Bangladesh is an inferno, where innocent Muslims are mercilessly getting killed for the greed of expansionists and their hatred against Islam.
হরতাল, নিহত ১১
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির প্রতিবাদে গতকাল সারাদেশে নজিরবিহীন হরতাল পালিত হয়েছে।
জামায়াতের ডাকা হরতালে গতকাল সারাদেশে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় পুলিশ ও বিজিবির গুলিতে উপজেলা ছাত্রশিবির সভাপতিসহ ৩ শিবিরকর্মী এবং গণপিটুনিতে একজন আওয়ামী লীগকর্মীসহ ৫ জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন। জয়পুরহাট শহরের হালুট্টি বাজারে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের ২ কর্মীসহ ৩ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া যশোরের চৌগাছায় এক বিএনপি
নেতাকে ও লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে এক ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সাতক্ষীরায় র্যাবের গুলিতে এক জামায়াতকর্মী নিহত হয়েছেন।
এদিকে সারাদেশে জাতীয় ও আঞ্চলিক সড়ক-মহাসড়কে গাছ ফেলে, টায়ার জ্বালিয়ে ও বিক্ষোভ মিছিলের মধ্য দিয়ে হরতাল পালন করেছে জামায়াত। বগুড়া, চাঁদপুর, সিরাজগঞ্জ, ঝালকাঠিসহ কয়েকটি জেলায় যানবাহনে আগুন ও ভাংচুর করা হয়েছে।
হরতাল চলাকালে ঢাকার মগবাজার, ফকিরাপুল, যাত্রাবাড়ী, জগন্নাথ কলেজ, মহাখালী, বাড্ডা, খিলগাঁও, মিরপুর, পল্টন, মুগদাসহ বিভিন্ন এলাকায় জামায়াত শিবিরেরকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এসব মিছিল থেকে বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। কল্যাণপুরের একটি মেসে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ২ শিবিরকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। সেখান থেকে কিছু গানপাউডার উদ্ধারের দাবি করেছে পুলিশ।
গতকাল সারাদেশের সঙ্গে সড়ক ও রেলযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। গণপ্রতিরোধের মুখে সারাদেশ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল রাজধানী ঢাকা। লঞ্চ যোগাযোগও ছিল বন্ধ। সড়কে ব্যারিকেড দেয়া, রেললাইনের ফিসপ্লেট খুলে ফেলা এবং পিকেটিংয়ের কারণে ব্যাপক ভীতিকর পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে সারাদেশে। বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব বর্বরভাবে গুলি চালিয়ে নিরীহ মানুষকে হতাহত করেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে গণহারে। মামলা দেয়া হয়েছে অসংখ্য লোকের বিরুদ্ধে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরের বিস্তারিত :
পাটগ্রামে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে শিবির সভাপতিসহ ৩ শিবিরকর্মী, সংঘর্ষে ছাত্রলীগ কর্মীসহ নিহত ৫
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় পুলিশ ও বিজিবির গুলিতে উপজেলা ছাত্রশিবির সভাপতিসহ ৩ শিবিরকর্মী এবং অজ্ঞাত লোকদের হাতে ছাত্রলীগকর্মীসহ ৫ জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিকেল থেকে ১৪৪ ধারা রাত ১১টা পর্যন্ত জারির মাইকিং করে ঘোষণা দেয় প্রশাসন।
গতকাল জামায়াতের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালের সমর্থনে উপজেলার সরেওর বাজার নামক স্থানে সকাল ৭টার দিকে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহরে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে পুলিশ-বিজিবির সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ ও বিজিবি বেপরোয়া গুলি শুরু করলে এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে পাটগ্রাম উপজেলার কোটতলী গ্রামের কমর উদ্দিনের ছেলে উপজেলা ছাত্রশিবির সভাপতি মনিরুল ইসলাম ও মমিনপুর গ্রামের করিম আলীর ছেলে ছাত্রশিবিরকর্মী আবদুর রহিম, বাংলাবাড়ী গ্রামের মোস্তফা হোসেনের ছেলে সাজু মিয়া (২১) নিহত হন। সংঘর্ষ চলাকালে হার্ট অ্যাটাকে আরো একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি মারা যান।
একই সময় অজ্ঞাত ব্যক্তিরা রসুলগঞ্জ গ্রামের বাহার উদ্দিনের ছেলে ছাত্রলীগকর্মী মিন্টু মিয়াকে গলা কেটে হত্যা করে।
সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন রুবেন্স, কাজী কিবরিয়া, কাজী কুতুব এবং গুলিবিদ্ধ হয়ে আহতরা হলেন বেলাল ও হারুনুর রশিদ। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দফায় দফায় এ ঘটনা ঘটে।
পাটগ্রাম থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোহরাব হোসেন জানান, পুলিশ শর্টগানের গুলি ৪৭ রাউন্ড, চায়না ৩০ ও ১ রাউন্ড টিয়ারশেল ছুড়লে ঘটনাস্থলে আবদুর রহিম নামে এক শিবিরকর্মী এবং হাসপাতালে ছাত্রশিবির সভাপতি মনিরুল ইসলাম চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা যায়।
পাটগ্রাম হাসপাতালের আবাসিক চিকিত্সক ডা. প্রণব কুমার দাস জানান, পুলিশ একজনের মৃতদেহ নিয়ে আসে। অপরজন মমিনুর হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় এবং অন্য একজন রংপুর নেয়ার পথে মারা যায়।
অপরদিকে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-দফতর সম্পাদক কাদের এলাহী লাভলুর বাড়িতে এবং পাটগ্রাম-লালমনিরহাট রেললাইনে অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় উত্তেজিত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জামায়াত নেতা সাজু ও বিএনপি নেতা আছির উদ্দিনের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর করে। এ ঘটনায় উপজেলাজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
জয়পুরহাটে র্যাব-পুলিশ-বিজিবির গুলিতে জামায়াত-শিবিরের ২ কর্মীসহ নিহত ৩
জয়পুরহাট শহরের হালুট্টি বাজারে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের ২ কর্মীসহ ৩ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নারী ও শিশুসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
গতকাল বিকেলে সদর উপজেলার পুরানাপুল হালুট্টি বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন সদর উপজেলার জলাকুল গ্রামের ইকবাল হোসেনের ছেলে শিবিরকর্মী শামীম (২২) এবং হালুট্টি গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে জামায়াতকর্মী ফিরোজ (২৮) ও একই গ্রামের মমতাজ উদ্দিনের ছেলে ইনসান আলী (২৮)।
প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুর আড়াইটায় জামায়াত-শিবিরকর্মীরা হরতালের সমর্থনে সদর উপজেলার পুরানাপৈল বাজারের কাছে পাকুড়তলী নামক স্থানে রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে জয়পুরহাট-হিলি সড়ক অবরোধ করে পিকেটিং করতে থাকে। এ সময় পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে জামায়াত-শিবিরকর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। জামায়াত-শিবিরকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে চারটি ককটেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ জামায়াত-শিবিরকর্মীদের লক্ষ্য করে পাঁচ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা রাস্তা থেকে সরে যায়।
পুলিশ তখন অতিরিক্ত ফোর্স তলব করে। এরপর পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে ২২ গাড়ি র্যাব-বিজিবি ও পুলিশ পুরানপৈল ইউনিয়নের দস্তপুর, হালুট্টি, তুলাট, জলাটুল ও হাতীগাড়া এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করে। এ সময় হাজার হাজার গ্রামবাসী লাঠিসোটা, দা-বঁটি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এগিয়ে এসে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাবের ওই দলকে চারদিক থেকে ঘেরাও করে ফেলে।
তখন গ্রামবাসীকে লক্ষ্য করে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব সদস্যরা নির্বিচারে শত শত গুলিবর্ষণ করে।
তুলাট গ্রামের আবদুল জব্বার জানান, র্যাব-পুলিশ সাধারণ মানুষের ওপর নিষ্ঠুরভাবে গুলি করেছে। ঘণ্টাব্যাপী নির্বিচার গুলিবর্ষণের ঘটনায় হালুট্টি গ্রামের রেজওয়ান, রিয়াজুল, হানজালা, শামিম, রবিউল, হাতীগাড়া গ্রামের মাহমুদুল হাসান, খবির উদ্দীন, মনসুর রহমান, ফিরোজ হোসেন, ইনসান আলী, আবদুর রহমান মেম্বার, তার ছেলে সুজন, হাতীগাড়া গ্রামের এনামুল, তুলাট গ্রামের ভ্যানচালক শাকিল (১৬)সহ প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রামবাসী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ জলাটুল গ্রামের ইকবাল হোসেনের ছেলে শিবিরকর্মী শামিম (২০) ও তুলাট গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ হোসেন (২৮) মারাত্মক আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পথে শামিম ও হাসপাতালে ভর্তি করার পর ফিরোজ মারা যায়। প্রত্যক্ষদর্শী বেলাল হোসেন জানান, বাড়ির উঠানে কর্মরত দস্তপুর গ্রামের আবু সালেহের স্ত্রী রাজিয়া বেগমের (৪০) পেটে গুলি লাগে; এমনকি মাঠে কর্মরত কৃষকদেরও লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে পুলিশ।
