায়। এখানে রয়েছে এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার জর্জ ওয়াশিংটন, ডেস্ট্রয়ার স্কোয়াড্রন-১৫-এর অবস্থানও এখানে।


সপ্তম নৌবহর পরিচালিত হয় জাপান থেকে। জাপানের বিভিন্ন দ্বীপে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি নিয়ে জাপানিদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। ওকিনাওয়া দ্বীপের জাপানি নাগরিকদের আন্দোলন বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সময় আলোচিত হয়েছে। ইতোমধ্যে ওকিনাওয়া দ্বীপ থেকে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি কমানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইয়োকোসুকা দ্বীপেও একাধিক মার্কিন নাগরিক খুনের ঘটনা ঘটেছে। মার্কিন সেনাসদস্যদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।



দক্ষিণ কোরিয়া
জাপানের পর এশিয়ায় মার্কিন সামরিক উপস্থিতি রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে সামরিক বাহিনীর ছোট-বড় মিলিয়ে ১১টি ঘাঁটি রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে রয়েছে নৌঘাঁটি। সপ্তম নৌবহরের আওতায় এই নৌঘাঁটি পরিচালিত হয়।



ভারতের চাপ বাড়ছে
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এশিয়ায় মার্কিন নৌশক্তি বাড়তে থাকে। জাপান হয়ে ওঠে এ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক শক্তির মূল কেন্দ্রবিন্দু। ব্রিটিশদের কাছ থেকে দিয়েগো গার্সিয়ায় ঘাঁটি গাড়ার সুযোগ পাওয়ার পর থেকে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি আরো বাড়তে থাকে। বিশ্বরাজনীতিতে চীনের সামরিক ও অর্থনৈতিক আধিপত্য যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া নীতিতে যে পরিবর্তন আনে, মিয়ানমারের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সে গুরুত্ব আরো বেড়ে যায়। বাংলাদেশ, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার মতো সমুদ্র উপকূলের ছোট দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক হয়ে ওঠে অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। এসব দেশের নৌবাহিনীর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। ভবিষ্যতে তা আরো বাড়বে বলে আভাস দিচ্ছে মার্কিন সামরিক ও বেসামরিক নেতৃত্ব। তারা ঢাকাকে যেমন দেখছেন না দিল্লির চোখে, তেমনি নাইপিডোকে দেখছে না বেইজিংয়ের চোখে। ফলে ছোট ছোট এসব দেশের গুরুত্ব যেমন বাড়ছে, তেমনি ঝুঁকিও বাড়ছে।

আঞ্চলিক শক্তি বিশেষ করে ভারত চায় না এ অঞ্চলের ছোট দেশগুলো সামরিক শক্তি বাড়–ক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঘনিষ্ট সর্ম্পককেও ভারত দেখছে সন্দেহের চোখে। মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর ওয়াশিংটন চাইছে বাংলাদেশের সাথে মিয়ানমারের সর্ম্পক ঘনিষ্ট হোক। এখানে রয়েছে দিল্লির আপত্তি, মিয়ানমার ও আসিয়ানের দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের ঘনিষ্ট সর্ম্পকের ক্ষেত্রে ভারতের রয়েছে অনাগ্রহ। কারণ এর ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে ভারত নির্ভরতা আর থাকবে না। দক্ষিণ এশিয়ায় ইতোমধ্যে শ্রীলংকা, মালদ্বীপ ও নেপালে দেশটির প্রভাব অনেকাংশে খর্ব হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য মিয়ানমারের সাথে সর্ম্পক জোরদারের উদ্যেগ নিতে হবে। আর এখানেই বাংলাদেশের ওপর থাকবে ভারতের নানামুখী চাপ। আঞ্চলিক শক্তি ও পরাশক্তির মাঝে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানের ওপর নির্ভর করবে বাংলাদেশের মতো ছোট দেশগুলোর সার্বভৌমত্ব ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন। না হলে এসব দেশকে জ্বলতে হবে চুলা থেকে চুল্লির আগুনে।

I agree with the article %100 ... but some typos over there " অবস্থানের" part could be "বাংলাদেশের ".....
 
I agree with the article %100 ... but some typos over there " অবস্থানের" part could be "বাংলাদেশের ".....
How do you agtee with it ? Do you understand Bengali language?...Can someone translate in English?
 
আলফাজ আনাম

অর্থনৈতিক ও কৌশলগত গুরুত্ব বিবেচনায় এশিয়া এখন যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। আঞ্চলিক শক্তি থেকে পরাশক্তি হিসেবে চীনের উত্থান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। চীনের বিপরীতে ভারতের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপকভিত্তিক সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে উঠলেও এ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বিশেষ করে নৌশক্তির উপস্থিতি ভারত তার কর্তৃত্বের জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে।


ইতোমধ্যেই জ্বালানি নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক প্রভাব বিস্তারকে সামনে রেখে সম্প্রতি এ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে যুত্তরাষ্ট্র। একই সাথে ছোট দেশগুলোর সাথে সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক বাড়ানোর দিকেও বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।


এশিয়ায় বাড়ছে রণতরী
সম্প্রতি মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিওন প্যানেটা ঘোষণা দেন, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র নৌশক্তি আরো জোরদার করবে। ২০২০ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের মোট যুদ্ধজাহাজের ৬০ শতাংশই এ অঞ্চলে মোতায়েন করা হবে। সিঙ্গাপুরে একটি আঞ্চলিক নিরাপত্তা সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন। সম্মেলনে ৩০ টি দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এশিয়া বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে উল্লেখ করে প্যানেটা বলেন, যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় সামরিক অংশীদারির আওতা বাড়ানো হবে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভবিষ্যতের জন্য এলাকাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সেখানে জোরালো প্রভাব নিশ্চিত করতে ‘সুচিন্তিত ও সুদৃঢ়’ উদ্যোগের অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যদিও তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই কৌশলগত পরিবর্তনের উদ্দেশ্য চীনকে প্রতিহত করা নয়, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণায় চীন ইতোমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। চীনের আশঙ্কা, দক্ষিণ চীন সাগরসহ এ অঞ্চলে চীনের নৌশক্তি বাড়ানোর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র তাদের নৌশক্তি বাড়াচ্ছে।


প্রশান্ত ও আটলান্টিক মহাসাগর অঞ্চলে বর্তমানে প্রায় সমানসংখ্যক মার্কিন নৌবহর মোতায়েন রয়েছে। ২০২০ সালের মধ্যে ওই দুই অঞ্চলে যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা যথাক্রমে ৬০ ও ৪০ শতাংশ করা হবে। এ ছাড়া ডুবোজাহাজ ও নৌযুদ্ধের বিভিন্ন সরঞ্জাম ছাড়াও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মোতায়েন করা হবে যুদ্ধবিমানবাহী ছয়টি রণতরি। মোট ১১টি জঙ্গিবিমানবাহী রণতরির ছয়টি এখন এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মোতায়েন রয়েছে। এর মধ্যে ইউএসএস এন্টারপ্রাইজ চলতি বছর নৌবহর থেকে বাদ পড়লে সেই সংখ্যা পাঁচটিতে নেমে আসবে। তবে ২০১৫ সালে ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড নামে নতুন একটি রণতরী সেখানে পাঠানো হবে। পেন্টাগন বলছে, বাজেটে কাটছাঁটের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবহরের আকার আগামী কয়েক বছরে ছোট করার সম্ভাবনা রয়েছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা যেকোনো মূল্যে বাড়ানো হবে।


