He is pioneer cos he brought POP genre of music in BD in early days........or for first time......so he is called PoP King...I liked him...but he has a very brief list of famous songs by him.
রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া পৃথকভাবে তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। শোকবার্তায় তাঁরা বলেন, মুক্তিযোদ্ধা এবং সংগীতশিল্পী ও ক্রীড়ানুরাগী হিসেবে তিনি যে অবদান রেখেছেন, জাতি তা চিরকাল স্মরণ রাখবে।
গতকাল শিল্পী আজম খানের মরদেহ সিএমএইচের হিমঘরে রাখা হয়। আজ সোমবার সকাল সাতটায় তাঁর মরদেহ কমলাপুরের বাড়িতে নেওয়া হবে। সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে সকাল ১০টায়, রাখা হবে বেলা ১১টা পর্যন্ত। জানাজা হবে বাদ জোহর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে। মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরশয্যায় শায়িত করা হবে তাঁকে।
আলাল দুলাল, সালেকা মালেকা, রেল লাইনের বস্তির ছেলের কথা তুলে ধরে তিনি স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলা গানে সমাজের নিচুতলার অতি সাধারণ মানুষকে উপস্থাপন করেছিলেন। এসব সাধারণ মানুষ, তাঁর ব্যতিক্রমী কণ্ঠস্বর এবং সংগীত পরিবেশনার একান্ত আপন আঙ্গিক তাঁকে দ্রুত জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দেয়। বিশেষ করে, রেললাইনের ঐ বস্তিতে জন্মে ছিল একটি ছেলে/ ছেলেটি মরে গেছে/ মা তার কাঁদে/ বাংলাদেশ বাংলাদেশ গানটি শ্রোতাদের হূদয়ে তাঁর স্থায়ী আসন তৈরি করে দেয়।
আজম খানের জন্ম ১৯৫০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার আজিমপুরের সরকারি কোয়ার্টারে। পুরো নাম মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান। বাবা আফতাব উদ্দিন খান সরকারি চাকরিজীবী। মা জোবেদা বেগম সংগীতশিল্পী। শৈশব থেকেই সংগীতে অনুরাগ। মায়ের অনুপ্রেরণায় নিয়মিত চর্চা। ১৯৬৬ সালে তিনি সিদ্ধেশ্বরী হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং ১৯৬৮ সালে টিঅ্যান্ডটি মহাবিদ্যালয় থেকে এইচএসসি পাস করেন।
১৯৭২ সলে উচ্চারণ নামের ব্যান্ড দিয়ে তাঁর যাত্রা শুরু হয়েছিল। সে বছরই বিটিভিতে প্রচারিত এত সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে ও চার কালেমা সাক্ষী দেবে এই গান দুটি তাঁকে জনপ্রিয় করে তোলে। এরপর ওরে সালেকা ওরে মালেকা, রেললাইনের ঐ বস্তিতে, আসি আসি বলে তুমি আর এলে না, আলাল ও দুলাল, হারিয়ে গেছে খুঁজে পাব নাএসব গানে গানে তিনি শ্রোতাদের মাতিয়ে তোলেন। এক যুগ নামে তাঁর প্রথম অডিও ক্যাসেট প্রকাশিত হয় ১৯৮২ সালে। সব মিলিয়ে তাঁর গানের অ্যালবাম ১৭টি। জনপ্রিয় অন্যান্য গানের মধ্যে আছে, এত সুন্দর দুনিয়ায় কিছু রবে না রে, হাইকোর্টের মাজারে, জীবনে কিছু পাব না, পাপড়ি কেন বোঝে না, সাঁইজি, সব মানুষই সাদা কালো, মানুষ নামে খেলনা, জীবনের শেষ কটা দিন, অনামিকা, অভিমানী এসব।
সঙ্গীতপ্রেমিক হিসেবে তিনি একটি অনন্য দৃষ্টান্ত। জীবনের নির্মম পরিহাসে অত্যন্ত দুঃখ ভারাকান্ত অবস্থায়ও আঁকড়ে ধরে ছিলেন গান। মুক্তিযুদ্ধের কারণে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিক্ষাগত দিক থেকে পিছিয়ে পড়েন। ফলে উপার্জনের জন্য একমাত্র অবলম্বন হয়ে ওঠে তার অর্জিত প্রতিভা পপসঙ্গীত। ৭২ সালে নটর ডেম কলেজের প্রাঙ্গণে নিজস্ব আয়োজনে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রথম দর্শকের সামনে গান করেন তিনি। ৭৩ সালের এপ্রিলে প্রথম কনসার্টে গান করেন। ওই কনসার্টে ফিরোজ সাঁই, ফেরদৌস ওয়াহিদ, ফকির আলমগীর ও পিলু মমতাজ গান করেন। কনসার্টে আজম খান হে আল্লাহ হে আল্লারে, চার কলেমা, হাইকোর্টের মাজারে, ওরে সালেকা ওরে মালেকা গান গেয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান। ঢাকা রেকর্ড থেকে ৭৩ সালের শেষের দিকে তার প্রথম রেকর্ড বের হয়। ৮২ সালে একযুগ নামে তার প্রথম ক্যাসেট বের হয়। প্রথম সিডি বের হয় ৯৯ সালে ডিস্কো রেকর্ডিংয়ের প্রযোজনায়। বিটিভিতে প্রথম গান করেন ৭৩ সালে।
সর্বত্র শোকের ছায়া : তার মৃত্যুতে সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সাংস্কৃতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতারা শোকপ্রকাশ করেছেন। জাতীয় পার্টি, জাসদ, গণফোরাম, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, বিকল্পধারা, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, যুব গণফোরাম, সিলেট বিভাগ উন্নয়ন পরিষদ, জিয়া সেনা, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, জনদুর্ভোগ নির্মূল জাতীয় কমিটি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বিজিএমইএসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা শোক প্রকাশ করেন।
ওদিকে আজম খানের মৃত্যুতে স্পিকার আবদুল হামিদ অ্যাডভোকেট, ডেপুটি স্পিকার কর্নেল শওকত আলী এবং চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন। তারা মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। পৃথক শোকবার্তায় তারা মুক্তিযুদ্ধ এবং সঙ্গীত অঙ্গনে মরহুমের অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।