Today again Jamaatis vandalized Hindu houses. Seems like Modi was correct.
নীলফামারীতে হিন্দু বাড়িতে আগুন, সাতটি ঘর পুড়েছে
নীলফামারী প্রতিনিধি | আপডেট: ২০:১৬, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৪
নীলফামারী জেলা সদরে পাশাপাশি দুটি হিন্দু পরিবারের বাড়িতে আগুন দিয়ে পালিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। এতে দুটি পরিবারের মোট সাতটি ঘর পুড়ে গেছে। আগুন ধরানোর ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী।
আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে জেলা সদরের লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের নৃসিংহ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, আগেও কয়েকবার দুর্বৃত্তরা হিন্দুদের বাড়িতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এ ব্যাপারে থানায় জিডি করার পরও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত ১৫/২০ দিনে ওই বাড়ির আশপাশের কয়েকটি হিন্দু বাড়িতে কয়েক দফা আগুন দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। বাড়িগুলোর খড়ের গাদা ও বাথরুমে চারবার আগুন দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১১টার দিকে নৃসিংহ গ্রামের বাসিন্দা তৈলক্ষ রায়ের (৬০) বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে ওই বাড়ি থেকে প্রতিবেশী সুবল চন্দ্র রায়ের বাড়িতে আগুন ছড়িয়ে যায়।
এতে তৈলক্ষ রায়ের পাঁচটি ও সুবল রায়ের দুটি ঘর পুড়ে যায়।
ঘটনায় জড়িত সন্দেহে স্থানীয় লোকজন জয়গুন নামে এক বেদে নারী ও আমিনুল ইসলাম নামের এক ফেরিওয়ালাকে আটক করে। তাঁদের দুজনকেই পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
অগ্নিকাণ্ডের সময় কেউই বাড়িতে ছিলেন না। বাড়ির মালিক তৈলক্ষ রায় জানান, তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি বলেন, ‘বাড়িতে আমি এবং আমার স্ত্রী থাকি। আমার স্ত্রী শ্যামলী রানী রায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। সকালে সে স্কুলে গেলে আমি বাড়ির বাইরে গরু দেখতে যাই। এর মধ্যে দুর্বৃত্তরা আমার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী লিটন চন্দ্র রায় (২০) বলেন, ‘প্রতিবেশী হরি কিশোরের বাড়িতে আমি দিনমজুরের কাজ করছিলাম। এ সময় তৈলক্ষ রায়ের বাড়িতে আগুন দেখে দৌড়ে এসে দেখি তিন নারী ও এক পুরুষ পালিয়ে যাচ্ছে। আমার চিত্কারে এলাকাবাসী আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। এ সময় দুই নারী পালিয়ে যায়। এক পুরুষ ও নারীকে আটক করা হয়।’
এলাকাবাসী জানান, লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নটি সদর উপজেলার হিন্দু-অধ্যুষিত এলাকা। যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার রাতে ওই ইউনিয়নে ব্যাপক ভাঙচুর এবং বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এরপর গত ১৪ ডিসেম্বর বিকেলে রামগঞ্জ বাজারে বর্তমান সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের গাড়িবহরে হামলা চালায় জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মীরা। সেই থেকে আবারও হামলার আতঙ্কে রয়েছেন তাঁরা।
নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজাহান পাশা বলেন, ‘ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে আমরা পরিষ্কার না। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার মামলার প্রস্তুতি নিয়েছে। মামলাটি হলে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এর আগে জিডি হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে ওসি বলেন, ‘তারা খড়ের গাদায় আগুন দেওয়ার বিষয়ে জিডি করেছিল, কিন্তু কারও নাম উল্লেখ করেনি।’ তিনি বলেন, এলাকাবাসী যে দুজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে তাঁরা হলেন জয়গুন নামে এক বেদে, তার স্বামীর নাম টেপুর আলী, বাড়ি সাভারে। আরেকজন হলেন জেলা সদরের পলাশবাড়ি গ্রামের আমিনুল ইসলাম নামের এক ফেরিওয়ালা। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
নীলফামারী সদর থানার উপপরিদর্শক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ঘটনাটি পরিকল্পিত মনে হচ্ছে। তবে ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
নীলফামারীতে হিন্দু বাড়িতে আগুন, সাতটি ঘর পুড়েছে