জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রতিবেদন
ট্রাইব্যুনালে আটককৃতদের মানবাধিকার লংঘনের বিষয় তদন্ত করার সুপারিশ
-বিধি বহির্ভূত আটককৃতদের জামিন দিতে সরকারের প্রতি আহবান
-বিচার আন্তর্জাতিক মান ও নীতি অনুযায়ী পরিচালনা করতে হবে
-আটক প্রক্রিয়া আইন সম্মত হয়নি বিধায় আটককৃতদের অবিলম্বে মুক্তি দানের আহবান
সামছুল আরেফীন : বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়াকে আন্তর্জাতিক মান ও নীতি অনুযায়ী পরিচালনার আহবান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের ওয়ার্কিং গ্রুপ অন আরবিটারি ডিটেনশন (UN Working Group On Arbitrary Detention)। আটককৃতদের মানবাধিকার লংঘনের ব্যাপারে তদন্ত করার জন্য জাতিসংঘের Special Rapporteur on Tortureকে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে ওয়ার্কিং গ্রুপ। পাশাপাশি বিধি বর্হিভূত আটক রাখার জন্য অধ্যাপক গোলাম আযম, মীর কাশেম আলী ও এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি দেয়ার আহবান জানায় তারা। এর আগে গত বছর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লাকে আটক রাখার প্রক্রিয়া আইন সম্মত হয়নি বলে অবিলম্বে তাদের মুক্তি দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছিল ওয়ার্কিং গ্রুপ।
ওয়াকিং গ্রুপ অন অরবেটরি ডিটেনশন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের রেজ্যুলেশন ১৯৯১/৪২ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত হয়। ওয়াকিংর্ গ্রুপের কার্যক্রম নিয়ে আরেকটি রেজ্যুলেশন হয় যার নয় ১৯৯৭/৫০। ২০০৬ সালে মানবাধিকার কাউন্সিলের কার্যক্রম অনুমোদিত হয় যার নং ২০০৬/১০২। ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আরো ৩ বছরের জন্য তা বাড়ানো হয়। যার রেজ্যুলেশন নং ১৫/১৮।
বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক আটককৃত গোলাম আযম, মীর কাশেম আলী ও এটিএম আজহারুল ইসলামের অবস্থা জানতে চেয়ে গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ওয়াকিং গ্রুপ অন অরবেটরি ডিটেনশন এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারকে চিঠি দেয়া হয়। সরকার এতে কোনো সাড়া দেয়নি। পরবর্তীতে ওয়ার্কিং গ্রুপ নিজস্ব উদ্যোগে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে ১৪-২৩ নবেম্বর ২০১২ তারিখে গ্রুপের অধিবেশনে রিপোর্টটি চূড়ান্ত করে। ওয়ার্কিং গ্রুপের মতামতের স্মারক নং হচ্ছে ৬৬/২০১২ (বাংলাদেশ
। মতামতটি জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের বার্ষিক রিপোর্টে অন্তর্ভুক্ত হবে। এর আগে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আবদুল কাদের মোল্লার বিষয়ে জানতে চেয়ে গত ২০১১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ওয়ার্কিং গ্রুপ অন অরবেটরি ডিটেনশন এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারকে চিঠি দেয়া হয়। সে সময়ও সরকার কোনো সাড়া দেয়নি। চিঠিতে নির্দিষ্ট সময় দিয়ে বলা হয়েছিল, এর মধ্যে তথ্য না দিলে তারা নিজেরাই তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে তাদের মতামত দিবে। সরকার সাড়া না দেয়ায় ওয়ার্কিং গ্রুপ নিজেরাই তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে তাদের মতামত চূড়ান্ত করে। এতে তাদের আটক রাখাকে বিধি বহির্ভূত উল্লেখ করে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানানো হয়েছিল।
