BD SU-35
FULL MEMBER
New Recruit
- Joined
- Oct 23, 2012
- Messages
- 15
- Reaction score
- 0
- Country
- Location
সাবমেরিন (ডুবো যুদ্ধজাহাজ ঘাঁটি হচ্ছে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায়। কুতুবদিয়া চ্যানেলকে ঘিরে এ পূর্ণাঙ্গ ঘাঁটি স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। এ জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কাছে প্রায় ৪২০ একর জমি বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
নৌবাহিনীর একটি দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে জানিয়েছে, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে ১০ বছরব্যাপী একটি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ২০১৬ সালের মধ্যে নৌবাহিনীর বহরে সাবমেরিন যুক্ত হতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, এতে খরচ হবে ১০০ কোটি ডলার।
সূত্রটি আরও জানিয়েছে, সাবমেরিনের উপযোগী কর্মকর্তা তৈরি করতে অনেক সময় লাগে। এ কারণে এখন থেকে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। এ জন্য নৌবাহিনীর পাঁচজন কর্মকর্তাকে সাবমেরিন বিষয়ে প্রশিক্ষণের জন্য তুরস্কের গোল চুক নৌঘাঁটিতে পাঠানো হয়েছে।
গত ২৪ ডিসেম্বর খুলনায় দেশে তৈরি যুদ্ধজাহাজ পদ্মার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সাবমেরিন কেনার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সাবমেরিন কেনা হলে নৌবাহিনী চতুর্মাত্রিক বাহিনীতে পরিণত হবে।
গত ২১ জানুয়ারি সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লে. জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, খুব সম্ভব চীন থেকে সাবমেরিন কেনা হতে পারে।
সাবমেরিন হচ্ছে বিশেষ ধরনের ডুবো যুদ্ধজাহাজ, যা পানির গভীরে ও ওপরে সমানভাবে চলতে পারে। এটি সব ধরনের যুদ্ধসরঞ্জামে সজ্জিত। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জার্মানি, ভারত, রাশিয়াসহ কয়েকটি উন্নত দেশে এটি ব্যবহূত হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের একটি সূত্র জানায়, দুই দেশের সরকারের চুক্তির মাধ্যমে সম্পূর্ণ তৈরি অবস্থায় দুটি সাবমেরিন কেনা হচ্ছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট দেশকে ক্রয়-সংক্রান্ত প্রাথমিক প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।
সাবমেরিন ঘাঁটির ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গত বছরের মার্চে সামরিক ভূমি ও সেনানিবাস অধিদপ্তর থেকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা মৌজায় ৪১৯ দশমিক ৮৫ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়। এরপর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনকে এসব জমি অধিগ্রহণের ব্যাপারে মতামত জানাতে অনুরোধ করে। পরে গত বছরের সেপ্টেম্বরে উপজেলা প্রশাসনের মতামতের পর জেলা প্রশাসন তাদের মতামত জানায়। এতে বলা হয়, প্রস্তাবিত জমিতে অধিগ্রহণের পরিপন্থী কোনো স্থাপনা নেই।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, প্রস্তাবিত জমির মধ্যে ১৯ দশমিক ৩৩ একর খাস জমি, ৭৯ দশমিক ৯ একর বন বিভাগের এবং সাত একর জমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে রয়েছে। বাকি ৩১৪ দশমিক ৪৩ একর জমি ব্যক্তিমালিকানাধীন।
পেকুয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও নূর-ই-খাজা আলামীন প্রথম আলোকে বলেন, ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে এখন লবণ চাষ হচ্ছে। এসব জমির মালিকেরা তাঁদের চাষের জমি অধিগ্রহণের বিপক্ষে। ঘাঁটি তৈরির জন্য তাঁরা জমি দিতে আগ্রহী নন। তবে এলাকার কিছু লোক জমি দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিন এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি। কারণ, তিনি নতুন এসেছেন। সাবেক জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর এ ব্যাপারে একটি প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। এরপর মন্ত্রণালয় থেকে আর কিছু বলা হয়নি। তবে এলাকার লোকজন জমি অধিগ্রহণের বিপক্ষে।
সম্প্রতি পেকুয়ায় গিয়ে দেখা যায়, সাবমেরিন ঘাঁটির প্রস্তাবিত জমিটি মগনামা উজান টিয়া এলাকায়। এটি কুতুবদিয়া চ্যানেলের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে। চ্যানেলের সামনে দিকে গভীর বঙ্গোপসাগর। একদিকে কুতুবদিয়া, অন্যদিকে মগনামা। মগনামার দিকে বিস্তীর্ণ লবণের খেত।
মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, ঘাঁটি করা হলে জমি হারানোর পাশাপাশি জেলেদের মাছ ধরাও বন্ধ হয়ে যাবে। তাই তাঁরা এর বিপক্ষে।
মোহাম্মদ হানিফ নামের একজন গ্রামবাসী বলেন, বেশ কিছুদিন আগে জমি অধিগ্রহণের খবর রটে যাওয়ার পর এলাকায় লোকজন বিক্ষোভ করেন। এরপর কিছুদিন সবাই চুপ ছিলেন। কিছুদিন আগে নৌবাহিনীর একটি ভাসমান পন্টুন এনে কুতুবদিয়া চ্যানেলের রাখা হয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, পটুয়াখালী জেলার কুয়াকাটার অদূরে রাবনাবাদ চ্যানেলের কাছে নৌবাহিনীর আরেকটি ঘাঁটি তৈরির জন্য সেখানকার জেলা প্রশাসনের কাছে আরও ৫০০ একর জায়গা চাওয়া হয়েছে। এখানে বিমানবন্দরও তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এর আগে একটি জার্মান কোম্পানি এর জরিপকাজ সম্পন্ন করে। বর্তমানে সেখানে নৌবাহিনীর একটি ছোট আকারের দল রয়েছে। নৌবাহিনী ইতিমধ্যে নতুন করে বিমান শাখা খুলেছে। তাদের বিমানগুলো ওঠানামা, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী সুবিধাজনক অবস্থান হিসেবে সেখানে বিমানবন্দর করার কথা ভাবা হচ্ছে। এর জরিপও শুরু হয়েছে।
News: Prothom Alo