CaPtAiN_pLaNeT
SENIOR MEMBER
- Joined
- May 10, 2010
- Messages
- 7,685
- Reaction score
- 0
In a recent report it has been indicated that Ex communication minister Abul Hossain, Ex Secretary of Bridge Division Mossarraf Hussain Bhuiyan and Ex project director of Padma bridge Rafiqul Islam had asked 10% commission through their agents from Canadian Company SNC Lavalin in return for giving the consultancy contract of 47 million USD. Apart from that there is indication that many influential people were involved in it.
The confirmation of this 10% commission has come from Ex CEO of SNC Lavalin Piyere Dahayme who is now arrested by Canadian Police. After this report and getting letter from World Bank ACC has again started the inquiry about this bribe case. So far they have interrogated ex Foreign State Minister Abul Hassan Chowdhury and brother of Whip of national assembly Noor E Alam Chowdhury Liton, Nixon Chowdhury who had a very intimate relation with the country representative of SNC Lavalin and met in various hotels numerous time.
Details Below:
পদ্মা সেতু নিয়ে দুদকে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন
১০% ঘুষ চান মন্ত্রী-সচিব
??% ??? ??? ???????-???? - ????? ???
অনিকা ফারজানা | তারিখ: ২০-০৬-২০১২
পদ্মা সেতু প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ ছিল চার কোটি ৭০ লাখ ডলার। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য কানাডাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনের কাছে ১০ শতাংশ অর্থ কমিশন চেয়েছিলেন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ তিনজন। তাঁরা হলেন: সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা এবং পদ্মা সেতুর সাবেক প্রকল্প পরিচালক রফিকুল ইসলাম। তাঁদের প্রতিনিধিরা এই অর্থ কমিশন হিসেবে চান।
অর্থের অবৈধ লেনদেনের জন্য গ্রেপ্তার হওয়া এসএনসি-লাভালিনের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পিয়েরে দুহাইমের কাছ থেকে এই তথ্য পেয়েছে কানাডার পুলিশ। আর বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে এই তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক। প্রতিবেদনে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীদের সম্পৃক্ততার তথ্যও রয়েছে।
দুর্নীতির এই সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়ে নতুন করে আবার তদন্ত শুরু করেছে দুদক। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক সরকারের কাছে একটি চিঠি দিয়ে পদ্মা সেতুর দুর্নীতি নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করার আহ্বান জানায়। সরকার নতুন কোনো কমিটি গঠন না করলেও দুদকই নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে। এর অংশ হিসেবে ১৪ জুন দুদক সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। আর গতকাল মঙ্গলবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে জাতীয় সংসদের হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটনের ভাই নিক্সন চৌধুরীকে। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে দুদক বলেছিল, তারা পদ্মা সেতু প্রকল্পে কোনো দুর্নীতি খুঁজে পায়নি।
সূত্র জানায়, মালয়েশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা সই করলেও সরকার এখন বিশ্বব্যাংকসহ দাতাদের ঋণেই পদ্মা সেতু প্রকল্পের বাস্তবায়ন চায়। এরই অংশ হিসেবে দুদক তদন্ত করছে বলে জানা গেছে। এ নিয়ে দুদক তথ্য চাইলে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবেদন দেওয়া হয় সরকারকে। ওই প্রতিবেদন থেকেই দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ জানতে পারে দুদক। প্রতিবেদনে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, তাঁর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সাকো ইন্টারন্যাশনালের সংশ্লিষ্টতা এবং সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা ও প্রকল্প পরিচালক রফিকুল ইসলামের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে তথ্য রয়েছে বলে দুদক সূত্র জানায়।
সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী দেশের বাইরে থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। মোশাররাফ হোসাইন ভূইয়া বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান। তাকেও পাওয়া যায়নি।
কমিশনের হাতে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন দুদকের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান। গতকাল প্রথম আলোকে তিনি বলেন, কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে বাংলাদেশে আসা বিশ্বব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে পদ্মা সেতু নির্মাণে পরামর্শক নিয়োগের বিষয়ে বেশ কিছু অসংগতির তথ্য রয়েছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে অনুসন্ধানের পরিধি বাড়িয়েছে দুদকের তদন্ত দল।
নাম না প্রকাশের শর্তে দুদকের তদন্ত দলের এক কর্মকর্তা বলেন, এসএনসি-লাভালিনের কাছে ঘুষ চাওয়ার প্রমাণ পেয়েছে কানাডীয় তদন্ত দল। কিন্তু কানাডার আইন আর বাংলাদেশের আইনের প্রেক্ষাপট এক নয়। কানাডার প্রেক্ষাপটে ঘুষ লেনদেনের চেয়ে এ বিষয়ে কথা বলাই অপরাধ। কিন্তু বাংলাদেশে ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি প্রমাণিত হলে তা পরে অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। ফলে দুই দেশের আইনের পার্থক্যে ও সংস্কৃতি পার্থক্যের কারণে প্রতিবেদনের হেরফের হতে পারে বলে জানান তিনি।
সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগের ক্ষেত্রে মূল্যায়ন কমিটি পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের নাম সুপারিশ করেছিল। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো: এসএনসি-লাভালিন, যুক্তরাজ্যের হালক্রো গ্রুপ, নিউজিল্যান্ডের একম অ্যান্ড এ জেড এল, জাপানের ওরিয়েন্টাল কনসালট্যান্ট কোম্পানি লিমিটেড এবং যুক্তরাজ্য ও নেদারল্যান্ডের যৌথ বিনিয়োগের প্রতিষ্ঠান হাই পয়েন্ট রেন্ডাল। এর মধ্যে এসএনসি-লাভালিনকে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে অনুমোদনের জন্য বিশ্বব্যাংকের কাছে পাঠানো হয়েছিল। এর পরই এ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে এবং বিশ্বব্যাংক ১২০ কোটি ডলার সহায়তা স্থগিত করে দেয়। এ নিয়ে কানাডা পুলিশ এখনো তদন্ত করছে। আর তদন্তে পাওয়া প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাংক এসএনসি-লাভালিনকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে।
বিশ্বব্যাংক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী তাঁর আত্মীয় জিয়াউল হককে নিয়ে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হাসানের সঙ্গে সেতু ভবনে পদ্মা সেতু-সম্পর্কিত এক বৈঠকে অংশ নেন। তাঁর ওই আত্মীয় হচ্ছেন বাংলাদেশে কানাডিয়ান এসএনসি-লাভালিনের স্থানীয় একজন প্রতিনিধি। তাঁর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ঠিকানাও দেওয়া রয়েছে প্রতিবেদনে। লালমাটিয়ার এ ব্লকের ৭/৪ নম্বর বাড়ি। প্রতিষ্ঠানের নাম ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড প্ল্যানিং কনসালট্যান্ট কোম্পানি লিমিটেড। দুদকের জিজ্ঞাসাবাসে তিনি ওই বৈঠকের কথা স্বীকার করেছেন। তবে এতে কোনো অর্থের লেনদেন হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।
