Credit- Tanvir Islam Zeesun
২০০৮ সালের মায়ানমার বাংলাদেশের রিগ সমস্যার কাহিনী মোটামুটি সবারই জানা আশা করি।মায়ানমার অমিমাংসিত সমুদ্রসীমায় নেভী পাহারায় রিগ পাঠায়,আর আমরা আমাদের নেভী নিয়ে তা প্রতিহত করি।
রিগ সমস্যার কয়েকদিন পর্যন্ত টেকনাফে মায়ানমার বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রায় বন্ধ ছিল।আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ছিল প্রায় স্থবির,এরই মাঝে এন.এস.আই আর ডিজিএফআই এর কাছে খবর আসে যে মায়ানমার সীমান্তের কাছে নাসাকা বাহিনীর পাশাপাশি হেভী সেনা মোতায়েন করছে।যদিও আমাদের বিজিবি তখন সীমান্তে সতর্ক অবস্থায় ছিল।কিন্তু সেনা মোতায়েন আর বিজিবি সতর্ক থাকা একই জিনিস নয়।
উল্লেখ্য তত্বাবধায়ক সরকার তথা সেনাবাহিনী সরকারই তখন দেশ শাসন করছে,কিন্তু সেনাসমর্থিত সরকার ও জানত মায়ানমার নেভী কে পরাস্ত করা যতটা সহজ ছিল,,আর্মি বা এয়ারফোর্সের ক্ষেত্রে ততটা সহজ হবেনা।
উইকিলিক্স এর ফাস হওয়া নথি অনুযায়ী, ফখরুদ্দীন সরকার আমেরিকান এম্বেসী মারফত আমেরিকার কাছে সাহায্য জানায়,এই আশংকায় যে মায়ানমার হয়ত রিগ বসানো এর প্রতিশোধ হিসেবে বাংলাদেশে আক্রমন করে বসতে পারে।কিন্ত যুদ্ধ কোন সমাধান ছিল না।বাংলাদেশের অধিক জনসংখ্যার দেশে যুদ্ধ মানেই ব্যাপক প্রানহানি।চট্টগ্রাম শহরের একটি বিল্ডিং ধস মানেই ১০০ জনের মারা যাওয়া,পংগু হওয়া,বাচ্চার এতিম হওয়া।কক্সবাজারে কোন ক্যান্টনমেন্ট ছিল না,ছিল না কোন এয়ার বেস।
আমেরিকান সরকারকে যতই গালি দিন,বাংলাদেশের বিপদে আমেরিকা,ব্রিটেন আর জাপান কখনো চুপ করে থাকেনি।কূটকৌশল আমেরিকা খুব ভালই পারে।শেষমেষ সে যাত্রায় যুদ্ধ হয়নি।২০০৮ এ আর্ন্তজাতিক অবরোধে থাকা মিয়ানমারের নাম আর্ন্তজাতিক মিডিয়ায় এতটা আসতো না,আর আজো এতোটা আসে না,আসলেই হয়ত টুরিজ্যম আর রোহিঙ্গা সমস্যা,ড্রাগ ডিলিং এসব নিয়ে আসে।মায়ানমারের হারাবার কিছুই নেই,,সেসময় সেকেন্ড হ্যান্ড মিগ পেয়ে মায়ানমার বেশ আশাবাদী ছিল যে বাংলাদেশকে "দেখে নিয়ে" আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় স্থান করে নেবে।তারউপর থাইল্যান্ড এর সাথে মায়ানমারের সম্পর্ক একদম তলানীতে ছিল,বাংলাদেশের সাথে যুদ্ধ করে তারা হয়তো থাইল্যান্ডকে বুঝাতে চাইত," যুদ্ধ করবি,আয় দেখি","মানে বউকে মেরে ঝি কে শেখানো আরকি"
২০০৯ সালের বর্তমান সরকারের ক্ষমতা গ্রহন এবং বিডিআর বিদ্রোহের পর সামরিক বাহিনীর সমস্যাগুলো সামনে আসে।আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে,বিডিআর বিদ্রোহের সময় সেনাবাহিনী পিলখানায় এয়ার ডিফেন্স গান নিয়ে হাজির হয়,সেটা জায়গামত রাখতে হিমশিম খায় সেনাবাহিনীর সেনারা,যদি সেসময় ফায়ার চলত,কয়েকজন সেনা নিশ্চিত মারা যেতেন।যদিও সাভার পিলখানার কাছে,তাও এডির দরকার ছিল না