ওয়ার্কিং গ্রুপের রিপোর্টে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযম, নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাশেম আলী ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের আটক করা ও তাদের ব্যাপারে ট্রাইব্যুনালের বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, তাদেরকে খামখেয়ালীভাবে বিধিবহির্ভূত বিচার পূর্ব আটক রাখা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ন্যায্য বিচারের ন্যূনতম মানও খেয়াল রাখা হয়নি।
ওয়ার্কিং গ্রুপের পর্যালোচনা
ওয়ার্কিং গ্রুপ তাদের প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে পুরো বিষয় পর্যালোচনা করে। নিচে তা তুলে ধরা হলো।
১. সূত্র থেকে প্রাপ্ত অভিযোগগুলো সরকার খন্ডন করতে পারেনি।
২. আইসিসিপিআর এর ৯.৩ ধারা মতে, বিচারের মুখোমুখি হওয়ার শর্তে বিচারের যে কোনো পর্যায়ে জামিন দেয়া যায়। মানবাধিকার কমিটির মতে, বিচার পূর্ব আটক ব্যতিক্রম ঘটনা। (সূত্র: মানবাধিকার কমিটির বিধি এর ধারা ৯ এর প্যারা-৩
৩. অপরাধের প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে জামিন নাকচ করা যায়, বিশেষ করে মানবতাবিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার ক্ষেত্রে। তবে জাতিসংঘ নিয়ন্ত্রিত কম্বোডিয়ার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল (ইসিসিসি
তে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন মুক্তি বা জামিন দেয়ার বিধান রয়েছে। (সূত্র: ইসিসিসির কার্যবিধি এর ৬৪,৬৫ এবং ৮২.২ ধারা
।
৪. এটা সত্য ওয়ার্কিং গ্রুপ দেখেছে বিচারপতি ইচ্ছা করলে আটকাদেশের বৈধতা দিতে পারে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ বা জাতীয় আইনী ব্যবস্থায় বা মারাত্মক অপরাধের ব্যাপারে'। (সূত্র: সাবেক যুগোশ্লাভিয়ার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনী পর্যালোচনার ওপর ওয়ার্কিং গ্রুপের রিপোর্ট নং ই/সিএন.৪/২০০১/১৪ এর প্যারা নং ৩৩
।
৫. কোনো মামলায় আদালত যদি কারো জামিন বিবেচনা করে, তখন সরকার পক্ষ থেকে বোঝানোর চেষ্টা করবে যে, আসামী ছাড়া পেলে বিচারের মুখোমুখি হবে না এবং সে ভিকটিম, সাক্ষী ও অন্যদের জন্য ভীতির কারণ হবে।
৬. আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আসামী স্থানান্তর পরবর্তী (জামিন
পরিস্থিতি বিবেচনা করবেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের দৃষ্টিতে কোন বিচ্যুতি হলে বা আইনের ফাকফোকর দিয়ে কিছু হলে ট্রাইব্যুনাল গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করবে এবং আসামী যে এলাকায় অবস্থান করবে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক সংস্থার এ ধরনের পরিস্থিতি বাংলাদেশের দেশীয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাথে প্রাসঙ্গিক নয়।
৭. ট্রাইব্যুনাল এ ক্ষেত্রে প্রমাণের ভার সরকার পক্ষকে না দিয়ে আসামীপক্ষকে দিয়েছে এবং বিচার পূর্ব জামিন দেয়ার ক্ষেত্রে রুলের বাইরেও পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু জামিন পাওয়ার জন্য গুরুতর অসুস্থ নয় বলে ৯০ বছর বয়সী গোলাম আযম, ৬০ বছর বয়সী কাসেম আলী ও আজহারুল ইসলামের জামিন নাকচ করে দিয়েছে।
৮. যখন কোনো জামিন আবেদন আদালতের বিবেচনায় আসবে, তখন সরকার পক্ষ বা তদন্ত সংস্থার ওপর দায়িত্ব বর্তাবে এটা প্রমাণ করার যে, আসামী জামিনের পর বিচারের মুখোমুখি হবে না এবং সে ভিকটিম, সাক্ষী ও অন্যদের জন্য ভীতির কারণ হবে। (সূত্র: ইসিসিসি এর প্রি-ট্রায়াল চেম্বারে Sary et al এর মামলা সিদ্ধান্ত