চীন-ভারতের অবস্থান
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর এ ঘোষণার মধ্যে চীন ও ভারত প্রথমবারের মতো নৌকার্যক্রম বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছে। এক দিকে মার্কিন রণতরী বাড়ানোর ঘোষণা, অপর দিকে ভারতকে ঘিরে রেখে চীনের নৌ-উপস্থিতি বাড়ানোয় উদ্বিগ্ন ভারত। মিয়ানমারের সিতওয়া ও কোকো দ্বীপ, শ্রীলঙ্কার হাম্বানতোতা, পাকিস্তানের গোয়াদরে চীন বন্দর নির্মাণ করেছে। বাংলাদেশেও গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের ব্যাপারে চীনের আগ্রহ রয়েছে। একই সাথে বাংলাদেশের নৌবাহিনীর সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বাড়ানোকেও ভারত ভালোভাবে নিতে পারছে না। ভারত বিষয়টিকে দেখছে বঙ্গোপসাগরে মার্কিন উপস্থিতির কৌশল হিসেবে। ২০১১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এশিয়ার ২৪টি দেশের সাথে ১৭২টি নৌমহড়ায় অংশ নিয়েছে।



মার্কিন রণতরীর অবস্থান
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন নৌশক্তি বাড়ানোর ঘোষণার পর এগুলোর অবস্থান নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। এশিয়ায় মার্কিন রণতরী বা নৌঘাঁটিগুলোর উপস্থিতির চিত্র দেখলে আমরা বুঝতে পারব জালের মতো এশিয়াকে ঘিরে রেখেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ছয়টি নৌবহর বিশ্বজুড়ে সমুদ্রসীমা নিয়ন্ত্রণ করছে : ১. পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য তৃতীয় নৌবহর। হেডকোয়ার্টার ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়াগো। ২. দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের জন্য চতুর্থ নৌবহর। হেড কোয়ার্টার ফ্লোরিডার মে পোর্ট। ৩. আরব সাগর ও মধ্যপ্রাচ্যের জন্য পঞ্চম নৌবহর। হেড কোয়ার্টার মানামা ও বাহরাইন। ৪. ভূমধ্যসাগর ও ইউরোপীয় অঞ্চলের জন্য ষষ্ঠ নৌবহর। হেড কোয়ার্টার গেতে, ইতালি। ৫. এশিয়া ও পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহর যা সপ্তম নৌবহর নামে পরিচিত। হেড কোয়ার্টার ইয়োকোসুকা, জাপান। ৬. অ্যান্টি-সাবমেরিন যুদ্ধ বিষয়ে গঠন করা হয়েছে দশম নৌবহর। হেড কোয়ার্টার মেরিল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র।



পঞ্চম নৌবহর
পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন নজরদারি বাড়ানোর লক্ষ্যে বাহরাইনে অবস্থান করছে পঞ্চম নৌবহর। এর হেড কোয়ার্টার বাহরাইনের রাজধানী মানামায়। ১৯৭১ সালে দেশটিতে নৌঘাঁটি স্থাপন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি ৫৮ কোটি ডলার ব্যয়ে এই নৌঘাঁটির আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এই নৌবহর পারস্য উপসাগর, লোহিতসাগর, আরব সাগর এবং পূর্ব আফ্রিকা ও কেনিয়ায় মার্কিন সামরিক প্রভাব বজায় রাখার দায়িত্ব পালন করে। আফ্রিকার জিবুতিতে যে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি রয়েছে সেটিও এই নৌবহরের আওতাভুক্ত। ইরাক যুদ্ধে এই নৌবহর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অপারেশন এনডিউরিং ফ্রিডম ও অপরাশেন নিউ ডন নামে ইরাক যুদ্ধে দু’টি সামরিক অভিযান চালানো হয় এই ঘাঁটি থেকে। বাহরাইন ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাতে দু’টি নৌঘাঁটি রয়েছে। এর একটি ফুজাইরাহতে, অপরটি দুবাইয়ের পোর্ট জুবেল আলীতে। এ ছাড়া কাতারে রয়েছে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি। এই নৌবহর ও সামরিক ঘাঁটি থেকে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় মার্কিন সামরিক নজরদারি নিশ্চিত করা হয়।



সপ্তম নৌবহর
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মার্কিন নৌ-আধিপত্য বজায় রাখছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহর বা সপ্তম নৌবহর। দক্ষিণ চীন সাগর, ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগরের ওপর নজর রাখে এই নৌবহর। জাপানের ইয়োকোসুকায় এই হেডকোয়ার্টার দক্ষিণ কোরিয়ারও কাছাকাছি। কোরিয়া যুদ্ধ, ভিয়েতনাম যুদ্ধ ও উপসাগরীয় যুদ্ধে এই নৌবহর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় নৌবহর সপ্তম নৌবহর। ১০টি টাস্কফোর্সে ৫০ থেকে ৬০টি জাহাজ, ৩৫০টির মতো এয়ারক্রাফট, ৬০ হাজার নৌ ও মেরিন সৈন্য এই নৌবহরে দায়িত্ব পালন করে। এই নৌবহরের আওতায় এশিয়ার সমুদ্র অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ১৮টি জাহাজ স্থায়ীভাবে মোতায়েন রয়েছে। সপ্তম নৌবহরের আওতায় বেশ কয়েকটি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে।



গুয়াম
পশ্চিম প্রশান্ত মহসাগরের দ্বীপ গুয়াম। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপগুলোর একটি গুয়াম। ৫৪১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দ্বীপটির ৩৯ শতাংশ মার্কিন সামরিক স্থাপনার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে মার্কিন নৌঘাঁটি ছাড়াও অ্যান্ডারসন বিমানঘাঁটি, অপরা পোতাশ্রয়, নেভাল কম্পিউটার ও টেলিকমিউনিকেশন স্টেশন এবং জয়েন্ট ফোর্সের হেড কোয়ার্টার রয়েছে। গুয়াম দ্বীপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমুদ্র ও আকাশ যুদ্ধের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হবে। গুয়াম নৌঘাঁটি গুরুত্বপূর্ণ সাবমেরিন স্কোয়াড্রন-১৫ কমান্ডারের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হয়। মার্কিন সেনাবাহিনী প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহর, সপ্তম নৌবহর ও পঞ্চম নৌবহরের বিভিন্ন ধরনের সহায়তা ও যোগাযোগ রক্ষা করা হয় গুয়াম থেকে। গুয়ামের অ্যান্ডারসন বিমানঘাঁটি থেকে যুদ্ধবিমানগুলো বিমান হামলা করে থাকে।