ঘটনার পরপরই জয়পুরহাট জেলা শহরে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
সাতক্ষীরায় র্যাবের গুলিতে জামায়াতকর্মী নিহত
সাতক্ষীরা সদরের কুচপুকুর এলাকায় জামায়াত সমর্থক হাবিবুর রহমান হবিকে (৩৫) গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি সদরের আগরদাড়ি ইউনিয়নের জামায়াত নেতা আকবর আলীর ছেলে।
গতকাল সকালে হরতালের সমর্থনে পিকেটিংয়ের সময় শহরের কদমতলা বাজারের পাশে লাশ পড়ে থাকে দেখে জামায়াতের কর্মীরা। তার বুক ও মাথার একাধিক স্থানে গুলির ক্ষত রয়েছে।
নিহতের স্বজনরা জানান, গত ৩ দিন ধরে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। এর আগে খুলনার ডুমুরিয়া থেকে তাকে র্যাব আটক করেছে বলে মোবাইল ফোনে তার পরিবারকে জানানো হয়।
গত শনিবার বিকালে ও সন্ধায় র্যাব ওই এলাকায় কয়েকবার চলাচল করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ আব্দুল খালেক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের জানান, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
এর আগে একই এলাকায় খুন হন আ.লীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম। খুনের ঘটনায় জামায়াত সমর্থক হাবিবুর রহমান হবিকে (৩৫) প্রধান আসামি করে মামলা করা হয়।
নিহতের স্ত্রী খাদিজা জানান, আওয়ামী লীগ নেতা খুনের ঘটনায় প্রতিপক্ষের যোগসাজশ র্যাব তার স্বামীকে হত্যা করেছে।
লক্ষ্মীপুরে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় গতকাল ছাত্রলীগের এক নেতাকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। নিহত মেরাজ হোসেন (৪৫) জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। সন্ধ্যায় রায়পুররে বাটেকোপোলে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানিয়েছে, মেরাজ হোসেন রায়পুর থেকে মীরগঞ্জ যাচ্ছিলেন। এ সময় তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। একই সময় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত অপর ছাত্রলীগ কর্মী মাহফুজকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইসমাইল হোসেন খোকন বলেন, ‘জামায়াত-বিএনপির কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে ছাত্রলীগ নেতা মেরাজকে হত্যা করেছে।’
রায়পুর থানার ওসি রূপক কুমার সাহা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
এছাড়া জেলার কালাইয়ের মোসলেম বাজারে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে আওয়ামী লীগ কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন কালাই থানার ওসি রমজান আলী।
যশোরে বিএনপি কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা
যশোরের চৌগাছায় আলমগীর হোসেন (৩৩) নামে এক বিএনপি কর্মীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল রোববার সকালে চৌগাছা থানা পুলিশ টালিখোলা রাস্তার পাশের বিলের একটি ঝোঁপ থেকে তার লাশ উদ্ধার করে। নিহত আলমগীর উপজেলা সদরের কলেজপাড়ার সাকা ব্যাপারীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, দুর্বৃত্তরা আলমগীরকে অপহরণের পর পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে গেছে।
না.গঞ্জে পুলিশের গুলিতে ২ শিবির কর্মী আহত
গতকাল সকালে জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতাল চলাকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের উকিলপাড়া এলাকায় শিবিরের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ওই সময় পুলিশের গুলিতে আহত ২ শিবির কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেফতার হওয়ারা হলো চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার আতাউর রহমানের ছেলে মাহমুদুল (২৫) ও দিনজাপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার আব্দুর রউফের ছেলে শরীফ (২৪)। সংঘর্ষ চলাকালে শিবির কর্মীরা প্রচুর ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়।