।
৯. ইউনিভার্সাল ডিকলারেশন অব হিউম্যান রাইট্স-ইউডিএইচআর এর ধারা-৯ এবং আইসিসিপিআর এর ধারা-৯ অনুযায়ী অবশ্যই জামিন পাওয়ার অধিকার থেকে মি. ইসলাম, আযম ও আলী বঞ্চিত হয়েছেন।
১০. সাক্ষীদের পর্যাপ্ত সময়ে জেরা করার অধিকার থেকেও আসামী পক্ষকে বঞ্চিত করার অভিযোগ ওয়ার্কিং গ্রুপের কাছে এসেছে। তবে এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত তথ্য ওয়ার্কিং গ্রুপের কাছে আসেনি। মি. ইসলাম ও আলীর বিচার শুরু হয়েছে এমন তথ্য আমাদের কাছে নেই। মি. আযমের মামলায় আসামী পক্ষ প্রথম সাক্ষীকে ৪ দিন জেরা করে। আর পরবর্তী সাক্ষীকে বেশ কয়েকদিন জেরা করা হয়। মূলত সাক্ষীকে জেরা করা আসামী পক্ষের অধিকার আর ন্যায় বিচারের স্বার্থেই তা আদালতকে নিশ্চিত করতে হবে এবং এই অধিকার দেখার দায়িত্ব ট্রাইব্যুনালেরই।
১১. তদন্ত সংস্থা কর্তৃক জিজ্ঞাসাবাদের আগে বা জিজ্ঞাসাবাদের সময় আইনজীবীদের সাথে পরামর্শ করার অধিকার থেকেও বঞ্চিত হয়েছেন মি. ইসলাম, আযম ও আলী। ওয়ার্কিং গ্রুপ জানতে পেরেছে মি. আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তার কোনো আইনজীবীকে থাকতে দেয়া হয়নি বা পরামর্শও করতে দেয়া হয়নি। তবে এ ব্যাপারে মি. আযম ও ইসলামের বিষয়ে আমাদের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য নেই।
ওয়ার্কিং গ্রুপের সুপারিশ
১. উক্ত আলোচনা শেষে ওয়ার্কিং গ্রুপ অন আরবিট্রারী ডিটেনশন নিম্নোক্ত মতামত দেয়: ইউনিভার্সাল ডিকলারেশন অব হিউম্যান রাইট্স-ইউডিএইচআর এর ধারা-৯ এবং ইন্টারন্যাশনাল কোভেন্যান্ট অন সিভিল এবং পলিটিক্যাল রাইটস-আইসিসিপিআর এর ধারা-৯ লংঘন করে গোলাম আযম, মীর কাশেম আলী ও এটিএম আজহারুল ইসলামকে খামখেয়ালীভাবে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
২. মি. ইসলাম, আযম ও আলীর প্রতি অবিচারের প্রতিকার করার জন্য সরকারের প্রতি ওয়ার্কিং গ্রুপ অনুরোধ জানায়। মানবাধিকারের শাশ্বত ঘোষণা-ইউডিএইচআর ও আইসিসিপিআর অনুযায়ী মান ও মূলনীতি নির্ধারণ করতে হবে।
৩. আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী মি. ইসলাম, আযম ও আলীর জামিন আবেদন পুনঃবিবেচনা করুন।
৪. ওয়ার্কিং গ্রুপের রিভার্স্ড ম্যাথড এর ৩৩ (এ
ধারা অনুযায়ী, পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জাতিসংঘের Special Rapporteur on Torture এর নিকট পাঠানোর সুপারিশ করে। Special Rapporteur on Torture হচ্ছে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংগঠনের সমন্বয়ে এমন একটা সংস্থা যারা মানবাধিকার লংঘনজনিত বিষয়ে তদন্ত, পর্যবেক্ষণ ও সমাধানের বিষয়ে কাজ করে।
ওয়ার্কিং গ্রুপের আগের রিপোর্টে যা বলা হয়
এর আগে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের ওয়ার্কিং গ্রুপ অন আরবিটারী ডিটেনশন (UN Working Group On Arbitrary Detention) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক আটক মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লাকে আটক রাখার প্রক্রিয়া আইন সম্মত হয়নি বলে অবিলম্বে তাদের মুক্তি দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছিল। আটককৃতদের অধিকার হরণ, প্রয়োজনীয় তথ্য না দেয়া এবং জামিন দেয়ার বিধান বন্ধ করে দেয়াকেও আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতির পরিপন্থী বলে উল্লেখ করেছে তারা এ অবস্থার অবসানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানায়।