দিয়েগো গার্সিয়া
ভারত মহাসাগরে মার্কিন নৌবাহিনীর সবচেয়ে বড় নৌঘাঁটি দিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপ। সপ্তম নৌবহরের আওতায় এই দ্বীপটি ভারতের দক্ষিণ উপকূল থেকে ১২০০ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণে এবং আফ্রিকা উপকূল থেকে ১৮০০ নটিক্যাল পূর্বে। এ দ্বীপে নৌবহরের অনেক জাহাজ ও সাবমেরিন সহায়ক ঘাটি রয়েছে। এ ছাড়া সামরিক বিমানঘাঁটিও রয়েছে। একসময়ের ব্রিটিশশাসিত এই দ্বীপে ১৯৭১ সালে ঘাঁটি স্থাপনের কাজ শুরু করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এরপর ধাপে ধাপে বৃহৎ সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করা হয়। দ্বীপটিতে ১২ হাজার ফুট দীর্ঘ দু’টি রানওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে বোমারু বিমানগুলো নামতে পারে। এই বিমানঘাঁটি থেকে ইরাক-কুয়েত যুদ্ধে বি-৫২ বোমারু বিমান ব্যাপক বোমাবর্ষণ করে আবার এখানে ফিরে আসত। ২০০১ সালে আফগান ও ইরাক যুদ্ধেও মার্কিন যুদ্ধবিমানগুলো দিয়েগো গার্সিয়ার বিমানঘাঁটি ব্যবহার করেছে।


গভীর সমুদ্রে মার্কিন ও ব্রিটিশ জাহাজগুলো ভেড়ার মতো স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। এয়ারক্রাফট হ্যাঙ্গার, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ভবন এবং বিশাল এয়ার টার্মিনাল স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৩ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল জ্বালানি মজুদের ব্যবস্থা রয়েছে এ দ্বীপে। একসময় ভারতের পক্ষ থেকে দ্বীপটিকে সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহারের সমালোচনা করা হলেও এখন আর ভারতের রাজনীতিবিদেরা এর সমালোচনা করেন না। ২০০১ সাল থেকে বিভিন্ন সময় ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের নৌ ও সেনাবাহিনী দিয়েগো গার্সিয়ায় সামরিক মহড়ায় অংশ নিয়েছে।


গুয়ানতানামো বে’র মতো দিয়েগো গার্সিয়ার সামরিক ঘাঁটিতে বন্দী নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। ২০০৭ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অল পার্টি ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটি ঘোষণা করে, দিয়েগো গার্সিয়ায় বন্দী নির্যাতনের অভিযোগ তারা তদন্ত করবে।


ইয়োকোসুকা নৌঘাঁটি, জাপান
জাপানে বিভিন্ন দ্বীপে মার্কিন বিমান ও নৌবাহিনীর অনেক ঘাঁটি রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা চুক্তির আওতায় এসব ঘাঁটি স্থাপন করা হয়। ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, ৩৫ হাজার ৬৮৮ মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা জাপানে কর্মরত রয়েছে। এর সাথে কর্মরত রয়েছে পাঁচ হাজার ৫০০ বেসামরিক নাগরিক। মার্কিন সপ্তম নৌবহরের ঘাঁটি রয়েছে ইয়োকোসুকাতে, তৃতীয় মেরিন এক্সপিডিটেশনারি ফোর্সের ঘাঁটি রয়েছে ওকিনাওয়া দ্বীপে, মার্কিন বিমান বাহিনীর দু’টি ঘাঁটি রয়েছে মিসওয়া ও কাদিনা দ্বীপে। এ ছাড়া জাপানের বিভিন্ন দ্বীপে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি রয়েছে। সপ্তম নৌবহরের কমান্ড শিপ ইউএসএস ব্লু রিজ-এর অবস্থান ইয়োকোসুকায়। এখানে রয়েছে এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার জর্জ ওয়াশিংটন, ডেস্ট্রয়ার স্কোয়াড্রন-১৫-এর অবস্থানও এখানে।


সপ্তম নৌবহর পরিচালিত হয় জাপান থেকে। জাপানের বিভিন্ন দ্বীপে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি নিয়ে জাপানিদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। ওকিনাওয়া দ্বীপের জাপানি নাগরিকদের আন্দোলন বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সময় আলোচিত হয়েছে। ইতোমধ্যে ওকিনাওয়া দ্বীপ থেকে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি কমানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইয়োকোসুকা দ্বীপেও একাধিক মার্কিন নাগরিক খুনের ঘটনা ঘটেছে। মার্কিন সেনাসদস্যদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।



দক্ষিণ কোরিয়া
জাপানের পর এশিয়ায় মার্কিন সামরিক উপস্থিতি রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে সামরিক বাহিনীর ছোট-বড় মিলিয়ে ১১টি ঘাঁটি রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে রয়েছে নৌঘাঁটি। সপ্তম নৌবহরের আওতায় এই নৌঘাঁটি পরিচালিত হয়।



ভারতের চাপ বাড়ছে
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এশিয়ায় মার্কিন নৌশক্তি বাড়তে থাকে। জাপান হয়ে ওঠে এ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক শক্তির মূল কেন্দ্রবিন্দু। ব্রিটিশদের কাছ থেকে দিয়েগো গার্সিয়ায় ঘাঁটি গাড়ার সুযোগ পাওয়ার পর থেকে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি আরো বাড়তে থাকে। বিশ্বরাজনীতিতে চীনের সামরিক ও অর্থনৈতিক আধিপত্য যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া নীতিতে যে পরিবর্তন আনে, মিয়ানমারের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সে গুরুত্ব আরো বেড়ে যায়। বাংলাদেশ, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার মতো সমুদ্র উপকূলের ছোট দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক হয়ে ওঠে অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। এসব দেশের নৌবাহিনীর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। ভবিষ্যতে তা আরো বাড়বে বলে আভাস দিচ্ছে মার্কিন সামরিক ও বেসামরিক নেতৃত্ব। তারা ঢাকাকে যেমন দেখছেন না দিল্লির চোখে, তেমনি নাইপিডোকে দেখছে না বেইজিংয়ের চোখে। ফলে ছোট ছোট এসব দেশের গুরুত্ব যেমন বাড়ছে, তেমনি ঝুঁকিও বাড়ছে।

আঞ্চলিক শক্তি বিশেষ করে ভারত চায় না এ অঞ্চলের ছোট দেশগুলো সামরিক শক্তি বাড়–ক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঘনিষ্ট সর্ম্পককেও ভারত দেখছে সন্দেহের চোখে। মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর ওয়াশিংটন চাইছে বাংলাদেশের সাথে মিয়ানমারের সর্ম্পক ঘনিষ্ট হোক। এখানে রয়েছে দিল্লির আপত্তি, মিয়ানমার ও আসিয়ানের দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের ঘনিষ্ট সর্ম্পকের ক্ষেত্রে ভারতের রয়েছে অনাগ্রহ। কারণ এর ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে ভারত নির্ভরতা আর থাকবে না। দক্ষিণ এশিয়ায় ইতোমধ্যে শ্রীলংকা, মালদ্বীপ ও নেপালে দেশটির প্রভাব অনেকাংশে খর্ব হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য মিয়ানমারের সাথে সর্ম্পক জোরদারের উদ্যেগ নিতে হবে। আর এখানেই বাংলাদেশের ওপর থাকবে ভারতের নানামুখী চাপ। আঞ্চলিক শক্তি ও পরাশক্তির মাঝে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানের ওপর নির্ভর করবে বাংলাদেশের মতো ছোট দেশগুলোর সার্বভৌমত্ব ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন। না হলে এসব দেশকে জ্বলতে হবে চুলা থেকে চুল্লির আগুনে।