এর আগে গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শহরের উকিলপাড়া এলাকা থেকে শিবিরের ৩০-৩৫ জন হরতাল সমর্থনে মিছিল বের করে। মিছিলকারীরা একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকে। তারা বঙ্গবন্ধু সড়কে এসে যানবাহন ভাংচুরের চেষ্টা করলে পুলিশ এসে বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ গুলি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
সাতকানিয়ায় ৮ শিবির কর্মী গ্রেফতার
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলা থেকে আট শিবির কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার সকালে জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতালে ছদাহা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। চট্টগ্রামের সহকারী পুলিশ সুপার (সাতকানিয়া সার্কেল) একেএম এমরান জানান, সাম্প্রতিক সময়ের বিভিন্ন হরতালে ছদাহা ইউনিয়নের চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের হাসমতের দোকান এলাকায় ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছিল জামায়াত-শিবির কর্মীরা। এ কারণে মামলার আসামিদের আটকে গতকাল রোববার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত ছদাহা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালানো হয়।
নবীনগরে গ্রেফতার ৮
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানার পুলিশ নাশকতার আশঙ্কায় গতকাল রোববার গভীর রাতে সোহাতা গ্রামে অভিযান চালিয়ে ভোলাচং গ্রামের আবু কাউছারের ছেলে ও উপজেলা শিবিরের সভাপতি শাহপরান (২৩) ও সোহাতা গ্রামের মৃত মন মিয়ার ছেলে ও উপজেলা শিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ জালালসহ (২১) ৮ জনকে গ্রেফতার করে। পুলিশ গতকাল তাদের জেলহাজতে প্রেরণ করে। নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবু জাফর জানান, নাশকতার আশঙ্কায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
কালীগঞ্জে পুলিশের গুলি
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে গাছ কেটে ও বস্তা ফেলে রাস্তা অবরোধ করার সময় পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার সকাল ৯টার দিকে কালীগঞ্জ উপজেলার ছালাভরা নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ ৬ রাউন্ড শর্টগানের গুলি নিক্ষেপ করলে জামায়াত-শিবির কর্মীরা পালিয়ে যায়। অপর দিকে শহরের কালীগঞ্জ শহরের ফয়লা রোডে একটি মিষ্টির দোকান ভাংচুর করেছে পিকেটাররা। এ ঘটনার সময় জামায়াত-শিবির কর্মীরা একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একদল বিজিপি কালীগঞ্জ শহরে টহল দেয়। কালীগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মনির উদ্দীন মোল্লা জানান, জামায়াত-শিবির কর্মীরা গাছ কেটে ও বস্তা ফেলে সড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে জামায়াত-শিবির কর্মীরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ ৬ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছোড়ে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিআরটিসি বাসে আগুন
হরতাল সমর্থনকারীরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ স্থলবন্দর সড়কের মুসলিমপুরে রাস্তা কেটে ও কয়েকটি স্থানে রাস্তায় গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করে। পরে পুুলিশ, বিজিবি সদস্যরা অবরোধ সরিয়ে ফেলেছে বলে জানান জেলা প্রশাসক সরদার সরাফত আলী। তিনি আরও জানান, সড়ক অবরোধের কারণে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে আটকে পড়া প্রায় দেড়শ’টি পেঁয়াজের ট্রাক বিকাল ৫টার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রহরায় রাজশাহী পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর আগে গত শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শিবগঞ্জ উপজেলার পাইলিং মোড়ে একটি বিআরটিসি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