২০০৯ সালের সভায় প্রত্যেক বাহিনীর সমস্যা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর তুলে ধরা হয়।সেনাবাহিনীর ক্যান্টনমেন্ট সমস্যা,আধুনিক সরঞ্জাম এর ঘাটতি,নেভীর লোকবল আর জাহাজ ঘাটতি,বিডিআর এর বেতন আর ডালভাত কর্মসূচী।কিন্ত সবচেয়ে করুন অবস্থার কথা জানায় বিমানবাহিনী,লোকবল সংকট,ট্রেনিং বিমান না থাকা,সারফেস টু এয়ার মিসাইলের ঘাটতি,বেতন সমস্যা,হেলিকপ্ট
ার ঘাটতি,রাডার সমস্যা,এরোনটিকাল সেন্টার না থাকা,ট্রেনিং এয়ারক্রাফট এর অভাব,আধুনিক যুদ্ধ বিমান না থাকা,সব কিছুই বিএএফ তুলে ধরে।
প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদীয় কমিটি ২০১০ থেকে আজ ২০১৭ এর ডিসেম্বর পর্যন্ত সামরিকবাহিনীকে কোন জায়গা থেকে কোন জায়গায় এনেছেন তা একটু খুজে দেখে নেবার অনুরোধ জানাই।মায়ানমার এর সাথে সমুদ্র বিজয়ের পর অর্জনকরা সমুদ্রসীমার নিরাপত্তার স্বার্থে দ্রুততম সময়ে নৌবাহিনীর জন্য জাহাজ,মেরিটাইম এয়ারক্রাফট,হেলিকপ্টার,সাবমেরিন সংগ্রহ করা হয়।
সেনাবাহিনী এর জন্য সিলেট ক্যান্টনমেন্ট এর আধুনিকায়ন,রামুতে নতুন পদাতিক ডিভিশন,এমবিটি ২০০০ সংগ্রহ,হেলিকপ্টার,ফিক্সড উইং এয়ারক্রাফট, ট্রেনিং এয়ারক্রাফট সংগ্রহ,আর্মি এভিয়েশন গ্রুপ এবং বিএমএ এর আধুনিকায়ন,নতুন আর্টেলারি,সার্ফেস টু এয়ার মিসাইল,ডেডিকেটেড এয়ার ডিফেন্স ব্রিগেডে নতুন অস্ত্র সংগ্রহ,পয়েন্ট ডিফেন্স অটোমেটেড এয়ার ডিফেন্স গান,ক্যান্টনমেন্ট এর আধুনিকায়ন,নতুন আর্মি ইনস্টিটিউট,মেডিকেল কলেজ,ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিউট,মিলিটারি ইনস্টিউট অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি খোলা,উন্নত প্রশিক্ষণ, বেতন বাড়ানো সহ যাবতীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়।পায়রায় কিন্তু একটি ক্যান্টনমেন্ট ও হচ্ছে।
এবার আসি এয়ারফোর্সের বেলায়,১৯৭৬ এর পটপরিবর্তন থেকে সবচাইতে বেশি অবহেলিত ছিল এয়ারফোর্স,এয়ারফোর্স এর অবস্থা এতই নাজুক ছিল যে ৮ টি মিগ,এফ ৭,এএন ৩২,৩ টি সি ১৩০,আর পিটি৬ এ ছিল বিএএফ এর ভরষা।১৯৯০ পরবর্তী বন্যার পর ৪০+ বিমান আর হেলিকপ্টার নষ্ট হয়।