Source: onnodiganta
Thanks for opening the thread but you need to post an English article so everyone can understand.
 
i understood all of that

especially since thats the script we know how to read on defence.pk
 
আলফাজ আনাম

অর্থনৈতিক ও কৌশলগত গুরুত্ব বিবেচনায় এশিয়া এখন যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। আঞ্চলিক শক্তি থেকে পরাশক্তি হিসেবে চীনের উত্থান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। চীনের বিপরীতে ভারতের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপকভিত্তিক সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে উঠলেও এ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বিশেষ করে নৌশক্তির উপস্থিতি ভারত তার কর্তৃত্বের জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে।


ইতোমধ্যেই জ্বালানি নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক প্রভাব বিস্তারকে সামনে রেখে সম্প্রতি এ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে যুত্তরাষ্ট্র। একই সাথে ছোট দেশগুলোর সাথে সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক বাড়ানোর দিকেও বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।


এশিয়ায় বাড়ছে রণতরী
সম্প্রতি মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিওন প্যানেটা ঘোষণা দেন, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র নৌশক্তি আরো জোরদার করবে। ২০২০ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের মোট যুদ্ধজাহাজের ৬০ শতাংশই এ অঞ্চলে মোতায়েন করা হবে। সিঙ্গাপুরে একটি আঞ্চলিক নিরাপত্তা সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন। সম্মেলনে ৩০ টি দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এশিয়া বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে উল্লেখ করে প্যানেটা বলেন, যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় সামরিক অংশীদারির আওতা বাড়ানো হবে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভবিষ্যতের জন্য এলাকাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সেখানে জোরালো প্রভাব নিশ্চিত করতে ‘সুচিন্তিত ও সুদৃঢ়’ উদ্যোগের অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যদিও তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই কৌশলগত পরিবর্তনের উদ্দেশ্য চীনকে প্রতিহত করা নয়, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণায় চীন ইতোমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। চীনের আশঙ্কা, দক্ষিণ চীন সাগরসহ এ অঞ্চলে চীনের নৌশক্তি বাড়ানোর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র তাদের নৌশক্তি বাড়াচ্ছে।


প্রশান্ত ও আটলান্টিক মহাসাগর অঞ্চলে বর্তমানে প্রায় সমানসংখ্যক মার্কিন নৌবহর মোতায়েন রয়েছে। ২০২০ সালের মধ্যে ওই দুই অঞ্চলে যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা যথাক্রমে ৬০ ও ৪০ শতাংশ করা হবে। এ ছাড়া ডুবোজাহাজ ও নৌযুদ্ধের বিভিন্ন সরঞ্জাম ছাড়াও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মোতায়েন করা হবে যুদ্ধবিমানবাহী ছয়টি রণতরি। মোট ১১টি জঙ্গিবিমানবাহী রণতরির ছয়টি এখন এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মোতায়েন রয়েছে। এর মধ্যে ইউএসএস এন্টারপ্রাইজ চলতি বছর নৌবহর থেকে বাদ পড়লে সেই সংখ্যা পাঁচটিতে নেমে আসবে। তবে ২০১৫ সালে ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড নামে নতুন একটি রণতরী সেখানে পাঠানো হবে। পেন্টাগন বলছে, বাজেটে কাটছাঁটের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবহরের আকার আগামী কয়েক বছরে ছোট করার সম্ভাবনা রয়েছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা যেকোনো মূল্যে বাড়ানো হবে।


চীন-ভারতের অবস্থান
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর এ ঘোষণার মধ্যে চীন ও ভারত প্রথমবারের মতো নৌকার্যক্রম বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছে। এক দিকে মার্কিন রণতরী বাড়ানোর ঘোষণা, অপর দিকে ভারতকে ঘিরে রেখে চীনের নৌ-উপস্থিতি বাড়ানোয় উদ্বিগ্ন ভারত। মিয়ানমারের সিতওয়া ও কোকো দ্বীপ, শ্রীলঙ্কার হাম্বানতোতা, পাকিস্তানের গোয়াদরে চীন বন্দর নির্মাণ করেছে। বাংলাদেশেও গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের ব্যাপারে চীনের আগ্রহ রয়েছে। একই সাথে বাংলাদেশের নৌবাহিনীর সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বাড়ানোকেও ভারত ভালোভাবে নিতে পারছে না। ভারত বিষয়টিকে দেখছে বঙ্গোপসাগরে মার্কিন উপস্থিতির কৌশল হিসেবে। ২০১১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এশিয়ার ২৪টি দেশের সাথে ১৭২টি নৌমহড়ায় অংশ নিয়েছে।



মার্কিন রণতরীর অবস্থান
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন নৌশক্তি বাড়ানোর ঘোষণার পর এগুলোর অবস্থান নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। এশিয়ায় মার্কিন রণতরী বা নৌঘাঁটিগুলোর উপস্থিতির চিত্র দেখলে আমরা বুঝতে পারব জালের মতো এশিয়াকে ঘিরে রেখেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ছয়টি নৌবহর বিশ্বজুড়ে সমুদ্রসীমা নিয়ন্ত্রণ করছে : ১. পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য তৃতীয় নৌবহর। হেডকোয়ার্টার ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়াগো। ২. দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের জন্য চতুর্থ নৌবহর। হেড কোয়ার্টার ফ্লোরিডার মে পোর্ট। ৩. আরব সাগর ও মধ্যপ্রাচ্যের জন্য পঞ্চম নৌবহর। হেড কোয়ার্টার মানামা ও বাহরাইন। ৪. ভূমধ্যসাগর ও ইউরোপীয় অঞ্চলের জন্য ষষ্ঠ নৌবহর। হেড কোয়ার্টার গেতে, ইতালি। ৫. এশিয়া ও পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহর যা সপ্তম নৌবহর নামে পরিচিত। হেড কোয়ার্টার ইয়োকোসুকা, জাপান। ৬. অ্যান্টি-সাবমেরিন যুদ্ধ বিষয়ে গঠন করা হয়েছে দশম নৌবহর। হেড কোয়ার্টার মেরিল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র।



পঞ্চম নৌবহর
পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন নজরদারি বাড়ানোর লক্ষ্যে বাহরাইনে অবস্থান করছে পঞ্চম নৌবহর। এর হেড কোয়ার্টার বাহরাইনের রাজধানী মানামায়। ১৯৭১ সালে দেশটিতে নৌঘাঁটি স্থাপন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি ৫৮ কোটি ডলার ব্যয়ে এই নৌঘাঁটির আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এই নৌবহর পারস্য উপসাগর, লোহিতসাগর, আরব সাগর এবং পূর্ব আফ্রিকা ও কেনিয়ায় মার্কিন সামরিক প্রভাব বজায় রাখার দায়িত্ব পালন করে। আফ্রিকার জিবুতিতে যে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি রয়েছে সেটিও এই নৌবহরের আওতাভুক্ত। ইরাক যুদ্ধে এই নৌবহর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অপারেশন এনডিউরিং ফ্রিডম ও অপরাশেন নিউ ডন নামে ইরাক যুদ্ধে দু’টি সামরিক অভিযান চালানো হয় এই ঘাঁটি থেকে। বাহরাইন ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাতে দু’টি নৌঘাঁটি রয়েছে। এর একটি ফুজাইরাহতে, অপরটি দুবাইয়ের পোর্ট জুবেল আলীতে। এ ছাড়া কাতারে রয়েছে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি। এই নৌবহর ও সামরিক ঘাঁটি থেকে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় মার্কিন সামরিক নজরদারি নিশ্চিত করা হয়।