ভাণ্ডারিয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাজা
জামায়াত-শিবির কর্মীরা গতকাল রোববার পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সড়কে গাছ ফেলে আগুন দেয় এবং কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে। পরে পুলিশ সড়কের গাছ সরিয়ে ফেলে। হরতাল চলাকালে দূরপাল্লার যানবহনসহ অভ্যন্তরীণ বাস চলাচল বন্ধ ছিল। হাফেজ সাইফুল ইসলাম (১৯) নামের এক শিবির কর্মীকে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
গৌরনদীতে মিছিলে হামলায় ৫ শিবির কর্মী আহত
জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা গত শনিবার রাতে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার কটকস্থল বাসস্ট্যান্ডে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের ওপর ঝটিকা মিছিল বের করে। স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তখন মিছিলের ওপর নগ্ন হামলা চালায়। এতে ৫ শিবির কর্মী আহত হয়। হামলাকারীরা এ সময় ওই এলাকায় ৮টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। গোটা এলাকায় তখন আতঙ্ক ও উত্তেজনা দেখা দেয়। কিছু সময়ের জন্য মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানায়, জামায়াত-শিবিরের ১০ থেকে ১৫ নেতাকর্মী গত শনিবার এশার নামাজের পর পর হরতালের সমর্থনে উপজেলার কটকস্থল বাসস্ট্যান্ডে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের ওপর একটি ঝটিকা মিছিল বের করে। খবর পেয়ে স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের শতাধিত নেতাকর্মী দেশি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জামায়াত-শিবিরের মিছিলটির ওপর নগ্ন হামলা চালায়। এ সময় তারা ওই এলাকায় ৮টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। একই সময় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পিছু ধাওয়া করে শিবির কর্মী আমির হোসেন হাওলাদার (২৫), আব্বাস খলিফা (১৮) ও রনি মাতব্বরকে (২০) আটক করে বেধড়ক পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। পুলিশ তখন তাদের আটক করে। আটক হওয়া শিবির কর্মীদের বাড়ি উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের মাগুরা-মাদারীপুর গ্রামে।
গৌরনদী থানার ওসি আবুল কালাম জানান, আটক হওয়া তিন শিবির কর্মীকে গত ৩০ নভেম্বর হরতালের সময় ভুরঘাটা এলাকায় একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগের মামলায় আসামি করে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে গতকাল রোববার সকালে আদালতে সোপর্দ করেছে।
গাজীপুরে সংঘর্ষ
গাজীপুরে বিক্ষোভ মিছিল, অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ, ভাংচুর. পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতার গুলির মধ্য দিয়ে হরতাল পালিত হয়েছে। গাজীপুর মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে হরতালের সমর্থনে মহানগরের জোরপুকুর বরুধা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এ সময় হরতাল সমর্থকরা ইট ও ঢালাইমেশিন দিয়ে রাস্তায় ব্যারিকেড দেয়। একপর্যায়ে পেট্রল ঢেলে সড়কে অগ্নিসংযোগ করে ও কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করে। এ সময় ৪টি ককটেলের বিস্ফোরণ হয়। পরে পুলিশ ও গাজীপুর বাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিবসহ নেতাকর্মীরা এসে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করলে হরতাল সমর্থকরা পালিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাবিবুর রহমানের বাসা ওই এলাকায়। হরতাল সমর্থকরা মিছিল বের করলে হাবিব বাসা থেকে পিস্তল নিয়ে দৌড়ে বের হয়ে আসে। এ সময় মিছিলকে লক্ষ করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এদিকে মহানগরের জয়দেবপুর চৌরাস্তা রুটের তিন সড়ক এলাকায় হরতাল সমর্থকরা দুপুর ১টায় ইট দিয়ে রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি করে ও অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় একটি বলাকা পরিবহনের বাসে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে হরতাল সমর্থকরা। পরে পুলিশ এসে ধাওয়া করলে পিকেটাররা পালিয়ে যায়।
ঝালকাঠিতে বিআরটিসি বাসে আগুন