সেই এয়ারফোর্সে নতুন ককপিট সমৃদ্ধ পিটি ৬,কে ৮,ইয়াক ১৩০,এফ ৭ বিজি ১ মতো ট্রেনিং,লাইট এটাকিং এন্ড ইন্টারসেপশন বিমান যুক্ত হয়েছে,হেলিকপ্টার এসেছে,এফ এম ৯০ আছে,আধুনিক ম্যানপ্যাড,শর্ট,মিডিয়াম আর লং রেঞ্জ রাডার,আরো একটি রাডার আসছে যা বরিশালে বসবে,মেল ইউএভি,এটাক হেলি,মাল্টি রোল কম্বাট এয়ারক্রাফট,সি ১৩০ এর মতো বিমান যুক্ত হচ্ছে,সি ২৯৫ আর্লি এয়ার রাডার আসার কথা চলছে,কক্সবাজার এ নতুন এয়ার বেস আছে,সিলেট,পটুয়াখালী,রাজশাহীতে এয়ার বেস হচ্ছে,মিগ ৩৫ আসছে,মিডিয়াম এয়ার ডিফেন্স সার্ফেস টু এয়ার স্যাম আসছে,সামনে লং রেঞ্জ স্যাম আসবে।
এখন অনেকেই বলবেন এফ৭ আর কত?তাদের জন্য বলি jf17 & j10 এ দুটি বাদে আমাদের কাছে অপশন ছিল না,বিমানবাহিনীর জরুরি ভিত্তিতে এয়ারক্রাফট লাগত,তাই অনেকটা হিসেবনিকেশ করেই এফ ৭ বিজি১ নেয়া হয়েছিল,ওয়েস্টার্ন বিমান কেন কিনা হয়না তা ভুলেও জিজ্ঞেস করবেন না।সেটা আমরা চাইলেও পাব না।
৮ টি মিগের পর কারা আর মিগ কিনেনি আর কিনা মিগ গুলোও কে সেল দিতে চেয়েছিল আপনারা সবাই জানেন আশা করি।
বিমানবাহিনীর ২ টি ইয়াক ১৩০ কাল বিদ্ধস্ত হলো,আপনারা অনেকেই ক্ষিপ্ত,কেউ টাকা নিয়ে বলছেন,কেউ এমন আধুনিক এয়ারক্রাফট রেগুলার বিরতিতে ক্রাশ হওয়ায় আফসোস করছেন,অনেকে পাইলটকে ফাসি দিতে বলেছেন,কেউ শোকে সার্কাজম করেছেন,"১৬ টা থেকে ৩ টা গেল বাকি রইল কয়টা?" ।
আমিও ক্ষিপ্ত,খারাপ লাগে যখন ইয়াকের মতো বিমান ক্রাশ করে,অনেকে একধাপ এগিয়ে ভারত বা মায়ানমারের ষড়যন্ত্র বলছেন,,আমরা আবেগি সেটা আমিও জানি,আজকালের ইয়ং জেনারেশন কল অফ ডিউটি,মর্ডান কমব্যাটের মত গেম খেলে," Behind enemy line"এর মত মুভি দেখে,ছোট থেকে সবারই অন্তত পাইলট হবার অনেকেরই ইচ্ছে থাকে,আমার নিজেরও ছিল।সেটা অমুলক কিছু না,আমরা হয়ত সে প্রজন্ম যাদের অনেকে ইয়াক ছুতে পারার সৌভাগ্য অর্জন করবোনা কোনদিন,তাও আমরা বিমান নিয়ে বলি,বৌমানিকদের হিংসা করি,এবং সে হিংসে কে আমি অমুলক ও বলি না।দেশের নেভী বা আর্মি নিয়ে যত আগ্রহ,এয়ারফোর্সের ব্যপারে আগ্রহ তারচেয়ে বেশী।এয়ারফোর্সের কাছে আমরা কিছুই চাই না,কিছু মিডিয়াম,লং র্যাঞ্জ স্যাম,কিছু ভাল বিমান,এই যা।সাধারন জনতা এটুকুই বোঝে,,কিন্তু যা বোঝেনা তা হলো লজিস্টিক,বিমান পাইলট গেমে যতটা হওয়া সোজা,বাস্তবে কি ততটা সোজা?পাইলটদের কুল সানগ্লাস আর নায়ক মার্কা রূপ দেখে আমরা অবাক হই,কিন্ত কখনো ভাবিনা এই" কুল লুক" আনতে গিয়ে একেক জনকে কয় ঘাটের জল খেতে হয়েছে,পারলে এয়ারফোর্সকে নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ি না,কিন্ত ভাবিনা, এয়ারফোর্স বা বিজিবির লোক ও ফেসবুক চালায়,আপনার কেমন লাগত যখন অন্য কেউ পাবলিকালি আপনার প্রতিষ্ঠান,যোগ্যতা এসব নিয়ে কটাক্ষ করত?১৬ টি ইয়াকের দামে কয়টা শিপ,কয়টা ট্যাংক হয় তাই বলুন?