এ ছাড়া, জাতীয় সংসদের হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটনের ভাই নিক্সন চৌধুরীর সঙ্গে এসএনসি-লাভালিনের বাংলাদেশি কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেনের ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে। কানাডা ও বাংলাদেশের যেসব হোটেলে তাঁদের নিয়মিত সাক্ষাৎ হতো তার ঠিকানা ও সময়সূচিও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। নিক্সন চৌধুরী পিতা মরহুম সাংসদ ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরীর রেখে যাওয়া পারিবারিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রিতা কনস্ট্রাকশন ও মহাখালীতে একটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনের দেখাশোনা করেন। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতুর দরপত্রে অংশগ্রহণ করার পরই উভয়ের মধ্যকার দেখা-সাক্ষাৎ শুরু হয়। এসব বৈঠকে সেতু বিভাগের সাবেক সচিব এবং প্রকল্প পরিচালকও উপস্থিত থাকতেন বলে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ প্রথম তুলেছিল গত বছরের সেপ্টেম্বরে। সে সময়ে অর্থমন্ত্রীকে একটি চিঠি দিয়ে এই দুর্নীতির সঙ্গে সৈয়দ আবুল হোসেনের সম্পৃক্ততার কথা জানানো হয়। এরপর সরকার মন্ত্রী, সচিব ও প্রকল্প পরিচালককে অন্যত্র সরিয়ে দিলেও আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সৈয়দ আবুল হোসেন এখন তথ্য ও যোগাযোগ-প্রযুক্তিমন্ত্রী। বিশ্বব্যাংক এর পর থেকে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে সাহায্য স্থগিত করে রাখে। এরপর গত এপ্রিলে দুর্নীতির প্রমাণ দিয়ে আবার একটি চিঠি দেয় বিশ্বব্যাংক। তাতেও সরকার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। সবশেষ চলতি মাসে আবার একটি চিঠি দেওয়ার পর তদন্ত শুরু করে দুদক।
নিক্সন চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ: গতকাল সকাল সোয়া নয়টায় সেগুনবাগিচায় দুদকের কার্যালয়ে উপস্থিত হন নিক্সন চৌধুরী। ১১টা পর্যন্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর তিনি দ্রুত একটি গাড়িতে উঠে চলে যান।
পরে দুদকের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান সাংবাদিকদের বলেন, পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগ-প্রক্রিয়ায় অনিয়মের বিষয়ে বিশ্বব্যাংক কিছু তথ্য-উপাত্ত দুদককে দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে জোরেশোরে অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক। এই অনুসন্ধানের বিষয়ে এ মাসের শেষে বা আগামী মাসের প্রথম দিকে কানাডীয় পুলিশের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য-প্রমাণ পাবে দুদক।
দুদকের চেয়ারম্যান বলেন, এসএনসি-লাভালিনের দুই কর্মকর্তাকে সম্প্রতি আটক করে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে কানাডা। দুদক ওই দুই ব্যক্তির বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছে। নিক্সন চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে দুদকের চেয়ারম্যান বলেন, এসএনসি-লাভালিনের সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ নিয়েই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
The confirmation of this 10% commission has come from Ex CEO of SNC Lavalin Piyere Dahayme who is now arrested by Canadian Police. After this report and getting letter from World Bank ACC has again started the inquiry about this bribe case. So far they have interrogated ex Foreign State Minister Abul Hassan Chowdhury and brother of Whip of national assembly Noor E Alam Chowdhury Liton, Nixon Chowdhury who had a very intimate relation with the country representative of SNC Lavalin and met in various hotels numerous time.
Details Below:
পদ্মা সেতু নিয়ে দুদকে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন
১০% ঘুষ চান মন্ত্রী-সচিব
??% ??? ??? ???????-???? - ????? ???