ওয়াকিং গ্রুপ মনে করে, বাংলাদেশকে এই বিচার প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ীই করতে হবে। কেননা বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট (আইসিসি
এর Rume statute এর সমর্থনকারী দেশ।
ওয়ার্কিং গ্রুপের রিপোর্টে বলা হয়, যুদ্ধাপরাধের বিচারসহ বাংলাদেশ সরকার সব জায়গায়ই মানবাধিকার নিশ্চিত করায় অঙ্গীকারাবদ্ধ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে জাতিসংঘের সহযোগিতা চেয়েছেন বিচার প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক মান রক্ষা এবং ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার জন্য। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ এ ব্যাপারে প্রস্তাব পাস করেছে। বাংলাদেশ সরকার বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড বন্ধ ও রাজনৈতিক সম্প্রীতির সংস্কৃতি উন্নয়ন করতে চায়। (এ/এইচআরসি/১১/১৮, প্যারা-১৫
এতে আরো বলা হয়, ওয়ার্কিং গ্রুপ মনে করে এই বিচার প্রক্রিয়াকে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ীই বাংলাদেশকে করতে হবে। কেননা বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট (আইসিসি
এর Rume statute এর সমর্থনকারী দেশ। এ অনুযায়ী যুগোস্লাভিয়া ও রুয়ান্ডার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং অন্যান্য ট্রাইব্যুনালে বিচার হয়েছে।
এতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিধি ও মামলার উদাহরণ দিয়ে বলা হয়, বিচার পূর্ব আটক করে রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার আত্মপক্ষ সমর্থনকারীদের অধিকার হরণ করেছে।
ওয়ার্কিং গ্রুপ দীর্ঘ আলোচনা শেষে তাদের অভিমত দিতে গিয়ে বলে, আত্মপক্ষ সমর্থনকারীদের আইনী সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের অধিকার দারুণভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। ডিফেন্স পক্ষের আইনজীবীদেরকে আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় থাকতে দেয়া হয়নি এবং তাদেরকে অভিযোগের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় তথ্যও দেয়া হয়নি। ওয়ার্কিং গ্রুপ মনে করে, ডিফেন্স আইনজীবীদের প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা এবং বিচার পূর্ব আটকাদেশ চ্যালেঞ্জ করতে না দেয়ায় আইসিসিপিআর এর আর্টিক্যাল ৯(২
এবং ৯(৪
আর সাধারণ আইনের মূলনীতির পরিপন্থী।
বিচারের পূর্বে ১ বছরের ও অধিক সময় আটকে রাখা আত্মপক্ষ সমর্থনকারীদের প্রয়োজনীয় তথ্য না দেয়া আইসিসিপিআর এর আর্টিক্যাল ৯(২
এবং ৯(৩
এর পরিপন্থী। সরকার এ ব্যাপারে অব্যাহতভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। সরকার তাদেরকে জামিন না দেয়ার ব্যাপারে কোনো যৌক্তিক কারণ ও দেখাতে পারেনি। ওয়ার্কিং গ্রুপ মনে করে তাদেরকে এভাবে আটক রাখা সম্পূর্ণ অন্যায় ও অযৌক্তিক।
চিঠিতে বলা হয়, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, আবদুল কাদের মোল্লা, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরী স্বেচ্ছাচারিতার শিকার বলে সার্বজনীন মানবাধিকার সনদ এর আর্টিক্যাল-৯ এবং আইসিসিপিআর এর আর্টিক্যাল-৯ অনুযায়ী ওয়ার্কিং গ্রুপের কাছে আবেদন করেছে। ওয়াকিংর্ গ্রুপ বাংলাদেশ সরকারকে আইসিসিপিআর এবং সার্বজনীন মানবাধিকার সনদ অনুযায়ী তাদের অবস্থার অবসান ঘটাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অভিমত জানায়।
????????????? ????????? ?????????? ?????? ???? ????? ???? ??????? | The Daily Sangram