ব্যপারটা কষ্টকর সেখানেই,যখন আমরা বিষয়গুলোকে পার্সোনাল ইস্যু পর্যন্ত নিয়ে আসি।কখনো এটাও ভাবিনা,যে ইস্যুটুকু আমাদের বৈমানিকদের কতটা ডিপ্রেসিভ করতে পারবে,ইয়াক ট্রেনিং এয়ারক্রাফট,ট্রেনিং এ ভুল হবেই,ক্রাশ করবেই,এটা যদি সু ৩০ হতো বা মিগ ২৯ বা মিগ ৩৫ হতো কি করবেন?এয়ার ফোর্স ভেঙে দেবেন?একটা নষ্ট জাহাজ ঠিক করা যায় সমুদ্রে,টাইপ ৫৯ কে আপগ্রেড করে দুর্জয় বানানো যায়।কিন্তু আকাশে শব্দের চাইতেও বেশী বেগে ঊড়ে যাওয়া বিমানকে ঠিক করা যায় না।যা করা যায় তা হল "নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা" আর "দোয়া করা"।একেক জন পাইলট আমাদের গর্ব,বছরের পর বছর লাগে পাইলট হলে,ক্রাশ হতে চলা কোন প্লেন "গেমের সিকুয়েন্স " না,যে ইচ্ছে হলেই "কুইট" আর "Pause" করে দেলাম।
"Every second Counts"
আপনার আর আমার সবার কাছে মুল্যবান আমাদের মোবাইল ফোন,তেমনি পাইলটদের কাছে মুল্যবান তাদের বিমান,কিছু ক্ষেত্রে জীবনের চাইতেও বেশি মুল্যবান।অনেক পাইলট বিমানকে গার্লফ্রেন্ড ডাকেন,মনের মত একটি নাম দেন,বিমানের ককপিটের গ্লাস এ সেই নাম লিখে সাইন করেন,বিমানকে চুমু ও খান,বিমানের সাথে কথাও বলেন,একজন আর্মি অফিসিয়াল কে কোনদিন বিটিআর ৮০ কে নাম দিয়ে কথা বলতে শুনেছেন?
পার্থক্য এখানেই,,যার স্থান নীল আকাশে তাকে কখনো মাটিতে আনতে পারবেন?আমাদের যত কষ্ট সেই পাইলটদের কষ্ট আরো বেশী,তাই আমরা একটূ সহনশীল হই।আমার মন বলে একটি ইয়াক আরেকটি কে ধাক্কা দিয়েছে,আর যেটা ধাক্কা দিয়েছে সেটায় হয়ত ফ্লাই বাই ওয়ার এর সমস্যা ছিল।আশার কথা ব্ল্যাকবক্স পাওয়া গিয়েছে,রাশিয়ান ইঞ্জিনিয়াররা আসছেন,না জেনেই দোষ দেয়া ছাড়ুন,রিপোর্ট আসুক আগে।
বরং আমাদের পাইলটরা আরো নতুন কিছু এক্সপেরিয়েন্স পেলেন।ভুল থেকেই শিখে মানুষ,সবকিছু পজেটিভলি নেয়া শিখুন,,ইয়াক আবার কেনা যাবে,পাইলটদের জীবন,স্কিল,ফ্লাইং আওয়ার কি কিনতে পারা সম্ভব?.
# Long_Live_BAF ♪
# BAF_Is_Love
# BAF_Is_Pride
9 November,2016: Two Marine pilots flying Their single-seat F/A-18 Hornets survived a midair collision off the coast of Southern California. does it make them SOMALI Air Force V4.0? Is it a good time to make fun of an accident?
http://www.sandiegouniontribune.com/military/sd-me-fighters-collide-20161109-story.html
BAF is known for its professionalism and has been operating Mig 29 for 17+ years without any sort of unwanted events ever. Crashes occur around the world.