অনিকা ফারজানা | তারিখ: ২০-০৬-২০১২
পদ্মা সেতু প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ ছিল চার কোটি ৭০ লাখ ডলার। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য কানাডাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনের কাছে ১০ শতাংশ অর্থ কমিশন চেয়েছিলেন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ তিনজন। তাঁরা হলেন: সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা এবং পদ্মা সেতুর সাবেক প্রকল্প পরিচালক রফিকুল ইসলাম। তাঁদের প্রতিনিধিরা এই অর্থ কমিশন হিসেবে চান।
অর্থের অবৈধ লেনদেনের জন্য গ্রেপ্তার হওয়া এসএনসি-লাভালিনের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পিয়েরে দুহাইমের কাছ থেকে এই তথ্য পেয়েছে কানাডার পুলিশ। আর বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে এই তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক। প্রতিবেদনে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীদের সম্পৃক্ততার তথ্যও রয়েছে।
দুর্নীতির এই সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়ে নতুন করে আবার তদন্ত শুরু করেছে দুদক। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক সরকারের কাছে একটি চিঠি দিয়ে পদ্মা সেতুর দুর্নীতি নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করার আহ্বান জানায়। সরকার নতুন কোনো কমিটি গঠন না করলেও দুদকই নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে। এর অংশ হিসেবে ১৪ জুন দুদক সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। আর গতকাল মঙ্গলবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে জাতীয় সংসদের হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটনের ভাই নিক্সন চৌধুরীকে। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে দুদক বলেছিল, তারা পদ্মা সেতু প্রকল্পে কোনো দুর্নীতি খুঁজে পায়নি।
সূত্র জানায়, মালয়েশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা সই করলেও সরকার এখন বিশ্বব্যাংকসহ দাতাদের ঋণেই পদ্মা সেতু প্রকল্পের বাস্তবায়ন চায়। এরই অংশ হিসেবে দুদক তদন্ত করছে বলে জানা গেছে। এ নিয়ে দুদক তথ্য চাইলে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবেদন দেওয়া হয় সরকারকে। ওই প্রতিবেদন থেকেই দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ জানতে পারে দুদক। প্রতিবেদনে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, তাঁর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সাকো ইন্টারন্যাশনালের সংশ্লিষ্টতা এবং সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা ও প্রকল্প পরিচালক রফিকুল ইসলামের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে তথ্য রয়েছে বলে দুদক সূত্র জানায়।
সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী দেশের বাইরে থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। মোশাররাফ হোসাইন ভূইয়া বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান। তাকেও পাওয়া যায়নি।
কমিশনের হাতে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন দুদকের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান। গতকাল প্রথম আলোকে তিনি বলেন, কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে বাংলাদেশে আসা বিশ্বব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে পদ্মা সেতু নির্মাণে পরামর্শক নিয়োগের বিষয়ে বেশ কিছু অসংগতির তথ্য রয়েছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে অনুসন্ধানের পরিধি বাড়িয়েছে দুদকের তদন্ত দল।
নাম না প্রকাশের শর্তে দুদকের তদন্ত দলের এক কর্মকর্তা বলেন, এসএনসি-লাভালিনের কাছে ঘুষ চাওয়ার প্রমাণ পেয়েছে কানাডীয় তদন্ত দল। কিন্তু কানাডার আইন আর বাংলাদেশের আইনের প্রেক্ষাপট এক নয়। কানাডার প্রেক্ষাপটে ঘুষ লেনদেনের চেয়ে এ বিষয়ে কথা বলাই অপরাধ। কিন্তু বাংলাদেশে ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি প্রমাণিত হলে তা পরে অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। ফলে দুই দেশের আইনের পার্থক্যে ও সংস্কৃতি পার্থক্যের কারণে প্রতিবেদনের হেরফের হতে পারে বলে জানান তিনি।
সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগের ক্ষেত্রে মূল্যায়ন কমিটি পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের নাম সুপারিশ করেছিল। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো: এসএনসি-লাভালিন, যুক্তরাজ্যের হালক্রো গ্রুপ, নিউজিল্যান্ডের একম অ্যান্ড এ জেড এল, জাপানের ওরিয়েন্টাল কনসালট্যান্ট কোম্পানি লিমিটেড এবং যুক্তরাজ্য ও নেদারল্যান্ডের যৌথ বিনিয়োগের প্রতিষ্ঠান হাই পয়েন্ট রেন্ডাল। এর মধ্যে এসএনসি-লাভালিনকে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে অনুমোদনের জন্য বিশ্বব্যাংকের কাছে পাঠানো হয়েছিল। এর পরই এ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে এবং বিশ্বব্যাংক ১২০ কোটি ডলার সহায়তা স্থগিত করে দেয়। এ নিয়ে কানাডা পুলিশ এখনো তদন্ত করছে। আর তদন্তে পাওয়া প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাংক এসএনসি-লাভালিনকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে।
বিশ্বব্যাংক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী তাঁর আত্মীয় জিয়াউল হককে নিয়ে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হাসানের সঙ্গে সেতু ভবনে পদ্মা সেতু-সম্পর্কিত এক বৈঠকে অংশ নেন। তাঁর ওই আত্মীয় হচ্ছেন বাংলাদেশে কানাডিয়ান এসএনসি-লাভালিনের স্থানীয় একজন প্রতিনিধি। তাঁর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ঠিকানাও দেওয়া রয়েছে প্রতিবেদনে। লালমাটিয়ার এ ব্লকের ৭/৪ নম্বর বাড়ি। প্রতিষ্ঠানের নাম ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড প্ল্যানিং কনসালট্যান্ট কোম্পানি লিমিটেড। দুদকের জিজ্ঞাসাবাসে তিনি ওই বৈঠকের কথা স্বীকার করেছেন। তবে এতে কোনো অর্থের লেনদেন হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।
এ ছাড়া, জাতীয় সংসদের হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটনের ভাই নিক্সন চৌধুরীর সঙ্গে এসএনসি-লাভালিনের বাংলাদেশি কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেনের ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে। কানাডা ও বাংলাদেশের যেসব হোটেলে তাঁদের নিয়মিত সাক্ষাৎ হতো তার ঠিকানা ও সময়সূচিও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। নিক্সন চৌধুরী পিতা মরহুম সাংসদ ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরীর রেখে যাওয়া পারিবারিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রিতা কনস্ট্রাকশন ও মহাখালীতে একটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনের দেখাশোনা করেন। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতুর দরপত্রে অংশগ্রহণ করার পরই উভয়ের মধ্যকার দেখা-সাক্ষাৎ শুরু হয়। এসব বৈঠকে সেতু বিভাগের সাবেক সচিব এবং প্রকল্প পরিচালকও উপস্থিত থাকতেন বলে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ প্রথম তুলেছিল গত বছরের সেপ্টেম্বরে। সে সময়ে অর্থমন্ত্রীকে একটি চিঠি দিয়ে এই দুর্নীতির সঙ্গে সৈয়দ আবুল হোসেনের সম্পৃক্ততার কথা জানানো হয়। এরপর সরকার মন্ত্রী, সচিব ও প্রকল্প পরিচালককে অন্যত্র সরিয়ে দিলেও আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সৈয়দ আবুল হোসেন এখন তথ্য ও যোগাযোগ-প্রযুক্তিমন্ত্রী। বিশ্বব্যাংক এর পর থেকে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে সাহায্য স্থগিত করে রাখে। এরপর গত এপ্রিলে দুর্নীতির প্রমাণ দিয়ে আবার একটি চিঠি দেয় বিশ্বব্যাংক। তাতেও সরকার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। সবশেষ চলতি মাসে আবার একটি চিঠি দেওয়ার পর তদন্ত শুরু করে দুদক।
নিক্সন চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ: গতকাল সকাল সোয়া নয়টায় সেগুনবাগিচায় দুদকের কার্যালয়ে উপস্থিত হন নিক্সন চৌধুরী। ১১টা পর্যন্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর তিনি দ্রুত একটি গাড়িতে উঠে চলে যান।
পরে দুদকের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান সাংবাদিকদের বলেন, পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগ-প্রক্রিয়ায় অনিয়মের বিষয়ে বিশ্বব্যাংক কিছু তথ্য-উপাত্ত দুদককে দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে জোরেশোরে অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক। এই অনুসন্ধানের বিষয়ে এ মাসের শেষে বা আগামী মাসের প্রথম দিকে কানাডীয় পুলিশের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য-প্রমাণ পাবে দুদক।
দুদকের চেয়ারম্যান বলেন, এসএনসি-লাভালিনের দুই কর্মকর্তাকে সম্প্রতি আটক করে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে কানাডা। দুদক ওই দুই ব্যক্তির বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছে। নিক্সন চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে দুদকের চেয়ারম্যান বলেন, এসএনসি-লাভালিনের সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ নিয়েই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।