সপ্তম নৌবহর
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মার্কিন নৌ-আধিপত্য বজায় রাখছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহর বা সপ্তম নৌবহর। দক্ষিণ চীন সাগর, ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগরের ওপর নজর রাখে এই নৌবহর। জাপানের ইয়োকোসুকায় এই হেডকোয়ার্টার দক্ষিণ কোরিয়ারও কাছাকাছি। কোরিয়া যুদ্ধ, ভিয়েতনাম যুদ্ধ ও উপসাগরীয় যুদ্ধে এই নৌবহর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় নৌবহর সপ্তম নৌবহর। ১০টি টাস্কফোর্সে ৫০ থেকে ৬০টি জাহাজ, ৩৫০টির মতো এয়ারক্রাফট, ৬০ হাজার নৌ ও মেরিন সৈন্য এই নৌবহরে দায়িত্ব পালন করে। এই নৌবহরের আওতায় এশিয়ার সমুদ্র অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ১৮টি জাহাজ স্থায়ীভাবে মোতায়েন রয়েছে। সপ্তম নৌবহরের আওতায় বেশ কয়েকটি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে।



গুয়াম
পশ্চিম প্রশান্ত মহসাগরের দ্বীপ গুয়াম। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপগুলোর একটি গুয়াম। ৫৪১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দ্বীপটির ৩৯ শতাংশ মার্কিন সামরিক স্থাপনার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে মার্কিন নৌঘাঁটি ছাড়াও অ্যান্ডারসন বিমানঘাঁটি, অপরা পোতাশ্রয়, নেভাল কম্পিউটার ও টেলিকমিউনিকেশন স্টেশন এবং জয়েন্ট ফোর্সের হেড কোয়ার্টার রয়েছে। গুয়াম দ্বীপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমুদ্র ও আকাশ যুদ্ধের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হবে। গুয়াম নৌঘাঁটি গুরুত্বপূর্ণ সাবমেরিন স্কোয়াড্রন-১৫ কমান্ডারের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হয়। মার্কিন সেনাবাহিনী প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহর, সপ্তম নৌবহর ও পঞ্চম নৌবহরের বিভিন্ন ধরনের সহায়তা ও যোগাযোগ রক্ষা করা হয় গুয়াম থেকে। গুয়ামের অ্যান্ডারসন বিমানঘাঁটি থেকে যুদ্ধবিমানগুলো বিমান হামলা করে থাকে।



দিয়েগো গার্সিয়া
ভারত মহাসাগরে মার্কিন নৌবাহিনীর সবচেয়ে বড় নৌঘাঁটি দিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপ। সপ্তম নৌবহরের আওতায় এই দ্বীপটি ভারতের দক্ষিণ উপকূল থেকে ১২০০ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণে এবং আফ্রিকা উপকূল থেকে ১৮০০ নটিক্যাল পূর্বে। এ দ্বীপে নৌবহরের অনেক জাহাজ ও সাবমেরিন সহায়ক ঘাটি রয়েছে। এ ছাড়া সামরিক বিমানঘাঁটিও রয়েছে। একসময়ের ব্রিটিশশাসিত এই দ্বীপে ১৯৭১ সালে ঘাঁটি স্থাপনের কাজ শুরু করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এরপর ধাপে ধাপে বৃহৎ সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করা হয়। দ্বীপটিতে ১২ হাজার ফুট দীর্ঘ দু’টি রানওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে বোমারু বিমানগুলো নামতে পারে। এই বিমানঘাঁটি থেকে ইরাক-কুয়েত যুদ্ধে বি-৫২ বোমারু বিমান ব্যাপক বোমাবর্ষণ করে আবার এখানে ফিরে আসত। ২০০১ সালে আফগান ও ইরাক যুদ্ধেও মার্কিন যুদ্ধবিমানগুলো দিয়েগো গার্সিয়ার বিমানঘাঁটি ব্যবহার করেছে।


গভীর সমুদ্রে মার্কিন ও ব্রিটিশ জাহাজগুলো ভেড়ার মতো স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। এয়ারক্রাফট হ্যাঙ্গার, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ভবন এবং বিশাল এয়ার টার্মিনাল স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৩ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল জ্বালানি মজুদের ব্যবস্থা রয়েছে এ দ্বীপে। একসময় ভারতের পক্ষ থেকে দ্বীপটিকে সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহারের সমালোচনা করা হলেও এখন আর ভারতের রাজনীতিবিদেরা এর সমালোচনা করেন না। ২০০১ সাল থেকে বিভিন্ন সময় ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের নৌ ও সেনাবাহিনী দিয়েগো গার্সিয়ায় সামরিক মহড়ায় অংশ নিয়েছে।


গুয়ানতানামো বে’র মতো দিয়েগো গার্সিয়ার সামরিক ঘাঁটিতে বন্দী নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। ২০০৭ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অল পার্টি ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটি ঘোষণা করে, দিয়েগো গার্সিয়ায় বন্দী নির্যাতনের অভিযোগ তারা তদন্ত করবে।


ইয়োকোসুকা নৌঘাঁটি, জাপান
জাপানে বিভিন্ন দ্বীপে মার্কিন বিমান ও নৌবাহিনীর অনেক ঘাঁটি রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা চুক্তির আওতায় এসব ঘাঁটি স্থাপন করা হয়। ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, ৩৫ হাজার ৬৮৮ মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা জাপানে কর্মরত রয়েছে। এর সাথে কর্মরত রয়েছে পাঁচ হাজার ৫০০ বেসামরিক নাগরিক। মার্কিন সপ্তম নৌবহরের ঘাঁটি রয়েছে ইয়োকোসুকাতে, তৃতীয় মেরিন এক্সপিডিটেশনারি ফোর্সের ঘাঁটি রয়েছে ওকিনাওয়া দ্বীপে, মার্কিন বিমান বাহিনীর দু’টি ঘাঁটি রয়েছে মিসওয়া ও কাদিনা দ্বীপে। এ ছাড়া জাপানের বিভিন্ন দ্বীপে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি রয়েছে। সপ্তম নৌবহরের কমান্ড শিপ ইউএসএস ব্লু রিজ-এর অবস্থান ইয়োকোসুকায়। এখানে রয়েছে এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার জর্জ ওয়াশিংটন, ডেস্ট্রয়ার স্কোয়াড্রন-১৫-এর অবস্থানও এখানে।


সপ্তম নৌবহর পরিচালিত হয় জাপান থেকে। জাপানের বিভিন্ন দ্বীপে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি নিয়ে জাপানিদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। ওকিনাওয়া দ্বীপের জাপানি নাগরিকদের আন্দোলন বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সময় আলোচিত হয়েছে। ইতোমধ্যে ওকিনাওয়া দ্বীপ থেকে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি কমানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইয়োকোসুকা দ্বীপেও একাধিক মার্কিন নাগরিক খুনের ঘটনা ঘটেছে। মার্কিন সেনাসদস্যদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।