ঝালকাঠিতে যাত্রীবাহী বিআরটিসি বাসে আগুন দেয়ার ঘটনায় জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান বাপ্পী ও জেলা যুবদলের সভাপতি কামরুল ইসলামসহ জামায়াত বিএনপির ২৩ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার রাতে বাসের চালক রুহুল আমীন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। এদিকে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ শনিবার রাতে জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৫ জামায়াত নেতাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতাররা হলো জেলা জামায়াত নেতা ও ৩নং ওয়ার্ড পৌর কাউন্সিলর মজিবুর রহমান (৪৫), জামায়াত কর্মী আবুল কালাম (৬৫), মোজাম্মেল হক (৫৫), আবুল কাসেম (৫৫) ও কামাল পারভেজ (২৫)। প্রসঙ্গত, শনিবার সন্ধ্যায় রোববারের হরতালের সমর্থনে বের হওয়া একটি মিছিল থেকে শিবির কর্মীরা শহরের বিশ্বরোডে একটি বিআরটিসি বাসে পেট্রল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।
ঝালকাঠি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ শীল মনি চাকমা জানান, ‘বাসে আগুন দেয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৫ জনকে গ্রেফতার করে রোববার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
চাঁদপুরে বাসে আগুন
চাঁদপুরে যাত্রীবাহী বাস, একটি পিকআপ ভ্যান ও একটি অটোরিকশা পুড়িয়ে দিয়েছে হরতাল সমর্থকরা। রোববার ভোরে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার খাজুরিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গাড়ির চালক চান মিয়া জানান, ওই এলাকায় কয়েকটি গাছ কেটে সড়ক অবরোধ করে রাখে জামায়াত-শিবির কর্মীরা। চট্টগ্রাম থেকে ৪৬ যাত্রী নিয়ে চাঁদপুর আসার পথে খাজুরিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এর পর সিএনজি ও পিকআপ ভ্যানটিতে আগুন দেয়া হয়।
সিরাজগঞ্জে ব্রিজের পাটাতন উত্তোলন
সিরাজগঞ্জে দুটি বেইলি ব্রিজের পাটাতন উত্তোলন, একটি প্রাইভেটকারে অগ্নিসংযোগ, ১২টি গাড়ি ভাঙচুর, খোকশাবাড়ি ও দিয়ার পাচিল এলাকায় পুলিশ ও ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ককটেল নিক্ষেপে ২ পুলিশ কনস্টেবলসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, হরতালের সমর্থনে রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় সিরাজগঞ্জ-কাজিপুর আঞ্চলিক সড়কের খোকশাবাড়ী এলাকায় ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধ করে হরতালের সমর্থনে মিছিল-সমাবেশ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে অবরোধকারীরা পুলিশকে লক্ষ করে পরপর ৫টি ককটেল বোমা নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশ ও ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ককটেল নিক্ষেপে ২ পুলিশ কনস্টেবলসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। গুরুতর আহত পুলিশ কনস্টেবল সোহেল রানা ও মাহবুবকে খোকশাবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে চারটি অটোরিকশা ভাঙচুর করেছে হরতালকারীরা। পরে সংঘর্ষ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। সদর উপজেলার দিয়ার পাচিলেও পুলিশ ও অবরোধকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ অর্ধশতাধিক টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে।
অন্যদিকে শনিবার গভীর রাতে সিরাজগঞ্জ-ঢাকা আঞ্চলিক সড়কের কোনাগাতি ও সিরাজগঞ্জ-সয়দাবাদ বাইপাস সড়কের বাঐতারায় দুটি বেলি ব্রিজের পাটাতন খুলে ফেলে জামায়াত-শিবির কর্মীরা। এই ঘটনায় কোনাগাতিতে দুটি পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এ সময় বাঐতারায় একটি প্রাইভেটকারে অগ্নিসংযোগ করে তারা।
এদিকে ভোরে বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু পশ্চিম সংযোগ সড়কের সয়দাবাদ, বাঐতারা ও কোনাগাতিতে অন্তত ১০টি গাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। হরতালের সমর্থনে সদর উপজেলার তেলকূপিতে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ ও মিছিল করেছে জামায়াত-শিবির।
ফরিদপুরে আটক ২