দক্ষিণ কোরিয়া
জাপানের পর এশিয়ায় মার্কিন সামরিক উপস্থিতি রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে সামরিক বাহিনীর ছোট-বড় মিলিয়ে ১১টি ঘাঁটি রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে রয়েছে নৌঘাঁটি। সপ্তম নৌবহরের আওতায় এই নৌঘাঁটি পরিচালিত হয়।



ভারতের চাপ বাড়ছে
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এশিয়ায় মার্কিন নৌশক্তি বাড়তে থাকে। জাপান হয়ে ওঠে এ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক শক্তির মূল কেন্দ্রবিন্দু। ব্রিটিশদের কাছ থেকে দিয়েগো গার্সিয়ায় ঘাঁটি গাড়ার সুযোগ পাওয়ার পর থেকে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি আরো বাড়তে থাকে। বিশ্বরাজনীতিতে চীনের সামরিক ও অর্থনৈতিক আধিপত্য যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া নীতিতে যে পরিবর্তন আনে, মিয়ানমারের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সে গুরুত্ব আরো বেড়ে যায়। বাংলাদেশ, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার মতো সমুদ্র উপকূলের ছোট দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক হয়ে ওঠে অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। এসব দেশের নৌবাহিনীর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। ভবিষ্যতে তা আরো বাড়বে বলে আভাস দিচ্ছে মার্কিন সামরিক ও বেসামরিক নেতৃত্ব। তারা ঢাকাকে যেমন দেখছেন না দিল্লির চোখে, তেমনি নাইপিডোকে দেখছে না বেইজিংয়ের চোখে। ফলে ছোট ছোট এসব দেশের গুরুত্ব যেমন বাড়ছে, তেমনি ঝুঁকিও বাড়ছে।

আঞ্চলিক শক্তি বিশেষ করে ভারত চায় না এ অঞ্চলের ছোট দেশগুলো সামরিক শক্তি বাড়–ক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঘনিষ্ট সর্ম্পককেও ভারত দেখছে সন্দেহের চোখে। মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর ওয়াশিংটন চাইছে বাংলাদেশের সাথে মিয়ানমারের সর্ম্পক ঘনিষ্ট হোক। এখানে রয়েছে দিল্লির আপত্তি, মিয়ানমার ও আসিয়ানের দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের ঘনিষ্ট সর্ম্পকের ক্ষেত্রে ভারতের রয়েছে অনাগ্রহ। কারণ এর ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে ভারত নির্ভরতা আর থাকবে না। দক্ষিণ এশিয়ায় ইতোমধ্যে শ্রীলংকা, মালদ্বীপ ও নেপালে দেশটির প্রভাব অনেকাংশে খর্ব হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য মিয়ানমারের সাথে সর্ম্পক জোরদারের উদ্যেগ নিতে হবে। আর এখানেই বাংলাদেশের ওপর থাকবে ভারতের নানামুখী চাপ। আঞ্চলিক শক্তি ও পরাশক্তির মাঝে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানের ওপর নির্ভর করবে বাংলাদেশের মতো ছোট দেশগুলোর সার্বভৌমত্ব ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন। না হলে এসব দেশকে জ্বলতে হবে চুলা থেকে চুল্লির আগুনে।

Source: onnodiganta

If you open a thread in Bengali. Translate important parts in English.
 
Translated via Google translate:

Alfaz Anam

Considering the economic and strategic importance of Asia is now the main center of attention in the United States. China's emergence as a superpower, the United States, Asia, the regional energy policy changed massively. In contrast to China's comprehensive military cooperation with India in building the fleet, especially in the presence of US military presence in the region, India is considered as a threat to his authority.


Influences energy security and the economic impact is already ahead of the recently announced increase in US military presence in the region yuttarastra. Small countries on improving relations with the military cooperation has special importance.


Battleship is growing in Asia
US Defence Secretary Leon Panetta recently announced, will also strengthen the Asia-Pacific region, the United States fleet. 60 percent of the total fleet by the year ২0২0 States will be deployed in the region. Announced a regional security conference in Singapore. Representatives of 30 countries attended the conference.

There are currently referring to US strategic interests in Asia, Panetta said the center, as well as increase the number of warships in the Pacific area would increase the scope of military partnerships. The area is extremely important for the future of the United States. So make sure that there is a strong influence of 'deliberate and strong' initiative as part of the decision has been taken. While he says, the US objective of this strategic change is to resist China, but China has already expressed concern that the declaration states. Fear China, South China, China's fleet in the region to increase the response sagarasaha States increased their fleet.


Pacific and Atlantic Ocean regions currently has deployed approximately samanasankhyaka for the Armada. ২0২0 the two regions by 60 and 40 percent, respectively, to the number of aircraft. The Submarine and Sea of various tools will be deployed in the Pacific region, six ranatari aircraft. A total of 11 countries in the Asia-Pacific region is now six jangibimanabahi ranatarira are deployed. If you miss the USS Enterprise in the fleet this year, the number will come down to five. However, in 015 sent a battleship USS Gerald R. Ford will be the new name. Pentagon says, budget cuts due to the size of the US fleet in the next few years are likely to be small, but it will increase the price of any of the Pacific fleet.


China-India
To increase the US military presence in the Asia and Pacific region, China and India for the first time between the announcement of the discussion has started about naukaryakrama. One side of the US warship, aides, leaving the other hand, China's naval presence around India India is anxious to accelerate. Sitaoya and Coco Islands in Myanmar, Hambantota, Sri Lanka, Pakistan goyadare port of China. China has an interest in building a deep seaport in Bangladesh. Cooperative relationship with the United States Navy with the same baranokeo Bangladesh, India does not take well. See them as the bay, Strategies for India presence. In the United States, Asia 4 172 with 011 countries took part in the naumaharaya.



Vessel position for
After the announcement of the Asia and Pacific region to improve their position for the fleet has started new talks. Seeing images of the US presence in Asia, we can understand battleship or reticulate naughamtigulora surround the United States of Asia.


Control the sea around the world is the United States' fleet of six: 1. Third Fleet for the eastern Pacific region. Headquarters in San Diego, California. II. Fourth Fleet for the South Atlantic Ocean. Head Quarter May port in Florida. 3. For the Fifth Fleet in the Arabian Sea and the Middle East. Head Quarter Manama and Bahrain. 4. Sixth Fleet in the Mediterranean and European region. Head Quarter gete, Italy. 5. Asia and the Western Pacific region, known as the Seventh Fleet in the Pacific Fleet. Head Quarter iyokosuka, Japan. 6. Anti-submarine war was about the tenth fleet structure. Head Quarter Maryland, United States.



Fifth Fleet
Surveillance for West Asia are to maximize the Fifth Fleet in Bahrain. Bahraini capital Manama's Head Quarter. In 1971, the United States is the country where foreign place. Recently, at a cost of 58 million dollars has been modernization and expansion of the Naval Base. The Armada Persian Gulf, lohitasagara, the Arabian Sea and East Africa and Kenya, the US military is responsible for maintaining the effect. The presence of the US military bases in Africa jibutite under this fleet. Iraq war is the most important role in this fleet. Operation Enduring Freedom and New Dawn as aparasena two military campaigns in Iraq, from the bases. In addition to Bahrain, the United Arab Emirates is where foreign two. A phujairahate, alite jubela other Dubai port. There are no US military bases in Qatar. This navy and military bases in the Middle East and North Africa is to ensure the US military surveillance.



Seventh Fleet
Asia and the Pacific region, the US Navy-dominated maintaining or Seventh Fleet to the Pacific Fleet. South China Sea, Indian Ocean, Bay of Bengal, keeps an eye on the fleet. Iyokosukaya Japan South koriyarao near the headquarters. The Korean War, Vietnam War and Gulf War played an important role in this fleet. The biggest fleet of the United States Seventh Fleet. Taskaphorse 50 ships from 10 to 60, out of 350 aircraft, 60 of the Navy and Marine troops that served in this fleet. This fleet of 18 ships under the various places in Asia, the region is permanently deployed. There are several military bases under the Seventh Fleet.



Guam
Mahasagarera island of Guam in the western Pacific. An isolated islands of Guam from the mainland United States. 39 percent of the island for 541 km in volume being used for military deployment. Here, in addition to the US where foreign Anderson airfield, harbor negative, Naval Computer and Telecommunications Station and the Joint Force Head quarters. Important to the United States in the war on the island of Guam to the sea and the sky. Guam where foreign key is used as the office of Commander Submarine Squadron -15. US Army Pacific Fleet, Seventh Fleet and Fifth Fleet is to protect different types of support and communication from Guam. Anderson Guam fighter aircraft from the airfield is attacked.



Diego Garcia
Where foreign Diego Garcia island in the Indian Ocean, the US Navy's biggest. Seventh Fleet 1200 nautical miles from the southern coast of India under the south of the island and the coast of Africa prior to the 1800 nautical. There are many ships and submarine fleet support base on the island. The military has bimanaghamtio. Once the British bases on the island began in 1971 in the United States. Next step is to become a large military base. 1 thousand-foot-long runway was constructed on the island in two. Where you can get off an airplane bomber. The Airfield B-52 bomber from the Iraq-Kuwait war, massive bombing came back here again. 001 airfield on Diego Garcia in the Afghan and Iraq war has been used for the jets.


Infrastructures such as the US and British ships in the deep sea are sheep. Aircraft hangers, maintenance buildings and a huge air terminal has been placed. Besides, 13 lakh 40 thousand barrels of fuel reserves in the island are arranged. Criticized the use of military bases on the island as well as the time from India but is now criticized Indian politicians. India and the United States several times since 001 marines and army garsiyaya Diego took part in military exercises.


The Diego Garcia military base in Guantanamo Bay torture allegations. 007 all-party Foreign Affairs Committee in the British Parliament announced that they would investigate allegations of torture garsiyaya Diego.


Iyokosuka where foreign, Japan
US air and naval bases on the island has a lot of variety in Japan. Security and defense agreement between the two countries were established on these bases. Information available up to 009 months in December, 35 of the 688 US military personnel are working in Japan. There's five of the 500 civilians working with. US Seventh Fleet has bases iyokosukate, III Marine eksapiditesanari Force bases on the island of Okinawa, the US Air Force has two bases and kadina island Miswar. Without the US military presence in Japan is different island. Seventh Fleet command ship USS Blue Ridge iyokosukaya's position. Here is George Washington aircraft carrier, destroyers of Squadron-15 positions here.


From Japan to the Seventh Fleet is managed. Anger in Japan over the US military bases in Japan, the island is different. Has been discussed several times over the island of Okinawa Japanese citizens movement. Meanwhile, the US military presence in Okinawa Island begins drawdown. Iyokosuka island murders occurred in multiple US citizen. Offenses against the US soldiers are alleged involvement.



South Korea
After the US military presence in Asia including Japan, South Korea. 11 military bases in the country has a large and small. South Korea has busane where foreign. This is where foreign operated under the Seventh Fleet.



Indian pressure
Asia continues to grow for the fleet since World War II. Japan became the main hub of the region, the US military forces. After getting the opportunity to pitch Diego garsiyaya from British bases are increasing the US military presence. China's growing military and economic dominance of the United States, Asia bisbarajanitite policy changes, the changed political situation in Myanmar has increased the importance of. Bangladesh, Maldives and Sri Lanka, the sea off the coast of small countries such as the United States became a more significant relationship. Familiarity with the navies of the United States continues to grow. It is a glimpse of the future of the US military and civilian leadership to increase further. Delhi Dhaka eye as they are not watching, watching as Beijing eyes naipidoke. As a result of the growing importance of these countries are small, so increasing the risk.

Regional power in the region, especially in small countries India does not want a military power growth. India has close ties with the United States skeptically watching. After the political change in Myanmar Myanmar's relations with Washington wants Bangladesh to be close. Delhi has an objection, the close relationship with Myanmar and ASEAN countries are India's disinterest. Because of the dependence of the economy and foreign policy will not be in India. Meanwhile in South Asia, Sri Lanka, Maldives and Nepal's influence has diminished greatly. But Bangladesh's economic development will take initiatives to strengthen relations with Myanmar. And there will be about the various pressures in India. Will depend on the balanced position between regional powers and powers of the sovereignty and economic development of small countries. If not, the country will burn in the fire of a furnace from the oven.
 
Translated via Google translate:

Alfaz Anam

Considering the economic and strategic importance of Asia is now the main center of attention in the United States. China's emergence as a superpower, the United States, Asia, the regional energy policy changed massively. In contrast to China's comprehensive military cooperation with India in building the fleet, especially in the presence of US military presence in the region, India is considered as a threat to his authority.


Influences energy security and the economic impact is already ahead of the recently announced increase in US military presence in the region yuttarastra. Small countries on improving relations with the military cooperation has special importance.


Battleship is growing in Asia
US Defence Secretary Leon Panetta recently announced, will also strengthen the Asia-Pacific region, the United States fleet. 60 percent of the total fleet by the year ২0২0 States will be deployed in the region. Announced a regional security conference in Singapore. Representatives of 30 countries attended the conference.

There are currently referring to US strategic interests in Asia, Panetta said the center, as well as increase the number of warships in the Pacific area would increase the scope of military partnerships. The area is extremely important for the future of the United States. So make sure that there is a strong influence of 'deliberate and strong' initiative as part of the decision has been taken. While he says, the US objective of this strategic change is to resist China, but China has already expressed concern that the declaration states. Fear China, South China, China's fleet in the region to increase the response sagarasaha States increased their fleet.


Pacific and Atlantic Ocean regions currently has deployed approximately samanasankhyaka for the Armada. ২0২0 the two regions by 60 and 40 percent, respectively, to the number of aircraft. The Submarine and Sea of various tools will be deployed in the Pacific region, six ranatari aircraft. A total of 11 countries in the Asia-Pacific region is now six jangibimanabahi ranatarira are deployed. If you miss the USS Enterprise in the fleet this year, the number will come down to five. However, in 015 sent a battleship USS Gerald R. Ford will be the new name. Pentagon says, budget cuts due to the size of the US fleet in the next few years are likely to be small, but it will increase the price of any of the Pacific fleet.