হরতাল চলাকালে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের খাবাসপুর থেকে যাদের আটক করা হয়, তারা হলেন জামাল (২২) ও রাবিকুল (২০)। কোতোয়ালি থানার পরির্দশক (তদন্ত) মো. আমিনুজ্জামান জানান, গোপনে খবর পেয়ে দুটি পেট্রল বোমাসহ তাদের আটক করা হয়। তাদের জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
নোয়াখালীতে ৫ শিবির কর্মী আটক
নোয়াখালীতে বিক্ষোভ মিছিল ককটেল বিস্ফোরণ, টায়ারে আগুন ও সড়ক অবরোধের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে। হরতাল চলাকালে নোয়াখালীতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ খোলা থাকলেও উপস্থিতি ছিল কম। হাটবাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট অধিকাংশ ছিল বন্ধ। টানা অবরোধের পর আবার হরতালে জেলার সব কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। হরতালে রিকশা ও সাইকেল ছাড়া কোনো যান চলাচল করেনি। নোয়াখালী থেকে কোনো দূর পাল্লার যান ছেড়ে যায়নি।
সকালে জেলার প্রধান বাণিজ্যিক নগরী বেগমগঞ্জের চৌমুহনীতে মিছিল করে জামায়াত-শিবির। মিছিলটি চৌমুহনীর পূর্ব বাজার থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আবার পূর্ব বাজারে গিয়ে শেষ হয়। জেলা শহর মাইজদীর পৌর কল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করা হয়। পিকেটাররা ঢাকা-নোয়াখালী-সোনাপুর সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখে।
এদিকে পুলিশ কোম্পানীগঞ্জে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে ৫ শিবির কর্মীকে আটক করেছে। অন্যদিকে হরতালের বিপক্ষে জেলা শহর মাইজদীতে আ.লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন পুলিশ পাহারায় একটি মিছিল করেছে। তবে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। হরতালে নাশকতা এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বগুড়ায় গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীকে মারধর
জামায়াতের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলাকালে গতকাল রোববার বগুড়া সদরের সাবগ্রামে তিনটি ট্রাক ভাঙচুর করেছে পিকেটাররা। বিভিন্ন স্থানে গাছের গুঁড়ি ফেলে মহাসড়ক অবরোধ করেছে হরতাল সমর্থকরা। শাজাহানপুরে গণজাগরন মঞ্চের এক কর্মীকে পিটিয়ে আহত করেছে। সকালে সদরের সাবগ্রামে দ্বিতীয় বাইপাস সড়কে ৩টি ট্রাক ভাঙচুর করে হরতাল সমর্থকরা। এ সময় গাছের গুঁড়ি ফেলে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে হরতাল সমর্থকরা। শনিবার রাতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
এদিকে শাজাহানপুরে গণজাগরণ মঞ্চের নেতা, বগুড়া ক্যান্টনমেন্টের অবসরপ্রাপ্ত ওয়ারেন্ট অফিসার হজরত আলীর ওপর হামলা চালিয়েছে একদল মুখোশধারী দুর্বৃত্ত। হামলায় গুরুতর আহত হয়ে তিনি বগুড়া সামরিক হাসপাতালে চিকিত্সাধীন রয়েছেন।
সকাল সাড়ে ১১টায় কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে ডোমনপুকুর নতুনপাড়া পুকুরপাড় রাস্তার ওপর কাপড় দিয়ে মুখ বেঁধে লাঠিসোটা নিয়ে ৫-৬ দুর্বৃত্ত হজরত আলীর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
ওসি মাহমুদুল আলম সাংবাদিকদের জানান, এখনই কোনো মন্তব্য নয়। তদন্ত সাপেক্ষে মূল বিষয়টি জানা যাবে।
মহেশখালীতে হরতাল পালিত
জামায়াতের নেতাকর্মীদের রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ার জ্বালিয়ে হরতাল পালন করতে দেখা গেছে। এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান করতে দেখা গেছে। শাপলাপুরের ষাইটমারা, বাড়িয়াপাড়া, শাপলাপুর বাজার, মাতারবাড়ির রাজঘাট ও নতুন বাজার, কালারমারছড়ার বড়ুয়াপাড়া, চাইল্ল্যাতলী, ঝাপুয়া, হোয়ানকের পানিরছড়া, টাইমবাজার, বড় মহেশখালীর নতুনবাজার, কুতুবজুমের তাজিয়াকাটা, খন্দকারপাড়া, বটতলী, কালামিয়ার বাজার, ছোট মহেশখালীর লম্বাঘোনাসহ আরও অনেক স্থানে পিকেটিং করা হয়।
ফুলবাড়ীয়ায় সড়ক অবরোধ
জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতাল চলাকালে ফুলবাড়ীয়ায় ট্রাক, মাইক্রোবাস ভাঙচুরসহ ককটেল বিস্ফোরণ করেছে হরতাল সমর্থকরা। এছাড়াও ভোরে উপজেলার ফুলবাড়ীয়া-ময়মনসিংহ রাস্তায় গাছ কেটে ও গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে যানচলাচলে বাধা সৃষ্টি করে জামায়াত-শিবির কর্মীরা।