China-India
To increase the US military presence in the Asia and Pacific region, China and India for the first time between the announcement of the discussion has started about naukaryakrama. One side of the US warship, aides, leaving the other hand, China's naval presence around India India is anxious to accelerate. Sitaoya and Coco Islands in Myanmar, Hambantota, Sri Lanka, Pakistan goyadare port of China. China has an interest in building a deep seaport in Bangladesh. Cooperative relationship with the United States Navy with the same baranokeo Bangladesh, India does not take well. See them as the bay, Strategies for India presence. In the United States, Asia 4 172 with 011 countries took part in the naumaharaya.



Vessel position for
After the announcement of the Asia and Pacific region to improve their position for the fleet has started new talks. Seeing images of the US presence in Asia, we can understand battleship or reticulate naughamtigulora surround the United States of Asia.


Control the sea around the world is the United States' fleet of six: 1. Third Fleet for the eastern Pacific region. Headquarters in San Diego, California. II. Fourth Fleet for the South Atlantic Ocean. Head Quarter May port in Florida. 3. For the Fifth Fleet in the Arabian Sea and the Middle East. Head Quarter Manama and Bahrain. 4. Sixth Fleet in the Mediterranean and European region. Head Quarter gete, Italy. 5. Asia and the Western Pacific region, known as the Seventh Fleet in the Pacific Fleet. Head Quarter iyokosuka, Japan. 6. Anti-submarine war was about the tenth fleet structure. Head Quarter Maryland, United States.



Fifth Fleet
Surveillance for West Asia are to maximize the Fifth Fleet in Bahrain. Bahraini capital Manama's Head Quarter. In 1971, the United States is the country where foreign place. Recently, at a cost of 58 million dollars has been modernization and expansion of the Naval Base. The Armada Persian Gulf, lohitasagara, the Arabian Sea and East Africa and Kenya, the US military is responsible for maintaining the effect. The presence of the US military bases in Africa jibutite under this fleet. Iraq war is the most important role in this fleet. Operation Enduring Freedom and New Dawn as aparasena two military campaigns in Iraq, from the bases. In addition to Bahrain, the United Arab Emirates is where foreign two. A phujairahate, alite jubela other Dubai port. There are no US military bases in Qatar. This navy and military bases in the Middle East and North Africa is to ensure the US military surveillance.



Seventh Fleet
Asia and the Pacific region, the US Navy-dominated maintaining or Seventh Fleet to the Pacific Fleet. South China Sea, Indian Ocean, Bay of Bengal, keeps an eye on the fleet. Iyokosukaya Japan South koriyarao near the headquarters. The Korean War, Vietnam War and Gulf War played an important role in this fleet. The biggest fleet of the United States Seventh Fleet. Taskaphorse 50 ships from 10 to 60, out of 350 aircraft, 60 of the Navy and Marine troops that served in this fleet. This fleet of 18 ships under the various places in Asia, the region is permanently deployed. There are several military bases under the Seventh Fleet.



Guam
Mahasagarera island of Guam in the western Pacific. An isolated islands of Guam from the mainland United States. 39 percent of the island for 541 km in volume being used for military deployment. Here, in addition to the US where foreign Anderson airfield, harbor negative, Naval Computer and Telecommunications Station and the Joint Force Head quarters. Important to the United States in the war on the island of Guam to the sea and the sky. Guam where foreign key is used as the office of Commander Submarine Squadron -15. US Army Pacific Fleet, Seventh Fleet and Fifth Fleet is to protect different types of support and communication from Guam. Anderson Guam fighter aircraft from the airfield is attacked.



Diego Garcia
Where foreign Diego Garcia island in the Indian Ocean, the US Navy's biggest. Seventh Fleet 1200 nautical miles from the southern coast of India under the south of the island and the coast of Africa prior to the 1800 nautical. There are many ships and submarine fleet support base on the island. The military has bimanaghamtio. Once the British bases on the island began in 1971 in the United States. Next step is to become a large military base. 1 thousand-foot-long runway was constructed on the island in two. Where you can get off an airplane bomber. The Airfield B-52 bomber from the Iraq-Kuwait war, massive bombing came back here again. 001 airfield on Diego Garcia in the Afghan and Iraq war has been used for the jets.


Infrastructures such as the US and British ships in the deep sea are sheep. Aircraft hangers, maintenance buildings and a huge air terminal has been placed. Besides, 13 lakh 40 thousand barrels of fuel reserves in the island are arranged. Criticized the use of military bases on the island as well as the time from India but is now criticized Indian politicians. India and the United States several times since 001 marines and army garsiyaya Diego took part in military exercises.


The Diego Garcia military base in Guantanamo Bay torture allegations. 007 all-party Foreign Affairs Committee in the British Parliament announced that they would investigate allegations of torture garsiyaya Diego.


Iyokosuka where foreign, Japan
US air and naval bases on the island has a lot of variety in Japan. Security and defense agreement between the two countries were established on these bases. Information available up to 009 months in December, 35 of the 688 US military personnel are working in Japan. There's five of the 500 civilians working with. US Seventh Fleet has bases iyokosukate, III Marine eksapiditesanari Force bases on the island of Okinawa, the US Air Force has two bases and kadina island Miswar. Without the US military presence in Japan is different island. Seventh Fleet command ship USS Blue Ridge iyokosukaya's position. Here is George Washington aircraft carrier, destroyers of Squadron-15 positions here.


From Japan to the Seventh Fleet is managed. Anger in Japan over the US military bases in Japan, the island is different. Has been discussed several times over the island of Okinawa Japanese citizens movement. Meanwhile, the US military presence in Okinawa Island begins drawdown. Iyokosuka island murders occurred in multiple US citizen. Offenses against the US soldiers are alleged involvement.



South Korea
After the US military presence in Asia including Japan, South Korea. 11 military bases in the country has a large and small. South Korea has busane where foreign. This is where foreign operated under the Seventh Fleet.



Indian pressure
Asia continues to grow for the fleet since World War II. Japan became the main hub of the region, the US military forces. After getting the opportunity to pitch Diego garsiyaya from British bases are increasing the US military presence. China's growing military and economic dominance of the United States, Asia bisbarajanitite policy changes, the changed political situation in Myanmar has increased the importance of. Bangladesh, Maldives and Sri Lanka, the sea off the coast of small countries such as the United States became a more significant relationship. Familiarity with the navies of the United States continues to grow. It is a glimpse of the future of the US military and civilian leadership to increase further. Delhi Dhaka eye as they are not watching, watching as Beijing eyes naipidoke. As a result of the growing importance of these countries are small, so increasing the risk.

Regional power in the region, especially in small countries India does not want a military power growth. India has close ties with the United States skeptically watching. After the political change in Myanmar Myanmar's relations with Washington wants Bangladesh to be close. Delhi has an objection, the close relationship with Myanmar and ASEAN countries are India's disinterest. Because of the dependence of the economy and foreign policy will not be in India. Meanwhile in South Asia, Sri Lanka, Maldives and Nepal's influence has diminished greatly. But Bangladesh's economic development will take initiatives to strengthen relations with Myanmar. And there will be about the various pressures in India. Will depend on the balanced position between regional powers and powers of the sovereignty and economic development of small countries. If not, the country will burn in the fire of a furnace from the oven.

Right now Google translation for Bengali isnt perfect but improving.
 
Right now Google translation for Bengali isnt perfect but improving.

I'll agree with that but the translated English can be so atrocious they're really funny to read ...
 
Back
Top Bottom